নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অমি হাসান নামেই আমি পরিচিত

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার, ধর্মান্ধতা ও দলান্ধতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী।

বাংলার হাসান

অমি হাসান নামেই আমি পরিচিত এই নামে অন্য ব্লগার থাকায় হয়ে গেলাম বাংলার হাসান। ইতিহাস হলো একটি জাতির দর্পন। ইতিহাস অসচেতন জাতি কোন দিন প্রকৃত দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধে উজ্জীবিত হতে পারে না।

বাংলার হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বাধীনতা বলতো, কে বেশি অসহায়, তুই নাকি আমি?

১৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:০৭



স্বাধীনতা! কেমন আছিস রে তুই? সেই ১৯৭১'র ১৬ ডিসেম্বর থেকে আঙ্গুলের কর গুনে দেখি তোর বয়স ৪৩ বছর চলছে। ৩ বছরের একটি শিশু যেখানে দৌড়ে বেড়ায় সেখানে তুই যৌবন শেষ করে মধ্য বয়সে এসেও সোজা হয়ে দাঁড়াতে শিখলি না!



ও ভাল কথা তোকে তো বলতে ভুলে গেছি, কদিন আগে হালকা হালকা বৃষ্টিতে সংসদের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। ওহ, ভুল হয়েছে। সংসদের সামনে না, সংসদের সাথে যে খেজুর বাগান আছে তার ফুটপাত দিয়ে যাচ্ছিলাম। রাস্তাটা চিনতে পেরেছিস? দাঁড়া আরেকটু ক্লিয়ার করে দেই। দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সব এম,পি মন্ত্রী যে রাস্তা দিয়ে সংসদে যায় সেই রাস্তার কথা বলছি।

এবার শোন ঘটনাটা কি হয়েছিলো।



ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি এমন সময় একটা ছোট্ট শিশু, বয়স কত হবে? আনুমানিক ৬/৭ হবে। হাতে বেশ কিছু কদম ফুল নিয়ে ট্রাফিক জ্যামে দাঁড়িয়ে থাকা দামী দামী গাড়ির বন্ধ গ্লাসের সামনে দাঁড়িয়ে মিনতি করছে একটা কদম ফুল কিনতে। বেশ কয়েকটা গাড়ির সাদা গ্লাসের ভিতর থেকে কয়েকজনকে দেখলাম মাছি তাড়ানোর মত করে শিশুটিকে তাড়িয়ে দিচ্ছে। সিগনাল ছেড়ে দিতেই গাড়িগুলো সাঁই সাঁই করে চলে যেতে লাগলো। এদিকে বৃষ্টিও হালকা থেকে একটু জোরে শুরু হলো। হাঁটা বন্ধ করে সেখানে একটি বড় গাছের নিচে থেমে গেলাম। বৃষ্টির বেগ বেড়ে যাওয়ায় শিশুটিও এসে গাছের নিচে দাঁড়ালো।



তুই তো জানিস, আমরা হলাম সিজোনাল মানবতাবাদী। এই যেমন রবির ঈদের লাল পাঞ্জাবীর এ্যাডের কথাই ধর। মানবতার ধোঁয়া তুলে কোম্পানীটি ভাল একটা ব্যবসা করে নিচ্ছে। সেই এ্যাডে এক শিল্পীকে দেখলাম, যে তার ড্রাইভারকে ঈদের দিনেও সকাল থেকে রাত ২টা পর্যন্ত আটকে রাখে। থাক বাদ দে... যেটা বলতেছিলাম সেই ঘটনাটা বলি।



তো শিশুটি এসে যখন গাছের নিচে দাঁড়ালো, তাকে বললাম কি নাম তোমার? মাথা নিচু করে বলল বাদশা। জীবনে অনেক সম্রাটের নাম শুনেছি, এই ধর সম্রাট আকবর, বাদশা শাহজাহান আরো কত কত বাদশা। ইতিহাসের বাদশা আর চোখের সামনে বৃষ্টি ভিজে কদম ফুল বিক্রি করা শিশু বাদশার মাঝে যোজন যোজন দূরত্ব। তারপর শিশু বাদশাকে বললাম কদম ফুল কত করে বিক্রি করো? কয়টা ফুল বিক্রি হইছে? বাদশা বলল ১০টাকা করে। ২টা ফুল বিক্রি হইছে। একবার ভাবলাম জিজ্ঞাস করি এই বয়সে লেখা-পড়া না করে এই বৃষ্টির ভিতর কদম ফুল বিক্রি করে কেন? পরে মনে হলো কি লাভ জিজ্ঞাস করে, কোন বাবা-মা কি চায় তার নিষ্পাপ শিশু বৃষ্টিতে ভিজে কদম ফুল বিক্রি করুক।



তারপর বাদশাকে জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা বাদশা তুমি ফুল বিক্রি করে টাকা দিয়ে কি করবে? বাদশা বলল ফুল বিক্রি করে টাকা দিয়ে পেট ভরে ভাত খাবো। বাদশার মাথায় হাত রেখে বললাম আজ তো তোমার ফুল বিক্রি হয়নি চলো আমি তোমাকে ভাত খাওয়াবো।



কথাটা বলার সাথে সাথে শিশু বাদশা মাথা তুলে উত্তর দিলো "ভাই ফুল বেচেত পারলে হেই টেকা দিয়া ভাত খাই খয়রাত খাই না" এই বলে সোজা হেঁটে চলে গেলো।



তখন আশে-পাশে তোকে খুঁজছিলাম। তোকে কোথাও পেলাম না। তোকে পেলে প্রশ্ন করতাম আচ্ছা স্বাধীনতা বলতো, শিশু বাদশার সামনে কে বেশি অসহায়, তুই নাকি আমি?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.