নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পয়লা বৈশাখকে ধর্মনিরপেক্ষ রাখুন

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:১০


বাংলাদেশের ঐতিহ্যিক নববর্ষ উৎসব গত কয়েক যুগ ধরেই শহরের সংস্কৃতিবানদের হাতে তার স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে বিকৃত হচ্ছে একথা বলতে কোন দ্বিধাবোধ আছে বলে মনে করি না।তার ভিতরে যেমন দুইটি পর্যবেক্ষণ তুলে ধরলাম
১। পয়লা বৈশাখে পান্তাভাতের সাথে আমরা ইলিশ ভাজা খাচ্ছি একদিনের জন্য আমরা শহরের মধ্যবিত্ত লোকেরা গ্রাম্য সাজার প্রচেষ্ঠার করি। তবে যতদূর ধারণা হয় সম্ভবত এইদিনে গ্রামের অতি দরিদ্র লোকেরাও পান্তাভাত খান না, কারণ পান্তাভাত খাওয়া তাদের কাছে নিত্যদিনের একটা প্রথা বা সারা বছরের উপায়হীনতা।
২। ঐতিহাসিকভাবে পয়লা বৈশাখ হচ্ছে একটি সেক্যুলার উৎসব। কিন্ত শহরের সংস্কৃতিবান ব্যক্তিগণ তার মধ্যে একটি ধর্মীয় প্রতীকের অনুপ্রেবশ ঘটিয়ে অপসংস্কৃতির চর্চা করছেন। আর তা নির্দেশ করে একটি গোষ্ঠী পয়লা বৈশাখকে অন্ধকার যুগের চর্চা বলে বিতর্কিত করছেন।
বাঙালী পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম এথনোলিঙ্গুয়িস্টিক গ্রুপ এথ্নিসিটি বা জনজাতিত্ব এবং ল্যাঙ্গুয়েইজ অথবা ভাষার সংমিশ্রণে সৃষ্ট প্রকরণ। স্পষ্ট পরিসংখ্যান উল্লেখ করে যতদূূর সম্ভবত ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারীতে ব্রিটেইনের চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রর পক্ষ থেকে বাঙ্গালিরা প্রথম জাতিসংঘের সেসময়ের মহাসচিব কফি আনানের কাছে বাংলা ভাষাকে সংঘের আরও একটি দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করেছিলেন। এখন বাঙালী জাতির পৃথিবীতে গর্ব করার মতো একটি ঐতিহ্যিক অথচ সেক্যুলার উৎসব হচ্ছে তার পয়লা বৈশাখের নববর্ষ উৎসব যেখানে কোনো ঐশ্বরিকতা এবং ধর্মীয়তা নেই, আছে শ্রমজীবী মানুষের সারা বছরের শ্রমের পরিণতিতে প্রাপ্ত ইহজাগতিক সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের প্রত্যয় এবং প্রত্যাশার উদযাপন। বৈশাখ পালনে একজন বাঙালী হিসেবে আমিও গর্বিত এবং ইচ্ছুক।তবে কিছু সীমাবদ্ধাটা থাকতে হবে,যেমন এদিন যে ইলিশ ভাজা আর পান্তাই খেতে হবে এমন কোন নিয়ম নীতি থাকতে পারে না।বৈশাখ পালনের নামে কলেজ বা স্কুলের মাঠে বেহাইয়াপানা কোন নিয়ম নীতি হতে পারে না।কিন্তু ইদানিং কিছু উদ্বিগ্ন হওয়ার কারন এই দেখে যে পয়লা বৈশাখের নববর্ষ উৎসবে নষ্টামির ছায়া পড়েছে। অনুপ্রেবেশ ঘটছে নবর্বষের উৎসবের অঙ্গসজ্জা। শুভ প্রত্যাশায় মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানো হচ্ছে। সৌভাগ্যের হিন্দুদেবী লক্ষ্মীর বাহন পেঁচার প্রতিকৃতি বহন করা হচ্ছে। আর তার ফলেই বৈশাখের নববর্ষ উৎসবের সেক্যুলার চরিত্র নষ্ট হচ্ছে এবং প্রতিক্রিয়ার বিপদ তৈরি হচ্ছে। বিষয়টি ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে কিছু বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে যে আসলে আগে বাঙ্গালী কিভাবে এটাকে পালন করতেন আর এখন কিভাবে করছেন ?তাহলেই সম্ভব আমাদের মাঝে পৈহেলা বৈশাখ পালন নিয়ে যে দ্বিধাবোধটি আসে সেটি কেটে যাবে।

ঐতিহাসিকভাবে ঐতিহ্যিক উৎসব সমূহের প্রায় সবগুলোই ধর্মাশ্রিত। কারণ এগুলোর গোড়াপত্তন যে কালে এবং সমাজে সেকাল ছিলো প্রাগবৈজ্ঞানিক ও সমাজ ছিলো সামন্ততান্ত্রিক কিংবা দাসতান্ত্রিক। সকল ক্ষমতার উৎস ছিলো ঈশ্বর কিংবা ঈশ্বরের পার্থিব প্রতিনিধি রাজন্যবর্গ। তাই উৎসবের কেন্দ্রে ছিলো, ঈশ্বর, দেবতা, পয়গম্বর, পুরোহিত, রাজা-বাদশাহ- কিন্তু জনগণ নয়। বাঙালীর বৈশাখী উৎসবের ইতিহাসে বাদশাহী সংশ্লিষ্টতা থাকলেও, এর মধ্যে ছিলো সচেতন ধর্মনিরপেক্ষতা।বহু ধর্মের দেশ ভারতের সম্রাট হিসেবে জালাল উদ্দিন আকবর প্রচলিত ধর্মীয় উৎসবের বাইরে ১৪টি নতুন উৎসব প্রবর্তন করেন। তার মধ্যে অন্যতম ছিলো বৈশাখের নওরোজ বা নববর্ষ উৎসব। তিনটি কারণে সম্রাট আকবর ১৫৮৫ খ্রিষ্টাব্দে এক শাহী ফরমানের মাধ্যমে তারিখ ই ইলাহী নামে নতুন বর্ষ গণনার গোড়াপত্তন করেন যার ফলে প্রবর্তিত হয় পয়লা বৈশাখের নওরোজ বা নববর্ষ উৎসব।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:১৮

দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: কত সুন্দর করে এই বৈশাখ পালন করা যেত। ধর্ম নিরপেক্ষভাবেই করা যেত। কিন্তু কিছু বিকৃত মানসিকতার লোকদের জন্য আজ এই উৎসবও ট্যাগ খেয়ে গেল।
view this link

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৬

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ঠিক বলেছেন,ধন্যবাদ।

২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:২৬

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: বৈশাখ, নবান্ন, হালখাতা, মেলা এগুলো সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রাম বাংলার মানুষের আপন সংস্কৃতি। অথচ আমরা শহুরেরা তাদের কথা মাথায় না রেখে নিজেদের ইচ্ছা মত(গান গেয়ে ডাকা, মঙ্গল শোভাযাত্রা, পান্তা ইলিশ) এই উৎসবকে হালকা করছি...

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৮

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: শুধু হালকাই না প্র্রযপ্ত পরিমানের হালকা হয়ে যাচ্ছে দিনকাদিন এই ১ম বৈশাখ উৎসবটা ।

৩| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:৩৭

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: বৈশাখ পালন করাও বদলে গেছে।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১০

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: দিনকাদিন আরো বদলে যাবে ।

৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৩:৩০

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: শুভ নববর্ষ।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৯

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৩:৪৫

নাইম রাজ বলেছেন: নববর্ষের শুভেচ্ছা।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১১

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.