নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সোজা কথা

আমির হোসেন রিকু

আমির হোসেন রিকু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভোজন উৎসব কুলখানির মৃত্যু কামনা করলাম

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩২


ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কুলখানির কোনো ভিত্তি নেই। পাক-ভারত উপমহাদেশে এটি সামাজিক রীতি মাত্র। ব্যক্তি মৃত্যুবরণের পর তার আত্মার মাগফেরাত কামনার উদ্দেশ নিয়ে এটা করা হয়ে থাকে। এটা সবারই জানা।
কিন্তু কুলখানিই কী একমাত্র পথ, যা আদায় করলে মৃতের আত্মা শান্তি পাবে? মৃতের উত্তরাধিকার রাখঢাক করে কুলখানি নামক ভোজন উৎসব করলেন, আর সারাবছর ধর্মীয় হুকুম-আহকাম থেকে দূরে থাকলেন, মানব কল্যাণের বদলে মানব শোষণে যুক্ত হলেন- তখন কী ওই ভোজন উৎসব মৃতের আত্মাকে শান্ত করবে?
খাওয়া-খাদ্যের অনুষ্ঠানে একটু-আধটু বিশৃঙ্খলা হওয়াটাই স্বাভাবিক। সেটা বিয়ের অনুষ্ঠানেই হোক বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানেই হোক ইত্যাদি। কিছু অনুষ্ঠানের উপলক্ষ্য যা থাকে, তা থেকে প্রাধান্য পায় ভোজন পর্ব। কে কতো খেতে পারে নামক প্রতিযোগিতা। বিভিন্ন জনের মুখ থেকে শুনি- এটা করে নাকি রসিকতা করা হয়। কিন্তু কেন? খাদ্যের মতন পবিত্র, মহামূল্যবান বস্তু নিয়ে রসিকতা কেন? কেউ ডাস্টবিন থেকে উচ্ছিষ্ট অংশ দিয়ে উদরপূর্তি করে আর খাদ্য গ্রহণ নামক অঘোষিত প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হোন- এটা কোন ধরণের রসিকতা?
বাঙালি নাকি ভোজন রসিক ! তাই যে কোনো অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তুর চেয়ে খাদ্য গ্রহণ পর্ব ফার্স্ট প্রায়োরিটি পায়। আয়োজকরাও খাদ্য আয়োজনের দিকে যথেষ্ট মনোযোগি হন, যাতে ইজ্জতটা বাঁচে। ঠিকমতন তেল-লবণ দেয়া, মাংস সেদ্ধ হলো কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি। দরিদ্র-মধ্যবিত্ত পরিবারকেও দেখেছি- মৃতের আত্মার মাগফেরাত কামনায় ধারদেনা করে হলেও কুলখানিতে ভুরিভোজের আয়োজন করতে। শেষে সেই ধারদেনার টাকা শোধ করতে গিয়ে নাকানিচুবানি খেতেও দেখেছি।
তার চেয়ে বরং কিছু মিসকিন-এতিমদের খেদমত করা যেত না? একজনকেই করা হোক? একটি গাছ লাগান যায় না? মসজিদ-মাদ্রাসায় কিছু কোরআন শরিফ উপহার হিসেবে দেয়া যায় না। কিংবা নামাজের জন্য চট-কার্পেট প্রভৃতি? খাওয়াতেই কেন হবে আর এজন্য বিশৃঙ্খলা কেন আমদানি করা হবে?
কিছু মানুষের মধ্যে ভাবসাব কাজ করে। সম্পদ বা অর্থের ভাবসাব, গরম। যে কোনো উপলক্ষ্যে বড় করে ভোজন উৎসব করে তারা নিজেদের ইজ্জত বাড়ান।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এমন মহিউদ্দিন চৌধুরী তৈরি হতে শত বছর লাগবে। উনার আত্মার মাগফেরাতে যে কুলখানি আয়োজন করা হয়েছে, সেখানে মানুষ হাজার হাজার নয়, লাখো মানুষ যাবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই কুলখানির খাবার খেতে গিয়ে পদদলিত হয়ে ১০ লাশ? এটা যে কতো বড় জঘন্যতম ঘটনা ঘটে গেল, বলার অপেক্ষা রাখে না। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বলে চালিয়ে দিচ্ছেন প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয়রাও। বাংলাদেশিরা কী এতোটাই কাঙাল হয়ে গেছে যে, ‍কুলখানির ফ্রি খাবার খেয়ে দিন পার করতে হবে? বাংলাদেশির স্বভাব কাঙালি, ফ্রি খেতে তারা খুব ভালবাসে, আত্মমর্যাদাবোধও সেসময় বিসর্জন দেয় নাম না জানা মহাসাগরে। পকেটে টাকা থাকলেও বলে নেই, ঘরে কোরমা-পোলাও থাকলেও বলে রান্না হয়নি, চাল কেনার টাকা নেই।
জাতীয় শোক দিবসেও দেখা যায়, কাঙালি ভোজের জন্য যে খাবার রান্না করা হয়, তা চলে যায় স্বচ্ছল নেতার সেগুন কাঠের ডাইনিং টেবিলে।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর আত্মার শান্তিতে কুলখানি না করলে কী হতো? কী হতো খাদ্যগ্রহণ পর্ব না রাখলে? কিছু্তই হতো না। তার আত্মার মাগফেরাতের ব্যবস্থা অন্যভাবেও করা যেত নিশ্চিত। আসলে সামাজিকতা বলতে একটা কথা আছে, এটা না করলে হয় না বলে। কিন্তু যে সামাজিকতা বিশৃঙ্খলা উস্কে দেয়, সে সামাজিকতার কী প্রয়োজন? এটা কী ধর্মীয়ভাবে স্বীকৃত বিশৃঙ্খলা?
ভোজন উৎসব কুলখানির মৃত্যু কামনা করলাম।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪২

ইমরান আশফাক বলেছেন: জাকাত দেওয়ার সময় বেশ কয়েকজন পদদলিত হয়ে মারা গেছেন বছর কয়েক আগে এই চট্টগ্রামেই। এখনই পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা আরও দেখতে পাব। মূল সে উদ্দেশ্য সেটা কিন্তু এর মধ্যে সম্পূর্নই অনুপস্হিত এবং সেটা সবাই জানেন।

২| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: এই সব লোক দেখানো সামাজিকতা বন্ধ করতে হবে।

৩| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:০৪

ঢাকাবাসী বলেছেন: এত অদক্ষ অপদার্থ অযোগ্য মহা দুর্ণীতিবাজ পুলিশ দিয়ে হাজার খানেক লোককে ম্যানেজ করা অসম্ভব।

৪| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:


মহিউদ্দিনের পরিবার ১৩০০০ লোককে খাওয়ানোর ব্যবস্হা করেছে; মহিউদ্দিনের সুনিদ্দিষ্ট আয় ছিলো না জীবনে, সবকিছুই দখল করা, সবকিছু চাঁদাবাজি; সেই টাকায় খাওয়ালে উহা খেতে যাওয়া সঠিক হয়নি

৫| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৩

জাহাঙ্গীর কবীর নয়ন বলেছেন: প্রবাদে আছে, "বাঙালি মাগনা পাইলে আলকাতরাও খায়"। ফ্রী খানা দেয়া হবে, আর সেটা নিতে গিয়ে লোকজনের হুটোপুটি হবেনা, ইহা আশা করা একটি কবীরা গুনাহ।








এসব নিয়ে মাথা না ঘামায়ে গান শোনেন। দেশের মানুষ সভ্য হইলে কুলখানি, বাকরখানির সংস্কার করা লাগবে না। এমনিতেই এসবে মরা কমে যাবে।

৬| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫২

তারেক ফাহিম বলেছেন: বিশ্লেষন ভালো লাগল।

কিন্তু এসব অপসংস্কৃতি আমাদের গ্রামের সমাজে প্রচলন হয়ে আসছে।
যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

৭| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:০৮

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এটাও আমাদের জন্য শিক্ষা যে মওতের কোন টাইম টেবিল নাই। যে কোন সময় আসতে পারে...

৮| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:২২

সনেট কবি বলেছেন: কিছুটা পড়লাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.