নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আগামীকাল শুক্রবার।পবিত্র জুমার দিন।জুমার দিন হলো এমন একটি দিন, যা উম্মতে মোহাম্মদী হিসেবে একমাত্র আমরাই পেয়েছি। অন্য নবীর উম্মতরা তা পাননি। আর জুমার দিনে মুসলমানদের জন্য রয়েছে অনেক বরকত ও কল্যাণ।
আমরা যদি ভাল করে দেখি তাহলে দেখব,অপ্রাপ্তি নয় - প্রাপ্তির সংখ্যাই ঈমানদারের জীবনে বেশি। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, "তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ গণনা করলে তার সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না। আল্লাহ তো অবশ্যই ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু"। (সুরা : নাহল - আয়াত -১৮) কিন্তু আমরা জীবনের অপ্রাপ্তিগুলো নিয়ে পড়ে থাকি বলে প্রাপ্তির শুকরিয়া আদায় করতে পারি না। ফলে অশান্তি আমাদের জীবন থেকে যায় না।আর আল্লাহ আমাদের যতগুলি বরকতময় দিন দিয়েছেন তার মধ্যে জুমার দিন অন্যতম।
হাদিস শরিফে জুমার দিনের অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। যেমন:
জুমার দিন শুধু এই উম্মতের বৈশিষ্ট্য : হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, "নবীজী সা: বলেন, আমাদের পূর্ববর্তী উম্মতকে জুমার দিন সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা অজ্ঞ রেখেছেন। ইহুদিদের ফজিলতপূর্ণ দিবস ছিল শনিবার। খ্রিষ্টানদের ছিল রোববার। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দুনিয়ায় পাঠালেন এবং জুমার দিনের ফজিলত দান করলেন। সিরিয়ালে শনি ও রোববারকে শুক্রবারের পরে রাখলেন। দুনিয়ার এই সিরিয়ালের মতো কেয়ামতের দিনও ইহুদি খ্রিষ্টানরা মুসলমানদের পরে থাকবে। আমরা উম্মত হিসেবে সবার শেষে এলেও কেয়ামতের দিন সব সৃষ্টির আগে থাকব" (মুসলিম শরিফ - হাদিস ১৪৭৩)।
জুমার দিন দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দিন : হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, নবীজী সা: বলেছেন, "পৃথিবীর যত দিন সূর্য উদিত হবে তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো শুক্রবার। এ দিনে আদম আ:-কে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে। এ দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছিল। সর্বশেষ কেয়ামত সংঘটিত হবে শুক্রবার দিনে"। (মুসলিম শরিফ - হাদিস ৮৫৪)।
সপ্তাহের সেরা দিন : রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, "জুমার দিন দিবসসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত "(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪)।
গুনাহ মাফের দিন : রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, "যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করবে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করবে, যদি তার নিকট থাকে। তারপর জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়। নির্ধারিত নামাজ আদায় করে। তারপর ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে। তাহলে তার এই আমল পূর্ববর্তী জুমার দিন থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব সগিরা গুনাহের জন্য কাফ্ফারা হবে " (আবু দাউদ শরিফ - হাদিস ৩৪৩)।
প্রতি কদমে এক বছরের নেকি লাভ : নবীজী সা: ইরশাদ করেছেন, "যে ব্যক্তি জুমার দিনে উত্তমরূপে গোসল করে আগে আগে মসজিদে যায় এবং বাহনে না চড়ে হেঁটে যায়। ইমামের কাছাকাছি বসে মনোযোগ দিয়ে ইমামের আলোচনা শোনে, অনর্থক কাজ না করে, তবে তার প্রতি কদমের বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা এক বছর সিয়াম ও কিয়ামের সাওয়াব দান করেন"।(তিরমিজি শরিফ-হাদিস
- ৪৫৬)।
শুক্রবার মুসলমানদের ঈদের দিন : রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন, "এই দিন অর্থাৎ জুমার দিনকে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন বানিয়েছেন" (সহিহ ইবনে মাজাহ - হাদিস - ৯০৮)।
কবরের আজাব থেকে নাজাত : হাদিস শরিফে এরশাদ হয়েছে, "কোনো মুসলমান শুক্রবারে রাতে কিংবা দিনে ইন্তেকাল করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন" (তিরমিজি-১০৭৪)।
ফজিলতপূর্ণ এই দিনের বিশেষ কিছু আমলের কথা হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি আমলের কথা উল্লেখ করা হলো।
১. প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করা ফজিলতপূর্ণ। এর মধ্যে শুক্রবারে ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করা বেশি ফজিলতপূর্ণ। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহর কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ নামাজ হলো শুক্রবারের ফজরের নামাজ। যা জামাতের সাথে আদায় করা হয় (সিলসিলাতুস সহিহা-৪/৯১)।
২. গোসল করা।
৩. উত্তম পোশাক পরিধান করা।
৪. সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৫. আগে আগে মসজিদে যাওয়া : এই দিনের গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে আগে আগে মসজিদে যাওয়া। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, "হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বোঝো " (সূরা জুমাআ- আয়াত - ৯)।
রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, "জুমার দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতারা অবস্থান করেন এবং ক্রমানুসারে আগে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি মোটাতাজা উট কোরবানি করে। এরপর যে আসে সে ওই ব্যক্তি যে একটি গাভী কোরবানি করে। এরপর আগমনকারী ব্যক্তি মুরগি দানকারীর মতো। তারপর ইমাম যখন বের হন তখন ফেরেশতাগণ তাদের লেখা বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগসহকারে খুতবা শুনতে থাকেন "(সহিহ বুখারি - হাদিস - ৯২৯)।
৬. সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করা : আবু সাঈদ খুদরি রা: থেকে বর্ণিত, রাসূল সা: বলেন, "যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহফ পাঠ করবে, তার জন্য দুই জুমা পর্যন্ত নূর উজ্জ্বল করা হবে" (আমালুল ইয়াওমী ওয়াল লাইল, হাদিস : ৯৫২)।
৭. বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করা : এই দিনের আরেকটি আমল হচ্ছে নবীজীর ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা। এই মর্মে রাসূল সা: বলেন," তোমরা এই দিনে আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করো। কেননা তোমাদের দরুদ আমার সম্মুখে পেশ করা হয়ে থাকে" (আবু দাউদ শরিফ, হাদিস - ১০৪৭)।
৮. মসজিদে এসে জিকির, তেলাওয়াত ও ইবাদত ভিন্ন অপ্রয়োজনীয় অন্য কোনো কথা না বলা : হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, নবীজী সা: বলেছেন, "জুমার নামাজের খুতবার সময় তুমি যদি তোমার সাথিকে চুপ থাকতে বলো, তবে এটাও তোমার অনর্থক কাজ হবে" (বুখারি শরিফ - হাদিস - ৯০৬)।
৯. বিশেষ করে দোয়ার গুরুত্ব দেয়া : জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ একটি আমল হচ্ছে দোয়ার প্রতি মনোনিবেশ করা। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা: থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, "জুমার দিনের ১২ ঘণ্টার মধ্যে একটি বিশেষ মুহূর্ত এমন আছে যে, তখন কোনো মুসলমান আল্লাহর নিকট যে দোয়া করবে আল্লাহ তা কবুল করেন" (আবু দাউদ শরিফ, হাদিস - ১০৪৮)।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে জুমার দিনের সকল আমল করার তাওফিক দান করুন এবং বেশী বেশী ফজিলত ও উত্তম প্রতিদান নসিব করুন।
চলবে -
=================================================================
পূর্ববর্তী পোস্ট -
ঈমান ও আমল ১ - Click This Link
(যেসব আমলে মানুষের অভাব দূর হয় ও জীবন সুখের হয়)।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৪
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই ,আগামীকাল শুভ দিন আর এই শুভ দিনে আললাহ আপনার মনের সকল আশা পূরন করুন।
ভালো ভালো খাবার সবই খাবেন । আর যিনি আপনাকে এ সব ভালো খাবার খাওয়ার তওফিক ও সামর্থ্য দিয়েছেন তার শুকরিয়া আদায়েরও আপনাকে আমাকে তওফিক দিন এবং আরো তওফিক দিন সহিসালামতে জুমার নামাজ আদায় করার।
২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
অন্য উম্মতেরা মুসলমানদের মতো এত ভাগ্যবান নয়, ওরা তেমন কিছু পায়নি, এটা হলো মুসলমানদের বেকুবী ধারণা; ইহুদীদের "সাবাথ" ও খৃষ্টানদের "শনি ও রবিবার" অনেক ভাবগম্ভীর, অনেক প্রানবন্ত, অনেক বুদ্ধিদীপ্ত।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৫
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
একেক ধর্মে একেক দিন পবিত্র হিসাবে দেখা হয় । ইহুদী,খৃষ্টান,বৌদ্ধ,হিন্দু প্রত্যেকে ধর্মেই কোন একদিনকে পবিত্র হিসাবে গণ্য করা হয়। কেউ শনিবার, কেউ রবিবার আবার কেউ মাসের নির্দিষ্ট দিনকে পবিত্র হিসাবে গণ্য করে ।
মুসলমানদের জন্য তেমনি সাপ্তাহিক শুক্রবার এমন দিন।
৩| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৫
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: অন্য দিনগুলো কি অশুভ?
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১০
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নুরুলইসলা০৬০৪ ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
ইসলামের দৃষ্টিতে কোন দিনই অশুভ না এবং সপ্তাহের বাকী দিনগুলো ও অশুভ নয় তবে শুক্রবার মুসলমানদের জন্য একটি বিশেষ মর্যাদার দিন।
একেক ধর্মে একেক দিন পবিত্র হিসাবে দেখা হয় । ইহুদী,খৃষ্টান,বৌদ্ধ,হিন্দু প্রত্যেকে ধর্মেই কোন একদিনকে পবিত্র হিসাবে গণ্য করা হয়। কেউ শনিবার, কেউ রবিবার আবার কেউ মাসের নির্দিষ্ট দিনকে পবিত্র হিসাবে গণ্য করে ।মুসলমানদের জন্য তেমনি সাপ্তাহিক শুক্রবার একটি দিন।
৪| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২২
চাঁদগাজী বলেছেন:
মানুষকে কাজ করার পর, ২/১ দিন বিশ্রাম নিতে হয়; সেইজন্য এইদিনগুলো মানুষের কাছে প্রিয় দিন; মানুষকে কেহ কোন ফজিলত দিচ্ছে না, মানুষ নিজের বিশ্রামের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন, ইহা মানুষের দরকারী ভাবনা।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৫
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: মানুষের জীবন এ বিশ্রামের যেমন প্রয়োজন আছে ঠিক তেমনি আবার প্রার্থনার ও প্রয়োজন আছে।আর একজন মুসলমান হিসাবে শুক্রবার অনেক ফজিলতের।আর প্রার্থনা র মাধ্যমে স্রস্টার সাথে মানুষের বন্ধন দৃঢ় হয়।কাজেই এটাও দরকার মানুষের নিজের প্রয়োজনেই।
৫| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণ পিটাপিটি করবো, তারপর গোসল সেরে যাবো মসজিদে, নামজ শেষে হিসাব নিকাশ শেষ করে আড়াইটার দিকে বের হয়ে যাবো দাওয়াতে, বিকাল আর সন্ধ্যাটা কাটবে হালকা আড্ডায়।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৯
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইজান,আপনার মন্তব্য এর জন্য। সেটাই। শুক্রবারে আমরা যে যাই করি জুমার নামাজের সাথে সম্পর্ক রাখা বা থাকা উচিত। তারপরে যার যা দৈনন্দিন কাজ তা আমরা করবো, করতে হবে। আর আল্লাহ নামাজ পড়ে রিজিক তালাসে বের হতে তথা দুনিয়াবী বাকি কাজ করতে আদেশ করেছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: আগামীকাল শুভ দিন। তাই ভালো ভালো খাবার খাবো।
সকালে খাবো- নেহারী, লটপটি সাথে তন্দুর রুটি।
দুপুরে তেহারী।
রাতে খিচুরী আর মূরগীর মাংস। সাথে বেগুন ভাজা।