নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বৈকন্ঠ

বৈকন্ঠ › বিস্তারিত পোস্টঃ

যে পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক চেয়েছিল এখন পরিস্থিতি আরও জটিল’

০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৪৭

জাকারিয়া পলাশ: রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনাকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান রেখে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব নয়। নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে তত্ত্বাবধায়ক থেকে বিএনপি বেশ খানিকটা ছাড় দিয়েছে বলে মনে হয়। তারা নির্বাচিতদের নিয়ে গঠিত গণতান্ত্রিক নির্বাচিত সরকারের প্রশ্নে রাজি আছে বলেই মনে হচ্ছে। এখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গ্রহণযোগ্য কাউকে প্রধান হিসেবে মেনে নেয়ার ব্যাপারে ছেড়ে দেয়া উচিত। কিন্তু শেখ হাসিনা ওই সময় প্রধানমন্ত্রী থাকার ব্যাপারে অনড়।



মানবজমিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমাদের মাথায় রাখা দরকার যে, শেখ হাসিনা যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিলেন তার চেয়ে বর্তমান অবস্থা আরও জটিল। এখন প্রশাসনে ব্যাপক দলীয়করণ হয়েছে, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, পেশিশক্তি বেড়ে গেছে। মানুষের স্বাধীন সত্তা হারিয়ে গেছে। এখন সব মানুষ দলীয় রাজনীতির মধ্যে ঢুকে গেছে। তাই দলীয় প্রভাবমুক্ত একটি স্থায়ী প্রতিষ্ঠান অন্তত ১০/১৫ বছরের জন্য প্রয়োজন। এই সময়ের মধ্যে আমাদের গণতন্ত্রের উন্নয়ন হতে পারে এবং তত দিনে দেশের নেতৃত্বেরও পরিবর্তন হবে। আদালতও সেই রকমই পরামর্শ দিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর খামখেয়ালির কারণে আজ এই জাতীয় সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো নির্বাচন হবে বলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গে ড. দিলারা বলেন এটা ভাল কথা। কিন্তু, সেই পরিবেশ আমাদের দেশে হয়নি। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মন্টেস্কুর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, প্রতিটি দেশের রাজনীতির প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে চিন্তা, চেতনা, ভৌগোলিক অবস্থা, ইতিহাস, সংস্কৃতি, ধর্ম- এগুলো বিবেচনায় রেখে। আমাদের দেশের মতো একটা সামন্ততান্ত্রিক (ফিউডাল) এবং বহুমাত্রিক সংস্কৃতিতে একটা দলীয় রাজনীতি মুক্ত প্রতিষ্ঠান অবশ্যই প্রয়োজন। আমাদের দেশে একটা নামকাওয়াস্তে গণতন্ত্র চলছে। এমনকি আমাদের গণতন্ত্রের অবস্থা ভারতের মতোও নয়। এখনও আমরা একে অপরকে গালাগালি করছি। অনাস্থা, অবিশ্বাস নিয়ে রাজনীতি চলছে। এ অবস্থায় এমন একটা স্থায়ী প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন যা অন্তত ২-৩টা নির্বাচন পরিচালনা করবে।

রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের কথা চিন্তা করছে। দেশের কথা চিন্তা করছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, সদিচ্ছা না থাকলে বিদ্যমান রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হবে না। জাতীয় সঙ্কটের সমাধানের পেছনে দুই দলেরই কিছু নীতিতে ঐকমত্য প্রয়োজন। কিন্তু ক্ষমতায় কি করে টিকে থাকবো- দলগুলোর এই চিন্তার কারণে ঐকমত্য হচ্ছে না। অনেকগুলো ফর্মুলাই দেয়া হয়েছে। এর যে কোন একটা ফর্মুলা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

আর কোন কোন জাতীয় বিষয়ে ঐকমত্য প্রয়োজন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশ আজ দুই ভাগ হয়ে পড়েছে কিছু রাজনৈতিক ইসু্যুতে। জাতীয়তা, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা এসব ইস্যুতে বড় দুই দল একটা চার্টার (দলিল) স্বাক্ষর করতে পারে। বৈদেশিক নীতির ব্যাপারে, বিশেষ করে আমাদের প্রভাবশালী প্রতিবেশী ভারতের ক্ষেত্রে আমাদের নীতি কি হবে এ ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য প্রয়োজন। এছাড়া চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বড় বড় দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রশ্নে উইন-উইন অবস্থা নিশ্চিত করতে বড় দুই দলকে একমত হতে হবে। রাষ্ট্রে ধর্ম এবং রাজনীতির অবস্থান কি হবে সে ব্যাপারেও সমঝতা প্রয়োজন।



সংখ্যাধিক্য মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিকেও আমলে নিতে হবে বলে মত দেন ড. দিলারা চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রতিপক্ষকে বিনাস করে দেয়া কোন রাজনীতি হতে পারে না। ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীগুলোকে ম্যানেজ করতে হলে একমাত্র উপায় সুসংহত গণতন্ত্র। যুক্তরাষ্ট্রেও তো ক্লু-ক্ল্যাক্স ক্ল্যানসহ বিভিন্ন বর্ণবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী রয়েছে। তারা তাদের গণ্ডির মধ্যে রয়ে গেছে। গণতন্ত্রের প্রতিযোগিতায় তারা সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। কারণ ইলেকটোরাল কলেজে তাদের কেউ নেই। আমাদের দেশেও জামায়াত, হেফাজতে ইসলাম এবং অন্যান্য সাম্প্রদায়িক দলকে মত প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। জোর করে তাদের বিরুদ্ধে কিছু করলে তারা আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।

সাম্প্রতিক কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যুরোক্র্যাসি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে। শক্তিশালী ব্যুরোক্র্যাসি না থাকলে দেশ চলতে পারে না। সেখানে মেধাবীদের সুযোগ দিতে হবে। নারীরা এখন অনেক এগিয়ে এসেছে। তাই নারীদের জন্য কোটা বেশি দিন রাখতে হবে না। পিছিয়ে পড়া, পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য কিছু কোটা থাকতে পারে। প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা ক্যাডার রাখা উচিত, কোটা নয়। আর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য কোটা রাখা মানে তাদের অসম্মানিত করা। মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় খেতাব, বিশেষ সম্মাননা, তাদের সম্মানে বিশেষ দিবস ঘোষণাসহ তাদের বৈষয়িক সহায়তা দেয়া যেতে পারে। কিন্তু তাদের সন্তানদের কোটা যৌক্তিক নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:১৩

জহির উদদীন বলেছেন: শেখ হাসিনার মনের খায়েস পূরণ হবে না....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.