নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

" পবিত্র মাস রবিউল আউয়াল " সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মহামানব রাসূল (সাঃ) যিনি জন্মগ্রহণ করেন পবিত্র এ মাসে । ১২ ই রবিউল আউয়ালের তাৎপর্য ও করণীয় ।(মহানবী (সাঃ) এর জীবনচরিত - ১)।

১১ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৫:৫৪

ইসলাম পূর্ব যুগে সারা দুনিয়া ছিল চরম উচ্ছৃঙ্খলতা, পাপাচার, দুরাচার, ব্যাভিচার, মিথ্যা, হত্যা, লুন্ঠন, মদ্যপান, জুয়ায় ভরপুর।যখন অন্যায়-অপরাধ, দ্বন্ধ-সংঘাত, সন্ত্রাস-নৈরাজ্য, নৈরাশ্য আর হাহাকার বিরাজ করছিল সারা দুনিয়া জুড়ে ঠিক সে সময় মানবতার মুক্তির দিশারী সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সারা জাহানের হিদায়েতের জন্য আবির্ভূত হলেন। রাসুল (সাঃ) হলেন বিশ্ব মানতার জন্য আল্লাহর এক অনন্য রহমত স্বরুপ প্রেরিত। এ প্রসংগে মহান আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেনছেন, " আর আমরা তো আপনাকে সৃষ্টিকুলের জন্য শুধু রহমতরূপেই পাঠিয়েছি।" ( সূরা আল-আম্বিয়া,আয়াত - ১০৭ )।

হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্ম ও শৈশব -

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রের বনি হাশিম বংশে জন্মগ্রহণ করেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ৫৭০ খৃীস্টাব্দে ১২ই রবিউল আউয়াল সোমবার জন্মগ্রহণ করেন। তার মায়ের নাম আমিনা এবং পিতার নাম আব্দুল্লাহ। জন্মের পূর্বে পিতা, ৬ বছর বয়সে মা আমিনাকে হারান এবং ৮ বছর বয়সে তার দাদা মৃত্যু বরণ করেন। ইয়াতীম শিশু বড় হয়ে উঠে চাচার সযত্ন ভালবাসায়।

১২ রবিউল আউয়াল বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্ম ও মৃত্যুর দিন ।সর্বশেষ এই মহানবী ও সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিশ্ববাসীর জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ । পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি, যাঁর স্মরণ সব জাতি, সব যুগে করেছে। জাহেলিয়াতের সেই যুগে মানুষকে আলোর পথ দেখিয়ে ৬৩ বছর বয়সে একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। মহানবী (সাঃ) এর জন্ম ও মৃত্যুর এ দিনটি সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে মর্যাদা ও তাৎপর্যপূর্ণ। মুসলমানরা এ দিনটি উদযাপন করেন বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে।

ইসলামের ইতিহাসে দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত। বিশেষত দুটি কারণে মুসলমানদের নিকট ১২ রবিউল আউয়াল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ দিন।
প্রথমত - সব ইতিহাসবিদের ঐকমত্য বর্ণনা মতে, এই দিনেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) লক্ষ-কোটি ভক্ত-অনুরক্তকে এতিম বানিয়ে এ পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন।
দ্বিতীয়ত - প্রসিদ্ধ অভিমত অনুযায়ী এই ১২ রবিউল আউয়ালই মহানবী (সাঃ) জন্মগ্রহণ করেছেন।

মহানবী (সাঃ) এর জন্মের তারিখ নিয়ে মতভেদ

খ্রিস্টীয় পঞ্জিকা অনুযায়ী ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে মহানবী (সাঃ) ভূমিষ্ঠ হন। আরবি হিজরি সন অনুযায়ী তাঁর জন্ম তারিখ নিয়ে মতভেদ আছে। কেউ কেউ বলেন, রবিউল আউয়ালের ৮ তারিখ আবার কেউ বলেন ৯ তারিখ ,আবার কারো মতে ১২ তারিখ মহানবী (সাঃ) জন্মগ্রহণ করেছেন। বেশির ভাগ হাদিস বিশারদ ১২ তারিখকে বিশুদ্ধ বলেছেন। মহানবী (সাঃ) এর জীবনীকারদের মধ্যে ইবনে ইসহাক প্রথম সারির জীবনীকার। তিনি বলেন, মহানবী (সাঃ) হাতিবাহিনীর ঘটনার বছর ১২ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেছেন। (সিরাতে ইবনে হিশাম, খণ্ড-১, পৃ. ১৫৮)

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্ম তারিখ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও দিন হিসেবে সোমবার সম্পর্কে কোনো মতভেদ নেই। কারণ তার জীবনচরিতকাররা একমত যে রবিউল আউয়াল মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে সোমবার দিন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্ম। এই সোমবার ৮ অথবা ৯ কিংবা ১২ এটুকুতেই হিসাবের পার্থক্য রয়েছে মাত্র। (ইসলামী বিশ্বকোষ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ)

মহানবী (সাঃ) এর জন্মের দিনের বিস্ময়কর ঘটনাবলি

সোমবার প্রভাতের সময়, রাত ৪টা ২০ মিনিট। এ সময় পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। এ সময় জন্মগ্রহণ করেছেন বিশ্বনবী, প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ)। আবদুর রহমান বিন আউফ (রাঃ) এর মা শিফা বিনতে আসওয়াদ (রাঃ), মা হজরত আমেনা বিনতে ওহ্হাবের সঙ্গে দায়া বা নার্স হিসেবে ছিলেন। তিনি মহানবী (সাঃ এর জন্মের সময়ের বিস্ময়কর কিছু ঘটনা বর্ণনা করেছেন। মহানবী (সাঃ) যখন এলেন, গোটা কামরা আলোকময় হয়ে গেল। হজরত শিফা দেখলেন, সদ্য ভূমিষ্ঠ এ সন্তান একেবারে সাফ-সুতরো জন্মগ্রহণ করেছে। কোনো ধরনের ময়লা-আবর্জনা, রক্ত-শ্লেষ্মা তাঁর দেহে নেই। অন্য যেকোনো নবজাতক ভূমিষ্ঠ হলে তার শরীরে মায়ের পেট থেকে বিভিন্ন বস্তু লেগে থাকে। কিন্তু মহানবী (সাঃ ) জন্মগ্রহণ করেছেন সম্পূর্ণ পবিত্র হয়ে। অন্যান্য শিশুর আঁত ও নাভি একসঙ্গে থাকে। পরে সেটা কেটে ফেলা হয়। মহানবী (সাঃ ) ভূমিষ্ঠ হয়েছেন নাভি কর্তিত অবস্থায়। অন্যদের বেলায় দেখা যায়, মুসলিম ছেলেশিশু বড় হলে তাদের মুসলমানি করাতে হয়। কিন্তু মহানবী(সাঃ )জন্মগ্রহণ করেছেন মুসলমানি করা অবস্থায়। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে : রাসুলুল্লাহ (সাঃ)ইরশাদ করেন, "মহান আল্লাহ আমার প্রতি যে সম্মান দেখিয়েছেন তার অন্যতম হলো, আমি খতনাবিশিষ্ট অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছি, যাতে আমার লজ্জাস্থান কেউ যেন না দেখে"। (মুজামে আওসাত, হাদিস নং - ৬১৪৮)।

হজরত শিফা (রাঃ) বিষয়টি দেখে অভিভূত হলেন। তিনি বিয়য়টি হজরত আমেনাকে দেখিয়েছেন। তিনিও অভিভূত হলেন। মা আমেনা মহানবী (সাঃ) কে কোলে নিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু মহানবী (সাঃ) পার্শ্ব পরিবর্তন করেন। তিনি সেজদায় অবনত হলেন। এ দৃশ্য দেখে তাঁরা উভয়ে ভীত হয়ে পড়লেন। এরপর মহানবী (সাঃ) উভয় হাতে ভর করে সেজদা থেকে ওঠেন। উঠেই তিনি ডান হাতের শাহাদাত বা তর্জনী আঙুল দিয়ে আসমানের দিকে ইশারা করেন। হঠাৎ পুরো ঘর আলোতে ভরে গেল। হজরত আমেনা বলেন, ‘আমি ওই আলোতে ইরান, সিরিয়া ও হীরার রাজপ্রাসাদ দেখতে পেলাম।’ কাজি আয়াজ বলেন, আবদুর রহমান ইবনে আউফের মা শিফা থেকে বর্ণিত। তিনি তাঁর ধাত্রী ছিলেন। তিনি বলেন, যখন তিনি তাঁর হাতে এলেন তখন চিৎকার করলেন। তিনি এক ঘোষককে বলতে শুনেছেন : ‘আল্লাহ তোমার ওপর অনুগ্রহ করুন।’ সে জায়গা থেকে একটি নূর বের হলো, যা দ্বারা রোমের প্রাসাদ দেখা গেল। (তাফসিরে ইবনে কাসির, খণ্ড-২, পৃ. ৩২৪)

ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, একসময় শয়তান আসমানে যেতে পারত। গিয়ে ফেরেশতাদের গায়েবি সংবাদ শ্রবণ করত। এরপর তাদের গণকদের কাছে তা পৌঁছে দিত। যখন হজরত ঈসা (আঃ) জন্মগ্রহণ করেন তখন তাদের তিন আসমান থেকে বহিষ্কার করা হয়। আর যখন মহানবী (সাঃ) জন্মগ্রহণ করেন তখন তাদের সব আসমান থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর পর থেকে তাদের কেউ যখন কিছু শ্রবণ করার জন্য আসমানে যায় তখন তাদের আগুনের স্ফুলিঙ্গ নিক্ষেপ করে বিতাড়িত করা হয়। (তাফসিরে কবির, খণ্ড-১৯, পৃ. ১৩০)

যে রাতে মহানবী (সাঃ) জন্মগ্রহণ করেন, সেই রাতে পারস্য ও ইরানের রাজপ্রাসাদে কম্পন ধরে। সেখান থেকে ১৪টি গম্বুজ ভেঙে পড়ে। এর মাধ্যমে তাদের ১৪ জন বংশধর ক্ষমতাবান হওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। তাদের ১০ জন পরবর্তী চার বছরে ক্ষমতায় আসে। আর বাকিরা উসমান (রাঃ) শহীদ হওয়া পর্যন্ত ছিল। মহানবী (সাঃ) এর জন্মের দিন পারস্যের আগুন নিভে যায়, যা হাজার বছর ধরে প্রজ্বলিত ছিল। সে দেশের ছোট ছোট নদীর পানি শুকিয়ে যায়। (বায়হাকি, দালাইলুন নবুয়্যাহ, খণ্ড-১, পৃ. ১২৬)

মহানবী (সাঃ) এর পবিত্র জন্মে গোটা বিশ্বে সাড়া পড়ে গিয়েছিল। তাঁর জন্মের পর তিন দিন পর্যন্ত কাবা শরিফ দুলতে থাকে। এটা দেখে গোটা আরবের লোকেরা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর জন্ম সম্পর্কে জানতে পারে। সিরাতে হালবিয়া নামক গ্রন্থে এসেছে : ‘যে রাতে মহানবী (সাঃ) জন্মগ্রহণ করেছেন, সেই রাতে কাবা শরিফে কম্পন শুরু হয়। সেটি তিন দিন তিন রাত চলতে থাকে। সেটি ছিল প্রথম নিদর্শন, যা মহানবী (সাঃ) এর জন্মের পর গোটা কোরাইশ গোত্র দেখতে পেয়েছিল।’ [সিরাতে হালবিয়া, মহানবী (সাঃ) -এর জন্ম অধ্যায়]

দাদা ও চাচার তত্ত্বাবধানে লালন পালন -

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মাতা-পিতার মৃত্যুর পর দাদা আব্দুল মুত্তালিব তাঁর লালন পালনের দায়িত্ব নেন। তিনি তাকে খুব স্নেহ করতেন। এমনকি নিজের ছেলেদের উপরও তাঁকে প্রাধান্য দিতেন। নিজের আসনে বসাতেন। দাদা আব্দুল মুত্তালিবের মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্তই তিনি তাঁর তত্ত্বাবধানে ছিলেন। দাদা আব্দুল মুত্তালিবের মৃত্যুর পর চাচা আবু তালিব তাঁর দায়িত্ব নেন। তখন তার বয়স ছিল আট বছর। তিনি চাচা আবু তালিবকে বকরী লালন-পালন ও শাম দেশের ব্যবসার কাজে সহযোগিতা করতেন।

খাদীজা (রাঃ) এর সঙ্গে বিবাহ

পঁচিশ বছর বয়সে মক্কার ধনবতী মহিলা খাদিজা বিনতে খোয়ালিদের সাথে রাসূল (সাঃ) এর বিয়ে হয়। অভিজাত সতী, ধনবতী, মহিলা খাদিজা বিভিন্ন লোককে পণ্য দিয়ে ব্যবসা করাতেন এবং তিনি লাভের একটা অংশ গ্রহণ করতেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর সততা, সত্যবাদীতা ও বিশ্বস্ততা তখন সুবিদিত ছিল। আল-আমীন, আসসাকিন এর প্রশংসা শুনে তিনি তার কাছে ব্যবসার প্রস্তাব পাঠান। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) রাজী হন এবং ব্যবসা শেষে অনেক বেশি লাভসহ তার সব কিছু বুঝিয়ে দেন।

রাসূলের গুণ মুগ্ধ ও অলৌকিক সংকেতের কথা শুনে মা খাদিজা বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় এবং উভয়ের সম্মতির ভিত্তিতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। তখন খাদিজার বয়স ছিল ৪০ বছর। যতদিন তিনি জীবিত ছিলেন রাসূল (সাঃ) আর কোনো বিয়ের প্রয়োজন অনুভব করেননি। এরপর আদর্শিক প্রয়োজনে এবং নারী সমাজের বিভিন্ন উপকারের জন্য তিনি মোট ১১টি বিয়ে করেন। দু’জন তার মৃত্যুর পূর্বে মারা যান আর ৯ জনের সাথে তিনি বৈবাহিক জীবন অতিবাহিত করেন।


ওহী নাযিলের সূচনা -

মহা গ্রন্থ আল কোরআন, ইতিহাস এর যুক্তি-প্রমাণ এবং বিভিন্ন গ্রন্থের তথ্য অনুযায়ী রমজান মাসের শেষ পর্যায়ে মহানবী (সাঃ) এর কাছে আল্লাহর দূত জিবরাইল (আঃ) কে দিয়ে ওহী (আল্লাহর বাণী) প্রেরন করেন। এ সময় তার বয়স ৪০ পূর্ণ হয়। প্রথমে তিনি স্বপ্নে সে নিদর্শন পান এবং পরে সরাসরি পেয়েছিলেন।

মহানবী (সাঃ) বেশীর ভাগ সময় মক্কার প্রসিদ্ধ পাহাড় ‘জাবালে নূরে’ অবস্থিত ‘গারে হেরা’ তথা হেরা গুহায় অবস্থান করতেন এবং ক্রমান্বয়ে কয়েক রাত সেখানে অতিবাহিত করতেন। থাকার ব্যবস্থাও তিনি আগে থেকেই করে নিতেন। এভাবে একদা তিনি হেরা গুহায় তাশরীফ আনেন এমন সময় তাঁকে নুবুওয়াতের পদমর্যাদা দিয়ে সৌভাগ্যবান করার পবিত্র মুহুর্ত এসে যায়। জন্মের ৪১ তম বছরে ২৭ ই রজব (হিজরতের ১৩ বছর পূর্বে) মুতাবিক ৬১০ খৃষ্টাব্দ তারিখে জাগ্রত ও চৈতন্য অবস্থায় এঘটনা সংঘটিত হয়। আল্লাহর ফেরেশতা জিবরাইল (আঃ) প্রথমবারের মত তাঁর কাছে, পৃথিবীবাসীদের জন্য আল্লাহর সর্বশেষ ঐষীবাণী, বিশ্বমানবতার মুক্তির পথের দিশারী, জ্বিন ও ইনসানের জন্য পরিপূর্ণ জীবন বিধান কুরআনুল কারীম এর সর্বপ্রথম কথাগুলো নিয়ে তাঁর কাছে উপস্থিত হলেন।

তাঁর সামনে হেরা পর্বতের গুহায় ফেরেশতা জীবরাইল আগমন করেন এবং বলে - পড়ুন। তিনি উত্তর দিলেন আমি কি ভাবে পড়ব? ফেরেশতা বললেন," পড়ুন আপনার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন, যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে।পড়ুন, আর আপনার রব মহিমান্বিত। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানতো না "। (সূরা আলাক,আয়াত - ১-৫ )।তারপর জিবরাইল ফেরেশতা মারফত সুদীর্ঘ ২৩ বছর যাবত অবতীর্ণ হয় সর্বকালের, সর্বদেশের, সর্বলোকের জীবনবিধান ও মুক্তির সনদ হিসেবে যা আল্লাহ তাআলা ওহীর মাধ্যমে নাজিল করেছেন।।

মি‘রাজ তথা উর্দ্ধারোহন

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বয়স যখন ৫১ বছর নয় মাস হয়, তখন তাঁকে সশরীরে মর্যাদাপূর্ণ ইসরা ও মি’রাজ ভ্রমণের মাধ্যমে সম্মানিত করা হয়। মি’রাজে রাসূলুল্লাহ (সঃ) প্রথমে কা’বা থেকে বাইতুল মুকাদ্দাসে যান, অতঃপর সেখান থেকে এক এক করে সাত আসমান অতিক্রম করে মহান আল্লাহর আরশে আজীমে তাশরীফ গ্রহণ করেন। এ মি’রাজ সফরে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে বিধান লাভ করেন। মি’রাজে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জান্নাত এবং জাহান্নাম স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেন।

হেদায়াতের দাওয়াতের আদেশ -

মহান আল্লাহ তায়ালা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইসলামের দাওয়াতের আদেশ দিয়ে ইরশাদ করেন,"হে চাদরাবৃত ব্যক্তি ! উঠুন, অতঃপর সতর্ক করুন এবং আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন" (সুরা আল-মুদ্দাসসির,আয়াত - ১ - ৩ )।

গোপনে ইসলামের দাওয়াত -

রাসলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় প্রতিপালকের আদেশ যথাযথ পালন করেন এবং গোপনে মানুষের মাঝে ইসলাম প্রচার করতে শুরু করেন। তিনি সর্বপ্রথম আপন পরিবার- পরিজন ও বন্ধু-বর্গকে ইসলামের দাওয়াত দেন। সর্বপ্রথম খাদীজা (রাঃ) তাঁর দাওয়াত গ্রহণ করেন। পুরুষদের মধ্যে সর্বপ্রথম আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) , ছোটদের মধ্যে আলী ইবনে আবূ তালিব (রাঃ) এবং ক্রীতদাসদের মধ্যে যায়েদ ইবনে হারেসা (রাঃ) ইসলাম গ্রহণ করেন।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিন বছর পর্যন্ত গোপনে তার নিকটস্থ’ লোকদের মাঝে ইসলাম প্রচার করেন।

প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত -

তিন বছর গোপনে দাওয়াত দেয়ার পর মুহাম্মাদ প্রকাশ্যে ইসলামের প্রচার শুরু করেন। নবী (সাঃ) সাফা পর্বতের ওপর দাড়িয়ে চিৎকার করে সকলকে সমবেত করেন। এরপর প্রকাশ্যে বলেন যে, আল্লাহ ছাড়া কোন প্রভু নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহ্‌র রাসূল। এই সময় থেকে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়

সকল বিপদে ধৈর্যধারন ও স্রষ্টায় অবিচল আস্থা -

মুসলমানগণ মুশরিকদের সকল নির্যাতন ও নিপীড়ন ধৈর্য ও দৃঢ়তার সাথে মোকাবিলা করতেন। কেননা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে সাওয়াব ও জান্নাত লাভের আশায় বিপদে ধৈর্য ধারণ ও অনড় থাকার পরামর্শ দেন। মুশরিকদের নির্যাতন ভোগ করেছেন এমন কয়েকজন উল্লেখযোগ্য সাহাবী হলেন : বিলাল ইবনে রাবাহ ও আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) প্রমুখ। মুশরিকদের নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন ইয়াসির ও সুমাইয়া রা. এবং ইসলামের ইতিহাসে তারাই সর্বপ্রথম শহীদ।

আল-আমীন উপাধি লাভ

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বাল্যকাল হতেই চিন্তামগ্ন থাকতেন। তিনি ছিলেন দুর্দশাগ্রস্থ ও নিপিড়ীত মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল। আরববাসী তার নম্রতা, বিনয়, সত্যবাদিতা ও সৎস্বভাবের জন্য তাঁকে ‘আল-আমীন’ বা বিশ্বাসী উপাধিতে ভূষিত করেন।

তায়েফ গমন

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আশ্রয়দাতা চাচা আবূ তালিবের মৃত্যুকে কুরাইশরা সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করল। তার উপর নির্যাতনের মাত্রা পূর্বের চেয়ে অনেক বাড়িয়ে দিল। এ কঠিন পরিস্থিতে সহযোগিতা ও আশ্রয় পাওয়ার আশায় তিনি তায়েফ গমন করলেন। কিন্ত সেখানে উপহাস ও দুর্ব্যবহার ছাড়া আর কিছুই পেলেন না। তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে পাথর নিক্ষেপ করে আহত করে। ফলে তিনি আবার মক্কায় ফিরে যান।

মদিনায় হিজরত

কুরাইশরা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয় এবং আল্লাহ তায়ালা তাকে হেফাযত করেন।
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) স্বীয় ঘর থেকে বের হন এবং আল্লাহ তাআলা কাফেরদের চক্ষু অন্ধ করে দেন যাতে তারা রাসূল (সাঃ) দেখতে না পারে। তিনি চলতে চলতে মক্কার বাইরে আবু বকর সিদ্দীক রা. এর সাথে মিলিত হন। অতঃপর তারা এক সাথেই পথ চলা আরম্ভ করেন। সওর নামক পাহাড়ে পৌঁছে একটি গুহায় তিন দিন পর্যন্ত আত্মগোপন করেন। এ সময়টিতে আব্দুল্লাহ বিন আবূ বকর রা. তাদের নিকট কুরাইশদের সংবাদ পৌঁছাতেন এবং তার বোন আসমা খাদ্য ও পানীয় পৌঁছে দিতেন। তারপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার সঙ্গী আবু বকর (রা) গুহা হতে বের হন এবং মদীনার পথে যাত্রা শুরু করেন।

মদীনায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় পৌঁছে তাকওয়ার ভিত্তিতে ইসলামের সর্বপ্রথম মসজিদ নির্মাণ করেন। বর্তমানে মদীনা শরীফে এ মসজিদটি “মসজিদে কু’বা” নামে পরিচিত।মদীনাতে রাসুল (সাঃ) সর্বপ্রথম যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তা হলো মসজিদে নববী নির্মাণ এবং আনসার ও মুহাজিরদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন।

মক্কা বিজয়

হুদায়বিয়ার সন্ধির পর হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বিভিন্ন গোত্রে তাঁর দাওয়াতী কর্মসূচী অধিক পরিমাণে বিস্তৃতি ঘটাতে সক্ষম হন। ফলে এক বছরের মাথায় মুসলমানদের সংখ্যা অধিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই মাঝে কুরাইশদের সাথে মৈত্রী চুক্তিতে আবদ্ধ বনু বকর মুসলমানদের মিত্র কবীলায়ে খুযা‘আর উপর আক্রমণ করল। এর অর্থ দাঁড়াল কুরাইশ এবং তার মিত্ররা হুদায়বিয়ার সন্ধি চুক্তি ভঙ্গ করল।নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সংবাদ পেয়ে অত্যধিক ক্রুদ্ধ হন এবং মক্কা বিজয়ের উদ্দেশ্যে দশ হাজার যোদ্ধার একটি বিশাল সেনাদল গঠন করেন।

তখন ছিল হিজরী অষ্টম বর্ষের রমযান মাস। এদিকে কুরাইশরা নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মক্কাভিমুখে অভিযানের সংবাদ পেয়ে তাদের নেতা ও মুখপাত্র আবূ সুফিয়ানকে ক্ষমা প্রার্থনা, সন্ধি চুক্তি বলবৎ এবং চুক্তির মেয়াদ আরো বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে নবী করিম (সাঃ) এর নিকট প্রেরণ করেন। নবী করীম (সাঃ) তাদের ক্ষমার আবেদন নাকচ করে দিলেন। কারণ তারা অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে। আবূ সুফিয়ান ইসলাম গ্রহণ ব্যতিত আর কোন উপায় না দেখে ইসলাম গ্রহণ করেন। অতঃপর সেনাদল (মক্কাভিমুখে) রওয়ানা হয়ে মক্কার কাছাকাছি আসলে মক্কাবাসী বিশাল দল দেখে আত্মসমর্পণ করে। আর নবী করিম (সাঃ) মুসলমানদের সঙ্গে নিয়ে বিজয়ী বেশে মক্কায় প্রবেশ করেন।

নবী করীম (সাঃ) বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করেন এবং নিজ হাতের লাঠি দ্বারা কা‘বার আশেপাশে রাখা সকল প্রতিমা ভেঙে চুরমার করে দেন। আর স্বীয় রবের শেখানো আয়াত পাঠ করতে থাকেন," আর বলুন, হক এসেছে ও বাতিল বিলুপ্ত হয়েছে; নিশ্চয় বাতিল বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল।" (সূরা ইসরা,আয়াত - ৮১)।অতঃপর নবী করীম (সাঃ) সকলের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। ঘোষণা করেন মক্কা পবিত্র ও নিরাপদ।

বিদায় হজ্জ

দশম হিজরী সনে নবী করিম (সাঃ) মুসলমানদেরকে তাঁর সাথে হজব্রত পালন ও হজের আহকাম শিক্ষা গ্রহণ করতে মক্কায় যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান।তাঁর আহ্বানে এক লক্ষের মত লোক সাড়া দিল। তাঁরা যিলকাদ মাসের পঁচিশ তারিখ তাঁর সাথে মক্কা পানে বের হন। বাইতুল্লায় পৌঁছে প্রথমে তওয়াফ করেন। অতঃপর যিলহজ্জ মাসের আট তারিখ মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। এরপর নয় তারিখ জাবালে আরাফাহ অভিমুখে যাত্রা করেন। রাসূল (সাঃ) সেখানে অবস্থান করেন এবং মুসলমানদের উদ্দেশ্যে তার ঐতিহাসিক অমর ভাষণ দান করে তাদেরকে ইসলামী বিধি-বিধান ও হজের আহকাম শিক্ষা দেন এবং আল্লাহ তাআলার নিম্নোক্ত বাণী তিলাওয়াত করেন- "তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোস্ত, আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্যের নামে যবেহ করা পশু, গলা চিপে মারা যাওয়া জন্তু, প্রহারে মারা যাওয়া জন্তু, উপর থেকে পড়ে মারা যাওয়া জন্তু, অন্যপ্রাণীর শিং এর আঘাতে মারা যাওয়া জন্তু এবং হিংস্র পশুতে খাওয়া জন্তু ! তবে যা তোমরা যবেহ করতে পেরেছ তা ছাড়া, আর যা মূর্তি পূজার বেদীর উপর বলী দেয়া হয় তা এবং জুয়ার তীর দিয়ে ভাগ নির্ণয় করা, এসব পাপ কাজ। আজ কাফেররা তোমাদের দ্বীনের বিরুদ্ধাচরণে হতাশ হয়েছে। কাজেই তাদেরকে ভয় করো না এবং আমাকেই ভয় কর। আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করলাম, আর তোমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম। তবে যদি কেউ ক্ষুধার তাড়নায় (নিষিদ্ধ জিনিষ খেতে) বাধ্য হয়; কিন্তু ইচ্ছা করে পাপের দিকে ঝুঁকে না, তাহলে (তার জন্য) আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। " (সুরা আল মায়েদা,আয়াত - ৩ )

বিদায় হজ্জ থেকে ফেরার পর হিজরী ১১ সালের সফর মাসে মুহাম্মদ (সাঃ) জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বরের তাপমাত্রা প্রচন্ড হওয়ার কারণে পাগড়ির ওপর থেকেও উষ্ণতা অনুভূত হচ্ছিল। অসুস্থ অবস্থাতেও তিনি এগারো দিন নামাজের ইমামতি করেন। অসুস্থতা তীব্র হওয়ার পর তিনি সকল স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে আয়েশা (রাঃ) এর কামরায় অবস্থান করতে থাকেন। তাঁর কাছে সাত কিংবা আট দিনার ছিল,মৃত্যুর একদিন পূর্বে তিনি এগুলোও দান করে দেন। অবশেষে ১১ হিজরী সালের রবিউল আউয়াল মাসের ১ তারিখ সন্ধ্যায় তিনি মহান প্রতিপালকের সান্নিধ্যে চলে যান। এ সময় হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। সর্বোপরি, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্টায় এক অনন্য নজির স্থাপন করেন, সর্বক্ষেত্রে তিনি ছিলেন সফল ব্যক্তিত্ব।

মহানবী (সাঃ) এর জন্মের দিনে আমাদের করণীয়

মহানবী (সাঃ) কে সোমবারের রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, " এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনে আমাকে নবুয়ত দান করা হয়েছে"। (মুসলিম শরিফ, হাদিস নং - ১১৬২)।

মুসলিম শরিফে বর্ণিত বিশুদ্ধ এই হাদিসের আলোকে জানা যায়, প্রিয় নবীর জন্মদিনে উম্মতের করণীয় কী? এই দিনে উম্মতের করণীয় হলো, রোজা রাখা। তাঁর প্রতি অধিক পরিমাণে দরূদ ও সালাম পাঠ করা। অন্য হাদিসে মহানবী (সাঃ) বলেন,"সোমবার ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমলনামা আল্লাহর দরবারে উপস্থাপন করা হয়। সুতরাং রোজা অবস্থায় আমার আমলনামা উপস্থাপন করা হোক, এটা আমি পছন্দ করি"। (তিরমিজি, হাদিস নং -৭৪৭)

তাই মহানবী (সাঃ) এর জন্মের দিনে নফল রোজা রাখা প্রকৃত নবীপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ। সবচেয়ে বড় কথা হলো, মহানবী (সাঃ) এর জন্মের ঘটনার চেয়েও তাঁর সর্বব্যাপ্ত জীবনাদর্শ আমাদের জন্য অধিক প্রয়োজনীয়। মহানবী (সাঃ) এর জন্মের বিষয়টি একান্ত তাঁর ব্যক্তিগত। কিন্তু তাঁর সিরাত বা জীবনাদর্শ সব যুগের, সব মানুষের জন্য। বিশ্বমানবতার মুক্তির জন্য। আর নবীপ্রেমের প্রথম শর্ত হলো নবীর আনুগত্য। বাস্তব জীবনে এর প্রতিফলন না ঘটলে নবীপ্রেমের দাবি অর্থহীন।

চলবে -

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


তখন রোম, জেরুযালেম, আলেকসান্দ্রিয়া অনেক অনেক উন্নত ছিলো; আরবরা এত দরিদ্র ছিলো যে, মদ বানানোর মতো কোন কিছু ছিলো না। আপনি ভুল লোকদের লেখা পড়ে, উহা এখানে লিখছেন।

১১ ই অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২০

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।

আমাদের আলোচ্য বিষয় হলো " রবিউল আউয়াল মাস এবং মহামানব রাসূল (সাঃ) এর জীবনচরিত" - আপনার মন্তব্য কি বিষয়বস্তুুর সাথে অপ্রাসংগিক নয়?

২| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



কার প্রতি আপনার ভালোবাসা বেশী: স্ত্রী, সন্তান, পিতামাতা, নবীজী, ব্লগার চাঁদগাজী?

১১ ই অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩২

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: চাঁদগাজী ভাই, স্ত্রী, সন্তান, পিতামাতা থেকে আপনাকে আমি ব্যাপোক ও বেশী ;) বালাবাই ইডা হাচা কথা তবে নবীর সাথে কারো তুলনা করা মনে হয় উচিত নয়।

এ ব্যাপারে আপনার কি অভিমত? সৃষ্টিকর্তা-নবী-রাসুল এদের কারো সাথে কি আর কারো তুলনা করা যায় না উচিত ?

৩| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৮:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনার ১ম বাক্যে যা বলেছেন, এগুলো সঠিক নয়; তখন, ইউরোপ ও এশিয়ার অনেক জাতি খুবই ভালো অবস্হায় ছিলো।

১২ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১:৩৬

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: হয়তো বা , হয়তোবা না ।

কোনটা ভুল আর কোনটা সঠিক তা ব্যক্তির অবস্থান ও দৃষ্টিভংগির উপর নির্ভর করে। আপনার কাছে যা সঠিক তা অন্যের কাছে সঠিক নাও হতে পারে।

৪| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:২২

কামাল১৮ বলেছেন: চৌদ্দশ বছরেও আরবরা উন্নত ও মানবিক হতে পারে নাই।যে ধর্ম শিক্ষা দেয় মুসলমান ছাড়া বাকি সবাই নিকৃষ্ট প্রানীর চাইতেও খারাপ তারা যতদিন এই মতবাদ থেকে বের হয়ে না আসবে ততদিন তারা বিশ্ব মানবতার সাথে এক কাতারে দাঁড়াতে পারবে না।
নবীর জন্ম তারিখ নিয়ে মুসলিম স্কলারদের মাঝে অনেক মত বিরোধ আছে।লিখতে গেলে সাত কাহন হয়ে যাবে।আর আমি অত বড় লিখতেও পারি না।
বিদায় হজের ভাষণ বলে কিছু নাই।তিনি শেখ মুজিবের মতো কোন ভাষণ দেন নাই।নবীর জীবদ্দশায় যেবার শেষ হজ হয় সেবার সেবার অসুস্থতার জন্য তিনি হজে যেতে পারেন নাই।তার লিখিত কিছু বক্তব্য( যদিও মুসলমান দাবি করে তিনি লিখতে পড়তে জানতেন না) পড়ে শুনানো হয়।সেটাই বিদায় হজের ভাষণ।ইবনে কাশির থেকে তাই জানা যায়।

১২ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১:৪৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ কামাল ভাই, আপনার তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্যের জন্য।

আপনি যা বলেছেন তাই হয়তো সঠিক বলে প্রমাণ হবে যিনি বা যারা এ জাতীয় মনোভাব পোষণ করে তবে এতটুকু বলা যায় আপনার মন্তব্য বাস্তবতা পুরোপুরি অস্বীকার করে যা গ্রহণ করা ধর্মীয় দৃষ্টিতে কোন ভাবেই সম্ভব নয়।

যে কোন বিষয়ে মত প্রার্থক্য থাকতে পারে তবে মূল বিষয় অস্বীকার করে নয় - এটা আমাদের সকলের মনে রাখা উচিত।

৫| ১২ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: শুক্রবার জুম্মা নামাজ পড়তে গিয়ে শুনেছি- হুজুর বলেছেন- আল্লাহকে পেতে হলে আগে নবিকে পেতে হবে।;

১২ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১:৫১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।

এমনটাই কি হওয়ার কথা নয় ভাই?

আপনি এ দুনিয়াতেই দেখেন, যদি আপনি কোন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সাথে দেখা করতে চান তবে সরাসরি আপনি তার দেখা পেতে নাও পারেন। তার জন্য প্রথমেই তার সহকারীর সাথে কথা বলেই সাক্ষাতের সময় ঠিক করে নিতে হবে বা হয়।

ঠিক তেমনি , আল্লাহ এবং মানুষের মাঝে যোগসূত্র স্থাপনকারী হলেন নবী-রাসুলগণ।তাদের নির্দেশীত মত ও পথ মোতাবেকই আল্লাহকে পাওয়া সহজ হয় বা হবে - আমদের মনগড়া মতবাদে নয়।আর নবী-রাসুলগণ তাই বলেছেন যা তারা আল্লাহর নিকট থেকে পেয়েছেন।

৬| ১২ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৩:৪৮

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
এখন আর মানুষ আমল করতে চায়না। মসজিদেও মোবাইল দেখে কেউ কেউ, কি দিন আইলোরে ভাই!!!!

১২ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:৫৬

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ মোঃ মাইদুল সরকার ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।

জীবনের জটিলতায় এবং দুনিয়ার মোহে আমরা মানুষ এখন পরকালের কথা প্রায় সবাই ভূলতে বসেছি এটা সত্যি কথা ভাই। আর ঈমান এবং আমলের ব্যাপারেও সেই একই অবস্থা।

আর মসজিদে মোবাইলের ব্যাপারে যেটা বললেন তাও ঠিক।নামাজ-মসজিদ ছাড়া আমাদের চললেও মোবাইল ছাড়া আমাদের এক মুহূর্তও :(( চলেই না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.