![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০১৩
সালমান ফরিদ: তিনি রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে একে একে দেড়শ’ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছেন। ৪০টি লাশ বের করে এনেছেন ভেতর থেকে। নিজের জীবন বাজি রেখে ঢুকেছেন মৃত্যুপুরীতে। ৯ম তলা থেকে চষে বেড়িয়েছেন ৩য় তলা পর্যন্ত। তন্ন তন্ন করে খুঁজেছেন জীবিত মানুষকে। কোথাও থেকে সাড়া পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন উদ্ধারে। লাশের সারি সরিয়ে জীবিত মানুষগুলোকে দেখিয়েছেন আলোর মুখ। ফিরিয়ে এনেছেন মুক্ত পৃথিবীতে। তখন তার আনন্দ দেখে কে! একটি জীবিত মানুষ উদ্ধার করতে পারলেই আনন্দে কেঁদেছেন। না জানি কার মায়ের খালি কোলটায় সন্তান ফিরিয়ে দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এই আনন্দের মাঝেও বেদনা তাকে কুরে কুরে খেয়েছে। সেই কষ্ট ভুলতে পারছেন না রাজবাড়ীর আবদুর রহিম। গতকাল সকালেও আবার গেছেন রানা প্লাজার মৃত্যুকূপে। একে একে বের করেছেন ২টি মৃত লাশ। আর জীবিত উদ্ধার করেছেন একজনকে। জনসাধরণকে সেখান থেকে বের করার সময় তিনিও বের হয়ে আসেন। তারপর ছুটেন হাসপাতালে। সাভারের সবগুলো হাসপাতাল আর ঢাকা মেডিকেল ও মিডফোর্ড চষে যখন পঙ্গু হাসপাতালে এলেন, তখন অনেকটাই মুষড়ে পড়েছেন তিনি। বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল তাকে। ডান হাত দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে বললেন, এত মানুষকে মুক্ত করলাম। এত মানুষকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিলাম। কিন্তু নিজের বোনটাকে এখনও ফিরে পেলাম না। আমার মা সারাক্ষণ আহাজারি করছেন। কান্না থামছে না তার। বারবার ফোন দিয়ে জানতে চাইছেন, আমার মমতাজরে পেলি? কিন্তু আমি কোন জবাব দিতে পারছি না। আগে সান্ত্বনা দিয়েছে। কিন্তু এখন কিছু বলার ভাষাও যেন হারিয়ে ফেলেছি। মাকে শুধু বলি, মা দোয়া করো। আমি খুঁজছি। এর চেয়ে আর কি দুঃখ হতে পারে আমার? তিনি বলেন, রানা প্লাজার সবগুলো ফ্লোরে খুঁজেছি। মৃত-জীবিত হাজার মানুষের মুখ দেখেছি। কিন্তু কোথাও আমার বোনের মুখটা দেখতে পাইনি। বলেই রহিম কান্না শুরু করেন। আহাজারি করতে থাকেন পাগলের মতো। পাগলের মতো বলতে থাকেন- ‘সে আমাদের সবার ছোট। বড় আদরের বোন। আমার জীবনের বিনিময়ে যদি বোনটাকে উদ্ধার করতে পারতাম।’
৪র্থ তলার কারখানায় তার বড় বোনের মেয়ে শেফালীও কাজ করতেন। তিনি ঘটনার প্রথম দিন বিকালে উদ্ধার হন। রানা প্লাজায় যারা আটকা পড়েন তাদের মধ্যে অসংখ শ্রমিক আছেন যারা একই পরিবারের। মা-মেয়ে-ছেলে, আত্মীয় এ রকম অনেকেই কাজ করছেন কারখানাগুলোতে। বুধবারের ট্র্যাজেডিতে যে কয়েকটি পরিবারের একাধিক ব্যক্তি আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, এখনও তাদের কেউ না কেউ নিখোঁজ রয়েছেন। একজন জীবিত উদ্ধার হলেও অপর জনের লাশ পাওয়া গেছে। আবার কোন কোন পরিবারের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারা সাভারের এনাম হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল, সাভার সিএমএইচ, অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিডফোর্ট হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতালে ভিড় করছেন। জীবিত হোক আর মৃত হোক স্বজনদের সন্ধান চান তারা। এজন্য হন্য হয়ে ঘুরছেন এখান থেকে ওখানে। যেখানেই শুনছেন সাভার ট্রাজেডির শিকার শ্রমিকদের নেয়া হয়েছে। মমতাজের বড় ভাই রহিম বলেন, মৃত হলেও বোনটাকে পেতে চাইছি। তখন মাকে তো বলতে পারবো যে, এই নাও মা, তোমার মেয়েকে জীবিত এনে দিতে পারলাম না, মৃত মমতাজকেই (২০) তুলে দিলাম। মা অন্তত তাতে কিছুটা সান্ত্বনা পেতো।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার রেবেকা (১৮) সিনিয়র অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন ৬ তলার পোশাক কারখানায়। বাম পায়ে পিলার এসে পড়েছিল। ভেঙে একেবারেই ঝুলে যায়। কোমর থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে সেটি। আর ডান হাতেও এসে বিঁধে মেশিনের একটি শিকল। পায়ের উপরেই ছিল একটি লাশ। পাশে ছিল আরও ৩ জনের মৃতদেহ। পা সরানোর কোন উপায় ছিল না। রক্তে ভেজা ছিল সারা শরীর। গায়ে লাশ রেখে বামে কাত হয়েই কাটাতে হয়েছে ৩২ ঘণ্টা। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় যখন উদ্ধার হন তখন প্রায় অচেতন ছিলেন তিনি। কিন্তু এই ট্র্যাজেডির শিকার তার পরিবারের মধ্যে তিনি একাই নয়। মা চান বানু, ফুফু ছায়াতারসহ ৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বাকিদের মধ্যে আপন দাদি, খালা, নানী ও ফুফাতো বোন। তাদের মধ্যে রেবেকা ও তার ফুফু ছায়াতারা উদ্ধার হয়েছেন। বাকিদের কোন সন্ধান এখনও মেলেনি। তাদের কি পরিণতি হয়েছে তা কেউ জানেন না। তবে রেবেকা জানেন, তার মাসহ সবাইকে খুঁজে পাওয়া গেছে। চোখ মেলেই তিনি জানতে চাইছেন, মা কি করে? মা কেমন আছে? তাকে সান্ত্বনা দেয়া হচ্ছে, মা ভাল আছে বলে।
২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:১০
রোকসানা লেইস বলেছেন: এত কষ্ট
৩| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:২৩
সত্য কথা বলি বলেছেন: গত এক সপ্তাহ ধরেই কাঁদছি। এখনও চোখে পানি চলে এল। হে আল্লাহ ! আপনি তাদেরকে ধৈর্য্য ধারণ করার এবং আমাদেরকে এইসব ভাই-বোন, মা-বাবাদের পাশে দাঁড়ানোর তাওফিক দিন !
৪| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:২৪
আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: ভাল্লাগে না কিচ্ছু................
৫| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৫১
সািহদা বলেছেন: শুধু পড়েই যাই মন্তব্য লিখার ভাষা নেই।
৬| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:১৬
বৃষ্টি ভেজা সকাল ১১ বলেছেন: আল্লাহ উনার বোনকে ফিরিয়ে দিক
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:১০
মো ঃ আবু সাঈদ বলেছেন: বলার ভাষা নাইরে ভাই ....
এইটা নিয়তি....
এদের জন্য দোয়া কারি এখন সকাল বিকাল...
নিজের সামথ্য দিয়ে চেষ্টা করব এদের সাহায্য করতে...
আল্লাহ আমাদের রাজনিতিবীদ দের এবং আমাদের হেদায়েত দাও.....