নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমেরিকায় জো-বাইডেনের বিজয় এবং ট্রাম্পের হার মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতির নতুন মেরুকরণের সম্ভাবনা আছে কি ? (আমেরিকার নির্বাচন পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ৭ )।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪৪



আমেরিকার নির্বাচনে জো বাইডেনের জয়ী হওয়ায় (যদিও এখনো ট্রাম্প আনুষ্ঠানিক ভাবে পরাজয় মেনে নেননি) ২০২১ সালে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা প্রশ্নে ইসরাইলবিরোধী আরব জনমত সৃষ্টি, ইরানের আগ্রাসী ধরনের নীতি পদক্ষেপে কিছু আরব দেশের বিপন্নতা ইত্যাদি নতুন মেরুকরণের সূত্রপাত ঘটাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে তার কিছু প্রাথমিক সঙ্কেতও সুস্পষ্ট হতে শুরু করেছে।

গত ২৮/১১/২০২০ শুক্রবার ইরানের জ্যৈষ্ঠ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসিন ফখরিযাদে রাজধানী তেহরানের কাছে আততায়ীর আক্রমণে মারা গেছেন। আততায়ীরা প্রথমে তার গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে এবং তার পর তাকে গুলি করে। ফখরিযাদে "ইরানে বোমার জনক" হিসেবে পরিচিত ছিলেন।ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে ইরান। এতে কেবল এই অঞ্চলে তীব্র অস্থিরতা সৃষ্টি হবে না, এর ফলে ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পুনরায় সংলাপের পরিকল্পনা মারাত্মক জটিলতার মধ্যে পড়বে। শনিবার বিশ্লেষকরা এ কথা বলেছেন।

ইরান অভিযোগ করেছে, তাদের চিরশত্রু ইসরাইল ৫৯ বছরের মোহসেন ফখরিজাদেহকে হত্যার মাধ্যমে ‘বিশৃঙ্খলা’ বপন করার চেষ্টা করছে এবং জোড়ালোভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে মার্কিন আশীর্বাদ নিয়ে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। যেহেতু মোহসেন ফাকরিজাদেহ ছিলেন ইসরাইলের দৃষ্টিতে পারমাণবিক কর্মসূচিতে মূল, তাই তার মৃত্যু এমন কারো উদ্দেশ্য চরিতার্থ করে থাকতে পারে, যারা চায় ইরানের সম্মুখযাত্রা রুখে দিতে। এই হত্যার ফলে ইরানের সঙ্গে ওয়াশিংটন নতুন করে যুক্ত হওয়ার যে আগ্রহ দেখিয়েছেন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, সেই প্রচষ্টা এতে ব্যাহত হবে।

পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদে হত্যাকাণ্ড ইরানের সঙ্গে লেনদেন বা বোঝাপড়াকে জটিল করবে বলে মনে করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে তা কতটুকু জটিল হবে বলতে পারেননি তিনি।সিএনএন টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেছেন, "এটা বলা কঠিন যে এই হত্যাকাণ্ড তেহরানের সঙ্গে তার লেনদেন বা বোঝাপড়াকে কতটুকু জটিল করে তুলবে"।তিনি আরও বলেন, "ইরান ইস্যুতে ট্রাম্পের অনুসৃত নীতি ভুল ছিল। আর এ কারণেই ইরানের পরমাণু সংক্রান্ত জ্ঞান ও সক্ষমতা বেড়েছে"।
বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ইরানের সঙ্গে ছয় জাতিগোষ্ঠীর পরমাণু সমঝোতা হয়। পরে ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে ওই সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যান এবং ইরানের বিরুদ্ধে একের পর এক কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে থাকেন।

বাইডেন নির্বাচনের আগে আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোতে ফিরে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে ইরানের বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদে হত্যাকাণ্ড নিয়ে সিএনএন বাইডেনকে প্রশ্ন করলে তিনি এ কথা বলেন।




ব্রিটেনের পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানে এক বিশ্লেষণে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিদায় নেওয়ার আগে ইরানের ওপর আঘাত হানার পথ খুঁজছেন। ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে যেতে জো বাইডেনের কাজকে কঠিন করে দিয়ে যেতে পারেন।ব্রিটেনের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানের আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক সিমন টিসডালের মতে,” নভেম্বরেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানে হামলা চালাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সামরিক বিশেষজ্ঞরা তাতে বাধ সাধেন। তিনি আগামী ২০ জানুয়ারি বিদায় নেবেন। এর মধ্যে ক্ষমতার ব্যবহার করে ইরান নিয়ে ট্রাম্প এমন কিছু ঘটিয়ে দিতে পারেন যার জন্য পুরো মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এরই মধ্যে সৌদি আরবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর গোপন সফরের কথা জানা যায়। ঐ সফরে নেতানিয়াহু সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে বৈঠকও করেন। বৈঠকের আলোচনা সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি”।
সৌদি আরব ঐ বৈঠকের কথা অস্বীকার করলেও মিডিয়ায় ইসরাইল থেকে নেতানিয়াহুকে বহনকারী বিমানের সৌদি আরবে গমনের কথা প্রকাশ পেয়েছে। ফলে সরকারিভাবে বৈঠকের তথ্য সামনে না আনায় ষড়যন্ত্র তত্ত্বই বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। বলা হচ্ছে, ঐ বৈঠকেই হয়তো ইরানকে উসকানি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তেহরান ইসরাইল, সৌদি আরব কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে হামলা চালালে ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালানোর একটা সুযোগ তৈরি হবে। সেটা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ থেকে বিদায় নেওয়ার আগেই। গত নভেম্বর মাসের শেসদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বি-৫২ স্ট্র্যাটোফোর্ট্টেস বোম্বারু বিমানকে ৭ হাজার মাইল দূরে মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু এর কারণ এখনো জানা যায়নি। বিজ্ঞানী হত্যার এক দিন আগেই ওয়াশিংটন পোস্ট রিপোর্ট করে যে, ট্রাম্প প্রশাসনের শেষ সপ্তাহগুলোতে ইরাকের মাটিতে ইরানের সঙ্গে কোনো একটা সংঘাত বেধে যায় কিনা—এমন একটা উৎকণ্ঠার মধ্যে আছে ইরাকের সরকার।


মধ্যপ্রাচ্যের এই সম্ভাব্য মেরুকরণের সাথে সার্বিক বৈশ্বিক পরিস্থিতির যোগসূত্র থাকতে পারে। ইরানে আয়াতুল্লাহ খোমেনির নেতৃত্বে ইসলামী বিপ্লব হওয়ার পর থেকে এর বিরুদ্ধে মার্কিন-ইসরাইল এবং আরব দেশগুলোর বৈরিতা ছিল লক্ষণীয়। এর অংশ হিসেবে বিপ্লবোত্তর ইরানে ব্যাপক অন্তর্ঘাতী ঘটনা ঘটে, ইরাক-ইরান দশকব্যাপী যুদ্ধ সংঘটিত হয়। আয়াতুল্লাহ খোমেনির ইরান বিপ্লব রফতানির ঘোষণায় রাজতান্ত্রিক উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে আতঙ্কিত প্রতিরোধ প্রয়াস লক্ষ করা যায়, যা অনেক সময় জাতিগত ও রাষ্ট্রগত প্রতিহিংসা পদক্ষেপ পর্যন্ত গড়ায়। এই দ্বন্দ্ব সঙ্ঘাতের পথ ধরে গত দুই দশকে মধ্যপ্রাচ্যে অনেক ভাঙচুর ও মেরুকরণের সৃষ্টি হয়। এই মেরুকরণে ইরানের দৃশ্যমান প্রতিপক্ষে পরিণত হয় একইসাথে উপসাগরীয় আরব দেশগুলো এবং ইসরাইল। লক্ষ্য নির্ধারণের মাত্রায় ইরানের সামনে ইসরাইলের চেয়েও তাৎক্ষণিক প্রতিপক্ষে পরিণত হয় উপসাগরীয় আরব দেশগুলো, বিশেষত সৌদি আরব।

এর মধ্যে ২০০২ সালে তুরস্কে ক্ষমতায় আসে ইসলামী পটভূমি থেকে গঠিত রক্ষণশীল দল একে পার্টি। দলটির নেতা রজব তাইয়েব এরদোগান তুরস্কের অর্থনৈতিক ও সামরিক সক্ষমতার ভিত্তি মজবুত করার পাশাপাশি পররাষ্ট্র সম্পর্কে প্রভাব সম্প্রসারণের প্রতি মনোযোগী হন।



এ দিকে জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হতে থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি নিরাপত্তায় সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্ব কমতে থাকে। ওবামা-বাইডেন প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্যে একনায়ক শাসিত দেশগুলোতে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রতি সমর্থন দেন একপর্যায়ে। এর ফলে আরব বসন্তের জের ধরে একাধিক আরব একনায়কের পতন ঘটে। সৌদি আরবসহ বেশ কিছু আরব দেশের রাজতন্ত্র হুমকিতে পড়ে যায়।

বর্তমানে আরব রাজতন্ত্রগুলোর সামনে একই সাথে দু’টি মুসলিম প্রতিপক্ষ হাজির হয়েছে। এর একটি হলো শিয়া রাষ্ট্রশক্তি ইরান আর অন্যটি হলো মধ্যপন্থী সুন্নি রাষ্ট্রশক্তি তুরস্ক।গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রক্রিয়ায় প্রকাশ্য ভূমিকা নেন তুরস্কের এরদোয়ান। এই পরিস্থিতিতে আরব শাসকদের বেশির ভাগ এবং ইসরাইল ইরানের চেয়েও তুরস্ককে বড় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে। আর মধ্যপ্রাচ্যের জনপ্রিয় আন্দোলন হিসেবে মুসলিম ব্রাদারহুডকে প্রধান প্রতিপক্ষ চিহ্নিত করে এই শক্তিটিকে দমন করার তৎপরতায় লিপ্ত হয়। মিসরে মুরসির নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে সিসির সামরিক অভ্যুত্থান এবং পরে ব্রাদারহুডের ওপর গণহত্যার মতো নির্বিচার দমন পীড়ন, সিরিয়ার বিদ্রোহীরা জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছার পর রাশিয়ার বিমান আক্রমণ ও ইরান সহায়তাপুষ্ট হিজবুল্লাহর অভিযানে একবারেই তিন লাখ সিরীয় নিহত হওয়া এবং লিবিয়ায় খলিফা হাফতারকে দিয়ে রাষ্ট্র দখলের প্রচেষ্টার সাথে এর যোগসূত্র রয়েছে।

এ সময়ে উগ্র ইসরাইল বান্ধব ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন প্রশাসন আরব রাষ্ট্র ও সরকারগুলোর নিরাপত্তা প্রদানের জন্য ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ব্যবস্থাপত্র প্রদান করে। গোয়েন্দা সমন্বয় ও সহযোগিতার মধ্য দিয়ে এই ব্যবস্থাপত্র বাস্তবায়ন চলে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম কয়েক বছর। এ সময় আরব-ইসরাইল আলোচনার প্রক্রিয়া থেকে ফিলিস্তিনকে বিদায় করা হয়। শেষ পর্যন্ত আরব ইসরাইল আলোচনায় ফিলিস্তিন ইস্যু গৌণ হয়ে যায়। পর্যায়ক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সুদান ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়। আরো কয়েকটি আরব দেশের নাম এই প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

এর মধ্যে জো বাইডেনের আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ নিশ্চিত হওয়ার পর অনেক হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের ইসরাইল লবি আইপ্যাকের সাথে জো বাইডেনের ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র রয়েছে। তার বর্তমান স্ত্রীও একজন ইহুদি। তিনি গত ১৩ আগস্ট ইসরাইল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যকার সম্পর্ক সাধারণীকরণ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছিলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ যা উত্তেজনা ও মধ্যপ্রাচ্যের গভীর বিভাজনে স্বাচ্ছন্দ্য আনতে সহায়তা করবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইসরাইলকে স্বীকৃতি প্রদানকে সাহসী কাজ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তদুপরি, এমন কোনো লক্ষণ নেই যে বাইডেন প্রশাসন এই চুক্তিগুলোর (বাহরাইন এবং সুদান সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতৃত্ব অনুসরণ করেছে), ধারাবাহিকতা থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করবে। তবে উদার চিন্তা চেতনার নেতা জো বাইডেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র ধরনের ইসরাইল বান্ধব নীতি থেকে সরে আসতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি জবরদস্তি কোনো সমাধান চাপিয়ে দেয়ার পরিবর্তে সব পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করে আরব ইসরাইল একটি সমাধান চাইবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময়ের কয়েকটি খবরের উপর দৃষ্টি রাখলে মধ্যপ্রাচ্যে ভেতর থেকে কিছু পরিবর্তন ঘটার বিষয় দৃশ্যপটে আসতে পারে। দুই সপ্তাহ আগের খবর ছিল সৌদি আরব তুর্কি পণ্য বয়কটের একটি অনানুষ্ঠানিক তৎপরতা শুরু করেছে। অন্য দিকে খাগোশি হত্যাকাণ্ডের মামলা চাঙ্গা করার খবর আসে তুরস্ক থেকে। একই সাথে সৌদি দরবারি আলেমদের সংগঠন স্কলার্স ফোরাম মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকাভুক্ত হিসেবে বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখান থেকে ধারণা তৈরি হয় যে তুরস্ক-সৌদি সম্পর্কের অবনতি ঘটতে চলেছে।
এর মধ্যে খবর আসে সৌদি বাদশাহ সালমানের সাথে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের লম্বা টেলিফোন সংলাপ হয়েছে। এই আলোচনায় তুর্কি পণ্য বর্জনের বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে এবং দুই দেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক সৃষ্টির জন্য পরস্পরের সাথে আলোচনার কথা বলা হয়েছে। একই সময়ে আরো দু’টি খবরের একটি হলো ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা দেয়া হলেই সৌদি আরব ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয় বিবেচনা করবে। আর কাতারকে বয়কট করার বিষয়টির অবসান কিভাবে করা যায় সে বিষয়টি ভাববে রিয়াদ।

সর্বশেষ যে খবর তাতে জানা যায়, ইসরাইলের নিরাপত্তা আশ্রয়ে থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত চাইছে মধ্যপ্রাচ্য ও অন্য মুসলিম দেশগুলোর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নেতা হতে। এতে আরব বিশ্বে সৌদি আরবের নিয়ন্ত্রক প্রভাবের যেমন ক্ষতি হবে তেমনি দেশটির জনগণের মৌলিক ভাবনা থেকে বিচ্যুত হয়ে ক্রমেই এক নিপীড়ক রাজতন্ত্রে পরিণত হবে সৌদি শাসন। এর চেয়ে সৌদি আরবের সাথে ঐতিহ্যগতভাবে মুসলিম ব্রাদারহুড ও অন্য ইসলামী সংগঠনগুলোর যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক ছিল সেটি পুনর্নির্মাণ করা গেলে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সঙ্ঘাত এবং রাজতন্ত্রের পতনের ঝুঁকি অনেকখানি কমে আসবে বলে ধারণা করছে সৌদি রাজতন্ত্রের ক্ষমতাবলয়। নতুন মূল্যায়ন অনুসারে ইরান-তুরস্ক দুই শক্তির মোকাবেলা করতে গিয়ে ইসরাইলের নিরাপত্তা আশ্রয়ে যাওয়ার যে মূল্য সৌদি আরবকে দিতে হবে সেটি দেশটির আদর্শগত চেতনা এবং অখণ্ডতার বিবেচনায় অনেক বেশি।

নতুন ভাবনা অনুসারে সৌদি আরব আবার উম্মাহর মৌলিক এজেন্ডায় ফিরে আসতে পারে। ফিলিস্তিনকে স্বাধীনতা দেয়ার ইস্যুকে আলোচনা-সমঝোতার সামনে নিয়ে আসবে। মুসলিম ব্রাদারহুডকে নির্মূল করার কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে এসে আগের মতো রাষ্ট্র গঠনে সহযোগিতার সম্পর্ক নির্মাণ করবে। সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরাইলের সহযোগিতায় তুরস্কের ক্ষমতা থেকে এরদোগান ও একে পার্টিকে আগামী নির্বাচনে বিদায় করে কামালপন্থী উগ্র ধর্মনিরপেক্ষ পিএইচপিকে ক্ষমতায় আনার যে কার্যক্রম চালাচ্ছে তা থেকে সরে আসবে রিয়াদ। আঙ্কারাও সৌদি শাসনের সামনে বিদ্যমান ঝুঁকি অপসারণে সহায়তা দেবে। বিশেষত, ইয়েমেনে হুথিদের সাথে অব্যাহতভাবে চলমান যুদ্ধ অবসানে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। সিরিয়ায় প্রতিনিধিত্বমূলক একটি ব্যবস্থা এবং শরণার্থীদের পুনর্বাসনে অভিন্ন ভূমিকা পালন করবে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে ফাতাহ ও হামাসের ব্যাপারে গঠনমূলক সহায়তা প্রদান করবে দুই দেশই।

এটি বাস্তবে রূপায়িত হলে মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নি বলয়ে এখন যে বিভাজন রয়েছে, তা অনেকখানি কেটে যাবে। আমিরাতের ইসরাইলের এক্সটেনশন হিসাবে রাখা ভূমিকা উম্মাহর বড় ক্ষতির কারণ হতে পারবে না। মধ্যপ্রাচ্যে তুরস্ক-সৌদি যৌথ শক্তি অনেক ইস্যুর নিষ্পত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।

এ বিষয়গুলো সহজভাবে বাস্তবে রূপ নিতে পারবে এমনটি প্রত্যাশা করা যায় না। তবে যুক্তরাষ্ট্রে বাইডেন প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্য নীতি সম্পর্কে যে ধারণা করা যায় তাতে এই অঞ্চলকে প্রত্যক্ষভাবে চীন-রাশিয়ার প্রভাব বলয়ের একতরফা নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত রাখার জন্য ন্যাটো মিত্র তুরস্ক ও কৌশলগত আমেরিকান মিত্র সৌদি আরবের মধ্যকার দূরত্ব ঘোচানোর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে ওয়াশিংটনের সামনে।
আর বাইডেন প্রশাসন যদি ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তিতে ফেরত গিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের ভূমিকাকে প্রধান করে তুলতে চায় সে ক্ষেত্রে চীন-রাশিয়ার প্রভাব বৃদ্ধির একটি ঝুঁকিও থেকে যেতে পারে। ফলে বাইডেন প্রশাসনের জন্যও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং সৌদি-তুরস্ক সমঝোতার বিষয়টিকে সমন্বয় করে মধ্যপ্রাচ্য নীতি বিন্যাস করা আমেরিকান স্বার্থ অনুকূল বিবেচিত হতে পারে।


তবে কৌশল পরিবর্তনের কাজ সৌদি আরবের জন্য একেবারে সহজ হবে না। এর মধ্যে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু প্রথমবারের মতো সৌদি আরবে গিয়ে গোপন বৈঠক করেছেন সৌদি যুবরাজ বিন সালমানের সাথে। ব্যক্তিগত জেটে সেখানে তিনি ইসরাইলি গোয়েন্দা প্রধানকেও নিয়ে যান। সেখানে ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও উপস্থিত ছিলেন। ইসরাইলি পত্রিকা হারেৎজ এ বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ দেয়নি, কেবল এই ইঙ্গিতটি দিয়েছে যে, এটি সৌদি-ইসরাইল সম্পর্ক নির্ধারণে ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা।

সম্ভবত সৌদি নীতি প্রণেতারা এখন ভবিষ্যৎ কর্মপন্থার ব্যাপারে দু’টি রাস্তাই খোলা রাখতে চাইছেন। তুর্কি সৌদি কৌশলগত সমঝোতা হলে তার রূপ হবে এক রকম, আর ইসরাইলের নির্দেশিত পথ সৌদি ভাগ্য নির্ধারণ করলে সৌদি রাজতন্ত্রে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা হবে ভিন্নমুখী। এই পথ নির্ধারণে বাইডেন প্রশাসনের কি ভূমিকা হবে এবং কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে তা সময়ই বলে দিবে।


আমেরিকার নির্বাচন পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ৬ Click This Link

তথ্যসূত্র - সিএনএন, সংবাদপত্র, নিবন্ধ ,সম্পদকীয় এবং ছবি - গুগল।

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:০১

চাঁদগাজী বলেছেন:



এটা আপনার লেখা, নাকি কপিপেষ্ট?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার প্রথম এবং মন্তব্যের জন্য।

লেখা পুরোটাই আমার এটা যেমন বলা যায়না তেমনি আমার না এটাও বলা যাবে বলে মনে হয়না ।আপনি খেয়াল করলে দেখবেন আমেরিকার নির্বাচনের ফলোআপ নিয়ে এটা আমার ৭ ম পোস্ট ।আর এ পোস্টগুলি লিখার জন্য সমসাময়িক বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার জন্যদৈনিক সংবাদপত্র, নিবন্ধ ,সম্পদকীয় ইত্যাদি নানা জায়গা থেকে বিভিন্ন তথ্যের সাহায্যে এই লেখা তৈরী হয়েছে।
তাই চাইলে এটাকে আপনি আমার লেখা বলতে পারেন তবে কপি- পেষ্ট নয় এটা বলা যায়।

২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



ইরানের সাথে কি বাইডেনের বন্ধুত্বপুর্ণ কোন স হযোগীতার বৈঠক হওয়ার কথা, নাকি বোমা যাতে বানাতে না পারে, ও আরব দেশগুলোতে শিয়া মিলিশিয়া কার্যক্রম নিয়ে বৈঠক হবে?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ আবরো আপনার মন্তব্যের জন্য।

বাইডেন কি করবে তা তার শাসনামলেই বলা যাবে বলে দিবে।আপাতত অতীতের সাথে তুলনা করে ভবিষ্যতের একটা ছবি আকা যায় মাত্র তবে ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতেই হবে।

৩| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



বাইডেন কি এটম বোমা বানাতে দিবে?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আমেরিকা বা অন্যকোন কোন পরমানু শক্তিশালী দেশ কোন ভাবেই ইরানকে পরমানু বোমা বানাতে দিবেনা ।এটা যতটা না আমেরিকা বা ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য তারচেয়ে অনেক অনেক গুন বেশী ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য।

আর আমেরিকার ক্ষমতায় বাইডেন বা যেই আসুক না কেন ইসরায়েলের স্বার্থের বাইরে কেউ কিছু করবেনা আর আমেরিকার অভ্যন্তরীণ "ইহুদি লবি"র প্রেশার আমেরিকার কোন রাষ্ট্রপতির পক্ষেই উপেক্ষা করে ক্ষমতায় থাকা সম্ভব না।

৪| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



প্যালেষ্টাইনের স্বাধীনতা কিভাবে আটকায়ে আছে?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: প্যালেষ্টাইনের স্বাধীনতা জটিল বিশ্ব পরিস্থিতি ও ইসরায়েলের স্বার্থ রক্ষায় আটকে আছে।

প্যালেষ্টাইন যদিও মধ্যপ্রাচ্যে তারপরেও আমি এ পোস্টে প্যালেষ্টাইন সম্পর্কে কিছুই লিখিনি । কারন আমি প্যালেষ্টাইন নিয়ে আলাদা আরেকটি নির্বাচনী ফলোআপ পোস্টে বিশদ লেখার আশা রাখি।

৫| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: এই বিষয় গুলো আমি এত কম জানি যে -- মন্তব্য করা বোকামি হবে।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজিব নুর ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য।

আমিও যে খুব বেশী কিছু জানি তা না ।তবে জানার জন্য চেষ্টা করে যা কিছু জেনেছি তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্যই এ পোস্ট।

৬| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



লেখক বলেছেন, " বাইডেন কি করবে তা তার শাসনামলেই বলা যাবে বলে দিবে।আপাতত অতীতের সাথে তুলনা করে ভবিষ্যতের একটা ছবি আকা যায় মাত্র তবে ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতেই হবে। "

-আপনি পোষ্টে বলছেন যে, ট্রাম্পের পদক্ষেপগুলো ইরান-বাইডেন সংলাপকে সমস্যার মাঝে ফেলবে; ইরান-আমেরিকান সংলাপ মানে তো কোন সহযোগীতা নিয়ে সংলাপ নয়, বাইডেনের জন্য কি সমস্যা সৃষ্টি করে যাচ্ছে ট্রাম্প?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪২

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ইরানের বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদে হত্যাকাণ্ড নিয়ে সিএনএন বাইডেনকে প্রশ্ন করলে তিনি এ কথা বলেন।

পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদে হত্যাকাণ্ড ইরানের সঙ্গে লেনদেন বা বোঝাপড়াকে জটিল করবে বলে মনে করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে তা কতটুকু জটিল হবে বলতে পারেননি তিনি।সিএনএন টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেছেন, "এটা বলা কঠিন যে এই হত্যাকাণ্ড তেহরানের সঙ্গে তার লেনদেন বা বোঝাপড়াকে কতটুকু জটিল করে তুলবে"।তিনি আরও বলেন, "ইরান ইস্যুতে ট্রাম্পের অনুসৃত নীতি ভুল ছিল। আর এ কারণেই ইরানের পরমাণু সংক্রান্ত জ্ঞান ও সক্ষমতা বেড়েছে"।

বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ইরানের সঙ্গে ছয় জাতিগোষ্ঠীর পরমাণু সমঝোতা হয়। পরে ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে ওই সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যান।

৭| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



লেখক বলেছেন, " প্যালেষ্টাইনের স্বাধীনতা জটিল বিশ্ব পরিস্থিতি ও ইসরায়েলের স্বার্থ রক্ষায় আটকে আছে। "

-এটা জেনারেইজড, আন্দাজী ঢিল ছোঁড়া। যাক, আপনি প্যালেষ্টাইন নিয়ে লিখবেন বলছেন, তখন পড়লে আপনার এনালাইসিস ও পর্যবেক্ষণ বুঝবো!

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪৬

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: জনাব মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতি নিয়ে যাদের নূন্যতম ধারনা আছে তারা এ কথাই বলবেন।আর আপনি প্রায়সময় সিরিয়া নিয়ে যে কথা বলেন সেটাও মধ্যপ্রাচ্যের জটিল পরিস্থিতি ও ইসরায়েলের স্বার্থেই তৈরী।

৮| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০১

চাঁদগাজী বলেছেন:



মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে আপনার ধারণা পরিস্কার নয়; ফলে, ওখানে ওবামা কি করেছেন, ট্রাম্প কি করেছে, বাইডেন কি করার সম্ভাবনা, তা নিয়ে আপনার লেখায় সঠিকভাবে আসার সম্ভাবনা নেই।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১০

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: জনাবে আলা ,আমি প্রফেশনাল কুটনীতিবিদ নহি।আর প্রফেশনাল কুটনীতিবিদ দের মাঝে থেকেও যারা মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন তাদের পক্ষেও বাইডেন কি করবে তার সম্পর্কে এখনি পরিষ্কার ধারনা দেয়া সম্ভব না । সবাই একটা অনুমান করতে পারে মাত্র।

আর আমি পেশাগত কুটনীতিবিদ, লেখক ,রাজনীতিবীদ বা সুবিধাভোগী কোনটাই নই।আমার জানার পরিধি বিভিন্ন বই,সংবাদপত্র, নিবন্ধ ,সম্পদকীয় ইত্যাদি ।কাজেই আপনি বা আরো অনেকের থেকে আমি কম জানব এটাই স্বাভাবিক । তবে এই কম জানা নিয়ে আমার লজ্জা নেই কারন আমি জানার চেষ্টা করি আর মানুষের জীবনে চেষ্টাটাই আসল।

৯| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২০

চাঁদগাজী বলেছেন:


লেখক বলেছেন, " জনাবে আলা ,আমি প্রফেশনাল কুটনীতিবিদ নহি।আর প্রফেশনাল কুটনীতিবিদ দের মাঝে থেকেও যারা মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন তাদের পক্ষেও বাইডেন কি করবে তার সম্পর্কে এখনি পরিষ্কার ধারনা দেয়া সম্ভব না । সবাই একটা অনুমান করতে পারে মাত্র। "

-বাংগালীরা সঠিকভাবে না জেনেও লিখে ও বলে মিডিয়া ভরায়ে ফেলে, সেইজন্য শতে ৯৯ জন বাংগালীর প্যালেষ্টাইন সমস্যা, সিরিয়া সমস্যা, ইসরায়েল সমস্যা নিয়ে সঠিক ধারণা নেই; কিন্তু প্যালেষ্টাইনের জন্য কেঁদে বুক ভাসায়ে ফেলছেন, ইসরায়েলকে শত্রু হিসেবে ধরে নিয়েছেন।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: জনাব,আমি বুঝিনা আপনি কিসের সাথে কি মিশিয়ে ঝাঁকান?

আমার এ পোস্টে প্যালেষ্টাইন নিয়ে তেমন কিছুই লিখিনি।আর প্যালেষ্টাইন সমস্যা শুধু বাংগালীদের সমস্যা নহে এ দুনিয়ার সবচেয়ে বড় সমস্যা । মুসলমান মাত্রই প্যালেষ্টাইন তথা মসজিদুল আকসা বা বাইতুল মুকাদ্দাস তথা মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদের জন্য কেদে বুক ভাসায়।
আর ইসরায়েলকে মুসলমানদের শত্রু হিসেবে ধরে নেয়ার পছনে হাজারো কারন রয়েছে।প্যালেষ্টাইনীদের তথা আরবদের ভূমি জবরদখল করে,তাদের বিতাড়িত করে ইসরায়েল রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়েছে এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্যের ৯৯ % সমস্যার জন্য একক ভাবে ইসরায়েল ই দায়ী।কাজেই তাকে বন্ধু ভাবার অবকাশ খুব কমই মুসলমানদের জন্য।

তবে ইসরায়েল চাইলেই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যায় । ১৯৬৭ সালের আরব-ইসারায়েল যুদ্ধ পূর্ব সীমানা মেনে নিয়ে জবরদখলকৃত ভূমি ফেরত দিয়ে এবং পশ্চিম তীর ও গাজাকে নিয়ে দু রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধান তথা স্বাধীন প্যালেষ্টাইন রাষ্ট্রকে মেনে নিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

১০| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০০

চাঁদগাজী বলেছেন:



লেখক বলেছেন, "তবে ইসরায়েল চাইলেই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যায় । ১৯৬৭ সালের আরব-ইসারায়েল যুদ্ধ পূর্ব সীমানা মেনে নিয়ে জবরদখলকৃত ভূমি ফেরত দিয়ে এবং পশ্চিম তীর ও গাজাকে নিয়ে দু রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধান তথা স্বাধীন প্যালেষ্টাইন রাষ্ট্রকে মেনে নিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। "

-আচ্ছা, ইসরায়েল এত শক্তিশালী দেশ, এই ছোট সমস্যাটা ইসরায়েল সমাধান করতে পারছে না?

১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০০

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই , আপনার এই মন্তব্যের জন্য।

ইসরায়েল চাইলেই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যায় । ১৯৬৭ সালের আরব-ইসারায়েল যুদ্ধ পূর্ব সীমানা মেনে নিয়ে জবরদখলকৃত ভূমি ফেরত দিয়ে এবং পশ্চিম তীর ও গাজাকে নিয়ে দু রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধান তথা স্বাধীন প্যালেষ্টাইন রাষ্ট্রকে মেনে নিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

এখন আপনার প্রশ্ন ,ইসরায়েল এত শক্তিশালী দেশ, এই ছোট সমস্যাটা ইসরায়েল সমাধান করতে পারছে না?

এখন দেখি ইসরায়েলের জন্ম এবং সমস্যার প্রকৃতি -

* ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডকে দ্বিখণ্ডিতকরণ সংক্রান্ত ১৮১ নম্বর প্রস্তাব গৃহীত হয়। জাতিসংঘ ফিলিস্তিনের ৪৫ শতাংশ ভূমি ফিলিস্তিনিদের এবং বাকি ৫৫ শতাংশ ভূমি ইহুদিদের দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।(ইউরোপ-আমেরিকা মিলে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ কারন ফিলিস্তিন ভূখণ্ডকে তারা ইসরাইলকে কোনভাবেই দিতে পারেনা)।ইহুদিরা দুনিয়ার বিষফোড়া ।ইউরোপ সেই বিষফোড়া নিজেদের ঘর থেকে আরব বিশ্বে ঝেড়ে ফেলে নিজেদের রক্ষা করার উপায় খুজেছে।ক্ষমতা এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে জাতিসংঘকে সামনে রেখে তার এ অবৈধ কাজ জায়েজ করার চেষ্টা করেছে।

** এভাবে ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল স্বাধীনতা ঘোষণা করে। সামরিকভাবে ইসরায়েল অত্যন্ত শক্তিশালী।

*** ইসরায়েলের জন্ম, ইতিহাস ও রাজনীতি মধ্যপ্রাচ্য সংকটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। স্বাধীনতা ঘোষণার পর থেকেই ইসরায়েল প্রতিবেশী আরব রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে বেশ কয়েকবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়।

আমার যতটুকু ধারনা ,আপনার বয়স কমপক্ষে ৭০ এর কাছাকাছি বা এর উপরে (যেহেতু আপনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবী করেন)।
ইসরায়েলের জন্ম এবং আপনার জন্ম প্রায় কাছাকাছি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। ইসরায়েলের জন্ম, ইতিহাস ও রাজনীতি মধ্যপ্রাচ্য সংকটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।আর আপনি জন্মের পর থেকেই (জ্ঞান হওয়ার পর) মনে হয় এ বিষয়টা সম্পর্কে জানেন,শুনছেন এবং দেখছেন। কাজেই ইসরায়েল অত্যন্ত শক্তিশালী হওয়ার পরেও কেন এই সমস্যা সমাধান করছেনা এর জবাব আমার মনে হয় আমার থেকে আপনি ভাল দিতে পারবেন।


মেহেরবানী করে দিবেন কি এ জবাব?জবাবের অপেক্ষায়---

১১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:০৩

সোহানী বলেছেন: চমৎকার বিশ্লেষন।

বাইডেন নিয়ে খুব বেশী আস্বস্ত হতে পারছি না বা বলা যায় ওবামার মতো করে তার উপর আস্থা আনতে পারছি না। স্ট্রং পার্সোনালিটি বলতে যা বোঝায় তা বাইডেন এর মাঝে অনুপস্থিত। আর সে কারনে ইরান বা ফিলিস্তিন প্রশ্নে খুব বেশী মাথা ঘামাবে বলে মনে হয় না। পাস কাটিয়ে যাবার সম্ভাবনাই বেশী।

যাহোক ট্রাম্প পাগল বিদেয় হয়েছে সেটাই বড় কথা।

প্রশ্ন? ট্রাম্প ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা হবে কি?

১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সোহানীবোন , আপনার চমতকার এক মন্তব্যের জন্য।

আশাই আমাদের জীবনকে বাঁচিয়ে রাখে।আশা রাখি বাইডেন ট্রাম্প থেকে কিছুটা হলেও জোরালো ভূমিকা রাখবে ট্রাম্প কতৃক
সৃষ্ট ঘোলাটে বিশ্ব পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য।

তবে এটা ঠিক আপাতভাবে দেখলে বাইডেনকে কিছুটা দুর্বল ব্যক্তিত্বের এবং বয়সের ভারে ন্যুঝ মনে হয়।তারপরেও তার আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে পূর্বের অভিজ্ঞতা তার সাথে রাজনীতিতে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা সর্বোপরী ধীর-শান্ত মানষিকতার কারনে হয়ত পাগলা ট্রাম্প থেকে কিছুটা ভাল করতে পারবে দুনিয়ার জন্য ,আমেরিকার জন্য।

আর - ট্রাম্প ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা হবে কি?

মামলা হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা আছে । ট্রাম্পের দায় ও দায়মুক্তি নিয়ে একটা পোস্ট লেখার আশা আছে।

১২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:১৭

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: বৃটেন কতৃক সৃষ্ট ইজরাইল নামক রাষ্ট্র পৃথিবীতে না থাকলে পৃথিবীটা আরো সুন্দর হতো।






তবে ইসরাইলীরা পৃথিবীতে টিকে থাকার মতো জ্ঞান অর্জন করেছে আর মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমরা ৪/৫টা বিয়ে করার মতো সম্পদ অর্জন করেছে।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:২৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ দেশ প্রেমিক বাঙালী ভাই, তিক্ত এবং সত্য একটি মন্তব্যের জন্য।

ইজরাইল নামক রাষ্ট্র পৃথিবীতে না থাকলে পৃথিবীটা আরো সুন্দর হতো।এর চেয়ে সত্য ভাষন আর কিছুই নেই।

ব্রিটিশরা চায়নি ইহুদীদের ইউরোপে জায়গা দিয়ে জঞ্জাল সৃষ্টি করতে। কারণ তারা জানতো ইহুদীরা ঐতিহ্যগতভাবেই ক্ষমতালিপ্সু,বেঈমান জাতি ।তারজন্যই তারা ইহুদীদের জন্য আলাদা রাস্ট্র প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী ছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডকে দ্বিখণ্ডিতকরা সংক্রান্ত ১৮১ নম্বর প্রস্তাব গৃহীত হয়। জাতিসংঘ ইহুদীদের ক্রীড়নকেপরিণত হয়ে মার্কিন ও ব্রিটেনের চক্রান্তকে সফল করার উদ্দেশ্যে সমগ্র মুসলিম বিশ্বের বিরোধিতাকেতোয়াক্কা না করে ফিলিস্তিনকে দ্বিখণ্ডিত করার প্রস্তাব পাশ করে। এই প্রস্তাব অনুসারে জাতিসংঘ মাত্র ৪৫ শতাংশ ফিলিস্তিনীদের প্রদান করে এবং বাকি ৫৫ শতাংশ ভূমি ইহুদীবাদীদের হাতে ছেড়ে দেয়। এভাবে ফিলিস্তিনের ভূমিকে জোর পূর্বক দখল করে গঠন করা হয় নতুন ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইল।

আর পর থেকে মধ্যপ্রাচ্য তথা সারাদুনিয়ার জন্য তৈরী হয়েছে ইসারাইল নামক বিষবৃক্ষ। এই বিষবৃক্ষ লালন-পালন করছে ইউরোপ-আমেরিকা তাদের স্বার্থে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ।

১৩| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
আমাকে অবহেলা করেন নি। আমার মন্তব্যের উত্তর দিয়েছেন।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:০২

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: রাজিব ভাই ,আপনাকে আমি ব্যাপক ভালবাসি ।তাই আপনাকে অবহেলার কোন সুযোগ নেই।শুধু আপনাকে না ব্লগে সব ব্লগার এর প্রতিই একই মনোভাব । কারন এখানে কারো সাথে ব্যক্তিগত রাগ-অনুরাগ-বিরাগের কোন স্থান নেই। আর ব্লগে কিছু লিখার পর পাঠকের পাঠতৃষ্ণা নিবারন তথা জানার জন্য প্রশ্নের জবাব দেয়া যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি সাধারন ভদ্রতাও।

আর পাঠকের প্রশ্ন ই লেখককে ভাল লেখার উতসাহ প্রদান করে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.