নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অমি হাসান নামেই আমি পরিচিত

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার, ধর্মান্ধতা ও দলান্ধতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী।

বাংলার হাসান

অমি হাসান নামেই আমি পরিচিত এই নামে অন্য ব্লগার থাকায় হয়ে গেলাম বাংলার হাসান। ইতিহাস হলো একটি জাতির দর্পন। ইতিহাস অসচেতন জাতি কোন দিন প্রকৃত দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধে উজ্জীবিত হতে পারে না।

বাংলার হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

জনাব আব্দুল গাফফার চৌধুরীকে খোলা চিঠি।

২৮ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৩৯



চিঠির শুরুতে কিছু ভূমিকা থাকে। যেহেতু এটা খোলা চিঠি তাই এর ভূমিকাও একটু ভিন্ন। চিঠি পত্র লেখার যুগ গত হয়েছে বেশ অনেক বছর আগে, ব্যক্তি জীবনে চিঠি লেখার অভিজ্ঞতাটাও খুব সামান্য। জনাব চৌধুরীকে চিনি তার লেখা বিভিন্ন কলাম পড়ে। তার সম্পর্কে জানার পরিধিও সীমিত, যদ্দুর জানি তিনি বিলেতে বসবাসকারী একজন আওয়ামী কলামিষ্ট। অবশ্য আমাদের দেশের বেশি অংশ কলাম লেখকগন কোন না কোন দলের অনুসারী।



জনাব চৌধুরী আপনি গত ১৩ই আগস্ট দৈনিক জনকণ্ঠের চতুরঙ্গে প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু আর কত শহীদ হবেন?’ শীর্ষক লেখাটিতে ‘নিউক্লিয়াস’ নিয়েও নিম্নরুপ মন্তব্য করেছেন:

“…হালে শুরু হয়েছে তাঁকে (বঙ্গবন্ধু) বিতর্কিত ও তাঁর ভূমিকাকে খাটো করার জন্য কিছু ‘বামন দেবতার’ আবির্ভাব। ... এখন স্বাধীনতার পতাকা সর্বপ্রথম উত্তোলনের একজন দাবিদার খাড়া করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণও নাকি তখনকার ছাত্রনেতাদের দ্বারা গঠিত একটি নিউক্লিয়াস মুসাবিদা করেছিল এবং ভাষণটি দেয়ার সময় বঙ্গবন্ধু যাতে ভুল না করেন, সে জন্য এই নিউক্লিয়াসের এক সদস্য বঙ্গবন্ধুর পাঞ্জাবির খুট ধরে টেনেছিলেন বলেও হাস্যকর প্রলাপোক্তিযুক্ত প্রচারপত্র হালে দেশে-বিদেশে প্রচার করা হচ্ছে। এদের মস্তিষ্ক পরীক্ষা করা প্রয়োজন এবং দরকার হলে সরকারী খরচে চিকিৎসার জন্য এদের হেমায়েতপুরে পাঠানো উচিত।”



১. স্বাধীনতার পতাকা সর্বপ্রথম প্রকাশ্যে কে কোথায় কখন উত্তোলন করেছেন, তা আপনি না জানার ভান করলেও তার সাক্ষী আছেন লক্ষ জনতা। নতুন করে এর ‘দাবিদার খাড়া’ করার মতো আর কি কিছু বাকি আছে জনাব চৌধুরী?



২. ৭ মার্চের ভাষণ সম্পর্কে আপনার মন্তব্যে মাধ্যমে আপনি নিজের অজ্ঞতা প্রকাশ করে দিয়েছেন। “সবার পক্ষে সব কিছু জানা যেমন সম্ভব নয়, তেমনি না জানাটা দোষের কিছু নয়” তবে কোন বিষয়ে সঠিক জ্ঞান না থাকলে সে বিষয়ে মন্তব্যকারী আর যাই হোক জ্ঞানী নিশ্চয় বলা হয় না। ৭ মার্চের ভাষণ সম্পর্কে আপনার অজ্ঞতার প্রেক্ষিতে জানানো উচিত যে ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণের অজানা ইতিহাস’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রচারপত্রটি প্রকাশ করেছে, “সিরাজুল আলম খান পাঠচক্র” নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ব্যক্তি সিরাজুল আলম খান নন এবং এটি যে তিনি নিজে লিখেছেন তারও কোন প্রমাণ নেই। অথচ আপনি তাকে ‘ইতিহাসবিদের পোষাক’ পরিয়েছেন। এতে মনে হয়, আপনি প্রচারপত্রটি না দেখে বা না পড়ে স্রেফ বিদ্বেষ প্রসূত বা অন্য কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে ‘উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপিয়েছেন।



জনাব চৌধুরী,

প্রচারপত্র অনুসারে, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের অজানা অধ্যায়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ‘নিউক্লিয়াস’-এর সিরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক মণি, আবদুর রাজ্জাক, কাজী আরেফ আহমেদ, তোফায়েল আহমেদ, আসম আবদুর রব এবং আওয়ামী লীগ ‘হাই কম্যান্ড’-এর সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, খন্দকার মোস্তাক আহমেদ ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলী প্রমুখ। এঁদের প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বেই যে ’৭১ সালে যুদ্ধের মাধ্যমে দেশটা স্বাধীন হয়েছে তা আপনার চেয়ে কে বেশী জানে! প্রশ্ন জাগে, আপনি কার স্বার্থ হাসিল করার জন্য এঁদেরকে ‘বামন দেবতা’বলে খাটো/অপমান করার চেষ্টা করলেন?

বঙ্গবন্ধুকে বিতর্কিত ও তাঁর ভূমিকাকে খাটো করার জন্য উদ্দেশ্য নিয়ে যদি প্রচারপত্রটি তৈরী ও বিতরন করা হতো তাহলে প্রচারপত্রে যাদের নাম উল্লখ আছে তাদের মাঝে জনাব তোফায়েল আহমেদ শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতিবীদ ও মন্ত্রী অনেক আগেই এর উত্তর দিতেন। নিশ্চয় আপনার অজানা থাকার কথা নয় যে, বেশ কিছুদিন আগে “বুয়েটের” একজন শিক্ষক কারো নাম উল্লেখ না করে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে) “হায়না” লিখার দায়ে জেলে গেছেন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে সংবাদ প্রচারের দায়ে সংবাদ কর্মীকে জেল/জরিমানা করা হয়, সেখানে আপনার ভাষ্য অনুসারে বঙ্গবন্ধুকে বিতর্কিত ও তাঁর ভূমিকাকে খাটো করার জন্য উদ্দেশ্য নিয়ে প্রচারপত্র প্রকাশ কতটা গুরুতর অপরাধের খাতায় পড়ে তা হিসেব করেছেন কি জনাব চৌধুরী?



জনাব চৌধুরী,

আপনার ভাষায় ভাষণটি ‘ছাত্রনেতাদের দ্বারা গঠিত একটি নিউক্লিয়াস মুসাবিদা করেছিল এবং ভাষণটি দেয়ার সময় বঙ্গবন্ধু যাতে ভুল না করেন, সে জন্য এই নিউক্লিয়াসের এক সদস্য বঙ্গবন্ধুর পাঞ্জাবির খুট ধরে টেনেছিলেন’, আপনার এ বাক্যাংশটি যে সত্য নয় তার প্রমাণ প্রচারপত্রেই রয়েছে। প্রচারপত্রে বলা হয়েছে, “মধ্যরাতের এই আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে বললেন, ... তাঁকে যেন কোনো না কোনোভাবে মঞ্চ থেকেই মনে করে দেয়া হয়। তাঁর সেই কথার প্রসঙ্গে ধরে আ স ম আবদুর রবকে বঙ্গবন্ধুর জামা বা পাজামায় একটু টান দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।”পাঞ্জাবির খুট ধরে টানা হয়নি।

আর বঙ্গবন্ধুর পরামর্শে নেয়া এই সিদ্ধান্তে আপনার ভাষায় বঙ্গবন্ধুকে ‘বিতর্কিত ও তাঁর ভূমিকাকে খাটো’ কি ভাবে করা হলো? এতেও কি বোঝা যায় না যে প্রচারপত্রটি আপনি পড়েন নি ? আপনার কলাম পাঠক হিসেবে যদি প্রশ্ন করি প্রচারপত্রটি আপনি পড়ে থাকলেও নিজের অজ্ঞতা বশত বঙ্গবন্ধুর উপস্থিত বুদ্ধিকে খাটো করার উদ্দেশ্য নিয়ে আপনি এই কলাম লিখেছেন। কি জবাব দিবেন জনাব চৌধুরী?



জনাব চৌধুরী,

“সিরাজুল আলম খান পাঠচক্রের বেশ কিছু প্রচারপত্র পড়ে দেখলাম। সেখানে স্বাধীনতার ইশতেহার, বাংলাদেশের পতাকার ডিজাইন, জাতীয় সঙ্গীত নির্ধারন সহ একটি দেশ স্বাধীন করার জন্য যে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রয়োজন তার সব কিছুই গোপন সংগঠন “নিউক্লিয়াস” বঙ্গবন্ধুর সমর্থনে তৈরী করে। সেই সকল বিষয় নিয়ে আপনার কলামে কোন মন্তব্য খুঁজে পেলাম না দেখে হতাশ হলাম। আপনার ভাষায় ‘বামন দেবতার’ আবির্ভাব ও তাদের সরকারী খরচে চিকিৎসার যে উপদেশ আপনি দিয়েছেন তা দেয়ার আপনি কে? বিলেতে বসে আপনি পত্রিকায় কলাম লিখে যে সন্মানীটা নেন তা দেশের অর্থের অপচয় ছাড়া আর কি কাজে আসে বলবেন কি?



প্রচারপত্রটি পড়ে যা বুঝেছি, ‘নিউক্লিয়াস’ তাদের সে সময়কার গোপনে নেয়া কৌশলাদি প্রকাশের চেষ্টা করেছে মাত্র। যা আপনি বা আপনার মতো কারো জানার কথা নয়। যাহোক, ‘নিউক্লিয়াস’-এর অস্তিত্ব এবং এর কর্মকান্ডের সত্যতা প্রমাণ ও মূল্যায়ন করার দায়িত্ব ইতিহাসের ছাত্রদের। আপনি নিশ্চয়ই সে রকম কেউ নন।

বিণীত,

জহিরুল ইসলাম অমি হাসান,

ব্লগার ও সংবাদ কর্মী।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৮

মুদ্‌দাকির বলেছেন:
আরে ভাই, উনার লেখা পড়লে মনে হয়, বঙ্গবন্ধু শুধু উনার সাথেই পরামর্শ করতেন !!!

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৩

বাংলার হাসান বলেছেন: কথাটা মন্দ বলেন নাই।

স্বাধীনতা যুদ্ধে যাদের মূল অবধান সেটাকে খাটো করার জন্য আগাচৌদের মত কিছু লোককে ভাড়া করে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে একটি গোষ্ঠী অবিরাম।

২| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:১৭

জামান শেখ বলেছেন: আব্দুল গাফফার চৌধুরী (সংক্ষেপে আগা চৌ) আসলে উনি কতটুকু জানেন তা নিজেই জানেন না।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৬

বাংলার হাসান বলেছেন: তিনি যথেষ্ট জানেন, তবে তার সেই জানাটা একটি গোষ্ঠীর পক্ষ কেন্দ্রীক।

৩| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:০৪

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:



আজকাল খুব কম মানুষ পাওয়া যায় দেশের উন্নতির জন্য লেখালিখি করতে। ইতিহাস কপচাইতে পারলেই দেশ উদ্ধার হয় এমন একটা ভাব। তাও যদি কেউ সঠিক ভাবে ইতিহাস কপচাইতে পারত তাইলেই শান্তি পাইতাম। সেইখানেও জাতীয় নেতাদের নিয়ে ক্যাচাল।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩৬

বাংলার হাসান বলেছেন: সহমত কান্ডারী ভাই।

তারপর কেমন আছেন? অনেক দিন কথা হয় না। দিন বিশেক আগে অনেক বার কল করেছি আপনাকে, কিন্তু আমার কপাল খারাপ। প্রতিবারই ফোন বন্ধ ছিলো।

নাম্বার কি চেঞ্জ করছেন?

৪| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:২৪

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন: মুদ্‌দাকি-এর অভিমতে আমার সহমত।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৫৪

বাংলার হাসান বলেছেন: মুদ্‌দাকি-এর অভিমতের প্রতি উত্তরটিও আপনার জন্য।

৫| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ইতিহাস বিকৃত হতে হতে পাতিহাঁসে পরিণত হয়। আমাদের দেশ ও জাতির ভাগ্যটা এমনই।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৫৫

বাংলার হাসান বলেছেন: দ্বিমত করার মত শক্ত যুক্তি এ মূহুত্তে খুঁজে পাচ্ছি না। তাই সহমত রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.