নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

" শিক্ষা " -মানুষের অন্যতম মৌলিক মানবিক অধিকার এবং মানুষের সুষ্ঠু বিকাশ ও নৈতিক শিক্ষায় পরিবারের ভূমিকা । (মানব জীবন - ১১ )।

০৭ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৫৯


ছবি-sylhet71.com

শিক্ষা মানুষের অন্যতম মৌলিক মানবিক অধিকার। খাদ্য ও বস্ত্রের পর পরই এর অবস্থান। একটি শিশুর প্রথম শিক্ষার হাতে খড়ি, প্রথম পাঠশালা হলো পরিবার। যথাযথ প্রাতিষ্ঠানিক ও পারিবারিক শিক্ষাই একজন শিশুকে উন্নত চরিত্র, আদর্শবান নাগরিক ও ভাল মানুষ হিসাবে গড়ে তুলার প্রধান উপকরন হিসাবে বিবেচিত। পরিবারের সদস্যদের মানষিকতা তথা তাদের যথাযথ আচরণ ও ভূমিকাই একটি শিশুকে একজন ভাল মানুষ ও শিক্ষিত হিসাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে বা গড়ে তুলতে পারে।যে শিশু যতটা ভাল-সুন্দর পারিবারিক ও সমাজিক পরিবেশে এবং আচরণে তার শৈশবকাল অতিক্রম করবে সে ততটা ভাল ও সৎ মানুষ এবং উন্নত মানষিকতার হবে।সকল সৃষ্টির মধ্যে বিশেষভাবে মানুষকেই আল্লাহ তাআলা জ্ঞান অর্জনের যোগ্যতা দান করেছেন। এর মাধ্যমে মানুষ যেমন তার পার্থিব জীবনের প্রয়োজন পূরণের উত্তম পন্থা আবিষ্কার করতে পারে তেমনি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি এবং আখিরাতের সফলতা-ব্যর্থতার জ্ঞানও ধারণ করতে পারে। ন্যায়-অন্যায়বোধ এবং আসমানী জ্ঞানের উপযুক্ততার কারণেই মানুষের জন্য এসেছে হালাল-হারামের বিধান। মানুষ ছাড়া অন্যান্য প্রাণীর এই যোগ্যতা নেই


ছবি - thedailystar.net

মানব জীবনে এবং ইসলামে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।মানব জাতির জন্য হেরা পর্বতের গুহায় নবী করিম (সঃ) এর উপর সর্বপ্রথম আল্লাহর পক্ষ থেকে যে ওহী নাযিল হয় বা আল কোরআনের শুরুটাই হয়েছে পড়ার উপদেশ দিয়ে । এ প্রসংগে আল কোরআনে বলা হয়েছে,"পড়ো! তোমার সৃষ্টিকর্তা প্রভুর নামে। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পড়ো! আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। আর শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না"।( সূরা আলাক,আয়াত - ১-৫)। এই আয়াত দিয়েই কোরআন নাজিলের সূচনা ।শুরুতেই কোরআন তথা মহান আল্লাহপাক মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছেন পড়তে ও জানতে। কোরআন অজ্ঞতাকে অভিহিত করেছে মহা পাপ রূপে। মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে জ্ঞানের পথে, মুক্তবুদ্ধির পথে চলতে।

আমরা যদি শিক্ষাকে বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখব যে, শিক্ষা মৌলিকভাবে দুই প্রকার। যথা -

১। জাগতিক শিক্ষা তথা দুনিয়ায় প্রচলিত সাধারণ শিক্ষা ।
২। দ্বীনী শিক্ষা বা ধর্মীয় শিক্ষা ।

মানুষের দুনিয়ার প্রয়োজন পূরণের উপযোগী জ্ঞান ও বিদ্যা হচ্ছে জাগতিক শিক্ষা। যেমন বিজ্ঞান, চিকিৎসা, গণিত ইত্যাদি। এই শিক্ষার মূল সূত্র মানুষের অর্জিত অভিজ্ঞতা।
পক্ষান্তরে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির জ্ঞান হচ্ছে দ্বীনী শিক্ষা। এই শিক্ষার মূল সূত্র ওহী বা আল্লাহর কালাম।


ছবি - pinterest.com

মানব জীবনে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা -

আল্লাহ তাআলা দুনিয়াকে বানিয়েছেন মানুষের প্রয়োজনে এবং তার উপকারের জন্য। এখানে বেঁচে থাকার জন্য মানুষের বিভিন্ন জিনিষের প্রয়োজন রয়েছে। এই প্রয়োজনগুলো পূরণের জন্য এবং তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার জন্য মানুষকে দান করা হয়েছে পঞ্চ ইন্দ্রিয় ও জ্ঞান-বুদ্ধি। এগুলোকে কাজে লাগানোর জন্য ইসলাম পূর্ণমাত্রায় গুরুত্ব দিয়েছে।আর এই জ্ঞান অর্জনের জন্য কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই।একটি শিশু তথা মানুষের জন্মের সাথে সাথেই তার জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং তা অব্যাহত থাকে তার মরণ সময় পর্যন্ত ।আর এই জন্যই বলা হয়েছে, " দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞান অন্বেষণ কর"।


ছবি - nordangliaeducation.com

শিক্ষা তথা সমাজে প্রচলিত জ্ঞান অর্জনে ধর্মের বিধান

দুনিয়ায় প্রচলিত এবং অনুমোদিত জাগতিক শিক্ষা বা জ্ঞানকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় -

১। যা চর্চা করা অপরিহার্য ।
২। যা চর্চা করা নিষিদ্ধ।।

১। যা চর্চা করা অপরিহার্য - এটি হচ্ছে ওই সব জ্ঞান যা মানুষের জীবন যাপনের জন্য অপরিহার্য। যেমন চিকিৎসা বিদ্যা। কেননা, স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য এই জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। আবার গণিত। কেননা লেনদেন, সম্পত্তি বন্টন ইত্যাদি বিষয়ে তার প্রয়োজন। গোটা জনপদে যদি এই জ্ঞানের পারদর্শী কেউ না থাকে তাহলে সকলেই কষ্টে পতিত হবে। একইভাবে কৃষি, শিল্প, রাষ্ট্রনীতি ইত্যাদির মৌলিক পর্যায়ের জ্ঞানও অপরিহার্য।

২। যা চর্চা করা নিষিদ্ধ - যে জ্ঞান মানুষকে কুফর ও খারাপের দিকে টেনে নিয়ে যায় তা চর্চা করা হারাম। যেমন ইসলামবিরোধী প্রাচীন ও আধুনিক দর্শন, কুফরী সাহিত্য ইত্যাদি। তদ্রূপ অকল্যাণকর ও অপ্রয়োজনীয় বিষয়ও চর্চা করা নিষেধ।

মোটকথা, পার্থিব জীবনযাত্রার প্রয়োজনীয় ও কল্যাণকর জ্ঞান অর্জন ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকেও কাম্য। তাই জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞানকে মৌলিকভাবে অনৈসলামিক মনে করার অবকাশ নেই। তবে প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণের ফলে এবং খুবই সুক্ষভাবে শিক্ষার উপাদান ও পরিবেশে নাস্তিকতা ও ধর্মহীনতার অনুপ্রবেশ ঘটানো হইতেছে বা হচছে। যা একটি মুসলিম দেশের জন্য সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত। সামান্য চিন্তা করলেই দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারদর্শিতা অর্জনের ক্ষেত্রে এই সব দর্শন ও অনৈসলামিক পরিবেশের কোনো প্রয়োজন নেই।


ছবি -kalerkantho.com

মানব জীবনে কোরআনের আলোকে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা -

মানব জীবনে শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করে আল কোরআনে আয়াত অসংখ্য ও হাদিস বর্ণিত হয়েছে। মহান আল্লাহ
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,"হে ঈমানদারগণ! যখন তোমাদেরকে বলা হয়, মজলিসে স্থান প্রশস্ত করে দাও, তখন তোমরা স্থান প্রশস্ত করে দিও, আল্লাহ তোমাদের জন্য স্থান প্ৰশস্ত করে দেবেন।আর যখন বলা হয়, উঠ, তখন তোমরা উঠে যাবে।তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ্‌ তাদেরকে মর্যাদায় উন্নত করবেন; আর তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত।" (সুরা মুজাদালা,আয়াত - ১১) ।

এ প্রসংগে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন,"তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে কোরআন শিক্ষা করে এবং শিক্ষা দেয়" ।(বুখারি শরীফ,হাদীস নং - ৫০২৭)।তিনি অন্যত্র বলেন,"'যে ব্যক্তি জ্ঞান অর্জনের জন্য কোনো পথ অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জান্নাতের পথ সহজ করে দেন " (সহিহ মুসলিম,হাদীস নং - ২৬৯৯)।

শিক্ষা ও জ্ঞানার্জনের জন্য পঠন-পাঠনের অন্যতম মাধ্যম।এ প্রসংগে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,"হে আল্লাহ, আপনি পবিত্র! আপনি যা শিখিয়েছেন, তা ছাড়া আমাদের আর কোনো জ্ঞান নেই; নিশ্চয়ই আপনি মহাজ্ঞানী ও কৌশলী "।(সুরা বাকারা, আয়াত - ৩২)।
এ প্রসংগে আল কোরআনে আরো বলা হয়েছে,"হে পরওয়ারদেগার! তাদের মধ্যে থেকেই তাদের নিকট একজন পয়গম্বর প্রেরণ করুণ যিনি তাদের কাছে তোমার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করবেন, তাদেরকে কিতাব ও হেকমত শিক্ষা দিবেন। এবং তাদের পবিত্র করবেন। নিশ্চয় তুমিই পরাক্রমশালী হেকমতওয়ালা।"(সুরা বাকারা, আয়াত - ১২৯)।

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই যে, জাগতিক জ্ঞান ও কলাকৌশল অর্জন করার একটি দ্বীনী দিকও রয়েছে। সেক্ষেত্রে সেই জ্ঞানকে দ্বীনী খিদমত হিসেবেই গণ্য হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষার যুগে মুসলমানদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সামরিক শক্তিতে সর্বোচ্চ পারদর্শিতা প্রয়োজন।আল কুরআনে মুসলমানদেরকে আদেশ করে বলা হয়েছে, "আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, যেন প্রভাব পড়ে আল্লাহর শুত্রুদের উপর এবং তোমাদের শত্রুদের উপর আর তাদেরকে ছাড়া অন্যান্যদের উপর ও যাদেরকে তোমরা জান না; আল্লাহ তাদেরকে চেনেন। বস্তুতঃ যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে আল্লাহর রাহে, তা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাবে এবং তোমাদের কোন হক অপূর্ণ থাকবে না।" (সূরা আনফাল,আয়াত - ৬০)।

মোটকথা, দ্বীনী খিদমতের জন্যও বিভিন্ন জাগতিক শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। দ্বীনী খিদমতের উদ্দেশ্যে তা অর্জন করা হলে তা দ্বীনী কাজে পরিণত হয় এবং তাতে ভিন্ন মাত্রা যুক্ত হয়।তবে দ্বীনি ইলমের ওই ফজিলত লাভের জন্য শর্ত হলো 'ইখলাস' তথা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জ্ঞান অর্জন করা। পার্থিব কোনো উদ্দেশ্যে দ্বীনি জ্ঞান অর্জন করা হলে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। হাদিস শরিফে এসেছে,"যে ব্যক্তি দুনিয়াবি স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে এমন ইলম শিখল, যা কেবল আল্লাহর জন্যই শেখা হয়, সে কিয়ামতের দিন জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না " (আবু দাউদ শরীফ,হাদীস নং - ৩৬৬৪)।

মোটকথা, দ্বীনি শিক্ষার যেমন গুরুত্ব রয়েছে, তেমনি রয়েছে জাগতিক শিক্ষার গুরুত্ব। পার্থিব প্রয়োজন পূরণ ও সামাজিক ব্যবস্থাপনা ও ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য জাগতিক শিক্ষা অতীব জরুরি। উপরন্তু বহু দ্বীনি কাজের জন্যও জাগতিক শিক্ষার প্রয়োজন পড়ে। পক্ষান্তরে জীবনের সব কাজ ইসলামের বিধান মোতাবেক করার জন্য দ্বীনি শিক্ষার বিকল্প নেই। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে সমাজ যতই উন্নতি লাভ করুক, ইমান ও আল্লাহভীতি না থাকলে নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানবিক সমাজ গঠন সম্ভব নয়।আর তাই শিক্ষার গুরুত্ব মানব জীবনে অপরিসীম।


ছবি - jugantor.com

মানব জীবনে শিক্ষার ক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা -

পরিবারের সার্বিক সহযোগিতা ছাড়া মানুষ তথা শিশুর তথা মানুষের বিকাশের সুষ্ঠধারা ও সন্তোষকজনক অগ্রগতি অর্জন সম্ভব নয়। পারিবারিক নিয়ম, শৃংখলা, ভালবাসা, সহযোগিতা, সহানুভূতি ও অনুপ্রেরণার মাধ্যমেই একজন শিশু সমাজে প্রত্যাশিত আচরণ করতে শেখে। পরিবারই শিশুকে সমাজের কাছে পরিচিত করে তোলে। প্রতিটি সমাজেরই নিজস্ব জীবন যাপন প্রণালী বিশ্বাস-অবিশ্বাস, নৈতিকথা, লোকাচার, সাংস্কৃতিক মূল্য বোধ গ্রহণীয় ও বর্জনীয় বিষয় এবং নিজস্ব ধ্যান ধারণা রয়েছে। সমাজের প্রচলিত নিয়ম কানুন মেনে চলা এবং অন্যকে তা অনুশীলন করতে উদ্ধুদ্ধ করার কাজটি মূলত শুরু হয় পরিবার থেকেই। আমাদের সমাজে পারিবারিক মূল্যবোধ. অভিভাবকদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও তাদের প্রতি অনুগত থাকা, পারিবারিক ঐতিহ্য ভাংগ না করার যে সংস্কৃতি চালু রয়েছে তার পিছনে বড় অবদান কিন্তু পারিবারের। পরিবারের মধ্যে ছেলে মেয়েরা অন্যের সম্পদ, অধিকার ও মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে শেখে, আইন-শৃংখলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শেখে। অসৎসঙ্গ ত্যাগ করতে এবং পরিবার ও দেশের প্রতি অনুগত হতে শেখে । আর তাই দেশজ সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও সমৃদ্ধশীল করে তুলতে পরিবারে রয়েছে বিরাট ভূমিকা। বিদ্যালয় নিঃসন্দেহে এ ধরনের শিক্ষাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু পরিবার থেকে যদি শিক্ষাটি আগেই শুরু হয় তা হলে তা এগিয়ে নিতে বিদ্যালয়ের পক্ষে অনেক সহজ হয়। তাছাড়া নৈতিকতা শিক্ষার মত বিষয়টি শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিবারই মূখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে এবং স্কুলের বাইরে দীর্ঘ দিন পরিবার এই দায়িত্ব পালন করে থাকে।


ছবি - banglanews24.com

মূলতঃ পরিবারই হল মানুষের মানষিক প্রশান্তি, নিশ্চিন্ত - নিরাপদে থাকার শান্তিপূর্ণ আবাসস্থল এবং তার বিকাশ ও উন্নয়নের মূল জায়গা। যে সমস্ত পরিবার ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধ প্রকট সে সব পরিবারের ছেলে মেয়েদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ একভাবে হবে, আবার যে সব পরিবারে ধর্মীয় মূল্যবোধ দৃঢ় নয় বা ধর্মীয় অনুভূতি অনুপস্থিত সেখানে কার ছেলে মেয়েরা সম্পূর্ন ভিন্ন মনোভাব নিয়ে গড়ে উঠবে। শিক্ষার্থীর পরিবারের আর্থ-সামাজিক শ্রেণিগত অবস্থানও তার আচরণ ও শিক্ষা বিকাশের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদান গুলোর মধ্যে অন্যতম। উচ্চ বিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়েরা সাধারণত প্রাইভেট ও ইংরেজী মাধ্যমের বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে বেশী উৎসাহী হয়ে থাকে। অন্য দিকে মধ্যবিত্ত শ্রেণির ছেলে মেয়েরা সাধারণত বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং নিম্নবিত্ত শ্রেণির ছেলে মেয়েরা সরকারি অথবা বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রকৃতি গত পার্থক্যের ফলে প্রত্যেক শ্রেণির ছেলে মেয়েরা ভিন্ন ভিন্ন মানষিক গঠন নিয়ে গড়ে ওঠে। উচ্চ বিত্ত শ্রেণির লোকেরা তাদের পারিবারিক সুনাম, অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্যের উপর বেশী জোর দেয় এবং তাদের ছেলে মেয়েদেরকে ওই ধরণের মানসিকতা সম্পন্ন করে গড়ে তোলে। পক্ষান্তরে, মধ্যবিত্ত শ্রেণি তাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, স্বনির্ভরতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, পেশাগত সফলতা ব্যক্তিগত উন্নতি ইত্যাদির জন্য শিক্ষাকে মাধ্যম হিসাবে বেছে নেয় এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করতে চায়। অন্য দিকে নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ, যেমন- দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক, দিনমজুর কৃষক, ক্ষুদে ব্যবসায়ী ইত্যাদি শ্রেণির মানুষ তাদের পরিবারের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য নূন্যতম স্তরের শিক্ষা গ্রহণের প্রতি উদ্ধুদ্ধ হয়।


ছবি - samakal.com

এই ভাবে পরিবার থেকে শিক্ষাকে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টি ভঙ্গি থেকে বিচার করার যে প্রবনতা বিভিন্ন অর্থনৈতিক শ্রেণির মধ্যে লক্ষ্য করা যায় তার প্রভাব ছেলে মেয়েদের ব্যক্তিত্ব বিকাশ ও সার্বিক শিক্ষা বিকাশের উপর পড়ে। স্কুলে যাওয়ার পূর্বেই ছেলে মেয়েদের আচরণে তাদের বিশ্বাসে, অনুভুতিতে ও মনোভাবে একটি নির্দিষ্ট ধারা সৃষ্টি হয় যার শুরুটা হয় পরিবার থেকে। তাই স্কুলে বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধিত্বকারী ছেলে মেয়েরা যখন একই ক্লাশে ভর্তি হয়ে এক সাথে লেখা পড়া শুরু করে তখন তাদের মধ্যে আচরণগত পার্থক্যও সুস্পষ্ট হয়ে উঠে ।

শিক্ষার প্রতি ছেলে মেয়েদের মনোভাব কেমন হবে তা অনেকাংশে নির্ভর করে শিক্ষার প্রতি পরিবারের বিশেষ করে অভিভাবকদের মনোভাব কেমন তার উপর। মধ্যবিত্ত সমাজের জন্য জীবনে সফলতা লাভের ক্ষেত্রে শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে নিম্নবিত্তরা সফলতা লাভের ক্ষেত্রে অর্থকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচনা করে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই নিম্নবিত্ত শ্রেণির ছেলে মেয়েরা স্কুলের সহঃশিক্ষা মূলক কার্যক্রম এবং স্কুলের বাইরে সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে চায় না যার ফলে তাদের মধ্যে নেতৃত্ব, বন্ধুত্ব, ও অন্যান্য প্রত্যাশিত সামাজিক আচরনের বিকাশ খুব কম হয়। আমাদের দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচী প্রণয়নের ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত শ্রেণির আশা আকাঙ্খা ও প্রয়োজনীয়তার উপর বেশী জোর দেওয়া হয় এবং বলা যায় যে এ ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা নিম্নবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং তাদেরকে শিক্ষিত করে তোলার ক্ষেত্রে ততটা সহায়ক নয়। নিম্নবিত্ত পরিবারের কাছে শিক্ষার চেয়ে পেটের খোরাক যোগানো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই তারা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে হলেও পারিবারিক আয় বৃদ্ধির জন্য ছেলে মেয়েদের কাজে লাগায়। নিম্নবিত্ত সমাজের এই যে পারিবারিক দৃষ্টি ভঙ্গি এটা তাদের সন্তানদের শিক্ষা বিকাশের ক্ষেত্রে মারাত্মক বাধার সৃষ্টি করে। তাই স্কুলের প্রতি নূন্যতম অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হলেই নিম্নবিত্ত শ্রেণির ছেলে মেয়েরা লেখা পড়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ড্রপআউট হয়ে যায়।

পরিবারের আর্থিক সংগতি, ছেলে মেয়েদের শিক্ষিত করে তোলার ইচ্ছা এবং শিক্ষার প্রতি পরিবারের মনোভাব এই তিনটি উপাদানের পারস্পরিক ক্রিয়ার প্রভাব শিক্ষার্থীর উপর পড়ে। এই প্রভাব নেতিবাচক হলে সে ক্ষেত্রে তার শিক্ষার বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয়। শিশুর জীবন বিকাশের সব ক্ষেত্রেই পরিবারের গুরুত্ব অপরিসীম। পরিবার থেকেই শিশু সব ধরনের পারিবারিক সম্পর্ক সম্বন্ধে প্রথম অবগত হয়। শিশুর মধ্যে নিরাপত্তার অনুভূতি কেমন হবে অন্যের প্রতি সে কিরূপ মনোভাব পোষণ করবে এবং কিভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবে তা অনেকাংশেই শিশুর পারিবারিক কাঠামো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। পরিবারে বাবা ও মায়ের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে শিশুরা নারী ও পুরুষের ভূমিকা এবং নিজের লিঙ্গ পরিচয় সম্পর্কে অবগত হয়। একক পরিবারের ক্ষেত্রে বাবা ও মায়ের মধ্যে যদি ভালোবাসা ও শৃংখলা বোধের সম্মিলন ঘটে তাহলে পরিবারে একটি সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এই ধরনের পরিবার হতে শিশু যে ইতিবাচক অভিজ্ঞতা লাভ করে তা পরবর্তীতে তার সামাজিক জীবনের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।


ছবি-ilbaralbarady.blogspot.com

আবার যদি বাবা মায়ের মাঝে তথা সংসারে অমিল তথা ইতিবাচক পরিবেশ না থাকে তার ফলে ছেলে মেয়েদের মধ্যে রাগ, ভয়, অপরাধবোধ, হীনমন্যতা, হতাশা ইত্যাদি প্রবনতা দেখা দেয়।এসব পরিবারের ছেলে-মেয়েরা অনেক সময়ই আক্রমনাত্মক মনোভাব পোষণ করে। কর্মক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের প্রতি তাদের শ্রদ্ধাবোধ নষ্ট হয়। জীবন, মানবিক সম্পর্ক সম্বন্ধে তাদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠে। যার প্রভাব তাদের শিক্ষা জীবনে পড়ে। সুতরাং অভিভাবক এবং পিতা মাতার এ কথা মনে রাখা উচিত যে, পরিবার থেকে শিশু যে শিক্ষা পায় তা তাকে শক্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে সাহায্য করে। পরিবারের শিক্ষা যদি ভংঙ্গুর হয় তা হলে শিশুর পরবর্তী জীবন নানা বাধাবিপত্তির সম্মুখীন হয়।পরিবারই হচ্ছে শিশুর-মানুষের প্রাথমিক ও নৈতিক শিক্ষার শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান। এখান থেকেই তার চরিত্রের ভিত্তি গড়ে উঠে। অর্থাৎ ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ এবং গড়ে উঠার মূল ক্ষেত্রই হচ্ছে পরিবার। তাই পরিবারে পিতামাতার প্রধান দায়িত্বই হচ্ছে সন্তানকে ছোট থেকেই নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা।


ছবি -dreamstime.com

একজন সন্তান কেমন হবে, কী করবে, কীভাবে চলবে, তার চিন্তাধারা কেমন হবে, জীবনকে সে কীভাবে দেখবে, কীভাবে যাপন করবে তার বীজ বপন হয় অতি শৈশবেই, বাবা মায়ের হাত দিয়ে। জীবন যাপন একটা পদ্ধতি যেটা শিশু পরিবার থেকে দেখে শেখে, স্কুল-কলেজ বা বড় বড় লেকচার শুনে নয়।একজন মানুষের চিন্তা, কর্ম, আচরণ একদিনে তৈরি হয়না। পরিবারের সদস্যদের আচরনের গভীর ছাপ সন্তানের আচরনের মাঝে থাকেই ।

তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে নৈতিক চরিত্রসম্পন্ন মানুষ করে গড়ে তুলতে হবে। একথা স্বীকার করতেই হবে বিশ্বজুড়ে বর্তমানে পারিবারিক বিপর্যয়ের কারণে মানুষের মাঝে যে নৈতিক স্খলন দেখা দিয়েছে তা রোধকল্পে বাবা-মায়ের সচেতনতার বিকল্প নাই। শিশুদের লালন-পালনে বাবা-মায়েদের ভূমিকা-নিরীক্ষণ-নিয়ন্ত্রণের উপর নির্ভর করে একটি শিশু-মানুষ তথা গোটা জীবনের সামগ্রিক সাফল্য। এখন পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব এক ধরণের বিনিময় পণ্য হিসেবে বিবেচিত, যেখানে বাবা-মাকে একটি শিশুর পেছনে আরো বেশি থেকে বেশি সময় ,শ্রম দিতে হবে। এই সময় ও শ্রম বাবা-মা যত বেশি দেবেন, তাতে তাদের শিশুদের সাফল্যের মাত্রাও তত বাড়বে।আর শিক্ষাই মানুষকে সাফল্যের পথে পরিচালিত করে আর সাফল্য অর্জনের ক্ষেত্রে বাবা-মা তথা পরিবারের ভূমিকা অসীম।

মা-বাবার কাছেই শিশুর শিক্ষা-দীক্ষা শুরু। মূলত শিশুরা বাবা-মা’র কাছেই লেখাপড়া, নৈতিকতা, আদর্শ বা দেশপ্রেম সম্পর্কে জানতে শুরু করে। তাই মা-বাবাই হচ্ছেন শিশুর প্রথম আদর্শ ও শিক্ষক। মা-বাবাকেই শিশুরা তাদের প্রথম আদর্শ গুরু হিসেবে মানতে শুরু করে। আর সে কারণে শিশুর বেড়ে ওঠায় মা-বাবার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বা প্রয়োজন।আর তাইতো নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছেন,"তুমি আমাকে আদর্শ মা দাও, আমি তোমাকে আদর্শ জাতি উপহার দিব"। আবার অন্য এক জায়গায় বলা হয়েছে,"মায়ের শিক্ষাই শিশুর ভবিষ্যতের বুনিয়াদ, মা-ই হচ্ছেন শিশুর সর্বোৎকৃষ্ট বিদ্যাপীঠ"।

সন্তানের শিক্ষক বা আদর্শ হিসেবে বাবা-মা সম্পর্কে এমন অসংখ্য বার্তা দিয়ে গেছেন গুণীজনরা। মূলত বাবা-মা’ই হচ্ছেন সন্তানের উত্তম আদর্শ,শিক্ষক এবং পরিবার হচছে সর্বোৎকৃষ্ট শিক্ষালয় । পরিবার তথা মা-বাবা শিশুকে যে শিক্ষা দিবেন, শিশু সে শিক্ষা নিয়েই বড় হবে বা সমাজে চলতে শিখবে।

চলবে -

তথ্যসূত্র - আল কোরআন,হাদীস।
===============================================================
পূর্ববর্তী পোস্ট -

মানব জীবন - ১০ "পরিবার " - Click This Link
মানব জীবন - ৯ "বিবাহের পরে" - Click This Link
মানব জীবন - ৮ " মানব জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য " - Click This Link
মানব জীবন - ৭ " তালাক " - Click This Link
মানব জীবন - ৬ "দেনমোহর - স্ত্রীর হক" - Click This Link
মানব জীবন - ৫ "বিবাহ" - Click This Link
মানব জীবন - ৪ " মাতৃত্ব " - Click This Link
মানব জীবন - ৩ Click This Link
"নারী স্বাধীনতা বনাম নারী(জরায়ু)'র পবিত্রতা "
মানব জীবন - ২ " মাতৃগর্ভ (জরায়ু)"-https://www.somewhereinblog.net/blog/bd12sh19K/30312299
মানব জীবন - ১ "মানুষের জন্ম প্রক্রিয়ার ইতিকথা"- Click This Link

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৮

জটিল ভাই বলেছেন:
সুবহানআল্লাহ্..... কিন্তু আজকাল অনেকে যেই শিক্ষার মাঝে ধর্ম আছে তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তাদের কি আসলে শিক্ষা পূর্ণ হয়েছে?

০৭ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ জটিল ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।

যে শিক্ষায় ধর্ম নেই সে শিক্ষা পরিপূর্ণ নয় তা সে যেই ধর্মের অনুসারীই হোক না কেন।কারন ধর্ম মানুষকে মানবিক হতে এবং ন্যায়-অন্যায়ের মাঝে প্রার্থক্য বুঝতে সাহায্য করে।ধর্ম মানুষকে ইহকালীন শান্তি ও সমৃদ্ধির সাথে সাথে পরকালীন মুক্তির পথনির্দেশ করে। সাধারন শিক্ষার মাঝে শুধু ইহকাল মানে দুনিয়ার সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির কথা বলা হয় আর ধর্মীয় শিক্ষায় দুনিয়ার সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির পাশাপাশী পরকালের বা এ দুনিয়ার পরবর্তী জীবনেও সুখে থাকার উপায় বাতলে দেয়া হয়।প্রার্থক্য এতটুকুই।

এখন যে পরকাল মানবে বা স্রষ্টায় বিশ্বাস করবে তার জন্য ধর্ম বা ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া বা অস্বীকার করার উপায় নেই তবে স্রষ্টায় বা ধর্মে বিশ্বাস না থাকলে অন্যকথা।আর দুনিয়ার সবাই যে স্রষ্টায় বিশ্বাস করবে এমনটাও নয়।আর তাই যদি হত তাহলে স্রষ্টার বেহেশত-দোযখ তথা স্বর্গ-নরক দুইটাই সৃষ্টি করার দরকার হতনা।

২| ০৭ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ‌আপনার এই ধরনে লেখা দেখলে রাজীব নূর সাহেবের পোস্টের প্যাটার্ন মনে পরে যায়।

০৭ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ মরুভূমির জলদস্যু ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।

যাক আপনিও তাহলে রাজীব নূর ভাইকে মনে করেছেন অন্তত আমার লেখা পড়ে ,এটাও একটা ভাল দিক। তার মানে আমরা রাজীব নূর ভাইকে ভূলিনি।আমি চাই রাজিব নুর ভাই ফিরে আসুক আমাদের মাঝে।

আর লেখার প্যাটার্ণ ?

একের সাথে অন্যের মিল হতে পারে।তা হতে পারে লেখার বা আত্মার। কারন ,আমরা মানুষ।আর এক মানুষের সাথে অন্য মানুষের প্যাটার্ণ বা অভ্যাস মিলতেই পারে আমাদের মনের অজানাতেই।

৩| ০৭ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪৭

কামাল১৮ বলেছেন: শিক্ষা হতে হবে সুশিক্ষা।ইতজগতে যে শিক্ষা কাজে লাগে না সেই শিক্ষার কোন দরকার নাই।এমন শিক্ষা দিতে হবে যে শিক্ষা তাকে মানবিক করে,যৌক্তিক চিন্তা করতে সাহায্য করে।
ধর্মীয় শিক্ষা নৈতিক হতে শিখায় না,ধর্মিয় শিক্ষা ধার্মীক হতে শিখায়।মমিনুল হতে শিখায় আর মমিনুলের মতো লোকেরাই ধর্মীয় শিক্ষা দেয়।

০৮ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৩১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ কামাল১৮ ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য

শিক্ষা মানুষকে চিন্তা করতে, যেকোন বিষয় সম্পর্কে ভালভাবে (ন্যায়-অন্যায়) উপলব্ধি করতে এবং খারাপ-ভালর মাঝে প্রার্থক্য বিচার করতে শিখায়।অন্যদিকে , ধর্মও মানুষকে মানবিক হতে এবং ন্যায়-অন্যায়ের মাঝে প্রার্থক্য বুঝতে সাহায্য করে।

এখন ধর্মের নামে বা ধর্মকে ব্যবহার করে কেউ যদি খারাপ করে ,এ দায় ধর্মের নয় সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তির। আমরা জানি, বাপের পাপের ভাগ ছেলের নয়,মায়ের পূণ্যের ভাগ মেয়ের নয় । যার যার পাপ-পূণ্যের দায় সম্পূর্ণভাবে তারই।কাজেই মমিনুল বা অন্যকেউ যদি ধর্মকে ব্যবহার করে কোন মানবিকতা-সামাজিকতা বিরোধী কোন কাজ করে থাকে এর দায় ঐ সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তির,ধর্মের নয়।

৪| ০৭ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:১৮

শেরজা তপন বলেছেন: অনেক খেটেখুটে লিখেছেন ধারনা করছি- আপনার ধৈর্য ও প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই।

লেখাটা বেশি বড় হয়ে গেছে- একটানা পড়ে শেষ করা আমার জন্য অন্তত অসম্ভব! তাই বিস্তারিত মন্তব্য করলাম না

০৮ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৩৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ শেরজা তপন ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।

আসলেই লেখাটা অনেক বড় হয়ে গেছে।দুই বারে দিলে ভাল হত । আসলে সম্পূর্ণ বিষয়টায় আলোকপাত করতে গিয়ে বড় হয়ে গিয়েছে । আপনি কষ্ট করে পড়ার জন্য চেষ্টা করেছেন এতেই আমি কৃতার্থ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.