নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছবি- banglanews24.com
সিয়াম সাধনার মাস রমজান ইসলামের মৌলিক বিধানগুলোর অন্যতম। জীবন ও জগতের সার্বিক কল্যাণ বিধানে সিয়াম তথা রমজানের গুরুত্ব সীমাহীন। মানবজীবনে খোদা ভীতি, সহমর্মিতা, ধৈর্য ইত্যাদি গুণ একটি আদর্শ সমাজের জন্য অপরিহার্য। তাই মানব জীবনটাকে যাতে ভোগের মোহকে মিটিয়ে দিয়ে ত্যাগের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়, মনুষ্য সমাজ যাতে আদর্শিক মানদণ্ডের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়, সে জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলমানের ওপর পবিত্র মাহে রমজানের রোজাকে ফরয করেছেন।
তবে রোজার মহৎ শিক্ষাটা যেন শুধু রমজানের একটি মাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বছরভরে এবং জীবনজুড়ে যেন এর অনুশীলন হতে থাকে সেজন্যই রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বছরের বার মাসের বিভিন্ন সময়ে নফল রোজা নিজে রেখেছেন এবং উম্মতকে রাখতে উৎসাহিত করেছেন। নফল রোজাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা।
ছবি - rupayon.com
শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত -
রমজান মাসের পরের মাস অর্থাৎ হিজরি সনের দশম মাস হলো শাওয়াল মাস। এ মাসের প্রথম দিনে মুসলিম উম্মার সর্ববৃহৎ জাতীয় উৎসব, ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। উৎসব আনন্দে মুসলমানগণ যাতে রমজানের মহৎ শিক্ষাটা ভুলে না যায়, হয় তো সে জন্যই রাসুলে করিম (সাঃ) এ মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখতে উম্মতকে উৎসাহিত করেছেন।
হযরত আবু আইয়ুব আনসারী (রাঃ) একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি রমজান মাসের সব ফরজ রোজাগুলো রাখল অতঃপর শাওয়াল মাসে আরও ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারাবছর ধরেই রোজা রাখল"। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং - ১১৬৪)।
মাহে রমজানের রোজার কমতি পুণ্যকে পূর্ণ করতেই শাওয়ালের ছয়টি রোজা। শাওয়ালের ছয়টি রোজার মাধ্যমে রমজানের রোযা আদায়ের তাওফিকের শুকরিয়াও আদায় করা হয়। যখন কোনো বান্দার আমল আল্লাহ তাআলা কবুল করেন, তখন তাকে অন্য একটি নেক আমলের তাওফিক দেন। সুতরাং এই রোজাগুলো রাখতে পারা রমজানের রোজা কবুল হওয়ারও লক্ষণ। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নিজে এই রোজা রাখতেন এবং সাহাবায়ে কিরামদের রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন।
রমজানের ৩০টি রোজার সঙ্গে শাওয়ালের ছয়টি রোজা যুক্ত হলে মোট রোজার সংখ্যা হয় ৩৬। আর প্রতিটি পুণ্যের জন্য ১০ গুণ পুরস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে কোরআনুল কারিমে। তাহলে ৩৬টি রোজার ১০ গুণ হলে ৩৬০টি রোজার সমান (এটি পুরস্কারের দিক থেকে)। অর্থাৎ সারা বছর রোজার সমান সওয়াব হবে। হজরত সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন, "রমজানের রোজা ১০ মাসের রোজার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দুই মাসের রোজার সমান। সুতরাং এই হলো এক বছরের রোজা"।(সুনানে নাসায়ি,হাদিস নং - ১৬২)।
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, " যে একটি সৎকর্ম করবে সে তার দশগুণ (পুরস্কার) পাবে এবং যে একটি মন্দ কাজ করবে, সে তার সমান শাস্তিই পাবে। বাস্তবিক অর্থেই তাদের প্রতি অবিচার করা হবে না" ।(সুরা আনআম,আয়াত - ১৬০)। এ হিসাবে যে ব্যক্তি রমজানের এক মাস রোজা রাখল, সে ১০ মাস রোজা রাখার সওয়াব পাবে। আর ছয়টি রোজার ১০ গুণ ৬০ দিন। অর্থাৎ দুই মাস। আর এই দুই মাস মিলে ১২ মাস রোজার সওয়াব। হজরত উবাইদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, "তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব?’ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, ‘তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে। কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখো এবং রমজান-পরবর্তী শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখো, তাতেই সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে"। (তিরমিজি শরীফ,হাদিস নং - ১৫৭)
কীভাবে রাখবেন ছয় রোজা -
হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) শাওয়াল মাসের ভেতর ছয় রোজা রাখার কথা বলেছেন। মাসের প্রথম দিকে, মধ্যভাগে না শেষাংশে সে কথা হাদিসে উল্লেখ নেই। আবার ছয়টি রোজা একসঙ্গে লাগাতার রাখতে হবে, না-কি বিরতি দিয়ে দিয়ে রাখতে হবে, সে কথারও কোনো উল্লেখ নেই। তাই বিজ্ঞ ফকীহ ও আলিমগণের অভিমত হল, যেহেতু শাওয়াল মাসের প্রথম দিন মুসলিম উম্মাহর জাতীয় উৎসব এবং ওই দিনে রোজা রাখা হারাম, সেহেতু ঈদুল ফিতরের দিনটি বাদ দিয়ে মাসের যে কোনো ছয়দিনে রোজা রাখলেই উল্লিখিত সওয়াব লাভ করা যাবে।
শাওয়ালের ছয়টি রোজা নারী-পুরুষ সবার জন্যই সুন্নত। মাসের শুরু-শেষ কিংবা মাঝামাঝি সব সময়ই রাখা যায় এই রোজাগুলো। একনাগাড়ে অথবা মাঝে ফাঁক রেখে পৃথকভাবেও রাখা যায়। শাওয়াল মাসে শুরু করে শাওয়াল মাসে শেষ করলেই হলো। তবে ঈদুল ফিতরের পর শাওয়ালের প্রথম দিকে একসঙ্গে ছয়টি রোজা রাখাই উত্তম।
মহান আল্লাহপাক আমাদের সকলকে শাওয়ালের ৬টি রোজা রাখার তওফিক দান করুন।
তথ্যসূত্র - আল কোরআন,হাদীস ।
===========================================================================
পূর্ববর্তী পোস্ট -
ঈমান ও আমল - ৮ Click This Link
(আজ পবিত্র " লাইলাতুল কদর তথা সম্মানিত রাত "। মহিমান্বিত এ রজনীতে মুসলমানদের করণীয় ।)
ঈমান ও আমল - ৭ Click This Link
("যাকাত " ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ । যা আল্লাহর অনুগত বান্দাদের জন্য অশেষ ছওয়াব, রহমত ও মাগফিরাতের পাশাপাশি আত্মশুদ্ধির ও প্রতিশ্রুতি দেয়)।
ঈমান ও আমল - ৬ Click This Link
("রোযা" ইসলামের তৃতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ । যার বিনিময় বা প্রতিদান আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন নিজেই দিবেন)।
ঈমান ও আমল - ৫ Click This Link
(" নামাজ " ইসলামের দ্বিতীয় ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ । যা মুসলিম-অমুসলিমের মাঝে পার্থক্যকারী সূচক হিসাবে বিবেচিত এবং মুসলমান মাত্রই দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে)।
ঈমান ও আমল - ৪ Click This Link
("ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ" - যার শুরুটা কালেমা বা ঈমানে। যা শুধু মুখে বলা নয়, অন্তরে বিশ্বাস ও কর্মে পরিণত করার বিষয়)।
ঈমান ও আমল - ৩ Click This Link
(তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব )।
ঈমান ও আমল - ২ Click This Link
("শুক্রবার - পবিত্র জুমা"- মুসলমানদের জন্য এক মর্যাদা ও ফজিলত পূর্ণ দিন এবং জুমার দিনের কতিপয় আমল )।
ঈমান ও আমল - ১ Click This Link
(যেসব আমলে মানুষের অভাব দূর হয় ও জীবন সুখের )।
১৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:৪২
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: বোন কাজী ফাতেমা ছবি, আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আল্লাহ আমাদের সকলকে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখার তাওফিক দান করুন এবং সকল নেক আমলগুলি কবুল করুন।
২| ১৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: জ্ঞান হওয়ার পর থেকে রোজা রাখি নি।
১৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:৪৬
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই, আপনার সরল স্বীকোরক্তির জন্য।মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি,আল্লাহ যেন আপনাকে নেক আমল তথা ধর্মীয় বিধি-বিধান মেনে চলার তওফিক দান করেন।
৩| ১৮ ই মে, ২০২১ বিকাল ৩:২৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সহজে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব লাভের সুযোগ হাত ছাড়া করা বোকামি।
১৮ ই মে, ২০২১ বিকাল ৫:৫৩
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য ।
আল্লাহ আমাদের সকলকে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখার তাওফিক দান করুন।
৪| ১৮ ই মে, ২০২১ বিকাল ৫:৫৪
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: গত বছর রেখেছি, এবছরও ইচ্ছে আছে।
১৮ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৯
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ মরুভূমির জলদস্যু ভাই।
মহান আল্লাহপাক আপনার ইচ্ছে পুরণ করুন এবং তওফিক দান করুন ৬ টি রোজা রাখার ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:০৯
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আল্লাহ আমাদের ছয়টি রোজা রাখার তাওফিক দান করুন
আমীন