নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতে মুসলিম নিধনের চেপে রাখা অধ্যায়

৩০ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৮


১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার সময় ৫০০ এর বেশি ছোট ছোট রাজ্য ছিল যাদেরকে প্রিন্সলি স্টেট বলা হত।এদের একেক জনের সাথে বৃটিশের একেক শর্ত থাকত।বৃটিশরা সবাইকে এদের অধীনে নিয়ে এসেছিল কিন্তু বাংলার মত দখল করতে পারেনি। স্বাধীনতার সময় তাদের বলা হয়েছিল হয়ত ভারতে যোগ দিতে, নয়ত পাকিস্তানে অথবা নিজেদেরকে স্বাধীন থাকতে। হায়দ্রাবাদ, কাশ্মির,সিকিম সহ কিছু রাষ্ট্র নিজেরাই স্বাধীন থাকতে চেয়েছিল, স্বাধীন হয়েছিলও কিছু দিনের জন্য। কিন্তু ভারত একে একে সবাইকেই বিভিন্ন অজুহাতে দখল করে নেন।কারো ক্ষেত্রে বলা হল যেমন হায়দ্রাবাদ মুসলমান শাসক কর্তৃক নির্যাতিত হিন্দুদের বাঁচাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রবেশ করেছে। অথচ ২০০ বছরেরও বেশী সেখানে মুসলমান শাসক ছিল এবং রাজ্যটি ছিল সবদিক দিয়ে সমৃদ্ধ।কাশ্মিরের ক্ষেত্রে বলা হল কাশ্মিরের রাজার সাথে তাদের গোপন চুক্তি ছিল যেখানে দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতার কথা ছিল যে চুক্তি আজ অবদি কারো দেখার মত সৌভাগ্যটুকো পযন্ত হয়নি। :(
সূত্র (Brief History of J&K, Kashmir Voice, 11 April, 2012).
ঠিক এই ধরণের বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ভারতীয় সেনা দেশগুলোতে প্রবেশ করেছিল আর তারপর বের হননি।আমাদের দেশেও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধুয়া তোলা হচ্ছে ইদানিং।
এইসব রাষ্ট্র দখল করতে এবং দখল বজায় রাখতে ভারত কতটা নির্মম অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে বা এখনো চালাচ্ছে সেটা অবর্ণনীয়।ভারত কাশ্মিরকে ভারতের অংশ দাবী করা সত্ত্বেও রেকর্ড মতে শুধু কাশ্মিরেই ৯০,০০০০ এর উপর মানুষ হত্যা করেছে, ধর্ষণ করেছে অগনিত। যাদের কথা রেকর্ড করা হয়নি তাদের কথাতো বাদই দেয়া হলো। নিজের দেশের এত মানুষকেই যারা হত্যা করতে পারে তারা অন্যদেশে কি করতে পারে সেটা সহজেই সাধারণ মানুষ সাধারণ দৃষ্টি থেকে অনুমান করতে পারেন। অন্যান্য আরো কারনের সাথে ভারতীয়দের ইতিহাসে এমন আধিপত্যবাদী মানসিকতার কথা ভেবেই হয়ত তখন পুর্ব বঙ্গের মুসলিম নেতারা ১২০০ মাইল দুরের অচেনা পাঞ্জাবী পাঠানের সাথে গেল অন্যান্য কারণগুলো জানতে পড়তে পারেন নুরুল কবীরের লেখা বাঙ্গালী মুসলমান কেন হাজার মাইল দূরের পশ্চিম পাকিস্তানিদের সাথে গেল? । তারা হয়ত ভেবেছে পাঞ্জাবীরা আমাদের সাথে গাদ্দারী করলে তাদের থেকে বের হয়ে আসা যাবে।কিন্তু একবার ভারতের পেটে ঢুকে গেলে পরিণতি হত হয় কাশ্মির, আসাম, সিকিম অথবা হায়দ্রাবাদের মত।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ক্লান্ত ব্রিটেন সিদ্ধান্ত নিলেন তারা ভারত উপমহাদেশের শাসনভার ছেড়ে দেবেন। সরাসরি ব্রিটিশ শাসিত প্রদেশগুলোর কেউ পাকিস্তানে গেল আর কেউ ভারতের সঙ্গেই থেকে গেলেন। তাছাড়াও ভারতে অনেকগুলো রাজ্য ছিল যেগুলো ব্রিটিশদের দ্বারা নয় বরং অনেকটা স্বাধীন রাজা দ্বারা শাসিত হত,উদাহরণস্বরূপ কাশ্মীর যা হিন্দু মহারাজা হরি সিং কর্তৃক শাসিত হত।

এ সকল রাজ্যের মধ্যে সবথেকে বড় ও সবথেকে ধনী এবং শক্তিশালী ছিল হায়দ্রাবাদ রাজ্য। হায়দ্রাবাদের নিজস্ব সেনাবাহিনী, এয়ারলাইন্স, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক এবং প্রচুর মুদ্রা ছিল। আরো ছিল অভ্যন্তরীণ রেল যোগাযোগ ব্যাবস্থা। জনসংখ্যা ছিল দেড় কোটিরও বেশী আর আয়তনেও ছিল প্রায় বাংলাদেশের দেড়গুণ। হায়দ্রাবাদের সে সময় নিযাম উল মুলক উসমান আলি খান ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী একজন ব্যক্তি। ভারত বিভাগের সময় ব্রিটিশ সরকার কাশ্মীর, হায়দ্রাবাদসহ সকল স্বাধীন রাজ্যকে তিনটির মধ্যে যে কোন একটি বেছে নিতে বলেছিলেন হয় ভারতের সাথে একীভূত হওয়া, কিংবা পাকিস্তানের সাথে নয়তবা দুইটির বাইরে স্বাধীন থাকা। নিযাম উসমান আলি খান শেষেরটি বেছে নিলেন। ভারতের কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ প্রমাদ গুনলো। ভারতের ঠিক মধ্যখানে একটি স্বাধীন মুসলিম শাসনাধীন রাজ্য তাদের কাছে দূরস্বপ্নের মত মনে হল। শাসকের আসনে মুসলিমরা থাকলেও হায়দ্রাবাদের মোট জনসংখ্যার ৮৫% ছিল হিন্দু। হিন্দু জাতীয়তাবাদী নেতারা তাই হায়দ্রাবাদ দখল করতে মাঠে নেমে পড়লেন। ;)


উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী দলগুলোর ইন্ধনে হায়দ্রাবাদের অভ্যন্তরে কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে মুসলিম জমিদার এবং উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের গুপ্তহত্যা শুরু করে দিলেন। আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী প্রায় দুই হাজার ব্যক্তি তাদের হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। সে পরিস্থিতিতে নিযাম স্থানীয় যুবকদের নিয়ে গঠিত রাজাকার বাংলায় যার অর্থ হয় স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী দায়িত্ব দেন হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধের। রাজাকারেরা কমিউনিস্টদের পাকড়াও অভিযান শুরু করেন, পরে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কমিউনিস্টরা সবাই ছিল হিন্দু সুতরাং এ সুযোগকে কাজে লাগাল ভারত সরকার। বহুল প্রতীক্ষিত হায়দ্রাবাদ দখলের অজুহাত এখন তাদের হাতে তারা প্রচার করলো উগ্র মুসলিম রাজাকারেরা পাইকারী হারে হিন্দুদের হত্যা করছেন। =p~

১৯৪৮ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর অপারেশন পোলো সাংকেতিক নামে ভারতীয় সেনাবাহিনী চারদিক থেকে হায়দ্রাবাদ আক্রমণ শুরু করে দেয়। বিশ্বের কেউ সেদিন হায়দ্রাবাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেননি। লক্ষাধিক ভারতীয় সৈন্যের বিপরীতে হায়দ্রাবাদের ট্রেনিংপ্রাপ্ত প্রফেশনাল সৈন্যের সংখ্যা ছিল মাত্র ছয় হাজার তাদের সাথে ছিল আর বিশ হাজার রাজাকার বাহিনী। এ অসম লড়াইয়ে চারদিন প্রতিরোধ করে অবশেষে পরাজয় মানে হায়দ্রাবাদ বাহিনী। ১৭ই সেপ্টেম্বর সকালে সিকান্দারাবাদে ভারতীয় মেজর জেনারেল জয়ন্ত নাথ চৌধুরীর নিকট আত্মসমর্পণ করেন হায়দ্রাবাদের সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল সাইয়েদ আহমেদ এল এদরুস। আর এভাবেই স্বাধীনতা হারিয়ে হায়দ্রাবাদ হয়ে যায় ভারতের একটি প্রদেশে পরিণত ।

তথ্যসূত্র ইন্টারনেট

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:১৯

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: দারুন তথ্যে সঞ্জিত ইতিহাস জানতে পারলুম আপনার পোস্ট থেকে।লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।

৩১ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:০৫

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ৩০ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৫৩

নতুন নকিব বলেছেন:



মুসলিম নিধনের ইতিহাস নিয়ে কথা বললে আবার কেউ 'মৌলবাদি' বলবে না তো?

ভাল থাকবেন।

৩১ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:০৪

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ইতিহাস ইতিহাসই এর সাথে মৌলবাদির কোনই সম্পর্ক নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.