নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সোজা কথা

আমির হোসেন রিকু

আমির হোসেন রিকু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বোম্বাই মিঠাইর সঙ্গে সামাদ মিয়ার ২২ বছরের সংসার

১৫ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:২৮



আমাদের সময়.কম : ১৫/০৭/২০১৬

নিজ আর্থিক ভাগ্যের প্রভূত উন্নয়ন ঘটাতে না পারলেও গ্রামে কৃষি কাজ করার পাশাপাশি ঢাকায় এসে বোম্বাই মিঠাই বিক্রি করে সামাদ মিয়া কাটিয়ে দিয়েছেন দীর্ঘ ২২ বছর।

৫২ বছর বয়ষ্ক সামাদ মিয়ার দেখা পাওয়া যায়, গত মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর পশ্চিম পান্থপথে। তিনি হেঁটে যাচ্ছিলেন পূর্ব রাজাবাজারের দিকে। কাঁধে ভ‚মি থেকে ঊর্ধ্বমূখী দাঁড় করানো ছিল একটি পাকা বাঁশ। এর ডগায় গোল করে লাগানো সেই বোম্বাই মিঠাই ছিল প্লাস্টিক দিয়ে মোড়ানো। ডগার একটু নিচে খুঁড়ল করা ছিল, যেখানে রাখা ছিল বাঁশের চিকন কাঠি। এ কাঠিতেই গেঁথে দেয়া হয় বোম্বাই মিঠাই দিয়ে হাত দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বানানো মাছ, ফুল, পাখি, হাত ঘড়ি ইত্যাদি।

সামাদ মিয়াকে দেখে ৩২ বছরের তরুণ বুলবুল ও তার বন্ধু শাখাওয়াত দাঁড় করান। বাল্য বয়সের স্মৃতিচারণ করে বুলবুল বলছিলেন, আহ্, আমাদের স্কুলের গেটে একটা লোক এসব বেচতো। কত্ত যে খাইছি. . . । আজ কত বছর পর দেখলাম। দেন, একটা পাখি বানিয়ে দেন। শাখাওয়াতও বুলবুলের কথার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বলতে থাকেন, ঠিকই বলেছো বন্ধু, আমি ছোট সময় কাঁচের বোতল জমিয়ে এসব নিতাম।

সামাদ মিয়া তাদের বলতে থাকেন, হ, আগে এইসব অনেক বেচছি, একদিনে এক হাজার টাকা বেচা কোনো ব্যাপারই আছিল না। এহন কী আর হেই দিন আছে। কত দামি দামি চকলেট বাইর হইছে, আমাগো এইসবের বেইল (পাত্তা) নাই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা সামাদ মিয়া এ প্রতিবেদকের প্রশ্নে জানান, তাদের অঞ্চল ভাটি। সেখানে বোরো মৌসুমেই ধানের আবাদ হয়। আর সারাবছর পানিতে প্লাবিত থাকে। বোরো মৌসুমে তিনি দলীয়ভাবে মাঠে মাঠে কাজ করেন চুক্তিতে। এরপর নিজের বানানো বোম্বাই মিঠাই নিয়ে বাড়তি আয়ের আশায় চলে আসেন ঢাকায়।

তিনি বলেন, বাড়িতে বসে থাকা লস্। সময়টাকে কাজে লাগাতেই এ কাজ করছি ২২ বছর ধরে। যা আসে, তা-ই লাভ। প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। সব খরচ করে দিনে ২০০ টাকা হাতে রাখা যায়।

সামাদ মিয়া পাখির জন্য ১০টাকা, হাতঘড়ির জন্য ৫ টাকা, ফুলের জন্য ১০টাকা, পাখার জন্য ৫ টাকা নেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় পূর্ব রাজাবাজারের কিছু শিশু ভীড় জমায় তার কাছে। বিভিন্ন কিছু বানিয়ে তাদের হাতে দিয়ে সামাদ বলছিলেন, বুচ্ছেন, এই গরিবের পোলাপানই আমার ১ নম্বর কাস্টমার। ওরাই আমারে বাচাইয়া রাখছে।

পরের জমিতে চুক্তিতে কাজ আর এই কাজ ছাড়া আমার ইনকামের আর কোনো রাস্তা নেই সামাদ মিয়ার। এর মাধ্যমেই জীবন-যাপন করতে হয় সামাদ মিয়ার, তার স্ত্রী জরিনার, মেয়ে রোজিনার (১৯) ও ছেলে সজীবের (১৮)। রোজিনা গোপালপুরের একটি বিদ্যালয়ে দশম ও সজীব নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত বলে জানান সামাদ মিয়া।

বোম্বাই মিঠাইর সঙ্গে সামাদ মিয়ার ২২ বছরের সংসার

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আগের দিনের অনেক কিছুই হারিয়ে যাচ্ছে।

ধন্যবাদ ভাই আমির হোসেন রিকু।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.