নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

" মাতৃগর্ভ (জরায়ু) "- সৃষ্টিকর্তার এক অপার রহস্যময় সৃষ্টি ,মানব জীবনের সৃষ্টির শুরুটা যেখানে। - ( মানব জীবন - ২ )।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩১



সন্তানের আকাংখা নর-নারী নির্বিশেষে প্রত্যেকের জীবনে থাকে।সন্তানের মাধ্যমে একটি সংসার পূর্ণতা পায় এবং মানব জীবনের ধারাবাহিকতা রক্ষা হয় ।পরিণত বয়সে এবং বিবাহের পরে এই আকাংখা বাস্তবে রুপলাভ করার সুযোগ আসে।একজন নারী এবং একজন পুরুষ যখন বিবাহের পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয় তখন থেকে তাদের বিবাহীত জীবন শুরু হয়। বিবাহীত জীবনে তাদের উভয়ের যত ধরনের আশা আকাংখা থেকে থাকে তার মধ্যে একটি সন্তানের আকাংখাই সবচেয়ে বেশী এবং তীব্র থাকে।আর প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী এবং স্রষ্টার দয়ায় বিবাহের কিছুদিন পর একজন নারী গর্ভবতী হয়।

একজন মেয়ে প্রথম যখন গর্ভধারন করেন তার কাছে বিষয়টি খুব স্বপ্নময় হয়ে থাকে। অনাগত শিশুকে নিয়ে তার মধ্যে থাকে বিভিন্ন জল্পনা কল্পনা । গর্ভের সন্তান কি ছেলে নাকি মেয়ে? গর্ভের শিশু এখন কতটুকু বড় হয়েছে? ওর কি চুল গজিয়েছে? এখন কি ও চোখ খুলতে পারে? ইত্যাদি কত কী চিন্তা তার মনে ভর করে।অনাগত সন্তানকে নিয়ে সে নানা রকম সুখ স্বপ্ন বিভোর হয়।মাতৃগর্ভে প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে মানব ভ্রূণ থেকে মানব সন্তান গঠনের প্রক্রিয়া চলতে থাকে । সন্তান গঠনের নানা পর্যায় ও প্রক্রিয়া শেষে একটা সময় পরিপূর্ণ মানব শিশু মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়এবং শুরু হয় এ দুনিয়াতে মানুষ হিসাবে তার জীবনযাত্রা।

মানব মনের এসব প্রশ্নের উত্তর জানার সহজ উপায় হচ্ছে গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসাউন্ড করা ।আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে বাচ্চার কি পরিবর্তন ঘটে তার ধারণা পাওয়া যায় ।



মানব সন্তান গঠনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহতাআলা বলেন," ইকরা বিসমি রব্বিকাল্লাজি খালাক, খালাকাল ইনসানা মিন আলাক" অর্থ্যাৎ "পড়ুন, আপনার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্তপিণ্ড থেকে" [সুরা আলাক - আয়াত- ১-২]।

এটাই সর্বপ্রথম অহী যা নবী (সাঃ)-এর উপর ঐ সময় অবতীর্ণ হয় যখন তিনি হেরা পর্বতের গুহায় আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন ছিলেন। অর্থ্যাত, কোরআন শুরুই হয়েছে মানুষ সৃষ্টির আলোচনা নিয়ে। এছাড়া কোরআনের বিভিন্ন সুরায় মানব সৃষ্টি বা মানব ভ্রূণের বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

মাতৃগর্ভে সন্তান গঠনের চক্র সাধারণত দীর্ঘ ২৮০ দিন যাবত চলতে থাকে, যা ৪০ দিন অন্তর সুনির্দিষ্ট সাতটি স্তরে বিভক্ত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা আল কোরআনে বর্ণনা করেছেন, "এক নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত অতঃপর আমরা একে গঠন করেছি পরিমিতভাবে, আমি কত সুনিপুণ স্রষ্টা"। [সুরা মুরসালাত :২২-২৩]।
রাসুল হজরত মোহাম্মদ (স.) মাতৃগর্ভে মনবশিশু জন্মের স্তর সম্পর্কে বলেছেন, "তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টির উপাদান আপন মাতৃগর্ভে বীর্যের আকারে ৪০ দিন, জমাটবাঁধা রক্তে পরিণত হয়ে ৪০ দিন, গোশত আকারে ৪০ দিন। এরপর আল্লাহ একজন ফেরেশতাকে পাঠান এবং চারটি বিষয়ে আদেশ দেন যে, তার (শিশুর) আমল, রিজিক, আয়ুকাল ও ভালো না মন্দ সব লিপিবদ্ধ করতে। অতঃপর তার মধ্যে রুহ ফুঁকে দেওয়া হয়।" [বুখারি, হাদিস নং-২৯৬৮]

নারী-পুরুষের যৌন মিলনের সময় নারীর ডিম্বনালির ফানেলের মতো অংশে ডিম্বাণু নেমে আসে। ওই সময় পুরুষের নিক্ষিপ্ত বীর্যের শুক্রাণু জরায়ু বেয়ে ওপরে উঠে আসে এবং তা ডিম্বনালিতে প্রবেশ করে। প্রথমে একটি শক্তিশালী শুক্রাণু ডিম্বাণুটির দেহে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে তার মধ্যে অন্য কোনো শুক্রাণু প্রবেশ করতে পারে না। এভাবে নারীর ডিম্বাণু নিষিক্ত (Fertilization) হয় এবং নিষিক্ত ডিম্বাণুটি জরায়ুতে নেমে প্রোথিত (Embedded) হয় (গাইনোকলজি শিক্ষা, পৃষ্ঠা : ২২)।তা ছাড়া নারীর ডিম্বাণুর বহিরাবরণে প্রচুর সিয়ালাইল-লুইস-এক্সসিকোয়েন্স নামের চিনির অণুর আঠালো শিকল শুক্রাণুকে যুক্ত করে পরস্পর মিলিত হয়। আর এই শুক্রাণু দেখতে ঠিক মাথা মোটা ঝুলে থাকা জোঁকের মতো। জোঁক যেমন মানুষের রক্ত চুষে খায়, শুক্রাণু ঠিক তেমনি ডিম্বাণুর মধ্যে প্রবেশ করে মায়ের রক্তে থাকা প্রোটিন চুষে বেড়ে ওঠে। নিষিক্ত ডিম্বাণুটি সন্তান জন্মের রূপ নিলে সাধারণত নিম্নে ২১০ দিন ও ঊর্ধ্বে ২৮০ দিন জরায়ুতে অবস্থান করে। ওই সময়ের মধ্যে ডিম্বাশয়ে নতুন করে কোনো ডিম্বাণু প্রস্তুত হয় না।



এবার আসুন দেখি মাতৃগর্ভে সন্তান গঠনের ধারাবাহিক পর্যায়বিন্যাস গুলি বা গর্ভাবস্থায় প্রতি সপ্তাহে কী ঘটে -

** প্রথম তিন সপ্তাহ - এ সময়ের মধ্যে শুক্রাণু এবং ডিম্বানু একত্রিত হয়ে একটি কোষে রূপান্তর হয় যাকে ভ্রুনকোষ বলা হয়।এই সময়ের মধ্যে যদি কারও একাধিক ডিম্বানু বের হয় এবং নিষিক্ত হয় তাহলে তার একাধিক ভ্রুনকোষ থাকতে পারে। (যমজ বা তারও বেশি)
** ৪র্থ সপ্তাহ - নিষিক্ত যে ডিমটি ফেলোপিয়ান টিউবের মধ্যে দিয়ে জরায়ুর দিকে এগিয়ে যায় সেই ডিমটি একটি একক কোষ হতে শুরু করে এবং পুনরায় পুনরায় সেটা বিভিন্ন অংশে বিভক্ত হতে থাকে । জরায়ুর কাছে পৌঁছাতে পৌঁছাতে এই ডিম বিভক্ত হতে হতে প্রায় ১০০টি কোষেরও বেশী কোষে পরিনত হয়,যাকে বলা হয় ভ্রুন ।একটি অংশ হল কোষের ভেতরের অংশ যা পরিপূর্ণ ভ্রুনে পরিনত হবে এবং আরেকটি হল বাইরের অংশ যা ভেতরের ভ্রূণকে পুষ্টি যোগাবে এবং রক্ষা করবে । গর্ভফুলও এই সময়ের মধ্যেই গঠিত হতে শুরু করে ।
** ৫ম সপ্তাহ - এ সপ্তাহ থেকে শিশুর মস্তিষ্ক এবং হৃৎপিণ্ড গঠন হয়। ভ্রুণ জরায়ুতে বেড়ে উঠতে থাকে এবং ধীরে ধীরে উন্নত হতে থাকে । ভ্রুনের বাইরের অংশ মায়ের রক্ত সরবরাহের সংযোগের সাথে সংযোগ স্থাপনের কাজ শুরু করে । আর ভ্রুনের ভেতরের অংশ প্রথমে দুইটি স্তরে এবং পরে তিনটি স্তরে বিভক্ত হয়ে যায় । পরবর্তীতে এই প্রত্যেকটি স্তর দিয়েই শিশুর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ তৈরী হয় ।৬ষ্ঠ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে শিশু খুব তাড়াতাড়ি বাড়তে থাকে এবং শিশুর পেছনের দিকের স্নায়বিক নালীটি বন্ধ হয়ে যায় এবং শিশুর হৃদপিণ্ড রক্ত সঞ্চালন শুরু করে । এই সময় শিশুর কানের অভ্যন্তরীণ অংশ চোয়ালের সাথে সংযোগস্থাপন করে এবং শিশুর শরীর ইংরেজী C এর মত বক্র আকার ধারন করে ।
** ৭ম এবং ৮ম সপ্তাহ - এই সপ্তাহে শিশুর মস্তিস্ক এবং মুখমণ্ডল আগের থেকেও সুগঠিত হতে থাকে । নাকের ছোট ছোট ফুটো স্পষ্ট হতে থাকে এবং চোখের লেন্স গঠিত হতে থাকে । এই সময় ছোট ছোট শাখা প্রশাখার মত হয়ে হাত এবং পা স্পষ্ট হতে থাকে ।
এ সময়েই শিশুর তরুণাস্থি গঠিত হয় যা পরে হাত এবং পায়ের হাড় এ পরিনত হয় । উপরের ঠোঁট এবং নাক গঠিত হতে থাকে ।

** ৯ থেকে ১১ সপ্তাহ - ৯ম সপ্তাহে শিশুর মুখমণ্ডল গঠিত হতে থাকে । চোখ বড় এবং আরও সুস্পষ্ট হতে থাকে এবং সেখানে কিছু রঙও থাকে । মুখ ও জিহবা থাকে এবং সাথে থাকে কিছু ছোট ছোট স্বাদ তন্তু । হাত এবং পা এবং আঙ্গুল গঠন শুরু হয়।

** ১০ম সপ্তাহ - শিশুর মাথা আরও বেশি গোল হতে থাকে এবং ঘাড়, গলা গঠিত হওয়া শুরু করে । এই সময় শিশুর চোখের পাতা বন্ধ হতে শুরু করে তার চোখকে রক্ষা করার জন্য । চোয়ালের হাড় গঠন শুরু হয় । শিশুর হৃদপিণ্ড এই সময়ে পুরোপুরি গঠিত হয়ে যায়।

** ১১তম সপ্তাহ - ১১ তম সপ্তাহে শিশুর চোখ দুটো আলাদা হয় এবং কান একটু একটু করে স্থাপিত হতে থাকে । শিশুর যকৃতে লাল রক্ত কনিকা তৈরী হতে শুরু করে । এই সময় শিশুর লিঙ্গ ধীরে ধীরে তৈরী হতে শুরু করে । এইসময় কানের আকৃতি দৃশ্যমান হতে থাকে এবং তার হাত এবং পায়ের আঙুল আলাদা হতে থাকে । সেখানে নখও থাকে ।

** ১২ থেকে ১৪ সপ্তাহ - ১২ তম সপ্তাহে ভ্রুনটি পুরোপুরি গঠিত হয়ে যায় । সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, পেশীসমূহ, হাত,পা এবং হাড়গুলো জায়গামত স্থাপিত হয়ে যায় এবং শিশুর যৌন অঙ্গগুলো ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে থাকে । শিশুর কংকাল যা তন্তু দিয়ে গঠিত তা ধীরে ধীরে শক্ত হাড়ে পরিণত হতে থাকে ।
নারীর গর্ভ সঞ্চার হওয়ার পর ১২০ দিন অতিবাহিত হলে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যায়, সন্তানের লিঙ্গ কী হবে অথাৎ সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে! ছেলে-মেয়ে সৃষ্টি সম্পর্কে আল্লাহ বলেন-" আসমানসমূহ ও যমীনের আধিপত্য আল্লাহরই। তিনি যা ইচ্ছে তা-ই সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছে কন্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছে পুত্র সন্তান দান করেন,অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছে তাকে করে দেন বন্ধ্যা; নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাবান"।(সুরা আশ শুরা - আয়াত ৪৯ - ৫০)

** ১৩-১৪ তম সপ্তাহে শিশুর প্রস্রাব তৈরী হতে থাকে এবং সে এমনিয়টিক ফ্লুইড এর মধ্যে প্রস্রাব করতে থাকে ।

** ১৫ থেকে ১৭ সপ্তাহ - এ সময়ে শিশুর কংকালে হাড় তৈরী হতে থাকে এবং তার চুলের ধরনও ঠিক হতে থাকে ।
শিশুর চোখ সামনের দিকে দেখতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে নড়াচড়া করতে থাকে। কানগুলো চূড়ান্ত রূপলাভ করার প্রায় কাছাকাছি চলে আসে । শিশু মুখ দিয়ে চোষার ক্ষমতা লাভ করতে থাকে । এই সময়ে শিশুর নড়াচড়া সুসমন্বিত হতে থাকে এবং আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষায় তা ধরা পড়ে ।
(গর্ভফুল (Placenta) এর মাধ্যমে ভ্রূণ এবং মায়ের সাথে সংযোগ রক্ষা হয় এবং তার জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছুর যোগান পায়।গর্ভফুল ভ্রূণ বৃদ্ধি, সংরক্ষণ, প্রতিরোধ ইত্যাদি কাজে অন্যতম ভূমিকা রাখে। শিশু গর্ভফুলের মাধ্যমে মায়ের শরীর থেকে রক্তের মাধ্যমে নানা পুষ্টি ভ্রূণের দেহে বহন করে, খুব ধীর গতিতে রেচন পদার্থ মায়ের দেহের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়।গর্ভফুলের সাহায্যে ভ্রূণ অক্সিজেন (O2) গ্রহণ ও কার্বনডাই অক্সাইড (CO2) ত্যাগ করে মায়ের ফুসফুসের মাধ্যমে, জীবাণু (Infection) থেকে ভ্রূণকে রক্ষা করে। এছাড়া ভ্রূণটি ঠিকমত জরায়ুতে আটকে রাখা, পুষ্টি সঞ্চয়, সম্পর্ক রক্ষা, হর্মোন সৃষ্টি ইত্যাদি কাজে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এভাবে ভ্রূণটি জরায়ুতে বেড়ে উঠতে থাকে ও ১২০ দিন অতিবাহিত হলে তখন শিশুর রূহ ফুঁকে দেয়া হয়। আর শিশু নড়েচড়ে উঠে ও আঙ্গুল চুষতে থাকে )।অর্থ্যাত এ সময় ভ্রূণে প্রান সঞ্চার হয় বা রুহ দেওয়া হয়।

কোরানের বর্ণনায় প্রাণকে “রুহ” বলা হয় আর এটি আল্লাহর সৃষ্টি, তার হুকুমে পরিচালিত। যেমন আল্লাহ্‌ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেছেন,"তারা তোমাকে রুহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বলে দাও, রুহ আমার রবের হুকুমঘটিত বিষয়। কিন্তু তোমরা সামান্য জ্ঞানই লাভ করেছ"(সুরা বনি ইসরাঈল ,আয়াত - ৮৫)।
শরীর সৃষ্টির পর আল্লাহ গর্ভে রুহ (আত্মা) ফুঁকে দেন। এর দলিল হল- আল্লাহ্‌ তাআলা আদম আঃ কে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তার দেহে রুহ ফুঁৎকার করেছেন। এবং আদমের সকল সন্তানের মাঝে রুহ ফুঁকে দিয়েছেন। যেমন আল্লাহ্‌ বলেছেন,"অতঃপর যখন তাকে (আদম আঃ কে) পরিপূর্ণ আকৃতি দান করব এবং তার মধ্যে আমার রূহ থেকে ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তাকে সেজদা করবে," (সূরা হিজর ,আয়াত - ২৯)।
মহান আল্লাহ মায়ের গর্ভে মানুষের আকৃতি সৃষ্টি করে তার ভেতর রুহ দান করেন। তখন তার ভাগ্যলিপিতে কিছু বিষয় লিখে দেওয়া হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "প্রত্যেক মানুষ তার মায়ের পেটে ৪০ দিন বীর্যরূপে জমা থাকে। তারপর পরিবর্তিত হয়ে রক্তপিণ্ডের আকার হয়। এরপর পরিবর্তিত হয়ে মাংসপিণ্ড হয়। অতঃপর আল্লাহ তার কাছে ফেরেশতা পাঠিয়ে রুহ ফুঁকে দেন। আর তার প্রতি চারটি নির্দেশ দেওয়া হয়। লিখে দেওয়া হয় তার আয়ু, তার জীবিকা, তার আমল এবং সে দুর্ভাগা, না সৌভাগ্যবান"। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩৩২)
রুহ বা আত্মা যৌগিক নাকি মৌলিক পদার্থ—এ প্রসঙ্গে দার্শনিকদের মধ্যে প্রাচীনকাল থেকেই মতভেদ চলে আসছে। ইমাম গাজালি, ইমাম রাজি এবং বেশির ভাগ সুফি দার্শনিকের অভিমত হলো, রুহ কোনো যৌগিক পদার্থ নয, বরং এটি একটি সূক্ষ্ম মৌলিক পদার্থ। কিন্তু বেশির ভাগ আলেমের মতে, রুহ একটি সূক্ষ্ম দেহবিশিষ্ট বস্তু। এ অভিমত অনুযায়ী রুহ যদি সূক্ষ্ম দেহবিশিষ্ট কোনো বস্তু হয়, তাহলে সেটা ফুঁকে দেওয়ার অনুকূল। আর যদি রুহকে সূক্ষ্ম পদার্থ মেনে নেওয়া হয়, তাহলে রুহ ফুৎকার করার অর্থ হলো মানবদেহের সঙ্গে তার সংযোগ স্থাপন করা।


** ১৮ থেকে ২০ সপ্তাহ -১৮তম সপ্তাহে শিশুর কান তার মাথার পাশে পুরোপুরিভাবে স্থাপিত হয়ে যায় এবং এই সময় হয়ত শিশু শুনতে পায় ।
* ১৯তম সপ্তাহে ভারনিক্স কেসিওসা নামে একটি আঠালো পনিরের মত পদার্থ শিশুকে ঢেকে দিতে শুরু করে । এই আঠালো পদার্থটি শিশুর নরম ত্বককে শক্ত হয়ে যাওয়া, ফেটে যাওয়া এবং বিভিন্ন ধরনের ঘর্ষণের হাত থেকে রক্ষা করে ।

* ২০ তম সপ্তাহে শিশু নড়াচড়া করতে শুরু করে এবং মা তা বুঝতে পারে ।

** ২১ থেকে ২৩ সপ্তাহ - ২১তম সপ্তাহে শিশু আরও অনেক বেশী কর্মক্ষম হয়ে ওঠে এবং ঢোক গিলতে সক্ষম হয় । এই সময়ের মধ্যেই শিশুর ঘুমানো এবং জেগে ওঠার একটি প্রবনতা তৈরী হয় । শিশুর এই জেগে ওঠা বা ঘুমানো মায়ের জেগে থাকা বা ঘুমানোর মত হয় না । এমন হতে পারে, মা যখন রাতে ঘুমাচ্ছে তখন শিশু জেগে আছে এবং নড়াচড়া করছে । যদিও এখনও শিশুর ফুসফুস ঠিকমত কাজ করতে পারে না কিন্তু শিশু শ্বাস প্রশ্বাস এর চর্চা করতে থাকে যেন জরায়ুর বাইরে সে বেঁচে থাকতে পারে । এই সময়ে শিশু মায়ের কাছে থেকে অক্সিজেন গ্রহন করতে থাকে নাড়ির মাধ্যমে এবং জন্মের আগে পর্যন্ত সে এভাবেই মায়ের কাছে থেকে অক্সিজেন গ্রহন করতে থাকবে ।
*২২তম সপ্তাহে শিশুর চোখের উপরে ভ্রু তৈরী হতে শুরু করে ।

* ২৩তম সপ্তাহে শিশুর চামড়ায় ভাঁজ দেখা দেয় এবং চামড়ার রঙ গোলাপী থেকে ধীরে ধীরে লাল হতে শুরু করে । হাতের তালুর রেখা এবং পায়ের তালুর রেখা তৈরী হতে শুরু করে । মেয়ে শিশুর ক্ষেত্রে তাদের জরায়ু এবং ডিম্বাশয় নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপিত হয়ে যায় যেখান থেকে ডিম উৎপাদন হবে আর ছেলেদের ক্ষেত্রে তলপেট থেকে অণ্ডকোষ নিচে ঝুলতে থাকে ।

** ২৪ থেকে ২৬ সপ্তাহ - ২৪তম সপ্তাহে শিশুর মাথায় চুল গজাতে শুরু করে ।

* ২৫তম সপ্তাহে শিশুর চমকে ওঠার প্রতিক্রিয়া তৈরী হতে থাকে । এই সময় শিশু হয়ত পরিচিত কোন শব্দের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখাতে সক্ষম হয় যেমন, কথা,নড়াচড়া,স্পর্শ ইত্যাদির প্রতি সে প্রতিক্রিয়া করতে সক্ষম হয় ।

* ২৬তম সপ্তাহে শিশুর হাতের আঙ্গুল পুরোপুরি তৈরী হয়ে যায়।

**২৭ এবং ২৮ সপ্তাহ - ২৭তম সপ্তাহে শিশুর ফুসফুস, মস্তিস্ক, স্নায়ুতন্ত্র, এবং পরিপাক্তন্ত্র তৈরী হয়ে যায় কিন্তু পুরোপুরি পরিপক্ক হয় না । এগুলো পুরোপুরি পরিপক্ক হতে গর্ভাবস্থার শেষ সময় পর্যন্ত লেগে যায় এবং এগুলো শিশুর জন্মের পর ঠিকঠাকভাবে কাজ করা শুরু করে । এর আগে এগুলো প্রতিনিয়ত উন্নত থেকে উন্নততর হতে থাকে ।

* ২৮তম সপ্তাহে শিশুর চোখের পাতা আংশিকভাবে খোলে এবং শিশুর চোখের পাপড়ি গঠিত হতে থাকে । এই সময়ে শিশুর হৃদস্পন্দন আগের চেয়ে একটু কমে মিনিটে ১৪০বার হয় ।

** ২৯ থেকে ৩১ সপ্তাহ - ২৯তম সপ্তাহে শিশুর হাড় পুরোপুরি গঠন হয়ে যায় যদিও সেগুলো খুব নরম এবং নমনীয় থাকে ।

* ৩০তম সপ্তাহে শিশুর চোখ কিছু সময়ের জন্য খোলা থাকে এবং মাথায় অনেক চুল দেখা যায় । এই সময়ে তার হাড়ের মজ্জায় লাল রক্তকণিকা গঠিত হতে থাকে এবং শিশু তার হাতের আঙ্গুল চুষতে পারে ।

* ৩১তম সপ্তাহে শিশুর স্নায়ুতন্ত্র এমন পর্যায়ে আসে যখন সে শরীরের তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে ।

** ৩২ থেকে ৩৪ সপ্তাহ - এ পর্যায়ে পায়ের নখ দৃশ্যমান হয় । এই সময় শিশুর শরীর প্রয়োজনীয় খনিজ যেমন, লৌহ, ক্যালসিয়াম শোষণ করতে থাকে । এই সময়ে শিশু নিচের দিকে মাথা দিয়ে শুয়ে থাকে এবং জন্ম নেয়ার জন্য প্রস্তুত হতে থাকে । এটা সেফালিক প্রেজেন্টেশন নামে পরিচিত । শিশুর চোখের তারা সংকোচন ও প্রসারন হতে শুরু করে এবং তার চোখে আলো পড়লে তা সে সনাক্ত করতে পারে । এই সময় শিশুর হাড় আরও শক্ত হয় এবং মাথার খুলি থেকে আলাদা হয় ।

** ৩৫ থেকে ৪০ সপ্তাহ - ৩৫তম সপ্তাহে শিশুর অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো গোল হতে শুরু করে এবং তার ওজন দ্রুত বাড়তে থাকে ।

* ৩৬তম সপ্তাহে শিশুর ফুসফুস শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয় । এই সময় শিশু স্তন পান করার জন্য প্রস্তুত হয় এবং তার পরিপাকতন্ত্র পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যায় বুকের দুধ পরিপাক করার জন্য ।

*৩৭তম সপ্তাহকে গর্ভাবস্থার পরিপূর্ণ সময় বলে গন্য করা হয় । এই সময়ে শিশুর সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো কাজ করার প্রস্তুত হয়ে যায় । এই সময় শিশুর মাথা মায়ের শ্রোণীর দিকে নিম্নগামী হতে থাকে । যখন শিশুর মাথা এভাবে নিচে নেমে আসতে থাকে এই অবস্থাকে বলা হয় “এংগেজড” ।



তখন থেকে শিশু ভূমিষ্ঠ হবার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যায় এবং যে কোন এক শুভক্ষনে পরিবারের সকলকে আনন্দে ভাসিয়ে, খুশির বারতা নিয়ে এবং মাকে অনেক অনেক কষ্ঠ ,বেদনা ও আনন্দের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে ভূমিষ্ঠ হয় একটি শিশু ।আর তার সাথে সাথেই শুরু হয় মানুষ হিসাবে তার পথচলা।

চলবে -
=================================================================
পূর্ববর্তী পোস্ট -

মানব জীবন - ১ "মানুষের জন্ম প্রক্রিয়ার ইতিকথা"- Click This Link


তথ্যসূত্র - আল কোরআন,বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল এবং ছবি - গুগল।

জবাবদিহীতা - "মানুষ" - আমরা কোথা থেকে এসেছি এবং কোথায় যাব - এ প্রশ্নের জবাব জানা ও খোজার প্রেক্ষাপটে "মানব জীবন" সিরিজ লেখার দুঃসাহস।যদি লেখায় কোন দোষ-ত্রুটি অথবা ভুল চোখে পড়ে দয়া করে বললে সংশোধন করে নিব

উৎসর্গ : " দুনিয়ার সকল মা'কে " যারা সীমাহীন কষ্ট ও যন্ত্রণা সহ্য করে সন্তান জন্মদান করে পৃথিবীতে মানব জাতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছেন।

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



মানুষ তো কুমোরের বাড়ীতে তৈরি হয়, ইটের ভাটায় পোড়ায়ে বাজারে ছাড়া হয়।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫২

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আপনি সেটাই মন্তব্য করেছেন যেটা আপনি জানেন। আর দৌড় ততটুকু আমাদের যার যার যেটা বিশ্বাস ,যতটুকু জ্ঞান এবং যোগ্যতা।আর আললাহ মহাজ্ঞানী এবং সবকিছুর স্রষ্টা । তাইত তিনি মাটি থেকে আদম (আঃ) কে তৈরী করেছেন এবং তার পরবর্তী বংশধরদের বীর্য থেকে।

আর মানুষের তৈরী সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন -"অতএব, মানুষের দেখা উচিত কি বস্তু থেকে সে সৃজিত হয়েছে। সে সৃজিত হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি থেকে। এটা নির্গত হয় মেরুদন্ড ও বক্ষপাজরের মধ্য থেকে"। (সূরা তারিক - আয়াত ৫-৭)

আমরা আসলেই অনেক কিছু জানিনা বা অনেক কিছু ভূল জানি ।আর জানার এ চেষ্টাই মানুষ কে অন্যসব সৃস্ষ্টি থেকে আলাদা করে রেখেছে। আর জানার জন্য খোলা মন নিয়ে চেষ্টা করাটাই জরুরী।

২| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:২৪

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
কোরআনে সুনির্দিষ্ট করে বলা আছে মানুষ কিভাবে এক ফোটা নাপাক পানি থেকে সৃষ্টি হয়।

বিজ্ঞান এতোদিনে তা প্রমাণ করতে পেরেছে।

সুন্দর পোস্ট। +++++++++

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ মোঃ মাইদুল সরকার ভাই, আপনার চমতকার মন্তব্যের জন্য।

কোরান এবং বিজ্ঞান সাংঘর্ষিক নয় বরং আল কোরাআনে মানুষের জীবনে যতরকমের সমস্যা আসতে পারে বা আসবে সেই সব সমস্যার সমাধান দেওয়া আছে। শুধু প্রয়োজন সঠিক ভাবে কোরআনকে জানা ও বুঝা।

৩| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:২৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন, "কোরআনে সুনির্দিষ্ট করে বলা আছে মানুষ কিভাবে এক ফোটা নাপাক পানি থেকে সৃষ্টি হয়।
বিজ্ঞান এতোদিনে তা প্রমাণ করতে পেরেছে। "

-মানুষের শুক্র ও নারীর ডিম্ব নাপাক হবে কেন? বেদুইনদের দুনিয়াটা বেকুবীতে পরিপুর্ণ।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:০৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আমাদের জানা উচিৎ যে, সকল পদার্থই দেহের ভিতরে থাকা অবস্থায় দেহ পবিত্র থাকে। সেই পদার্থই আবার যখন দেহের আদম ও হাওয়া (আ) এর বংশধর প্রত্যেক মানুষকেই মনী তথা বীর্য হতে সৃষ্টি করা হয়েছে। এটিই সত্য কথা। আল-কুরআন আমাদেরকে এই সংবাদ দিয়েছে। পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমেও তা প্রমাণিত হয়েছে।

সকল পদার্থই দেহের ভিতরে থাকা অবস্থায় দেহ পবিত্র থাকে। সেই পদার্থই আবার বাহিরে আসে, তখন কিছু পদার্থ নাপাক হয় আবার কিছু পদার্থ নাপাক হয় না। যেমন প্রস্রাব, পায়খানা, রক্ত, মজি ইত্যাদি দেহের ভিতরে থাকা অবস্থায় পাক থাকে, কিন্তু যখনই দেহের বাহিরে আসে, তখন-ই নাপাক হয়ে যায়। এতে অজু ভঙ্গ হয় এবং কাপড়ে লাগলে কাপড়ও নাপাক হয়ে যায়। অপরপক্ষে দেহ থেকে যখন বায়ু নির্গত হয়, তখন দেহ এবং কাপড় নাপাক হয় না ঠিকই কিন্তু অজু ভঙ্গ হয়। আবার দেহ থেকে যখন বীর্য বের হয়, তখন অজু ভঙ্গ হয়, দেহ অপবিত্র হয়, এবং কাপড়ও নাপাক হয়। এখানে কথা থাকে যে, আয়েশা (রাঃ) যে সকল যায়গায় কাপড়কে রক্ত বা বীর্য থেকে ঘষে বা নখ দিয়ে খুঁটিয়ে পরিষ্কার করেছেন, সেই সকল ক্ষেত্রেই কিন্তু উল্লিখিত পদার্থ-দ্বয় শুকনা থাকার কথা উল্লেখ আছে। কাজেই ভেজা থাকলে অবশ্যই ধোলাই করা ছাড়া পবিত্রতা সম্ভব নয়। তবে পায়খানা-প্রস্রাব শুকনা অথবা ভেজা সকল ক্ষেত্রেই ধোলাই করতে হবে।

সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃত যে, বীর্য দেহের ভিতরে থাকা অবস্থায় নাপাক থাকে না কিন্তু দেহের বাহিরে আসলে তা নাপাক হয়ে যায়।

৪| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩২

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
পৃথিবীর অন্যান্ন প্রানীদের মত মানুষও একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী।
মানুষ মাটি দিয়ে তৈরি আলাদা ধরনের কোন প্রাণী নহে।
অন্যান্ন প্রানীদের মত এক জাতের প্রাণী মাত্র। এর রক্ত মাংশ কলিজা পিত্তথলি ভ্রুণ এর সাইজ জীবন চক্র ও রিপ্রডাক্টিভ সিষ্টেম হুবুহু মানুষের মতই।

সবই প্রকৃতির নিয়মে চলে, যারা প্রকৃতির সাথে খাপ খাওয়াতে পারেনা তারা বিলুপ্ত হয়। এভাবেই সব চলছে, চলে আসছে। কোন আলাদা কুদরতি লাগেনি।
এইটুকুন বুঝলে আর কিছু বুঝানো লাগে না।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান কালবৈশাখী ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।

অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রানীদের মত মানুষও একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী।এটা সর্বজনীন মিল। বাকি সব স্তন্যপায়ী প্রানীদের মত মানুষের সব কিছুই আছে তবে মানুষের যে বৈশিষ্ঠ্য যা আছে অন্যসব প্রানীদের নেই আর সে বৈশিষ্ঠ্যই মানুষকে শ্রেষ্ঠতর আসনে আসীন করেছে। মানুষের আছে স্বাধীনভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা,ভাল-মন্দের পার্থক্য বুঝার ক্ষমতা এবং আললাহ মানুষকে এ দুনিয়াতে সবকিছুর উপর শ্রেষ্ঠতর আসন দিয়েছেন।
আর প্রকৃতিতে টিকে থাকার জন্য জগতের সকল প্রাণী অভিযোজিত হয় বা অভিযোজন ক্ষমতা অর্জন করে প্রতিকুল পরিবেশে টিকে থাকার জন্য।এভাবে চলে আসছে এটা সঠিক ভাই।
তবে কোন কুদরত লাগেনি বা মাতৃগর্ভে মানুষের বেড়ে উঠা বা মানুষের তৈরীতে কোন কুদরতের প্রয়োজন হয়নি বা কোন এক অদৃশ্য কারিগর দ্বারা তা নিয়ন্ত্রিত বা তৈরী হয়নি এটা সঠিক নয়।

৫| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর একটি পোষ্ট।

এক শিশু মায়ের পেটে একটূ একটূ করে বড়। বড় রহস্যময় একটি ব্যাপার। ভেবে ভেবে আমি প্রচন্ড অবাক হই।
আল্লাহ চাহে তো আগামী মাসে আমার ঘরে একজন আসবে।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৫৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই, আপনার চমতকার মন্তব্যের জন্য।

যদি আমরা আমাদের জন্ম প্রক্রিয়া সম্পর্ক ভাবি তাহলে দেখব আসলেই আসলেই এ এক অপার রহস্যময় ব্যাপার ।আর এ জন্যই আললাহ বলেছেন ,এ দুনিয়ায় অনেক নিদর্শন রয়েছে চিন্তাশীল দের জন্য।

আর , নতুন অতিথীর সুস্থ্তা কামনা ও শুভআগমনের অপেক্ষা আর আপনার শুভ কর্মের সফলতার জন্য আপনাকে অভিনন্দন ।

৬| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: খুবই চমৎকার একটি লেখা। শিহরিত ও আচার্য হওয়ার কথা একটা মানব আরেক মানবের পেটে বেড়ে উঠে। সবই বিধাতার রহস্য।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নেওয়াজ আলি ভাই, আপনার চমতকার মন্তব্যের জন্য।

ঠিক সেটাই।সবই আললাহর নিদর্শন, যাতে আমরা আললাহকে এবং আমাদের সৃষ্টি সম্পর্কে ভুলে না যাই।

৭| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:২০

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: চমৎকার পোস্ট!
সবচেয়ে রহস্যময় দুর্গম দুঃসাহসী যাত্রা!!

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান জাকির ৭১৭১ ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।

ঠিক তাই , দুনিয়ার সবচেয়ে রহস্যময় দুর্গম দুঃসাহসী ও নিরাপদ যাত্রা ! মানব শিশুর জন্য।

৮| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:০০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সমস্ত প্রানীর জীবন চক্র একই রকম।মানুষ এই বৃহৎ প্রানী জগতেরই একটি।এখানেও আছে বুদ্ধিমান দের জন্য নিদর্শন।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৪৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নুরুলইসলা০৬০৪ ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।

মানুষ সৃষ্টিকর্তার সেরা সৃষ্টি।সব সৃষ্টির মাঝেই আছে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শন মানুষদের জন্য।আর মানুষদের জন্য তা আরো বেশী। কারন বাকি সব সৃষ্টিই জন্মগতভাবে স্বাধীন (জন্মের পরপরই তার নিজে নিজে চলতে পারে,খাদ্য সংগ্রহ ও খেতে পারে এবং যতদিন জীবিত থাকে ততদিন নিজে নিজেই জীবনধারন করতে পারে)।
অপরদিকে মানুষ জন্মায় অসহায় ভাবে। জন্মের পর স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও কথাবার্তা বলার জন্য তাকে অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয় বা তাকে অন্যের উপর নির্ভর করতে হয় এবং জীবনের শেষের দিকে এসে আবার তারা অসহায় হয়ে বা অপরের সাহায্য ছাড়া চলতে পারেনা।
অর্থ্যাত , মানুষ পৃথিবীতে আসে এবং যায় অসহায় অবস্থায়। জীবনের মাঝের কিছুদিন শুধু তার শক্তি,ক্ষমতা থাকে ।আর এতেই
সৃষ্টি সেরা সৃষ্টি মানুষের জন্য নিজেকে জানার, বুঝার ও অনুধাবন করার মেসেজ বিদ্যমান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.