নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বাংলার গান গাই...

হাজার বছরের ধারাবাহিক আলোয় আলোকিত আমি, হাজার বছরের সেই হাজার আলোদাতার কাছে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ এ আলো ছড়িয়ে দিব।

জুম্মন বেপারি

হিমালয়ের পাদদেশ থেকে আমার পথ চলা শুরু পুরো পৃথিবী চড়াব বলে। আমি তিমির রাত্রির মাঝে হেঁটে চলেছি ঘোর কাল অমানিশাকে আলোকিত করবে বলে। আমার হাতে আছে চন্দ্রদ্বীপের একখণ্ড আলোকবর্তিকা। আমি চির উন্মাদ এই বসুন্ধারার সুন্দর কে ভালবেসে। আর তাই আমি চির সংগ্রামী এই সুন্দরকে সাজিয়ে রাখার নিমিত্তে। আমি তাই হাঁটিতেছি দুর্গম অরন্নের মাঝে। আমি স্বপ্নবাজ। শরতের আকাশে চারদিকে শুনশান শব্দে শুভ্র মেঘের খেলা মানুষের মনকে যেমন উদ্বেলিত করে, তেমন সুন্দর কোন পৃথিবীর খোজে আমি চলিতেছি শতাব্দীর পথে। আমি চাইনি আবু গারিবের কারাগার, আমি চাইনি পার্ল হারবার কিংবা হিরোশিমা নাগাসাকি। আমি চাই এই পৃথিবী নামক মহা অরণ্যকে হিংস্র পশুর হাত থেকে মুক্ত করে, আগাছা আর জঞ্জাল পরিস্কার করে সুশোভিত বিমোহিত উদ্যান বনাতে। আমি এই পৃথিবীকে স্বপ্ন দেখিয়েছি, আমিই এই স্বপ্ন পৃথিবীর বুকে রংধনুর সাত রঙ দিয়ে আকব। আমি ছিলাম, আছি, থাকব। মানব থেকে মানবের মাঝে। আমার শুরু ছিল না, শেষও নেই। আমার শুধু রূপান্তর ঘটে মানবের মাঝে। আমি এসেছি চে’র মাঝে, আমি এসেছি সুকান্তের মাঝে, আমি এসেছি তিতুমিরের মাঝে। আমিই চির যৌবনা।

জুম্মন বেপারি › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা ধার্মিক

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৪৫

ছোটবেলায় আমি ছোট ছিলাম, লোকে যা কইত তাই বিশ্বাস করতাম। পাশের বাড়ির মামুন ভাই কইছিল নারায়ণগঞ্জে নাগ নাগিনীর রাজপ্রাসাদ আছে। সেইখানে কেও যাইয়া কখনও ফিরা আসে নাই। আমি বিশ্বাস করছিলাম। বিগ ফাইট হইত বিটিভিতে প্রত্যেক শনিবারে। আমি তাও সত্য বইলা বিশ্বাস করছিলাম। নদী ভাঙন শুরু হইলে মাইনষে কইত নদীর নিচে ডাইনি আছে, হেয় নদী ভাঙতাছে। মাইনষের মাথা নদীতে দিলে হেয় আর নদী ভাঙব না। আমি ছোট ছিলাম, লোকে যা কইত তাই বিশ্বাস করতাম। তাই এইডাও বিশ্বাস করছিলাম। কিন্তু অহন আমি বড় হইছি। এগুলান অহন আর বিশ্বাস করি না। কারণ এগুলার কোন ভিত্তি নাই। সবই রূপকথা।

ছোটবেলায় আমি ছোট ছিলাম, লোকে যা কইত তাই বিশ্বাস করতাম। যহন থেইকা কথা বুঝা শুরু করলাম, তখন থেইকা মায় কইত আমাগো সবাইরে আল্লায় বানাইছে। বইর পাতায় পাহার পরবত আর নদী নালা দেখাইয়া মায় কইত এগুলানও আল্লায় বানাইছে। ছোট ছিলাম তাই বিশ্বাস করতাম। বড়রা কইত নামায কালাম না পড়লে, রোযা না রাখলে আল্লায় আগুনে পোড়াইব। আর নামায কালাম পড়লে, রোযা রাখলে আল্লায় বেহেশত দিব, যেহানে বাগান আছে, যা চামু তাই পামু। ছোট ছিলাম তাই বিশ্বাস করতাম। তাই মাঝে মইদ্ধে নামায কালাম পড়তাম কিন্তু না খাইয়া থাকতে পারতাম না বইলা রোযা রাখতাম না। ছোটবেলায় যহন একটু বড় হইছি তহন অরধেক অরধেক রোযা রাখতাম। তারপর একসময় পুরা রোযা রাখতে পারতাম। তহন প্রথম রোযা আর শেষ রোযা রাইখা মাঝখানের গুলারে ব্রাকেট দিয়া আটকাইতাম। ছোট বেলায় ভয় পাইতাম আর লোভও ছিল তাই দোযখের আগুনের থেইকা বাচনের লাইগা আর বেহেশত পাওনের লাইগা মাঝে মাঝে নামায কালাম পড়তাম আর রোযা রাখতাম। তয় ছোটবেলায় আমি বেশিরভাগ সময় হাসিখুশি থাকতাম। তহন ভয় আর লোভ কোনটাই কাজ করত না। তাই নামায কালাম পড়তে ভুইলা যাইতাম। পরে যহন একা থাকতাম তহন ভয় করত। আমার এক দাদা আছিল। উনার সাদা সাদা দারি আছিল। সবসময় পাঞ্জাবি টুপি পরত। নামায কালাম বাদ দিত না। তহন ভাবতাম উনি বেহেশতে যাইবই যাইব। ছোটবেলায় শুনছিলাম একজন বেহেশতে গেলে হেয় আরও দশ জনরে নিতে পারব। তাই একদিন দাদার লগে চুক্তি করলাম হেই যদি বেহেশতে যায় আমারেও যেন নেয়। চুক্তি কইরা নিজেরে অনেক খুশি মনে হইছিল। তহন ছোট ছিলাম তাই লোকে যাই কইত বিশ্বাস করতাম। তহন ধরম করম যা পালন করতাম সব ভয় আর লোভ না হয় কোন কারণ ছাড়াই পালন করতাম। মাইনষে করত তাই আমিও করতাম।

অহন আমি বড় হইছি। আস্তে আস্তে অনেক কিছু বুঝতে শিখছি। অনেক কিছু অহন জানি। অহন কেও আজগুবি কিছু কইলে সহজে বিশ্বাস করি না। আমার গেয়ান দ্বারা আগে বিচার করি, তারপর সত্য বইলা মনে হইলে বিশ্বাস করি আর নাইলে করি না। প্রথমে যে কথা গুলা কইছি অহন বুঝি ঐগুলা সত্য না। কিন্তু পরে যা কইছি হে গুলান সত্য। কারণ আমি অনেক বই পরছি, কোরান পরছি, হাদিস পরছি,ওয়াজ শুনছি। এসলামের সব কথা অহন পর্যন্ত সত্য বইলা মনে হইছে। কোরানের যত গুলা আয়াত জানি তার যতদূর বাস্তবতার লগে মিলাইছি মিল পাইছি। সবকিছু বুইঝা শুইনা কইতাছি আল্লা ও আল্লায় যা কইছে সব সত্য।

বেহেশত পাইতে হইলে আল্লার নিয়ম কানুন মাইনা চলন লাগব। নামায কালাম পরন লাগব। রোযা রাখন লাগব। আর তা না করলে দোযখের আগুনে পুড়তে হইব। তাই আমরা নামায কালাম পড়ি, রোযা রাখি। কারণ আমরা ভয় পাই। আমাগোও লোভ আছে। যদি আল্লায় কইত নামায কালাম পড়তে, রোযা রাখতে কিন্তু ঐগুলা না করলে আল্লায় কোন শাস্তি দিব না, আর করলেও কিছু দিব না। তাইলে মনে হয় আমরা কেও নামায কালাম পড়তাম না, রোযা রাখতাম না।

আমার মায় আমারে অনেক কষ্ট পাইয়া জন্ম দিছে আর আমার বাবজানে অনেক খাটনি কইরা আমারে মানুষ করছে। তাই আমার তাগো কথা মাইনা চলন উচিত। কারণ হেরা আমার মঙ্গল চায়। আমার অমঙ্গল হয় এমন কোন কাজ হেরা আমারে করতে কইব না। তাগো সেবা করন দরকার। কারণ তারা আমার লাইগা অনেক কষ্ট করছে। তাগো সম্পত্তির লোভে বা তাগো ভয় পাইয়া তাগো কথা শোনা ও তাগো সেবা করা উচিত বইলা আমার মনে হয় না। মা বাবার প্রেমে পইরাই আমাগো ওইগুলান করন উচিত।

আল্লায় আমাগো সৃষ্টি করছে। আশরাফুল মাখলুকাত বানাইছে। প্রিয় বান্দা হিসাবে ঘোষণা করছে। তাই আল্লায় যা কইছে তা আমাগো মঙ্গলের লাইগাই কইছে, অমঙ্গলের লাইগা না। হেয়ই সব চাইতে বেশি ভালা জানে কোনটা আমাগো লাইগা ভালা আর কোনটা ভালা না। আমরা সেইটা প্রায় সবাই বিশ্বাসও করি। কিন্তু তার কথা গুলা আমরা মাইনা চলি না। নামায কালাম পড়ি, রোযা রাখি দোযখের আগুনের ডরে, বেহেশত পাওনের আশায়। কিন্তু আমরা সহজে আল্লার প্রেমে পইরা শুধু তারে খুশি করনের লাইগা নামায কালাম পড়ি না, রোযা রাখি না। খারাপ কাজ করনের সময় ভাবি না আল্লায় কষ্ট পাইতে পারে। ভাবি আল্লায় আগুনে পোড়াইব। ভালা কাজ করনের সময় ভাবি না আল্লারে খুশি করনের লাইগা কাজটা করতাছি। ভাবি আল্লায় বেহেশত দিব।

গতকাইল কোরবানি গেছে। আমরা গরু জবাই করছি। খাসী জবাই করছি। গরীবেরে মাংস বিলাইছি। সারাবছর খারাপ কাজ কইরা কোরবানির ঈদ এ চাইর পাঁচটা গরু কিনছি। মেলা টাকা আছে। চাইর পাঁচটা গরু কোরবানি না দিলে মান ইজ্জত থাকব না। সারাবছর গরীবের টাকা মাইরা খাইয়া, হক মাইরা খাইয়া, তাগো লগে খারাপ ব্যবহার কইরা কাইল হ্যাঁগো মাংস বিলাইছি। আরাম চেয়ারে বইসা মাংস বিলাইছি। অনেকে আবার ডিপ ফ্রিজে ভইরা মাংস রাখছি। নিজেরা মাসলা বানাইছি গরীবেরে অত মাংস না দিলেও চলে। অনেকে আবার কার নামে কোরবানি দিমু তা নিয়া মহা চিন্তায় পরছি। মাংস বিলানোর পরপরই টিভি তে গান নাছ দেখছি। অনেকে আবার বেপর্দা বউ আর প্রেমিকা লইয়া ঘুরতে বাইর হইছি। আমরা জানি কোরবানির ঈদ এ গরু জবাই করতে হয়, খাসী জবাই করতে হয়, গরীবেরে মাংস বিলাইতে হয়। তাই ওইটুকু কইরাই ঈদ এর আর এক দিক আনন্দ লইয়া ঝাপাইয়া পরছি। আল্লার কথা ভুইলা গেছি।

অহন দেহি আল্লায় কি কইছে। আল্লায় কইছে, এগুলোর গোস্ত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌছায় না, কিন্তু পৌছায় তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া। আমরা তাকওয়া কি তা ই জানি না। তাকওয়া কেন দরকার তাও জানি না। তাকওয়া ক্যামনে অর্জন করতে হয় তাও জানিনা। কখনও তাকওয়াবান হইতে পারি না। কোরবানির সময় আমরা কই, আমার সালাত, আমার কুরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর উদ্দেশ্যে। কিন্তু আমরা কহনই জীবন মরণ আল্লার উদ্দেশ্যে দিতে পারি নাই। এই দুনিয়ায় আল্লার দিন কায়েমের লাইগা কহনও শরীরের এক ফোটা রক্ত ঝরাইতে পারি নাই। কিংবা কহনও মুসলিম উম্মার উপর অত্যাচার হইলে চোখ থেইকা এক ফোটা পানি ঝরে না।

নামাযের ওয়াক্ত হয় নামায পড়ি,মসজিদ থেইকা বাইর হইয়া সুদের হিসাব করি। রোযার মাস আইলে রোযা রাখি, ইফতারি কইরা সিগারেট ধরাই। কোরবানি আইলে গরু জবাই করি, গরীবেরে মাংস বিলায়, জীবন মরণ সিন্দুকে ঢুকাইয়া তালা মাইরা রাখি। সবসময় মোসলমান দাবি করি, খারাপ কাজ করি।

ছোটবেলায় ছোট ছিলাম, লোকে যা কইত বিশ্বাস করতাম। মাইনসেরে অনেক ধার্মিক মনে করতাম, ধর্ম বুঝতাম না। অহন আমি বড় হইছি। অনেক কিছু শিখছি, জানি। ধর্ম জানি। ধার্মিক জানি। তাই ধর্মের মহত্ত পাই, ধার্মিক খুইজা পাই না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.