![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিসিএমসি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর কথা শুনলেই আমাদের সবার মাথায় প্রথম যা আসে তা হল জামা-কাপড় শেলাইয়ের ব্যাপার আর ভাবি এর আবার ইঞ্জিনিয়ারিং হয় নাকি? আর সাথে নাক সিটকানো তো আছেই। আশাকরি আজকে আপনাদের মধ্যে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর যত ধরনের ভুল ধারণা আছে, তা ভেঙ্গে যাবে।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের অতি জনপ্রিয় একটি বিষয় হচ্ছে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বা বস্ত্র প্রকৌশল। কারন, এখানে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে। যেহেতু বাংলাদেশ পৃথিবীর তৈরি পোশাক শিল্পে একটি শীর্ষস্থানীয় দেশ তাই এখানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বা বস্ত্র প্রকৌশল পেশার চাহিদাও অনেক।
প্রথমেই আমরা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং আসলে কি, তা বোঝার চেস্টা করি। আমরা সবাই মনেকরি এটা কাপড়-চোপড়ের ইঞ্জিনিয়ারিং। হ্যা অবশ্যই এই বিষয়ে কাপড় নিয়ে আলোচনা করা হয় কিন্তু ইঞ্জিনিয়াররা পুরো প্রডাকশন সিস্টেমটা নিয়ন্ত্রণ করেন, কাপড় কাটা বা সেলাই করার সাথে তারা যুক্ত না। এছাড়া এই ইন্ডাস্ট্রি রিলেটেড যে কাজগুলো আছে তার অন্যতম একটি হল মারচেন্ডাইজিং। আর একজন মারচেন্ডাইজার হিসেবে বহু দেশের বহু সংস্কৃতির মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে হয়, এমনকি চাকরীর খাতিরে অনেক দেশ ভ্রমণের সুযোগ পাওয়া যায়। এর সাথে উদ্যোক্তা হবারও বেশ ভাল সুযোগ থাকবে টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে জব করলে।
আর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম কয়েক বছর হয়ত খুব কঠিন, কিন্তু পরিশ্রম করতে পারলে এখানেই সবচেয়ে দ্রুত উন্নতি করা যায়। আর সত্যি কথা বলতে উন্নতি করতে হলে সব ইঞ্জিনিয়ারদেরই প্রথমে খুব কষ্ট করতে হয়।
এছাড়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারেরা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সেক্টরে কাজ করে, সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং করে। বাংলাদেশ থেকে প্রোডাক্ট নিতে না পারলে বেশিরভাগ বড় ব্র্যান্ডের(রিবক, নাইকি, ডি এন্ড জি, ভারসেচ, লিভাইস এমনকি ইউএস আর্মি এর ক্যামোফ্লেজ ড্রেস) ব্যবসাই হুমকির মুখে পড়বে। এতটা দাপটের সেক্টরে কাজ করার সুযোগ, তাও আবার দেশে বসে সিক্স ডিজিটের স্যালারিসহ কাজের সুযোগ এই সেক্টরের বাইরে খুব কম মানুষই পায়।
আপনি এখন মনে মনে হয়তো বলছেনঃ ওরে বাবা, এতো বিশাল ব্যাপার। এখানেই শেষ নই, আরো একটু অপেক্ষা করুন, আসল চমক তো এখনো বাকি আছে।
এবার জানা যাক টেক্সটাইল ইঞ্জনিয়ারিং আসলে কি। নর্থ ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভার্সিটি, ইউএসএ, যাকে কিনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার স্বর্গ বলা হয় তারা তাদের ওয়েবসাইটে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংকে তারা ব্যাখ্যা করেছে এভাবে-
Who is a Textile Engineer?
** A textile engineer is someone who…
** Develops a nano-composite material for deep space exploration
** Integrates a worldwide distribution program, eliminating a company’s reliance on regional stockpiles
** Develops new biocompatible materials for artificial organs, blood vessels, tendons, or ligaments
** Designs a product that grants more independence to those with disabilities
অর্থাৎ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারকে মহাকাশ গবেষণার জন্য ন্যানো-কম্পোজিট নিয়ে কাজ করতে হয়(বাংলাদেশ থেকেই অনেক টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার নাসায় কর্মরত আছেন )। কাজ করতে হয় বায়োকম্পাটিবল প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট নিয়ে, বর্তমানে অনেক ইমপ্ল্যান্টস, টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং, কৃত্রিম ধমনী, লিগামেন্টস তৈরি ও উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারেরা। এই বিষয়টি অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। বিশ্বাস নাহলে ঘুরে দেখে আসতে পারেন জাপানের SHINSHU UNIVERSITY এর ওয়েবসাইট থেকে।
এবার আসি উচ্চশিক্ষার কথায়। আপনি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লে উচ্চশিক্ষার বেশ ভাল সুযোগ আছে ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স (নর্থ আমেরিকা বিশেষত ইউএসএতে, আর ইউরোপের দেশগুলো ছাড়াও ইউকেতেও এই বিভাগের অধীনেই টেক্সটাইল গবেষণা হয়), পলিমার সায়েন্স(ইউরোপ), স্মার্ট টেক্সটাইল অথবা টেকনিক্যাল টেক্সটাইল, ফ্যাশন অথবা ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল/প্রোডাকশন ইঞ্জনিয়ারিং, বায়োমেডিক্যাল, ন্যানোটেক এমনকি ন্যানোমেডিসিন নিয়ে।
দেশে কোথায় পড়বেন বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ?
দেশের অনেক সরকারী এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং আছে, যেমন কুয়েট, ডুয়েট, ডিইউ ইত্যাদি। এছাড়া আপনার যদি জিপিএ কম থাকে কিংবা এসএসসি পড়ে ডিপ্লোমা করে থাকলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনেও বিএসসি ইন টেক্টাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারবেন।
সর্বনিম্ন ২০০৯ সাল বা এর পরে যে কোন সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি তে ন্যূনতম জিপিএ ৩.০ এবং এইচএসসি তে ন্যূনতম জিপিএ ৩.০ সহ সর্বমোট জিপিএ ৭.০ অথবা ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এ ন্যূনতম জিপিএ ২.৪০ হলেই যশোরে অবস্থিত বিসিএমসি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হতে পারবেন।
এখানে বলে রাখি, যশোরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত, বিসিএমসি বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ এবং একমাত্র ISO সার্টিফাইড বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। এছাড়া এখান থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে আপনি পাবেন সম্পূর্ণ সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ।
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন http://www.bcmc.edu.bd অথবা ফোন করুন যে কোন মোবাইল ফোনে: ০১৭১১-৮৪৪৮৮১, ০১৭১১-৮৪৪৮৮২, ০১৭১১-০৬৭৬৮৭, ০১৭১২-৯১০২৫৫, ০১৭৫২-২৬০৪০৮, ০১৭৫২-২৬০৪০৯।
এই হল বস্ত্র প্রকৌশল বিষয়ে সারসংক্ষেপ। যারা এই ব্যাতিক্রমধর্মী কিন্তু অত্যন্ত সম্মানিত বিষয়ে পড়তে চান তাদের জন্য আশা করি কিছুটা হলেও ধারনা দিতে পারবে এই লেখাটি। বলা যায় না হয়তো আপনিই হতে পারেন সেই যার ডিজাইন করা পোশাক পরে আপনারই প্রিয় কোন ব্যাক্তি আপনারই সামনে কোনদিন উপস্থিত হবে।
আর কেউ যদি দ্বিধায় থাকেন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়া উচিৎ হবে কিনা, তাদের বলি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লে আর যাই হোক ঠকবেন না, আর বিসিএমসি কলেজ টেক্সটাইলে অসাধারণ অভিজ্ঞতার গ্যারান্টি আমি আপনাদের দিয়ে রাখছি।
আপনাদের জন্য শুভকামনা।
©somewhere in net ltd.