নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অমি হাসান নামেই আমি পরিচিত

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার, ধর্মান্ধতা ও দলান্ধতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী।

বাংলার হাসান

অমি হাসান নামেই আমি পরিচিত এই নামে অন্য ব্লগার থাকায় হয়ে গেলাম বাংলার হাসান। ইতিহাস হলো একটি জাতির দর্পন। ইতিহাস অসচেতন জাতি কোন দিন প্রকৃত দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধে উজ্জীবিত হতে পারে না।

বাংলার হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিনম্র শ্রদ্ধা বীর মুক্তি যোদ্ধা কমরেড সিরাজ শিকদারের মৃত্যু বার্ষিকিতে

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৪৫





নকশাল পন্থী বিপ্লবী বীর মুক্তি যোদ্ধা কমরেড সিরাজ শিকদার ২৭ অক্টোবর, ১৯৪৪ সালে ভেদেরগঞ্জ,শরিয়তপুর জেলায় জন্ম গ্রহন করেন। ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে ৮ই জানুয়ারি সিরাজ শিকদার সমমনা কয়েকজনকে নিয়ে পূর্ব বাংলা শ্রমিক আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করেন যার লক্ষ্য ছিল বিদ্যমান নপুংষ কমিউনিস্ট পার্টির বাহীরে একটি সত্যিকারের বৈপ্লবিক দল তৈরী করা। তাঁদের মূল প্রত্যয় ছিল: পূর্ব বাংলা পাকিস্তানের একটি উপনিবেশ এবং ‘জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের’ মাধ্যমে এ ঔপনিবেশিকের অবসান ঘটান। এ লক্ষ্যে সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বে একটি বিপ্লবী পরিষদ গঠিত হয়। মওদুদীর জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ তাদের পেছনে প্রথম থেকেই লেগে ছিল। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে সিরাজ সিকদারের বিপ্লবী পরিষদ বিভিন্ন জেলায় পাকিস্তানী প্রশাসন ও শ্রেণী শত্রুর বিরুদ্ধে গেরিলা অপারেশন চালায়। ঐ বছরের ৮ জানুয়ারি তারা ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ জেলা ও ময়মনসিংহে ওড়ায় স্বাধীন পূর্ব বাংলার পতাকা। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ২ মার্চ এই বিপ্লবী পরিষদ শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লেখে, যা লিফলেট আকারে সারাদেশে প্রচার করা হয়। এর চার নাম্বার দফাটি ছিল পূর্ব বাংলার দেশ প্রেমিক রাজনৈতিক পার্টি ও ব্যক্তিদের প্রতিনিধি সমন্বয়ে ‘জাতীয় মুক্তিপরিষদ’ বা ‘জাতীয় মুক্তিফ্রন্ট’ গঠন করেন।





১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিশাল জয়ের মধ্য দিয়ে জাতীয় মুক্তির লড়াইয়ে পূর্ব বাংলার মধ্যবিত্ত ও বুর্জোয়াদের ক্ষুদ্র সংগঠন আওয়ামী লীগ মূল নেতৃত্বে চলে আসে। তবে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করতে থাকে। এ সময় আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ মুজিবের সঙ্গে আলোচনার ডাক দেয় পাকিস্তানি জান্তা সরকার। তবে সিরাজ সিকদার ও তাঁর সংগঠন পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলন স্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান নেয় পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শোষণের বিরুদ্ধে। এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে সিরাজ সিকদার শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে একটি খোলা চিঠি লেখেন। ১ মার্চ ১৯৭১ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান যখন সংসদ অধিবেশন স্থগিত করার ঘোষণা দেন, উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা বাংলা। পরদিন ২ মার্চ পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলন শেখ মুজিবকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শুরু করার আহ্বান জানায়। একই সময় সংগঠনটি সর্বস্তরের দেশপ্রেমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি অস্থায়ী বিপ্লবী জোট সরকার গঠন এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ পরিষদ গঠনের অনুরোধ জানায়। তবে মুজিব তখন ব্যস্ত আলাপ-আলোচনায় সমাধান খুঁজতে।

সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বাধীন সর্বহারা পার্টি প্রথম দিকে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীকে আশ্রয় দেয়। এ সময় সর্বহারা পার্টি কর্মসূচি হাতে নেয়, দেশপ্রেমিক মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলার ব্যাপারে। এ অবস্থা ১৯৭১ সালের আগস্ট পর্যন্ত সর্বহারা পার্টি ধরে রাখে। আগস্টের শুরুতে সর্বহারা পার্টির অন্যতম কেন্দ্রীয় সদস্য এবং বর্তমান বাংলাদেশের পতাকার নকশাকার সাইফুল্লাহ আজমীসহ পাঁচজন যোদ্ধাকে সাভারে পাঠানো হয় মুজিববাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশ্যে। মুজিববাহিনী তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে। বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদী দলের বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিক শ্রেণীর নেতৃত্বাধীন সর্বহারা পার্টির সব ঐক্য ভেস্তে যায়। তবে এরও আগে ভারতে খুব গোপনে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা 'র' (রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং)-এর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে মুজিববাহিনী। মূলত এই বাহিনী গড়েই তোলা হয় যুদ্ধ থেকে কমিউনিস্টদের হটিয়ে দেওয়ার জন্য। ১৯৭১ সালের আগস্ট পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে থেকে লড়াই-সংগ্রাম করেছে মূলত এ দেশের বিভিন্ন কমিউনিস্ট পার্টি ও গ্রুপ, যার মধ্যে সর্বহারা পার্টি অন্যতম।

১৯৭১ -এ ভারতীয় সেনাবাহিনীর সরাসরি হস্তক্ষেপে দ্রুত বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। ভারতীয় বাহিনীর এই তৎপরতাকে সাদা চোখে দেখেনি সর্বহারা পার্টি। পার্টি মনে করে, পাকিস্তানের উপনিবেশ থেকে দেশ এবার ভারতীয় উপনিবেশের মধ্যে গিয়ে পড়েছে। এ সময় নতুন বাংলাদেশে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলার প্রশ্নে সর্বহারা পার্টি বাংলাদেশের সরকারের প্রতি একটি খোলা চিঠি লেখে। ওই চিঠিতে বলা হয়, ভারতীয় সৈন্যদের অনতিবিলম্বে সরিয়ে নেওয়া, যুদ্ধের সৈনিকদের দিয়ে নৌ, আকাশ ও স্থলবাহিনী তৈরি করা, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা এবং তাদের বিচার নিশ্চিত করা, সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃত্বে জাতীয় বিপ্লবী সরকার গঠনসহ ২৭টি দাবি পেশ করা হয়। তবে মুজিব সরকার সর্বহারা পার্টির সেসব দাবির একটিতেও কর্ণপাত করেনি। যদি সে সময় আওয়ামী লীগ বিচক্ষণতার পরিচয় দিত, তাহলে আজ অবধি যুদ্ধাপরাধের বিচার ঝুলিয়ে রাখতে হতো না।



১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারি চট্টগ্রামের হালিশহরে সরকারী গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন তাঁকে গ্রেপ্তার করেন। ওই দিনই তাঁকে বিমানে ঢাকায় আনা হয়। পরদিন শেরেবাংলা নগর থেকে সাভারে রক্ষীবাহিনীর ক্যাম্পে যাওয়ার পথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে হত্যা করে।





তথ্যসূত্রঃ উইকিপিড়িয়া ও জীবিত বিএলএফ এবং এফএফ এর সেই সকল মুক্তিযোদ্ধা গন। যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের তিক্ত অধ্যায়গুলোর সাক্ষী।



বিঃদ্রঃ নিরাপত্তার কারনে সে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের নাম প্রকাশ করা হলো না।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:০৯

াগলা শান্তু বলেছেন: "১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিশাল জয়ের মধ্য দিয়ে জাতীয় মুক্তির লড়াইয়ে পূর্ব বাংলার মধ্যবিত্ত ও বুর্জোয়াদের ক্ষুদ্র সংগঠন আওয়ামী লীগ মূল নেতৃত্বে চলে আসে।" - "ক্ষুদ্র সংগঠন " বলতে লেখক কি বুঝিয়েছেন, বুঝলাম না ।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৫৯

বাংলার হাসান বলেছেন: পার্টির ভিতরেও পার্টি থাকে। সরকারের ভিতরে সরকার থাকে। আশা করি এবার বুঝতে সক্ষম হবেন।

এই কথার সারমর্ম যদি বুঝতে না পারেন তবে চেষ্টা করুন বুঝতে।

ধন্যবাদ।

২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৩০

ঢাকাবাসী বলেছেন: সিরাজ শিকদারের দেশপ্রেমের কমতি ছিলনা তবে রাজনৈতিক পন্হা ভুল ছিল।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:০০

বাংলার হাসান বলেছেন: সিরাজ শিকদারের রাজনৈতিক পন্থা সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন?

৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৮

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ওনার আত্নার শান্তি কামনা করি :)

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:০০

বাংলার হাসান বলেছেন: ওনার আত্নার শান্তি কামনা করি

৪| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৪২

ম্রিয়মাণ বলেছেন: স্বাধীন বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড কি তাকে হত্যার মাধ্যমেই শুরু হয়েছিল?

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:০২

বাংলার হাসান বলেছেন: না।

স্বাধীন বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড শুরু হয়েছিল ১৯৭০ সালে স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশের প্রস্তাবক মুক্তিযোদ্ধা "স্বপন কুমার চৌধূরী কে দিয়ে।

স্বাধীন বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত প্রথম হত্যাকান্ড হয় ১৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে।

স্বপন কুমার চৌধূরীর হত্যাকান্ড নিয়েও একটা লেখা আছে আমার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.