নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্যা ট্রয় এর সংক্ষিপ্ত ঘটনা

১৫ ই মে, ২০১৬ দুপুর ১:১১


ট্রয় হল একটি কিংবদন্তির শহর যাকে ঘীরে বা যাকে কেন্দ্র করে বিখ্যাত ও ঐতিহাসিক সে ট্রয়ের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সেই শহর এবং সংশ্লিষ্ট যুদ্ধের বর্ণনা প্রাচীন গ্রিসের অনেক মহাকাব্যেই দেখা যায়।

যেমন ওডিসি কবি হোমারের রচিত দুই গ্রিস মহাকাব্য কবিতার একটি গ্রিস কবিতা। আর সেই কবিতাটিতে ট্রয় নগরীর ধ্বংসের পরে ইথাকার রাজা ওডিসিউস তার নিজের স্বদেশের ভূমিতে ফিরে আসার ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে ।মহাকবি ভার্জিল রচিত গ্রিক মহাকাব্য। ট্রয় নগরীর পত্তনের পর ট্রোজান বীর ঈনীসের ভাগ্য বিড়ম্বনা এবং অভিযানের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। বিশেষত ইলিয়াড এর নাম করা যেতে পারে। হোমার রচিত অমর দুই মহাকাব্যের একটি এই ইলিয়াড। ট্রয়ের নাগরিক এবং সংস্কৃতি বোঝাতে ট্রোজান শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
বর্তমানে ট্রয় হলো একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের নাম। হোমারের ইলিয়াডে যে ট্রয়ের উল্লেখ রয়েছে সেটিকেই এখন ট্রয় নামে আখ্যায়িত করা হয়। এর অবস্থান আনাতোলিয়া অঞ্চলের হিসারলিক নামক স্থানে। ট্রয়ের তুর্কী নাম ত্রুভা। অর্থাৎ আধুনিক হিসারলিক ই সেই প্রাচীন ট্রয় নগরী। আর এর ভৌগোলিক অবস্থান তুরস্কের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের কানাক্কাল প্রদেশের সমুদ্র সৈকতের নিকটে এবং আইডা পর্বতের নিচে দার্দানেলিসের দক্ষিণ পশ্চিমে।

রোমান সম্রাট অগাস্টাসের রাজত্বকালে প্রাচীন ট্রয় নগরীর ধ্বংসস্তুপের উপর ইলিয়াম নামে নতুন একটি শহর নির্মিত হয়। কনস্টান্টিনোপল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ইলিয়াম বিকশিত হয়েছে কিন্তু বাইজান্টাইন রাজত্বের সময় ধীরে ধীরে এর পতন হতে থাকে। ১৮৬৫ সালে ফ্রানক কার্লভার্ট ইংরেজ প্রত্নতত্ত্ববিদ সরবপ্রথম ট্রয় নগরীর সন্ধান পান।তিনি হিসার্লিকে এক কৃষকের কাছ থেকে এক খন্ড জমি কিনে খনন কাজ শুরু করেন। কিন্তু তা সমাপ্ত করতে পারেন নি।
১৮৭০ সালে জার্মান প্রত্নতত্ত্ববিদ হাইনরিশ শ্লিমান এই এলাকায় খনন কাজ শুরু করেন। সেই খনন চলা অবস্থায় একটি সময় প্রমাণিত হয় যে সেখানে একের পর এক বেশ কয়েকটি শহর নির্মিত হয়েছিল। সম্ভবত সেই শহরগুলোরই একটি হোমারের ট্রয় । অবশ্য তা নিয়ে অনেক সন্দেহ আছে। কিন্তু সেটা প্রায় নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে হিত্তীয় রচনায় উল্লেখিত উইলুসা শহরটি সেখানেই অবস্থিত ছিল। আবার অনেকে মনে করেন ইলিয়ন এই উইলুসা নামেরই গ্রিক সংস্করণ।
১৯৯৮ সালে ট্রয় নামক সেই প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় যুক্ত হয়।


ট্রয়ের ঘোড়ার সংক্ষিপ্ত কিছু কথাঃ
ট্রয়ের ঘোড়া বা ট্রয়ের অশ্ব হচ্ছে ট্রয় বা ইলিয়ন নগরের পতনের বিখ্যাত গ্রিক উপকথার সংগে জড়িত সেই কাঠের ঘোড়া। কথিত আছে যে গ্রিকরা একটি অতিকায় কাঠের ঘোড়া তৈরি করে তার ভিতরে সৈনিকদের লুকিয়ে রেখে ঘোড়াটা ট্রয় নগরের কাছে এনে দাঁড় করানো হয়। ট্রয়বাসীরা ঘোড়াটাকে শহরের ভিতরে নিয়ে আসে এবং রাত্রে সৈন্যরা ঘোড়ার পেটের ভিতর থেকে বেরিয়ে নগরের দরজা খুলে দেয় এবং গ্রিকরা শহরে প্রবেশ করে তা দখল করে নেন।
এই বিরাট ঘোড়াটি তিন দিনে তৈরি করেছিলেন এপিয়াস নামের একজন দক্ষ ছুতার। ঘোড়াটি ফেলে রেখে পলায়নের ভান করে গ্রিকরা জাহাজে করে ওডিসিয়ুসের পরিকল্পনা মতে একজন লোক রেখে দেয়া হয় যে ট্রয়বাসীদের বোঝানো হয় যে সেই ঘোড়াটি তাদের অপরাজয়ের স্মারক হিসাবে উপহার দেয়া হয়েছে। ঘোড়ার গায়ে খোদাই করে লেখা হয় "For their return home, the Greeks dedicate this offering to Athena"। তারপর গ্রিকরা তাদের তাবুগুলোকে পুড়িয়ে ফেলে এবং নিকটবর্তী টেনিডোস দ্বীপে রাতের আঁধারে চলে যায়। সাইনন নামে এক গ্রিক সৈন্য আলো জ্বালিয়ে তাদের সংকেত দেবার জন্য থাকে। ওডিসিয়ুস সাইননকে শিখিয়ে পড়িয়ে রেখে গেছে। তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হলও রাজা প্রায়ামের কাছে। ওডিসিয়ুসের শেখানো গল্প গড়গড় করে সে বলে গেল। আরো বলল আমাকে বলি দেয়ার সমস্ত ব্যবস্থাই পাকা হয়ে গেছিল কিন্তু ওই রাত্রে আমি শিবির থেকে পালাতে সমর্থ হই এবং জংগলের ভেতর পালিয়ে থাকি। গ্রিকরা চলে যাবার পর আমি বেরিয়ে আসি। সাইননের বানানো কাহিনী সকলে সরলমনে বিশ্বাস করল। রাজা তাকে অভয় দিলেন। কৃতজ্ঞতার ভান করে সাইনন গল্পের দ্বিতীয় অংশটি জানাল। সে বলল "এই কাঠের ঘোড়াটিকে গ্রিকরা রেখে গেছে দেবী এথিনার প্রতি অর্ঘ্যস্বরূপ। তবে এর পেছনে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য আছে। তারা চায় ট্রয়বাসীরা এটিকে ধ্বংস করুক যাতে দেবী এথিনা ট্রয়ের উপর ক্রুদ্ধ হন। আর তাছাড়াও নগরীর অভ্যন্তরে যে এথিনার মন্দির সেখানে ঘোড়াটি নিয়ে গেলে দেবী তো গ্রিকদের বদলে ট্রয়বাসীদের প্রতিই অনুগ্রহ দেখাবেন"। সেই চতুর গল্পের ঈপ্সিত ফল ফলল সংগে সংগে। আর এভাবেই সফল হলও ওডিসিয়ুসের ধূর্ত কৌশল। দশ বছরের যুদ্ধে যা সম্ভব হয়নি সেই দুঃসাধ্য সাধন হলও একটি ধাপ্পার মাধ্যমে।
উৎফুল্ল ট্রয়বাসী কাঠের ঘোড়াটিকে টেনে নিয়ে গেল এথিনার মন্দির চত্বর পর্যন্ত। মধ্যরাতে অন্ধকার মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা কাঠের ঘোড়ার পেটের দিকে খুলে গেল একটি দরজা। বেরিয়ে এলো পঞ্চাশ জন দুর্ধর্ষ গ্রিকযোদ্ধা তাদের নেতা মহাবীর ওডিসিয়ুস। তারা পা টিপে টিপে নগরীর মূল ফটকের দ্বার খুলে দিলে বাইরে অপেক্ষমাণ গ্রিকবাহিনী ঢুকে পড়ল ঘুমন্ত নগরীতে। তারা বিভিন্ন ভবনে একসাথে লাগিয়ে দিল আগুন। পরাজিত হলও ট্রয়বাসীরা। একদা ইউরোপ মহাদেশের সবচেয়ে সম্পদশালী নগরী ট্রয় একরাতের মধ্যে পরিণত হলও ধ্বংস স্তুপে। অনাদিকাল ধরে মানুষ স্মরণ করবে ট্রয়ের সেই ভয়াল কালো রাত্রের কথা। সেই রক্তমাখা ট্রয় নগরী থেকে দেবী আফ্রোদিতির সহায়তায় পালিয়ে বেঁচেছিলেন আরেক বীর ঈনিয়াস যিনি পরে নতুন সভ্যতা গড়ে তুলেছিলেন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মে, ২০১৬ রাত ৮:০৪

সুমন কর বলেছেন: সুন্দর পোস্ট !

১৮ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:১০

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন ভাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.