![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বৃষ্টিতে ভিজে পরনের পুরানা, সাদা হাফ হাতা ছেঁড়া শার্ট লেপ্টে চামড়া ভাসতে বাধ্য হয়ে গিয়েছিল রিকশা চালক রফিকের। তার ভাষ্য- ‘বৃষ্টির কাম বৃষ্টি করে, আমার কাম আমি করি’।
শুক্রবার সকালে রফিকের সঙ্গে দেখা হয় রাজধানীর পান্থপথে। তখন অঝোরে বৃষ্টি চলছিল। রফিকের আশপাশে অসংখ্য রিকশা চালকও ছিল একই বেশে। কিন্ত প্রকৃতির বাধা উপেক্ষা করে র’টির’জির সম্বল নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন খোলা আকাশের নিচে।
রফিকের হাতের লোমগুলোও চামড়ার সঙ্গে এককার না হয়ে পারেনি। কুঁকড়ে গিয়েছিল হাতের আঙুলের ডগা। কিছুক্ষণ পরপরই কেঁপে উঠছিলেন ঠাণ্ডায়। মাথায় থাকা গামছা, পরনের লুঙিও স্বাভাবিক ওজন হারিয়ে ফেলেছিল। তারপরও অঝোর বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকা রফিক মিয়ার চোখ খুঁজে বেড়াচ্ছিল যাত্রী।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রখর রোদে যারা ঘেমে ভিজে সেই তারাই বৃষ্টিতেও ভিজে একাকার। বৃষ্টি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে বেশিরভাগেরই ছিল না কিছুই। তারপরও পেট বাঁচাতে তাদের পা চলেছে অবিরাম।
প্রশ্নের জবাবে কাঁপতে কাঁপতে রফিক বলছিলেন, ‘ছাতা ব্যবহার করা তো সম্ভবই না। রেইন কোটের দামটা বেশি লাগে। হারাদিন আর কয়টেকা কামাই। নিজে খাইয়া-পইরা টেকা বাড়িতও পাঠানি লাগে। কয়টা টেকা বাচাইতে পারলে আমার ঘরের লাই¹াই ভালা। নাইলে বৃষ্টিতে একটু ভিজলামই, বেশিক্ষণ তো থাকব না। কী আর হইব ভিজলে?’ বেশ আশা নিয়ে তিনি বলেন, সামনে ঈদ। ঢাকায়ই থাকুম। এহনই পয়সা কামানির আসল সময়। বউ-বাচ্চার জন্য তো কিছু পাঠাইতে হইব।
বীর উত্তম সিআর দত্ত রোডে কথা হচ্ছিল পঞ্চশোর্ধ আকবর আলীর সঙ্গে। মাথাসহ যার অর্ধাঙ্গ জড়িয়ে ছিল বৃহদাকারের প্লাস্টিকের পর্দায়। দীর্ঘসময়ের যানজটে আটকে পড়া আকবর আলী বলছিলেন, পুরান কোট (রেইন কোর্ট) কিনতাম গেছিলাম। দাম বেশি চায়, ৩০০টেকা। আমার একদিনের ইনকাম থেইক্কা এইটা কিনন সম্ভব না। পরে এই প্লাস্টিক দিয়াই নিজেরে ঘুইরা লাইলাম।
পান্থপথেই বৃষ্টিভেজা রমিজ মিয়ার সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তিনি বলছিলেন, ‘অনেকক্ষণ বইসা আছিলাম। দেকতাছিলাম বৃষ্টি কমেনি। যহন দেকলাম কমে না, তহন বাইর হইয়া গেছি। বইয়া থাকনডা লস্। পেট কী আর বৃষ্টি বুঝে? হাসি মুখে বলে উঠলেন, আসলে আমাগো কপালই এরম। দিনে রোইদে পুইরা ঘামে ভিজি, আর বৃষ্টি হইলে পানিতে ভিজি।’
লিংক : Click This Link
©somewhere in net ltd.