নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

" মহামানব রাসূল (সাঃ) এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও বিনম্র জীবনাচরণ ", যা হতে পারে মানব জাতির জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ও অনুকরণীয়। (শেষ পর্ব )।

১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৬


ছবি - iqna.ir.bd

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ ) এ দুনিয়ায় এসেছিলেন পথ ভ্রষ্ট মানুষকে সঠিক পথের দিশা দেখিয়ে দিতে ৷ মিথ্যা ও অন্ধকার থেকে মানুষকে আলোর পথে পরিচালিত করতে ৷তাঁর আগমণ প্রথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা । তাঁর আবির্ভাব সত্য ও সুন্দরের নির্ভীক বিজয়ের স্মারক ৷ তাঁর আগমনে আমরা পেয়েছি ইহকালীন শান্তির সাথে সাথে পরকালীন মুক্তির দিক-নির্দেশনা । আর তাই বিনয়ে অবনত শ্রদ্ধার সাথে কৃতজ্ঞতা জানাই বিশ্বের সেই শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি।

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ ) ছিলেন উত্তম চরিত্র ও মানবীয় গুনাবলীর সমন্বয়ে এক মহামানব। তার চাইতে উত্তম ব্যবহার কারো ছিল না বলেই তখন তাকে আল-আমিন বা বিশ্বস্ত উপাধী দেয়া হয়েছিলো । বাল্যকাল থেকেই তিনি ছিলেন মহৎ চরিত্রের অধিকারী। তার ব্যবহার সকলকে মুুুুগ্ধ করে দিতো। দাস-দাসীদের সাথে তিনি সব-সময় ভালো ব্যবহার করতেন । কখনো কাউকে কটু কথা বলা তো দূূূূরে কেউ তার বিরুদ্ধে কখনো কোন অভিযোগ করতে পারেনি। চরম শত্রুরা পর্যন্ত তাকে বিশ্বাসী বলে ডাকতো।তার শত্রুরা পর্যন্ত কোন দিন তাকে মিথ্যাবাদী বলতে পারেনি। তিনি তার জীবনে কখনো কোন দিন কোন মিথ্যা বলেনি। মক্কার কাফেররা পর্যন্ত তাকে আল-আমিন মানে বিশ্বাসী বলে ডাকত । মক্কার কাফেররা, শত্রুরা পর্যন্ত নবী মুহাম্মদ (সাঃ ) এর কাছে তাদের দামী জিনিস পত্র আমানত রাখতো।

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর চরিত্র সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, "নিশ্চয়ই আপনি এক মহান চরিত্রের অধিকারী"। (সূরা ক্বালাম,আয়াত - ৪)। পবিত্র কুরআনে এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ আরো বলেন, " আর আমরা তো আপনাকে (হে মুহাম্মদ) সৃষ্টিকুলের জন্য শুধু রহমতরূপেই পাঠিয়েছি"। (সুরা আম্বিয়া,আয়াত - ১০৭)। অন্য এক আয়াতে আরো বলা হয়েছে,"আর আমরা তো আপনাকে সমগ্র মানুষের জন্যই সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। " (সূরা সাবা,আয়াত - ২৮)।

আধুনিক কালেও হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে বিভিন্ন অমুসলিম মনীষীদের সেই রকমই ধারনা যে তিনি একজন ভাল মানুষ যিনি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও বিনম্র জীবনাচরণের জন্য মানুষের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত । নিম্নে কয়েকজন অমুসলিম মনীষীর মন্তব্য তুলে ধরা হলো -


ছবি - ittefaq.com.bd

১। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর - পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে ১৯৩৬ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লি জামে মসজিদ থেকে প্রকাশিত পত্রিকায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুভেচ্ছা বাণীতে হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর সম্পর্কে বলেছিলেন," যিনি বিশ্বের মহত্তমদের মধ্যে অন্যতম, সেই পবিত্র পয়গম্বর হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উদ্দেশে আমি আমার অন্তরের গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করি। মানুষের ইতিহাসে এক নতুন সম্ভবনাময় জীবনশক্তির সঞ্চার করেছিলেন হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ) । পয়গম্বর এনেছিলেন নিখাদ, শুদ্ধ ধর্মাচরণের আদর্শ। সর্বান্তকরণে প্রার্থনা করি, পবিত্র পয়গম্বরের প্রদর্শিত পথ যারা অনুসরণ করেছেন, আধুনিক ভারতবর্ষের সুসভ্য ইতিহাস রচনা করে তারা যেন জীবন সম্পর্কে তাদের গভীর শ্রদ্ধা এবং পয়গম্বরের প্রদত্ত শিক্ষাকে যথাযথভাবে মর্যাদা দেন। তারা যেন এমনভাবে ইতিহাসকে গড়ে তোলেন, যাতে আমাদের জাতীয় জীবনে শান্তি ও পারস্পরিক শুভেচ্ছার বাতাবরণটি অটুট থেকে যায়"।

২। জর্জ বার্নাড শ - পাশ্চাত্য চিন্তাবিদ জর্জ বার্নাড শ বলেছেন, " মধ্যযুগের কতিপয় গণ্ডমূর্খ ধর্মোন্মাদ, ইসলাম ধর্মের বীভৎস রূপ পেশ করেছেন। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে তারা ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক আন্দোলন করেছেন। তারা মুহাম্মদ (সাঃ) কে মার্জিত ভাষায় প্রকাশ করেননি। আমি তাদের সব উক্তি গভীরভাবে অনুধাবন করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে, মুহাম্মদ (সাঃ) এক মহান ব্যক্তিত্ব, যিনি সঠিক অর্থে মানবতার মুক্তিদাতা"।

৩। কার্ল মার্কস - কার্ল মার্কস বলেছেন, " এই ট্যাক্স (যাকাত) একটি ধর্মীয় কর্তব্য, এটি আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অবশ্য করণীয়। ধর্মীয় দিক ছাড়াও যাকাত একটি প্রাণবন্ত দৃঢ় সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার হাতিয়ার। এটিই মুহাম্মদী রাষ্ট্রের কোষাগার। এর দ্বারা অভাবী, গরিব ও দুস্থদের সাহায্য করা হয়। ইতিহাসের এ বিরল পদ্ধতি সর্বপ্রথম ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছে। যাকাত এমন এক ধরনের ট্যাক্স, যা ধনী সম্পদশালী বিত্তবান ও ব্যবসায়ীদের থেকে বাধ্যতামূলভাবে আদায় করে ইসলামী রাষ্ট্রের অক্ষম, প্রতিবন্ধী, এতিম, নিঃস্ব ও অনাথদের মধ্যে বণ্টন করে থাকে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে রাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যে বিদ্যমান যাবতীয় বিরোধপূর্ণ দেয়াল চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। এ পদ্ধতির আওতায় সমগ্র জাতি একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ নীতির অন্তর্ভুক্ত হয়। যাকাতের মাধ্যমে সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার পেছনে কখনো পারস্পরিক শক্রতা অথবা বিদ্বেষ ছিল না। এর ন্যায়সঙ্গত ইনসাফপূর্ণ পদ্ধতি যে নবীর মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে তিনি ছিলেন বিশ্বশান্তির অগ্রদূত"।

৪। পি কে হিট্টি - বিশ্ববিখ্যাত ইহুদি পণ্ডিত, ঐতিহাসিক পি কে হিট্টি বলেছেন, " বিশ্বের নবীদের মধ্যে শুধু মুহাম্মাদ (সাঃ) ই একমাত্র নবী যিনি ইতিহাসের পূর্ণ আলোতে জন্ম নিয়েছেন, অর্থাৎ তার সমগ্র জীবন কথা, কাজ ও সমুদয় অবস্থা অবিকল অপরিবর্তিত অবস্থায় অবশিষ্ট রয়েছে। তিনি পৃথিবীতে এমন এক ঐশী ধর্ম পেশ করেছেন, যাতে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা। তাঁর প্রচেষ্টায় এমন একটি উন্নত সংগঠন অস্তিত্ব লাভ করল যাদের ‘আল্লাহর দল’ বলা হয়। এ সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি সদস্য স্বীয় গোত্র, বংশ, পরিবার ও প্রাচীন সম্পর্ক ভুলে গিয়ে পরস্পর ভাই ভাইয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গেল। এভাবে তাঁরা গোত্র ও সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করে দিলো এবং বর্তমান বিশ্বের এ ষষ্ঠাংশ অধিবাসী পবিত্র সম্পর্কের কারণে এক আত্মা ও অস্তিত্বে পরিণত হয়েছে"।

৫।বেনথাম - ব্রিটিশ লেখক বেনথাম বলেছেন, " মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ধর্মে সব নেশাজাতীয় মাদকদ্রব্য হারাম ঘোষিত হয়েছে। এটিই তাঁর পবিত্র ধর্মের পবিত্রতার দলিল। এ কারণেই তিনি সবচেয়ে বেশি প্রশংসাযোগ্য " ।

৬।আইজ্যাক টেইলর - ইংরেজ পাদ্রি আইজ্যাক টেইলর তার এক নিবন্ধে লিখেছেন, " শুধু ইসলাম ধর্মেরই এ বিশেষত্ব যে, মানুষের জীবনের সামগ্রিক অধিকারে জাতির প্রত্যেকটি ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং সঠিক সাম্যের বাস্তব রূপ দিয়েছে। বিভিন্ন বর্ণ ও বংশের মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে যে সমঝোতা ও সহানুভ‚তি ইসলামের সূচনালগ্নে সৃষ্টি করেছে, পৃথিবীর অমুসলিম সম্প্রদায় তাদের শেষ যুগেও এমন নমুনা পেশ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ইসলাম কেবল পরস্পরবিরোধী বিভিন্ন বর্ণ ও বংশের মানুষের মধ্যে অধিকারে সমতা বিধান করে তাদের মধ্যে একতা প্রতিষ্ঠা করেছে, তা নয় বরং বলা যায়, ইসলাম এতে সফল হয়েছে। আফ্রিকা, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চীন, জাপান, রাশিয়া ও অন্যান্য দেশে ছোট-বড় সম্প্রদায়ের মধ্যে একতা, সাম্য ও সমঝোতার কোনো পথ ছিল না। একমাত্র ইসলামই তাদের সঙ্ঘবদ্ধ করে সবাইকে ভাই ভাইয়ের বন্ধনে দাঁড় করিয়েছে। এসব কিছু ইসলামের নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এর আদর্শ ও মহত্বের বড় প্রমাণ, যা অস্বীকার করার কোনো পথ নেই "।

৭। জন কিটস - ইংরেজ কবি জন কিটস (মৃত্যু : ১৮২২) বলেন, " পৃথিবীর যা কিছু মঙ্গলময়, যা কিছু মহৎ ও সুন্দর সবই নবী মুহাম্মাদ(সাঃ) এবং তাঁর তুলনা শুধু তিনি নিজেই "।

৮।মরিস গডফ্রে - মরিস গডফ্রে তার 'মুসলিম ইনস্টিটিউশন' গ্রন্থে বলেছেন, " মুহাম্মাদ (সাঃ) একজন রাসূল ছিলেন, কোনো ধর্মবেত্তা ছিলেন না। এটি যেকোনো নিরপেক্ষ মানুষের কাছেও সুস্পষ্ট। প্রাথমিক মুসলমানদের যে সভ্যসমাজ তাঁকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল, তাঁরা তাঁর আইন ও দৃষ্টান্ত পালন করে সন্তুষ্ট ছিলেন"।

৯। এডওয়ার্ড মুনন্ট - জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন স্বনামধন্য অধ্যাপক এডওয়ার্ড মুনন্ট। নবী (সাঃ) কে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, " চরিত্র গঠন ও সমাজ সংস্কার ক্ষেত্রে তিনি যে সাফল্য অর্জন করেছেন, সে প্রেক্ষাপটে তাঁকে মানবতার মহান দরদি বলে বিশ্বাস করতেই হয়"।

এরকম শত-শহস্র অমুসলিম মনীষী ও চিন্তাবিদ ও জ্ঞানী-গুনী মানুষ একবাক্যে স্বীকার করেছেন মহানবী (সাঃ ) এর শ্রেষ্ঠত্ম এবং বলেছেন তিনি মানবজাতির জন্য অনুকরণীয়ও বটে।


ছবি - agaminews.com

মহানবী (সাঃ ) ছিলেন ধৈর্য ও সহনশীলতার মূর্ত প্রতিক । নিজেকে সবসময় আল্লাহর আনুগত্যের উপর অটল রাখা,তার অবাধ্যতার নিকটবর্তী না হওয়া, তার সিদ্ধান্তের কারণে হা হুতাশ না করা এবং তাতে রাগান্বিত না হওয়ার নামই ধৈর্য। রাসুল (সাঃ) ইসলামের দাওয়াতকে ছড়িয়ে দেয়ার কাজ করতে গিয়ে কুরাইশদের কাছ থেকে অমানুষিকভাবে অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়েও ধৈর্যধারণ করেছেন।তিনি ধৈর্যধারণ করেছেন দুঃখের বছর, যুদ্ধক্ষেত্রে, ইহুদীদের ষড়যন্ত্র, ক্ষুধা ও অন্যান্য পরিস্থিতিতে। কোন ষড়যন্ত্রই তাকে দুর্বল করতে পারেনি এবং কোন পক্ষই তাকে টলাতে পারেনি। নবী মুহাম্মদ (সাঃ ) এর ধৈর্য্যের কোন কমতি ছিলো না । তায়েফ বাসীরা যখন মুহাম্মদ (সাঃ ) কে নির্মমভাবে রক্তাক্ত করে তখনো তিনি তাদেরকে ধব্বংস করার জন্য বদ দোয়া করেনি। মহানবীর উপর তায়েফবাসীর অমানবিক ভাবে পাথর ছোঁড়া দেখে ফেরেশতারা পর্যন্ত কাতর হয়ে পড়েছিলেন। ফেরেশতারা পর্যন্ত তায়েফ বাসীকে ধব্বংস করে দেয়ার জন্য বললেন। কিন্তু মহানবী (সাঃ ) নিষেধ করলেন এবং তাদেরকে ক্ষমা করে দেন। মহানবী (সাঃ ) ক্ষমার এক চরম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন মানবজাতির অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় মহান উদার, বিনয়ী ও নম্র ব্যক্তিত্ব। তিনি উত্তম চরিত্র ও মহানুভবতার আধার। পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রী, প্রতিবেশী সবার অকৃত্রিম শিক্ষণীয় আদর্শ ও প্রাণপ্রিয় ব্যক্তিত্ব নবী করিম (সাঃ ) একাধারে সমাজসংস্কারক, ন্যায়বিচারক, সাহসী যোদ্ধা, দক্ষ প্রশাসক, যোগ্য রাষ্ট্রনায়ক এবং সফল ধর্মপ্রচারক।

কল্যাণকর প্রতিটি কাজেই তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। তাঁর অসাধারণ চারিত্রিক মাধুর্য ও অনুপম ব্যক্তিত্বের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, " তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে তাদের জন্য রাসূলুল্লাহর (চরিত্রের) মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। " (সূরা আল-আহজাব, আয়াত - ২১)।

তিনি অবিস্মরণীয় ক্ষমা, মহানুভবতা, বিনয়-নম্রতা, সত্যনিষ্ঠতা প্রভৃতি বিরল চারিত্রিক মাধুর্য দিয়েই বর্বর আরব জাতির আস্থাভাজন হতে সক্ষম হয়েছিলেন। যে কারণে তারা তাঁকে ‘আল-আমিন’ বা বিশ্বস্ত উপাধিতে ভূষিত করেছিল। তিনি যে বিনয়-নম্র ও সৎচরিত্রের অধিকারী ছিলেন, তা তারা একবাক্যে অকপটে স্বীকার করেছে। দুনিয়ার মানুষকে অর্থের দ্বারা বশীভূত না করে বরং তাদের সদাচরণ, উত্তম ব্যবহার এবং সততার দ্বারা বশীভূত করতে সক্ষম হয়েছেন।

আত্মমর্যাদাবোধ বশতঃ কখনো তিনি মানুষকে তুচ্ছজ্ঞান ও হেয়প্রতিপন্ন করেননি বা নগণ্য ভাবেননি। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-দল-মতনির্বিশেষে সব মানুষের সঙ্গে সদাচরণ করে পৃথিবীর বুকে শ্রেষ্ঠতর স্বভাব-চরিত্রের অতুলনীয় আদর্শ স্থাপন করেছেন। তাঁর স্বভাব-চরিত্রের মধ্যে বিনয় ও নম্রতা ছিল সদা জাগ্রত। সর্বোত্তম আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবেই তাঁকে বিশ্বমানবতার কল্যাণের জন্য পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছিল। এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সাঃ ) বলেছেন," আমি উত্তম চরিত্রের পরিপূর্ণতা সাধনের জন্যই প্রেরিত হয়েছি"। (মুসনাদে আহমাদ, মিশকাত)।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। কখনো দুর্বল ব্যক্তিকে কটু কথার মাধ্যমে হেয়প্রতিপন্ন করতেন না। এমনকি কোনো মানুষকে তার সামর্থ্যের বাইরে অসাধ্য কাজে বা কঠিন দায়িত্বে বাধ্য করতেন না। তিনি দরিদ্র অসহায় মানুষের সঙ্গে ওঠাবসা করতেন। সমাজে যে যতটুকু মর্যাদার অধিকারী, তাকে সেভাবেই মূল্যায়ন করতেন। তিনি নম্রতাসুলভ আচরণ প্রদর্শন করার জন্য সাহাবায়ে কিরামদের উপদেশ দিতেন, আচার-ব্যবহারে অযথা রাগ ও ক্রোধ থেকে সর্বদা বিরত থাকার পরামর্শ দিতেন। তিনি মানুষকে সাবধান করে দিয়ে বলেছেন,"যে ব্যক্তি নম্র-বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উচ্চাসনে আসীন করেন আর যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে অপদস্থ করেন"। (মিশকাত শরীফ) ।

মহানবী (সাঃ) এর কাছ থেকে বিধর্মীরাও আশাতীত সুন্দর কোমল আচরণ লাভ করত। তিনি এতই নমনীয় ও কোমলতর ব্যবহারের অধিকারী ছিলেন যে তাঁর পবিত্র সংস্রব কিংবা সামান্যতম সুদৃষ্টির কারণেও অনুসারীরা তাঁকে প্রাণাধিক ভালোবাসত এবং মনে-প্রাণে গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করত। তাঁর কোমল ব্যবহার সম্পর্কে উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, "নবী করিম (সাঃ ) কঠোর ভাষী ছিলেন না, এমনকি প্রয়োজনেও তিনি কঠোর ভাষা প্রয়োগ করতেন না। প্রতিশোধপ্রবণতা তাঁর মধ্যে আদৌ ছিল না"।

মন্দের প্রতিবাদ তিনি মন্দ দিয়ে করতেন না, বরং মন্দের বিনিময়ে তিনি উত্তম আচরণ করতেন সব বিষয়েই। তিনি ক্ষমাকে প্রাধান্য দিতেন। তিনি এতটা বিনয়ী ও নম্র ছিলেন যে কথা বলার সময় কারও মুখমণ্ডলের প্রতি দৃষ্টি নিবন্ধ করে কথা বলতেন না। কোনো অশোভন বিষয় উল্লেখ করতেন না। তিনি সব সময় মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতেন ও সদালাপ করতেন। তাঁর মধুর বচনে সবাই অভিভূত হতো। তাঁর অভিভাষণ শুনে জনসাধারণ অশ্রু সংবরণ করতে পারত না। তিনি জনগণকে উপদেশ দিয়ে বলেছেন, " দয়ালু প্রভু আল্লাহর ইবাদত করো, ক্ষুধার্তকে খাদ্য প্রদান করো, সালামের বহুল প্রচলন করো এবং এসব কাজের মাধ্যমে বেহেশতে প্রবেশ করো"।(বুখারি শরীফ) । একদা এক ব্যক্তি নবী করিম (সাঃ ) কে ইসলামে সবচেয়ে ভালো কাজ কোনটি প্রশ্ন করলে তিনি উত্তরে জানালেন, " অভুক্তকে খাওয়ানো আর চেনা-অচেনা সবাইকেই সালাম করা"।(বুখারি ও মুসলিম)

তিনি ছিলেন নির্লোভ, নিরহংকার, পরোপকারী, সহজ-সরল অনাড়ম্বর জীবনের অধিকারী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ একজন আদর্শ মহামানব। মানুষের সঙ্গে তার সদাচরণ একান্তই তার উদারতার পরিচায়ক। পৃথিবীর ইতিহাসে এ রকম বিরল ব্যক্তিত্বের সন্ধান কখনো মেলে না। এমনিভাবে তিনি মানুষের প্রতি কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, " আল্লাহ তাআলা ওহির মাধ্যমে আমার কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছেন যে নম্রতা ও হেয়তা অবলম্বন কোরো। কেউ যেন অন্যের ওপর গর্ব ও অহংকারের পথ অবলম্বন না করে এবং কেউ যেন কারও ওপর জুলুম না করে"। (মুসলিম শরীফ) ।

মহানবী (সাঃ) অনেকাংশেই স্বাবলম্বী ছিলেন। নিজের প্রয়োজনে কারও ওপর নির্ভরশীল হতেন না। নিজ হাতে জুতা মেরামত করতেন, কাপড় সেলাই করতেন, দুধ দোহন করতেন। সেবকদের কাজে সহায়তা করে আটা পিষতেন। নিজ হাতে রুটি তৈরি করে পরিবার-পরিজনকে নিয়ে খেতেন। নিজে হাটবাজার থেকে সওদা করে নিয়ে আসতেন। পরিবারের কেউ কোনো কাজের সহায়তা কামনা করলে তখনই সাহায্যের জন্য সাড়া দিতেন।

তাঁর পারিবারিক কার্যকলাপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে হজরত আয়েশা (রাঃ) বলেন,"রাসুলুল্লাহ (সাঃ ) বাড়িতে অবস্থানকালে পরিবারের কল্যাণমূলক কাজে নিয়োজিত থাকতেন। যখন নামাজের সময় হতো তখন তিনি নামাজের জন্য উঠে যেতেন"। হজরত আনাস (রাঃ) বলেছেন,"পরিবারের প্রতি অধিক স্নেহপ্রবণ হিসেবে নবী করিম (সাঃ ) থেকে বেশি অগ্রগামী আমি আর কাউকে দেখিনি। তিনি দিবারাত্রির সময়টুকু তিন ভাগে ভাগ করে নিতেন। এক ভাগ ইবাদত-বন্দেগি করতেন। অন্য ভাগ পরিবার-পরিজনের গৃহকর্মের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতেন। আর এক ভাগ সময় তিনি নিঃস্ব-দুস্থজনদের জনসেবায় ব্যয় করতেন। কোনো জরুরি অবস্থা দেখা না দিলে সাধারণত এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটত না"।

মহানবী (সাঃ ) সৎ স্বভাব, সত্যনিষ্ঠা, সৌজন্যবোধ, বিনয় ও নম্রতার যে অনুপম শিক্ষা দিয়েছেন, তা আমাদের সকলের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে পারস্পরিক সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে পারি। তাঁর সাধারণ জীবনযাপন, বিনম্র আচার-আচরণ, উপদেশাবলি অনুশীলন করলে এবং আদর্শ গুণাবলি নিজেদের জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে অনুশীলন করে চললে মানুষ ইহকালীন কল্যাণের সাথে সাথে পারলৌকিক মুক্তি লাভেও ধন্য হতে পারে। তাই নবী করিম (সাঃ ) এর সুমহান জীবনাদর্শ থেকে মানুষের প্রতি সর্বোত্তম ব্যবহার, বিনয়ী চরিত্র, বিনম্র ব্যক্তিত্ব, আনুগত্যতা, সহযোগিতা ও পারস্পরিক সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনসেবা ও মানবকল্যাণ সুনিশ্চিত করার চেষ্টা আমাদের সকলের করা উচিত। আবার অমুসলিম মনীষী ও চিন্তাবিদরা নবী করিম (সাঃ ) কে যেভাবে ও যে পর্যায়ে মূল্যায়ন করেছেন এবং করেন, তা থেকেও প্রতিটি মুসলমানের অনুপ্রাণিত হওয়া দরকার। শেষ নবী পৃথিবীতে আর ফিরে আসবেন না, কিন্তু তার রেখে যাওয়া আদর্শের প্রতিটি পদক্ষেপ হোক আমাদের যাত্রাপথের পাথেয়।


তথ্যসূত্র ও সহযোগীতায় - আল কোরআন,হাদীস এবং ইসলামী চিন্তাবিদ ইমাম সাইয়েদ মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ ইবনে আবদুহু আল-হোসাইনি প্রণীত " জগৎগুরু মুহাম্মাদ (সাঃ ) দ্বিতীয় খণ্ড"
======================================================================

পূর্ববর্তী পোস্ট -

মহানবী (সাঃ) এর জীবনচরিত - ৩ Click This Link
মহানবী (সাঃ) কি আসলেই সকল সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ বা কেন তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ?

মহানবী (সাঃ) এর জীবনচরিত - ২ Click This Link
সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মহামানব রাসূল (সাঃ) এর জ্ঞান (শিক্ষা) ও প্রজ্ঞা ।

মহানবী (সাঃ) এর জীবনচরিত - ১ Click This Link
" পবিত্র মাস রবিউল আউয়াল " সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মহামানব রাসূল (সাঃ) যিনি জন্মগ্রহণ করেন পবিত্র এ মাসে । ১২ ই রবিউল আউয়ালের তাৎপর্য ও করণীয় ।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



৩ নং:

আপনার পোষা একজন মার্ল মার্ক্সও আছে নাকি? আপনি ইসলাম ধর্মে নতুন নতুন অনেক কিছু যোগ করছেন; আপনার অনেক অবদান ইসলামের জন্য।

১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই,আপনার প্রথম মন্তব্যের জন্য ।

আপনার পোষা একজন মার্ল মার্ক্সও আছে নাকি?

- ভাইজান, আপনি কি ভূল করছেন :( না আমি ভূল লিখেছি ? উনি ত কার্ল মার্কস হওয়ার কথা মার্ল মার্ক্স নয়।

আপনি ইসলাম ধর্মে নতুন নতুন অনেক কিছু যোগ করছেন; আপনার অনেক অবদান ইসলামের জন্য।

- না ভাইজান, আমি নতুন কিছুই যোগ করিনি বা বাড়িয়ে - বানিয়েও কিছু বলিনি। আপনি যদি জানতে চান-খুজতে চান তাহলে আপনিও জানতে পারবেন ও খুজে পাবেন।

আমি এক নগণ্য মানুষ যে নিজের জীবনেই নিজের জন্য কোন অবদান রাখতে পারিনি সেই আমি ইসলামের জন্য কিভাবে অবদান রাখব বলেন। তবে জানার চেষ্টা করি এতটুকুই ।

২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:



মার্কস বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতিবিদ, উনি যাকাত ফাকাত নিয়ে ব্যস্ত হওয়ার লোক ছিলেন না; আপনি নিজে এসব ভুল তথ্য যোগ করছেন।

১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:০০

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই, আমি জানিনা আপনি জেনে-বুঝে কথা বা মন্তব্য করেন কিনা ? নাকি যা আপনার মন চায় তাই বলেন?
যারা জগতে স্মরণীয় - বরণীয় হয়েছেন তারা শুধু তাদের ধারনা নিয়েই বড় হননি। তারা যে কোন বিষয়ে তাদের পক্ষ-বিপক্ষের সবার মতামত যাচাই-বাছাই করে দেখেছেন এবং তার মাঝে যেটা সঠিক বা ভাল তাই গ্রহণ করেছেন। আর এই গ্রহণের
ক্ষেত্রে তারা রাগ-অনুরাগ-বিরাগ নয় বরং বিষয়ের যথার্থতার উপরই গুরুত্ব দিয়েছেন এবং যার যা সম্মান তাকে তাই দিতে চেষ্টা করেছেন বা দিয়েছেন যদিও সে বা তারা তার মতের পক্ষের ছিলনা।

কাজেই , আপনি যদি কিছু একটা হতে চান (অবশ্য আপনি নিজে নিজেকে নিয়ে সবসময় ভাবেন, আপনি বর্তমান সময়ের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা একটা বিশেষ কিছু ) তবে আপনাকে খোলা মন নিয়ে অনেক অনেক পড়তে হবে এবং বিষয়ের সঠিকতা জানার চেষ্টা করতে হবে। আর জানা-বুঝার ক্ষেত্রে "আপনার খোলা মন জরুরী,মুই / আমি কি হনুরে " নয়।

৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৫৭

কামাল১৮ বলেছেন: আপনি যাদের কথা বলছেনা তারা নবী সম্পর্কে বলার কেউ না।নবীর আদর্শে মুগ্ধ হয়ে কেউ মুসলমান হয় নাই।যদি বলেও থাকে সেটা ছিল পরিস্থিতি অনুসারে কথার কথা।নবী বেঁচে থাকলে এই কথা গ্রহন করতো না কিন্তু আপনারা করেন ক্ষুদ্র সার্থে। এমন করে নবীকে ছোট করবেন না।নবী অনেক বড় মাপের রাজনৈতিক নেতা ছিল যেটা এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী সাহেব তার ওয়াজে প্রায় বলেন।ইসলাম হলো রাজনৈতিক ধর্ম।নবী হলো রাজনৈতিক যোদ্ধা।আমাদের নবী হলো জংঙ্গী নেতা,তিনি অনেক জংঙ্গ করেছেন।

১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:১১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ কামাল১৮ ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য ।

আপনি যদি বড় হতে চান বা জ্ঞানী হতে চান তাহলে আপনাকে জানতে হবে । আর জানার জন্য শুধু নিজের পক্ষের কিছু জানাই যথেষ্ট নয় । যদি আপনি সম্মানীয় বা বরণীয় হতে চান আপনাকে সব বিষয়ের এবং সবার মতামত জানা জরুরী। আর তাইতো আল কোরআনের বাংলা অনুবাদ একজন হিন্দু করেছেন। তিনি হিন্দু তিনি কেন আল কোরআন পড়বেন-ধরবেন-অনুবাদ করবেন - এ জাতীয় ধারনা সঠিক নয়। আপনাকে জানার জন্য নিজ ধর্মের পাশাপাশী বাকী ধর্ম গুলো সম্পর্কেও জানতে হবে , তাহলেই আপনি সবগুলির মাঝে কোনটা ভাল কোনটা খারাপ তা জানতে পারবেন, যা আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

আর নবী (সাঃ) যুদ্ধ করছেন ,এটা সত্যি । তবে আপনাকে জানতে হবে ইসলামের ইতিহাসে যত যুদ্ধ হয়েছে তার সবগুলোর একটাও মুসলমানরা প্রথম শুরু করেনি। সবগুলো তাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছে বিধর্মীরা । মুসলমানরা আক্রমণ প্রতিহত করেছে এবং ন্যায় ভাবে ,যুদ্ধের সব নিয়ম-কানুন মেনে যুদ্ধ করেছে এবং জিতেছে।

৪| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল সত্য কথা হলো- নবিজির দেখানো পথে কেউ চলে না। কেউ না। মসজিদের ইমামও না।

১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:১৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য ।

এটা আপনি সত্যি কথা বলেছেন। বর্তমানে আমরা সবাই নবীর সঠিক শিক্ষা ভূলে গিয়ে ,তার দেখানো পথ ভূলে গিয়ে আমরা গা জোয়ারী ভাবে নিজ নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য ধর্মকে ব্যবহার করছি। আর ব্যক্তির কাজের এই দায় পড়ছে বা দোষ হচছে ধর্মের । অথচ নবী (সাঃ) বা ধর্ম কিন্তু আমাদেরকে সঠিক পথে চলতেই বলেছে।

৫| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৮:৪০

অগ্নিবেশ বলেছেন: তার বিরুদ্ধে কবিতা লিখলে লোক পাঠিয়ে হত্যা করতেন, তিনিই আবার নাকি বিনম্র জীবনাচরণ করতেন?? আপনার মধুর ভাষণে ইসলাম চলে না। কিছুটা মানলাম, কিছুটা মানলাম না, এসব মোনাফেকী ইসলামে চলে না। ইসলাম চলে কোরান হাদিস দ্বারা। নিজেকে ফাকি দেবেন না।

১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:২৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ অগ্নিবেশ ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য ।

ইসলামে বা আল কোরআন বা হাদীসে কোথাও অন্যায় ভাবে মানুষকে হত্যার কথা বলা হয়নি এবং ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ির ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে এবং নিষেধ করা আছে।ইসলামে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ির কোন বিষয় নেই।ইসলামের মূল উৎস কোরআনে কারিম এবং হাদিসে পরধর্মের মানুষকে আপনের চেয়েও বেশি শ্রদ্ধা ও সম্মান করার কথা বলেছে। এ প্রসংগে নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, "যারা মানুষকে সাম্প্রদায়িকতার দিকে ডাকে, সাম্প্রদায়িকতার জন্য যুদ্ধ করে, সংগ্রাম করে এবং জীবন উৎসর্গ করে তারা আমাদের দলভুক্ত নয়"। (সুনানে আবু দাউদ,হাদীস নং - ৫১২৩)।

সাম্প্রদায়িকতার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে।এ প্রসংগে আল্লাহতায়ালা বলেন, "দ্বীনের (ধর্মের) ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্যবাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোমরাহকারী `তাগুত'দেরকে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাংবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন"।(সূরা বাকারা,আয়াত - ২৫৬)।

এ প্রসংগে আল কোরআনে আরো বলা হয়েছে,"বলুন, হে কাফেরগণ, আমি এবাদত করিনা, তোমরা যার এবাদত কর। এবং তোমরাও তার এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি এবং আমি তার এবাদতকারী নই, যার এবাদত তোমরা করে আসছ। তোমরা তার এবাদতকারী হবেনা, যার এবাদত আমি করি। তোমাদের দ্বীন (ধর্ম ) তোমাদের জন্যে এবং আমার দ্বীন (ধর্ম) আমার জন্যে"।(সূরা কাফিরুন,আয়াত -১ - ৬)।

ধর্ম পালন করতে গিয়ে কেউ কোনোরূপ সীমা লঙ্ঘন কিংবা বাড়াবাড়ি করবে না।অন্য কেউ যদি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করেও ফেলে তবে ভুলেও যেন কোনো ইমানদার এ ধরনের হীন ও জঘন্য কাজের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত না করে। এ বিষয়টিই নসিহতস্বরূপ মুমিনদের উদ্দেশে আল্লাহতায়ালা বলছেন,"আর আল্লাহকে ছেড়ে যাদেরকে তারা ডাকে তাদেরকে তোমরা গালি দিও না।কেননা তারা সীমলংঘন করে অজ্ঞানতাবশতঃ আল্লাহকেও গালি দেবে।এভাবে আমরা প্রত্যেক জাতির দৃষ্টিতে তাদের কার্যকলাপ শোভিত করেছি,তারপর তাদের রব-এর কাছেই তাদের প্রত্যাবর্তন।এরপর তিনি তাদেরকে তাদের করা কাজগুলো সম্বন্ধে জানিয়ে দেবেন"।(সূরা আনআম,আয়াত - ১০৮)।

প্রকৃত মুসলমান কখনোই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত আসে এমন কোনো কাজ করতে পারে না ।এ প্রসংগে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,"কোনো মুসলমান যদি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অধিকার ক্ষুন্ন করে কিংবা তাদের ওপর জুলুম করে, তবে কেয়ামতের দিন আমি মুহাম্মদ ওই মুসলমানের বিরুদ্ধে আল্লাহর আদালতে লড়াই করব"। (সুনানে আবু দাউদ,হাদীস নং - ৩০৫২)।

রাসুল (সাঃ) আরও বলেছেন, "অন্যায়ভাবে কোনো অমুসলিমকে হত্যাকারী জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। অথচ চল্লিশ বছরের রাস্তার দূরত্ব থেকেই ওই ঘ্রাণ পাওয়া যাবে"। (সহিহ বোখারি,হাদীস নং - ৩১৬৬)।

এখন সিদ্ধান্তের ভার আপনার , আপনি কাকে অনুসরন করবেন এবং কোনটা মানবেন বা কি বলবেন।

৬| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:০৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
পৃথিবীর ইতিহাসে উনার মত মানুষ একজনও নেই, ছিলনা আর আসবেওনা। আমি তার উম্মত হতে পেরে গর্বিত। +++++

১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:২৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ মোঃ মাইদুল সরকার ভাই,আপনার চমতকার মন্তব্যের জন্য ।

আমিও আপনার সাথে একমত যে , পৃথিবীর ইতিহাসে নবী (সাঃ) এর মত উদার-মহান মানুষ একজন ও ছিলনা বা আর হবেও না। আমরা ভাগ্যবান যে আমরা সেই মহান নবীর উম্মত বা অনুসারী।

মহান আল্লাহপাক আমাদেরকে সঠিক ও ন্যায় পথের অনুসন্ধান করার , সহজ-সরল পথে চলার এবং বেশী বেশী নেক আমল করার তওফিক দিন ।

৭| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:৫৫

জুল ভার্ন বলেছেন: খুব ভালো একটা পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।

১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:৩০

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ জুল ভার্নভাই,আপনার ছোট অথচ চমতকার একটা মন্তব্যের জন্য ।

মহান আল্লাহপাক আমাদেরকে সঠিক ও ন্যায় পথের অনুসন্ধান করার , সহজ-সরল পথে চলার এবং বেশী বেশী নেক আমল করার তওফিক দিন ।

৮| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:৩৩

নতুন নকিব বলেছেন:

বিভ্রম আর বিভ্রান্তিতে আক্রান্তদের অহেতুক, উস্কানিমূলক এবং অযৌক্তিক বিরুদ্ধবাদিতায় চিন্তার কিছু নেই, তারা এসব করে সাময়িক কিছুটা আনন্দ পেতে চান হয়তো। সেটা তারা পেতেই পারেন। এতে অসুবিধার কিছু নেই। আপনার কাজ আপনি চালিয়ে যান ইনশাআল্লাহ। চমৎকার পোস্ট। অভিনন্দন। +++

১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:৫৬

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নতুন নকিব ভাই, আপনার উৎসাহমূলক চমতকার একটি মন্তব্যের জন্য ।

ভাই, আমি মনে করি এবং ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি যে , মানুষে মানুষে মতের অমিল বা মতবিরোধ থাকবেই । আর সেই সব মতবিরোধ আলাপ-আলোচনা, সঠিক ভাবে জানা-বুঝার ফলে সমাধান ও হবে। তবে আমাদের মাঝের কেউ কেউ এসব মতবিরোধ বা মতবাদকে নিজ নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যবহার করে ধর্মকে ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহারের চেষ্টা করেন। সমস্যাটা এখানেই তৈরী হয়।
মহান আল্লাহপাক আমাদের সকলকে সঠিক জিনিষ জানার-বুঝার ও মেনে চলার তওফিক দিন ।

আপনাকে আবারো ধন্যবাদ ও শুভেচছা।

৯| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৩:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার সবচেয়ে বড় গুণ আমি রেগে যান না। অতি কঠোর এবং আক্রমনাত্মক মন্তব্যেও হেসে উত্তর দেন। যেখানে অন্য ব্লগাররা তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে।

১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৫:১৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই, আপনার চমতকার প্রতিমন্তব্যের জন্য এবং :) .....।

এভাবে বইলেন না রাজীব ভাই , ব্যাপোক :(( শরম লাগে।

১০| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:২৬

নতুন বলেছেন: একটা মজার বিষয় বলি। এখন যদি অনেক বিদেশী গুনি মানুষ বহু বিবাহ ভালো না বলেছেন বলে কেউ কোট করে আপনি তাদের সেই কথা মেনে নেবেন না। বলবেন বহু বিবাহ ভালো। কারন রাসুল সা: এর সুন্নত।

বড় নেতাদের অনেক ভালো গুন আছে। আমাদের ভালো জিনিস গুলি অনুসরন করা উচিত। যেটা মন্দ সেট বাদ দিয়ে।

১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৫:৩২

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: অনেক বিদেশী গুনি মানুষ বহু বিবাহ ভালো না বলেছেন বলে কেউ কোট করে আপনি তাদের সেই কথা মেনে নেবেন না। বলবেন বহু বিবাহ ভালো। কারন রাসুল সা: এর সুন্নত।

নতুন ভাই, কি বলব বলেন, একেকটা বিয়ে মানে :P নতুন নতুন মজা । মজাই মজা।আর যেটাতে নিজের মজা ;) বেশী মজা সেটাই মানুষ বেশী বেশী করতে ভালবাসে। অথচ , ৪ বিয়ের জন্য অনেক শর্ত ও পালনীয় বিষয় বাধ্যতামূলক সেদিকে কিন্তু বেশী নজর দিতে চায়না।আবার ,ধর্মের অতি অবশ্য পালনীয় অনেক বিষয়ের ব্যাপারে উদাসীন থাকলেও এ জাতীয় উপ-উপ বিষয়গুলিতে আমাদের সবার অধিক আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়।

নিজের বিবেক-জ্ঞান ব্যবহার করে ভাল গ্রহন আর খারাপ বর্জন - এমনটাই হওয়া উচিত এবং আমাদের সকলের তাই করা উচিত।


১১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৭:১৭

অগ্নিবেশ বলেছেন: ইসলামে বা আল কোরআন বা হাদীসে কোথাও অন্যায় ভাবে মানুষকে হত্যার কথা বলা হয়নি
-- আপনাদের দৃষ্টিতে অন্যায়ের সংজ্ঞা টা কি??? কার্টুন আঁকা? সমালোচনা করা? বিদ্রুপাত্মক
কবিতা লেখা?
এটাতো আধুনিক সমাজে কোনো অন্যায়ের মধ্যেই পড়ে না।

আসমা বিনতে মারওয়া কে কেন খুন করা হল??
https://bn.wikipedia.org/wiki/আসমা_বিনতে_মারওয়া

১৯ শে অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১:১৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ অগ্নিবেশ ভাই,আপনার প্রতিমন্তব্যের জন্য ।

আপনাদের দৃষ্টিতে অন্যায়ের সংজ্ঞা টা কি???

ন্যায়-অন্যায়ের সংজ্ঞা-সীমারেখা সবই ধর্মে বিশদ বলা আছে।

কার্টুন আঁকা? সমালোচনা করা? বিদ্রুপাত্মক কবিতা লেখা? এটাতো আধুনিক সমাজে কোনো অন্যায়ের মধ্যেই পড়ে না।

- এটা কি আপনি সত্যি বলেছেন? তার জন্য শুধু আজকের সবগুলো দৈনিক সংবাদপত্র পড়তে অনুরোধ করব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.