নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিন্দু প্রেমের দেবতা কামদেব কৃষ্ণের পুত্ররূপে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন

০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৪:৪১


কামদেব হলেন হিন্দু প্রেমের একজন দেবতা। তার অন্যান্য নামগুলি হল রাগবৃন্ত,প্রেমের অঙ্কুর, অনঙ্গ,দেহহীন, কন্দর্প,দেবগণেরও কামনা সৃষ্টিকারী, মন্মথ,মন মন্থনকারী, মনসিজ,মন হইতে জাত, সংস্কৃতে বলা হয় সঃ মনসঃ জাত, মদন,নেশা সৃষ্টিকারী, রতিকান্ত,রতির পতি, পুষ্পবাণ, পুষ্পধন্বা,পুষ্পবাণধারী এবং কাম,কামনা। অনেকের মতে কামদেব হিন্দু দেবী শ্রীর পুত্র। অন্যদিকে তিনি কৃষ্ণের পুত্র প্রদ্যুম্নের অবতার। তার স্ত্রী হলো আকাঙ্ক্ষার দেবী রতি। বৈষ্ণবরা তার আধ্যাত্মিক সত্ত্বাটিকে কৃষ্ণের সমরূপ মনে করেন।সংস্কৃত কামদেব শব্দটির অর্থ দিব্য প্রেম অথবা একজন প্রেমের দেবতা। অর্থাৎ মানুষের মনে কাম দেন যে সত্তা। দেব শব্দের অর্থ দিব্য বা স্বর্গীয়, আর কাম শব্দের আক্ষরিক অর্থ ইচ্ছা, কামনা অথবা বাসনা পূরণ, বিশেষত শারীরিক প্রেম বা যৌনতার ক্ষেত্রকে বোঝানো হয়। বিষ্ণুপুরাণ এবং ভাগবত পুরাণে ৫,১৮,১৫, দেবতা কাম্যদেব বিষ্ণুর অপর নাম কামদেব। শব্দটি কখনো কখনো দেবদা মদন এবং শিবের নাম হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। আবার সংস্কৃত গ্রন্থ প্রায়শ্চিত পদ্যত এর রচয়িতার নামও কামদেব। অন্যদিকে কৃষ্ণের অপর নাম কামদেব, কখনো কখনো আবার শব্দটি কৃষ্ণের উপাধি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। অগ্নির অপর নাম কাম। এই নামটি ঋগ্ববেদেও ব্যবহৃত হয়েছে ঋগ্বেদ ৯, ১১৩,১১,।যার অথর্ববেদে কাম যৌনাকাঙ্ক্ষা অর্থে নয় বরং সমস্ত পৃথিবীর মঙ্গলাকাঙ্ক্ষা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।কামদেবকে এক পক্ষধারী সুদর্শন যুবকরূপে কল্পনা করা হয়। কামদেবের নাসিকা সুচারু, ঊরু, কটি এবং জঙ্ঘা সুবৃত্ত কেশ নীলাভ ও কুঞ্চিত। তার বক্ষ সুবিশাল। তার চক্ষু, মুখ পদতল এবং নখ রক্তাভ। গায়ে বকুলের ঘ্রাণ। মকর এর বাহন। তার হাতে থাকে ধনুর্বাণ। তার ধনুকটি ইক্ষুনির্মিত এবং সেই ধনুকের গুণটি মৌমাছি দিয়ে তৈরি। তার বাণ পাঁচ প্রকারের সুগন্ধী পুষ্পনির্মিত।সেই পাঁচ প্রকার পুষ্প হলো অশোক, শ্বেত এবং নীল পদ্ম, মল্লিকা ও আম্রমঞ্জরী।

পৌরাণিক উপাখ্যানঃ
ঋগ্বেদ এবং অথর্ববেদের বিভিন্ন শ্লোক থেকে কামদেব সংক্রান্ত নানা চিত্র ও কাহিনি পাওয়া যায়। যদিও বিভিন্ন পুরাণে বর্ণিত তার প্রধান এবং অপ্রধান উপাখ্যানগুলিই অধিক পরিচিত।কামদেবের জন্মকাহিনি বিভিন্ন পুরাণে বিভিন্নভাবে বর্ণিত হয়েছে।কোনো কোনো উপাখ্যানে বলা হয়েছে যে তিনি সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার মন থেকে জাত হন। অন্যমতে তিনি দেবী শ্রীর পুত্র। কখনও কখনও কামদেব ইন্দ্রের সেবায় সম্পূর্ণ নিয়োজিতপ্রাণ এক দেবতার রূপে চিত্রিত হন। তার স্ত্রী রতি। রতি মৃণালায়ত বাহুযুক্তা এবং চক্র ও পদ্মধারিণী। কামদেব সংক্রান্ত একাধিক প্রাচীন নাটকের একটি অপ্রধান চরিত্র হলেন রতি। তার মধ্যেও প্রেমের দেবতার কিছু কিছু গুণ বিদ্যমান দেখা যায়। দেবী বসন্ত সর্বদা কামদেবকে সঙ্গ দেন। তবে তিনি হতাশার দীর্ঘশ্বাস থেকে উৎসারিত হন,কিন্ত রতির মতো বাসনা থেকে নয়। কামদেব বিভিন্ন পৌরাণিক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। যোদ্ধা হিসেবে তার সেনাদলেরও প্রয়োজন পড়ে।মৎস্যপুরাণ অনুসারে বিষ্ণু কৃষ্ণ এবং কামদেবের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক সম্পর্ক বিদ্যমান।গৌড়ীয় ঐতিহ্যে কৃষ্ণ কখনো কখনো কামদেবরূপে পূজিত হন। কৃষ্ণকেন্দ্রিক গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মে মনে করা হয় শিব কর্তৃক ভষ্মীভূত হওয়ার পর কামদেব বাসুদেব কৃষ্ণের অংশে পরিণত হন। সেই রূপে কামদেব স্বর্গীয় উদ্ভিদের উপদেবতা যিনি দৈহিক কামনা উজ্জীবনে সক্ষম। সেই রূপে কামদেব কৃষ্ণের স্ত্রী রুক্মিণীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করে প্রদ্যুম্ন নাম ধারণ করেন। যদিও কেউ কেউ মনে করেন ইনি বিষ্ণু শ্রেণির প্রদ্যুম্ন নন। তাই বৈষ্ণবগণ তাকে জীবতত্ত্ব শ্রেণি থেকে সম্ভূত মনে করেন। যদিও উপদেবতারূপে নিজের বিশেষ শক্তি প্রদর্শন করে তিনি বিষ্ণু শ্রেণির প্রদ্যুম্নের অংশীভূত হয়েছেন। ষড়গোস্বামীদের মতে কামদেব শিবের ক্রোধে ভষ্ম হয়ে বাসুদেবের শরীরের অংশীভূত হন। পরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন রুক্মিণীর গর্ভে। এই কারণে মনে করা হয় তিনি যেহেতু কৃষ্ণের ঔরসে জাত সেহেতু তার মধ্যে কৃষ্ণের গাত্রবর্ণ চেহারা এবং গুণাবলি প্রকট।
উপদেবতারূপে কামদেবের বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ
তার সঙ্গীরা হল একটি কোকিল, একটি পারাবত, ভ্রমরের দল, বসন্ত ঋতু এবং মলয় বাতাস। এগুলি সবই বসন্তের প্রতীক। কামদেবের উৎসব হল হোলি, হোলিকা অথবা বসন্ত।শিবপুরাণ মতে কামদেব সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার পুত্র। স্কন্দপুরাণ সহ অন্যান্য সূত্রের মতে কামদেব প্রসূতির ভ্রাতা, তাঁরা দুজনেই ব্রহ্মাসৃষ্ট শতরূপার সন্তান। পরবর্তীকালের প্রক্ষিপ্তাংশ থেকে জানা যায় যে তিনি বিষ্ণুর পুত্র।তবে সকল সূত্র এই ব্যাপারে একমত যে প্রসূতি এবং দক্ষের কন্যা রতিকে তিনি বিবাহ করেছিলেন।

তবে কামদেব কৃষ্ণের পুত্ররূপে জন্মগ্রহণ করেন বলে পুরাণেও কথিত আছে ?
কৃষ্ণের ১৬১০৮ জন স্ত্রী ছিলেন । যাদের মধ্যে বৈবাহিকসূত্রে প্রধান স্ত্রী ছিলেন আটজন এবং বাকি ১৬১০০ জন ছিলেন নরকাসুরের অন্তঃপুর থেকে উদ্ধার হওয়া ধর্মাবতার কৃষ্ণে সমর্পিত এবং তার অধিকারপ্রাপ্ত নারী । কিন্তু তাদের প্রত্যেককে দেবী লক্ষ্মীর অবতার হিসেবে মনে করা হয়।আর প্রত্যেক রমণীর গর্ভেই কৃষ্ণ দশটি পুত্র এবং একটি কন্যার জন্মদান করেছিলেন।
কৃষ্ণের প্রধান আট মহিষীর গর্ভজাত পুত্রদের নাম হলোঃ
কৃষ্ণ এবং মহিষী রুক্মিণীর প্রথম পুত্র হল প্রদ্যুম্ন। এছাড়া রুক্মিণীর গর্ভজাত কৃষ্ণের অন্যান্য পুত্রেরা হলেন চারুদেষ্ণ, সুদেষ্ণ, চারুদেহ, সুচারু, চারুগুপ্ত, ভদ্রচারু, চারুচন্দ্র, বিচারু ও চারু। কৃষ্ণপুত্র প্রদ্যুম্ন এবং রুক্মিণীর ভ্রাতা রুক্মীর কন্যা রুক্মাবতীর পুত্র হল পুরাণে উল্লিখিত বীর অনিরুদ্ধ। আরেক মহিষী সত্যভামার গর্ভে কৃষ্ণ যে দশটি পুত্র লাভ করেছিলেন তারা হলেন ভানু, সুভানু, স্বরভানু, প্রভানু, ভানুমান, চন্দ্রভানু, বৃহদ্ভানু, অতিভানু, শ্রীভানু এবং প্রতিভানু।জাম্ববানের কন্যা জাম্ববতীর গর্ভে কৃষ্ণ যে দশটি পুত্র লাভ করেছিলেন তারা হলেন শাম্ব, সুমিত্র, পুরুজিৎ, শতজিৎ, সহস্রজিৎ, বিজয়, চিত্রকেতু, বসুমান, দ্রাবিড় ও ক্রতু। এই পুত্রেরা কৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। কৃষ্ণ ও নগ্নাজিতির মিলনে জন্ম হয় বীর, চন্দ্র, অশ্বসেন, চিত্রাগু, বেগবান, বৃষ, অম, শঙ্কু এবং কুন্তী (কৃষ্ণের পিসি ও পাণ্ডবদের মাতা কুন্তী নন)।শ্রুত, কবি, বৃষ, বীর, সুবাহু, ভদ্র, শান্তি, দর্শ, পূর্ণাংশ এবং সোমক হলেন কৃষ্ণ ও কালিন্দির পুত্র।মদ্রা নামক মহিষীর গর্ভে কৃষ্ণের ঔরসজাত পুত্রেরা হলেন প্রঘোষ, গাত্রবান, সিংহ, বল, প্রবল, উর্ধগ, মহাশক্তি, সাহা, ওজ এবং অপরাজিত।মিত্রবিন্দা ও কৃষ্ণের মিলনে যে দশ পুত্রের জন্ম হয়, তারা হলেন বৃক, হর্ষ, অনিল, গৃধ্র, বর্ধন, উন্নাদ, মহাংশ, পবন, বহ্নি এবং ক্ষুধী।ভদ্রার গর্ভজাত কৃষ্ণের পুত্রেরা হলেন সংগ্রামজিৎ, বৃহৎসেন, সুর, প্রহরণ, অরিজিৎ, জয়, সুভদ্র, বাম, আয়ুর ও সাত্যক।রোহিণীর গর্ভে কৃষ্ণ লাভ করেছিলেন দীপ্তিমান, তাম্রতপ্ত ও অন্যান্য আটজন পুত্র।


মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৪:৫১

একটি পেন্সিল বলেছেন: কামদেবের এতগুলো নাম?!

০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৫:০৪

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: হতেই পারে এটা আবার চিন্তার কি হলো ?

২| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:৫৩

নাদিম মাহমুদ শান্ত বলেছেন: কিভাবে কি?

০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৫০

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: আগের মত।

৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৭:২০

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: কেমনে কি ভাই,এসব কবে থেকে ?

০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৫১

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: আগের জন্ম থেকে।

৪| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৩৫

মামুন ইসলাম বলেছেন: বাহা! চমৎকার লেখনী ।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৫১

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৪০

লেখা পাগলা বলেছেন: সুন্দর তথ্যযুক্ত পোস্ট ।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৫২

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ঠিক আছে ।

৬| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:২২

ক্লে ডল বলেছেন: মাথার ভিতর গুলিয়ে গেল!! :P


০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৫৩

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: তাহলে কেমনে হবে ।

৭| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:২৩

ক্লে ডল বলেছেন: মাথার ভিতর গুলিয়ে গেল!! :P


০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৫৮

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: পোস্টটা লেখার পর থেকে আপনার মত আমারো একই অবস্থা । :P
যাই পরে কথা হবে এখন একটু টোকেন মেরে আসি। B-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.