নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছবি -আল জাজিরা
যখন কাউকে প্রশ্ন করা হয় বা কারো প্রসংগে বা সম্পর্কে এ প্রশ্ন উঠে - সে কার ? তখন এটাই বুঝা যায় যে, একই জিনিষ বা মানুষের দাবিদার একের অধিক । আর একই জিনিষের যখন একাধিক দাবিদার বা মালিক থাকে তখন তার যেমন সঠিক পরিচর্যা হয়না ঠিক তেমনি তার অপব্যবহারের বা যথাযথ ব্যবহারের সম্ভাবনা থাকেনা। সবসময় প্রত্যেক দাবীদার বা মালিক যার যার নিজস্ব স্বার্থ হাসিলের জন্য তাকে ব্যবহার বা পরিহার করে থাকে । সেক্ষেত্রে তার নিজস্ব ইচছা-অনিচছা, ভাল-খারাপ ও তার ভবিষ্যত এগুলি বিবেচ্য বিষয় হিসাবে দাবিদার/দখলদারদের মনে কোন রকম রেখাপাত করেনা।আর সেরকমটাই হচছে আফগানদের সাথে গত কয়েকযুগ ধরে। একের পর এক দখলদার আসছে-যাচছে কিন্তু তাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হচছেনা বা তাদেরকে কেউ জিজ্ঞাসা করছেনা তারা কি চায় অথবা কেউ ভাবছেনা কিসে দীর্ঘমেয়াদে তাদের ভাল হবে।
আফগানিস্তানে দখলদারদের ইতিহাস -
আফগানিস্তানে দখলদারদের ইতিহাস বহু বছরের।অনেক আগে আফগানিস্তানের নাম ছিল আরিয়ানা। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে পারস্য সাম্রাজ্য প্রাচীন আরিয়ানা দখল করে। খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০ সালে মহামতি আলেকজান্ডার পারস্যের সম্রাটকে পরাজিত করে অঞ্চলটির পূর্ব সীমান্ত দখল করে নিতে সক্ষম হন। খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩ সালের পর অর্থাৎ আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর অনেক রাজ্য তার এশীয় সাম্রাজ্যের দখল নেওয়ার চেষ্টা করে। এদের মধ্যে সেলুজিত সাম্রাজ্য, বাকত্রিয়া সাম্রাজ্য ও ভারতীয় মৌর্য সাম্রাজ্য উল্লেখযোগ্য। খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীতে মধ্য এশীয় কুশান জাতি আরিয়ানা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়।খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে আরব সৈন্যরা আফগানিস্তানে নতুন ধর্ম ইসলাম নিয়ে আসে। পশ্চিমের হেরাত ও সিস্তান প্রদেশ আরবদের নিয়ন্ত্রণে আসে কিন্তু আরব সৈন্য চলে যাওয়া মাত্রই সেখানকার জনগণ তাদের পুরনো ধর্মে ফেরত যায়। দশম শতাব্দীতে বর্তমান উজবেকিস্তানের বুখারা থেকে সামানিদ নামের মুসলিম শাসক বংশ আফগান এলাকায় প্রভাব বিস্তার শুরু করে। তখন থেকে গজনীতে গজনবী রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হয়। ৯৯৮ থেকে ১০৩০ সাল পর্যন্দ গজনীর রাজা মাহমুদ গজনবী আফগান শাসন করেন। রাজা মাহমুদ গজনবীর মৃত্যুর পর গজনীর প্রভাব হ্রাস পেতে থাকে। ১২শ শতাব্দীতে পশ্চিম-মধ্য আফগানিস্তানের ঘুর শহরে ঘুরি রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। তারা আবার ১২১৫ সালে মধ্য এশিয়ার খোয়ারিজমি শাহদের কাছে পরাজিত হন। ১২১৯ সালে চেঙ্গিস খান খোয়ারিজমি শহর হেতাত ও বালখ এবং বামিয়ানে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেন। ১৪শ শতাব্দীর শেষে মধ্য এশীয় সেনাপতি তৈমুর লং আফগানিস্তান জয় করেন ও ভারতে অগ্রসর হন।১৬শ থেকে ১৮শ শতাব্দীর পুরোটাজুড়ে ভারতে অবস্থিত মুঘল সাম্রাজ্য, উজবেক বুখারা খানাত এবং পারস্যের সাফাভি রাজবংশের রাজারা আফগানিস্তানের দখল নিয়ে যুদ্ধ করেন। ১৭০৯ সালে স্থানীয় ঝিলজাই গোত্রের নেতা মিরওয়াইস হুতাক সাফাভিদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন এবং গুরগিন খানকে পরাজিত করে স্বাধীন আফগানিস্তান স্থাপন করেন।মিরওয়াইস ১৭১৫ সালে মারা যান এবং তার ছেলে মাহমুদ ১৭২২ সালে পারস্যের রাজধানী ইস্পাহানে আক্রমণ চালান এবং গুলনাবাদের যুদ্ধের পর নগরীটি দখল করে নিজেকে পারস্যের রাজা হিসেবে ঘোষণা দেন। ১৭৪৭ সালে আহমদ শাহ দুররানি কান্দাহার শহরকে রাজধানী করে এখানে দুররানি সাম্রাজ্যের পত্তন করেন। ১৭৭২ সালে দুররানির মৃত্যু হয়। তার পুত্র তৈমুর শাহ দুররানি তার স্থলাভিষিক্ত হন। এই সময় থেকে আফগানিস্তান প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর কাছে অনেক অঞ্চল হারাতে শুরু করে।
ছবি - বিবিসি
দখলদার হিসাবে রাশিয়ার আগমন ও দীর্ঘ যুদ্ধ
১৯৭৮ সালের এপ্রিলে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ দাউদ খানের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেন বামপন্থি সামরিক কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ তারাকির বাহিনী। এরপর ক্ষমতা ভাগাভাগি হয় মার্ক্স ও লেনিনপন্থি দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে। পিপলস পার্টি ও ব্যানার পার্টি একসঙ্গে পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি নামে আর্বিভূত হয়। ওই সরকারের জনপ্রিয়তা না থাকলেও মাথার ওপর ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের আশীর্বাদ। বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতি ও শহুরে গোষ্ঠীগুলো নতুন সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে, যাদের বলা হয় মুজাহিদিন। তখন সরকারের মধ্যকার পিপলস ও ব্যানারের দুটি অংশের দ্বন্দ্বের মধ্যে ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বরে আফগানিস্তানে ৩০ হাজার সেনা নিয়ে প্রবেশ করে সোভিয়েত ইউনিয়ন। অল্প সময়ে ক্ষমতাচ্যুত হন পিপলস নেতা হাফিজুল্লাহ আমিন। ক্ষমতায় বসেন ব্যানার নেতা বাবরাক কারমাল। কিন্তু তিনিও জনপ্রিয় হতে পারেননি। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে মুজাহিদিনরা। ওই সময় মুজাহিদিনদের প্রতি পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র ও মুসলিম দেশগুলো সহানুভূতিশীল ছিল। ১৯৮৮ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করে এবং সে দেশ থেকে সেনা প্রত্যাহারে সম্মত হয়। ১৯৮৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন।
ছবি - বিবিসি
তালেবানদের উত্থান -
১৯৭৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিক। আফগানিস্তানের কমিউনিস্ট সরকারকে রক্ষা করতে সে দেশে ঢুকে পড়ল সোভিয়েত সেনাবাহিনী। মস্কো তখন বলেছিল, সোভিয়েত সৈন্যরা ছয় মাস থাকবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে দেশে সোভিয়েত সৈন্যরা ছিল দীর্ঘ ১০ বছর এবং আফগানিস্তান পরিণত হয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের ভিয়েতনামে। সে যুদ্ধের মাঝে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে যে স্নায়ুযুদ্ধ চলছিল তার বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠল আফগানিস্তান। আফগানিস্তানের সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ভিতর দিয়েই জন্ম হয়েছিল তালেবান এবং আল-কায়েদার মতো জিহাদি বাহিনীগুলোর।
ছবি - বিবিসি
দখলদার হিসাবে আফগানিস্তানের মাটিতে মার্কিন সেনাদের আগমন এবং দুই দশক অবস্থান -
টুইন টাওয়ার ধ্বংসের জেরে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রবাহিনী আফগানিস্তানে হামলা চালায়। প্রথমে তালেবানরা মার্কিন সৈন্যদের দ্বারা নিশ্চিহ্ন হতে চললেও ২০০৪-২০০৫ সাল থেকে তালেবান নামক সংগঠনটি পুনরায় সংগঠিত হয়। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি মার্কিন সেনা ও আফগান বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে আর এই যুদ্ধের বলি হতে হয়েছে অগণিত সাধারণ মানুষকে। দুই দশক ধরে চলা দীর্ঘ যুদ্ধের পুরোটা সময় মার্কিন সৈন্যদের তালেবান ও আলকায়েদাকে মোকাবিলা করেই থাকতে হয়েছে। গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দিয়েছিলেন ৩১ আগস্টের মধ্যে তথা নাইন-ইলেভেন দিবসের আগেই সৈন্য প্রত্যাহার করে নেবেন। ঘোষণা অনুযায়ী, ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র আফগান যুদ্ধে ২ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করেছে। আফগান যুদ্ধে দেশটি তাদের হাজার হাজার সৈন্য হারিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটি আফগানিস্তান থেকে তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্লেষকদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। আলকায়েদা এবং ওসামা বিন লাদেন যদি মার্কিনিদের উদ্দেশ্য হয়, তবে দুটো লক্ষ্য ১০ বছর আগে অর্জিত হয়েছে। তাহলে এতদিন পর কেন সেনা প্রত্যাহার করল? বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আক্ষরিক অর্থেই আফগানিস্তানে পশ্চিমা পরাশক্তি ঘেঁষা একটি শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চেয়েছিলেন। যা অনেকটা ঔপনিবেশিক শাসনামলের মতো। কিন্তু সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ব্যর্থ হওয়ায় এবং আপাতত সে লক্ষ্য পূরণের ন্যূনতম সম্ভাবনা না থাকায় এক রকম হতাশা থেকেই যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
ছবি - বিবিসি
বর্তমানে আফগান ক্ষমতার মঞ্চে তালেবান -
যুক্তরাষ্ট্র তাদের দীর্ঘতম যুদ্ধের সমাপ্তি টেনে আফগানিস্তান থেকে বিদায় নিয়েছে আর তার সাথে সাথে আফগানে ক্ষমতায় ফিরে এসেছে তালেবানরা। আমেরিকা দেশটিতে তাদের হাজার হাজার সেনা হারিয়েছে। এ ছাড়াও লাখ লাখ আফগান সেনা এবং বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু পর্যবেক্ষণ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগান যুদ্ধে ২ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করেছে। তবে এতে আফগানিস্তানের যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটেনি। বরং পরিস্থিতি ক্রমেই আরও খারাপ হতে চলেছে। দেশটির ক্ষমতার মঞ্চে এখন তালেবান সশস্ত্র গোষ্ঠী। ১৯৮৯ সাল, আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া) সৈন্য প্রত্যাহারের পর যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, সেই যুদ্ধেই তালেবান গোষ্ঠীর উত্থান। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় ছিল তাদের দাপট। সংগঠনটি (তালেবান) আফগানিস্তানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই,নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।তাদের প্রায় ৮৫ হাজার সশস্ত্র যোদ্ধা আছে বলে মনে করা হয়। ২০০১ সালের পর তারা এখন সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থায় আছে।
আফগানিস্তানে বারবার দখলদারদের পতন
আফগানিস্তানের ইতিহাস থেকে জানা যায় দেশটির ইতিহাস, সাধারণ মানুষ আর ঐতিহ্যের কথা। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিকে বারবারই হতে হয়েছে বিদেশি পরাশক্তিগুলোর হামলার শিকার। খ্রিস্টপূর্ব থেকে আজকের আফগানিস্তান, কালে কালে অন্য দেশের সম্রাট ও রাজাদের আক্রমণে জর্জরিত। বহু সাম্রাজ্যের উত্থান-পতন দেখেছে আফগান। প্রাচীনকাল থেকে এসব হামলার বর্ণনা পাওয়া যায় ইতিহাসবিদদের লেখনী এবং প্রত্নতত্ত্ববিদদের নানা পরীক্ষায়। প্রথম অ্যাংলো-আফগান যুদ্ধকে (১৮৩৮-১৮৪২) আফগানিস্তানের দীর্ঘ ইতিহাসের একটি অশ্রুসিক্ত অধ্যায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৮৩৮ সালে ব্রিটিশ গভর্নর জেনারেল জর্জ ইডেন (লর্ড অকল্যান্ড) সিমলা মেনিফেস্টো ঘোষণার মাধ্যমে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। আক্রমণের কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল ভারতীয় ভূখন্ডকে আফগানিস্তান ও তার মিত্রদের থেকে রক্ষা করা প্রয়োজন। কিন্তু ব্রিটিশরা কাবুলের শাসক দোস্ত মোহাম্মদ খান ও তার সহযোগীদের সরাতে চেয়েছিল। আরও পরিষ্কার করে বললে প্রাক্তন আফগান বাদশাহ শাহ শুজা দুররানি এবং দেশটির প্রতিষ্ঠাতা আহমদ শাহ দুররানির নাতিকে কাবুলের শাসনভার দিতে চেয়েছিল ব্রিটিশরা। তবে পরবর্তীকালে সার্বভৌমত্ব রক্ষার হাতিয়ার হিসেবে আফগানরা ব্রিটিশ ও রাশিয়ানদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে। এরপর ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তান আক্রমণ করে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। বলা হয়, আফগানিস্তানের সেই যুদ্ধই সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার জন্য অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছিল। ১৯৮৯ সালে আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করে নেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন। এরপর ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তালেবান সরকারকে দায়ীদের তাদের হাতে তুলে দিতে বলেছিল। কিন্তু সেবারও তালেবান ওই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। এর উপযুক্ত জবাব দিতে আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী। পরের কয়েক মাসে আফগানিস্তানে তালেবানবিরোধী বাহিনী ‘দ্য নর্দান অ্যালায়েন্স’ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বাহিনীর সহায়তায় কাবুলে হামলা চালিয়ে তালেবান সরকারকে উৎখাত করে। যদিও সে যুদ্ধ থেমে থাকেনি, চলেছে দীর্ঘ ২০ বছর। যুদ্ধে মূল টার্গেট তালেবান এবং আলকায়েদা হলেও দীর্ঘ সময়ের যুদ্ধে প্রাণ হারায় লাখ লাখ সাধারণ আফগান নাগরিক।
বর্তমানে আফগানিস্তান নিয়ে দুটো গ্লোবাল উদ্যোগ বা দুই দাবিদারের আর্বিভাব -
ছবি - আলজাজিরা
দৃশ্যপটে ভারত -
গত সপ্তাহে আফগানিস্তান নিয়ে দুটো রাষ্ট্র থেকে মিটিং ডাকা হয়েছে। এর একটির আয়োজক দেশ ভারত - ভারতের এ উদ্যোগে দাওয়াত পেয়েছিল ইরান, কাজাখস্তান, রাশিয়া, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তান। এখানে ভারতসহ সাত রাষ্ট্রকে দেখা গেলেও এতে মূল গুরুত্ব হলো ইরান ও রাশিয়ার। এ দুটোর মধ্যে আবার মূল হলো একমাত্র রাশিয়ার।যদিও ভারত এই সম্মেলনের শিরোনাম দিয়েছে এভাবে : ‘দ্যা দিল্লি রিজিওনাল সিকিউরিটি ডায়লগ অন আফগানিস্তান...’।
এখানে একটি বিষয়ে আলোকপাত করলেই বুঝতে সুবিধা হবে গত আগস্ট থেকে আফগানিস্তান ইস্যুতে ভারতের কেন ঘুম হারাম হয়েছে বা কেন সে মিটিং ডাকছে যেখানে তার থেকে বহুদূরে আফগান ? যে কথা সে কাউকে খুলে বলতে পারছে না,যার জন্য প্রধানত ঘুম হারাম সেই ঘটনাটা হলো কাশ্মির। অর্থাৎ কাশ্মিরের ভবিষ্যৎ বা তা হাত ছাড়া হয়ে যায় কি না! কিন্তু কেন ?
কারণ মোদি-অমিত খুবই ভীত এ জন্য যে, ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট তারা একেবারেই গায়ের জোরে কাশ্মির (পুরোটাই, পাকিস্তান ও চীনের দখলে থাকা অংশসহ) ভারতের স্বাভাবিক অঙ্গ-ভূখণ্ড বলে সংসদে ঘোষণা করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এখানে গায়ের জোরের পিছনে অনেক কারণে। প্রথমত, নেহরু জানতেন কাশ্মির ভারতের নয়, তাই তো জাতিসঙ্ঘের কাছে তিনি চিঠি লিখে মতামত চাইলে জাতিসঙ্ঘ গণভোট আয়োজন করে সিদ্ধান্ত নিতে ফয়সালা দিয়েছিল। কিন্তু ভারত তা কখনোই অনুসরণ করেনি। একেবারেই এমন কোনো পদক্ষেপ না নেয়াটা সরাসরি জাতিসঙ্ঘ অমান্য করা হয় - সম্ভবত এমন অনুমানে তিনি কিছু ‘বিশেষ শর্তে’ (যেমন কাশ্মিরে ভারতের মূল ভূখণ্ডের কেউ জমি কিনতে পারবে না ইত্যাদি) তা ভারতভুক্ত করে নেন। সেটিই হলো ভারতের কনস্টিটিউশনের ৩৭০ ধারা ও ৩৫এ। আর গত ২০১৮ সালেও ভারতের সুপ্রিম কোর্টে বিজেপি সমর্থক এক ব্যক্তি মামলা করেছিলেন ৩৭০ ধারা বাতিল করে দিতে, তা এই যুক্তিতে যে ‘ভারতের মূল কনস্টিটিউশন প্রণয়ন কমিটি’ ৩৭০ ধারা যুক্ত করেছিলেন একে ‘অস্থায়ী’ বলে উল্লেখ করে। কিন্তু পরে এ নিয়ে আর কোনো কাজ না করেই ওই প্রণয়ন কমিটি তার আয়ু শেষ, তাই ‘বিলীন’ (ডিসল্ভ) বলে ঘোষণা করে দেয়া হয়। অতএব কোর্ট এখন ৩৭০ ধারাকে বাতিল ঘোষণা করুক - এই ছিল আর্জি। কিন্তু কোর্ট রায় দেন, এমন করা যাবে না। কারণ এটি করা হলে আইনিভাবে কাশ্মির আর ভারতের অংশ থাকবে না। তাই আদালত ওই রিট আবেদন বাতিল করে রায় দিয়েছিলেন।
এর অর্থ ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট অমিত শাহের ৩৭০ ধারা বাতিল ঘোষণা এক অবৈধ কাজ। কিন্তু যেহেতু কেউ এখনো এ ব্যাপারটা আদালতের দৃষ্টিতে আনেনি, তাই এটি বৈধ হয়ে আছে।আবার সুপ্রিম কোর্টের ওই রিট মামলার রায়ে দেখা যাচ্ছে সেখানে পরোক্ষে ধরে নিয়ে রায় দেয়া হয়েছে যে, কাশ্মির ভারতের মূল ভূখণ্ড নয়। তা হলে অমিত শাহের ৩৭০ ধারা বাতিল ঘোষণা এবং কাশ্মিরকে সরাসরি ভারতের ভুমি বলে দখল করে নেয়া - এটিও অবৈধ। কিন্তু এটিও আদালতের দৃষ্টিতে কেউ আনেনি, তাই এটিও এখন বৈধ হয়ে আছে। এ ছাড়া মোদির জমানায় আদালতের ট্রেন্ড হলো, সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে হয় এমন ইস্যু হলে আদালতের এড়িয়ে চলা বা বছরের পর বছর ফেলে রাখা অথবা কোনো একবারের প্রধান বিচারপতি আন্ডারহ্যান্ড ডিলের অভিযোগ মাথায় নিয়েও সরকারের পক্ষে রায় দিয়ে দেয়ার ঘটনা অনেক।
এসব গায়ের জোরের হঠকারি কাজের কারণে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পরে মোদি-অমিত চমকে ওঠেন। কারণ এর প্রভাবে আজকের কাশ্মিরে (যেখানে মানুষের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই, এটি এখন রাজ্যের মর্যাদায় নেই, আইনি রাজনৈতিক মতামত প্রকাশের কোনোই ব্যবস্থা নেই) যদি সশস্ত্র আন্দোলন আবার তুঙ্গে ওঠে আর যদি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি এসে যায়, তবে সারা ভারতের হিন্দুত্ববাদীরাই ফিরে মোদি-অমিতের চরম বিরুদ্ধে চলে যাবে এই বলে যে, গায়ের জোরে কাশ্মির ভারতের বলে দখল, ৩৭০ ধারা বাতিল’ করা থেকেই ওই বিপর্যয়।
কাজেই মোদি-অমিত এখন চান যেই আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসুক সে যেন প্রতিশ্রুতি দেয় যে কাশ্মিরে স্বাধীনতাকামী কাউকে সহযোগিতা দেবে না। মজার কথা মোদি-অমিতের এই ঘোরতর মাথাব্যথার ইস্যু কাশ্মির, এ নিয়ে বাইডেন প্রশাসন অন্তত কোনো সমর্থনের অবস্থানে নেই; বরং উল্টো কাশ্মিরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইস্যু আমেরিকার অভিযোগের তালিকায় আছে। কিছু কংগ্রেস সদস্যও এ নিয়ে সোচ্চার।
আর এরই পরিণতি হলো ভারত হঠাৎ করে জানাল তারা (আফগানিস্তানকেই দাওয়াত না করে ) নাকি আফগানিস্তান ইস্যুতে বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের নিয়ে এক সভা করতে চায় আর তাই এ সভার আয়োজন অথচ যাকে নিয়ে সমস্যা তাদের বাদ দিয়েই সে সমস্যার সমাধান খুজতে চায়। এতে কি সমাধান মিলবে ? বা ভারত কি মনে করে সে এবার যথাযথ পথে পেয়ে যাবে? এক কথায় উত্তর, মনে হয় একেবারেই না । খোদ ভারতের মিডিয়ারই ভারতের এ উদ্যোগ থেকে কোনো ফলাফল আসা নিয়ে নিরাশায়। যেমন ধরা যাক, এক সহযোগী দৈনিকের নয়াদিল্লি প্রতিনিধি লিখছেন এভাবে , " পাকিস্তান বেঁকে বসেছে। মুখ ফিরিয়েছে চীনও। এখন আফগানিস্তান পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ভারতের উদ্যোগ কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ জেগেছে। তবু ভারত চেষ্টা ছাড়তে রাজি নয়" । অর্থাৎ এ কথা স্পষ্ট যে , ভারতীয় উদ্যোগের ফলে তেমন কোন ভাল ফলাফল আশা করা যায়না।
রাশিয়া কেন গেল ভারতের ডাকা সম্মেলনে ?
তালেবানরা এবার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাশিয়া মূলত খুবই খুশি। তার অনুমান, এবার দিন তার পক্ষে এসেছে আর আমেরিকার বিপক্ষে। কিন্তু একই রাশিয়ারই আবার প্রবল শঙ্কা, কারণ সে আবার সেন্ট্রাল এশিয়ার ছয় রাষ্ট্রকে (এরই চার রাষ্ট্র ভারতের সম্মেলনে যোগ দিয়েছে) প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে রেডিক্যাল ইসলাম বা আইএস টাইপের সশস্ত্র আন্দোলন বা আক্রমণ থেকে এদের সুরক্ষিত রাখবে। আর এ কাজে রাশিয়া তালেবানদের ওপর নির্ভর করতে চায়।এসব কিছু অবশ্যই রাশিয়ার বড় স্বার্থে। কিন্তু এসব ছাড়াও রাশিয়ার আরেক বড় স্বার্থ আছে। যেমন সেটি হলো, রাশিয়ান এস-৪০০ মিসাইলের হবু ক্রেতা ভারত; যার একটির দামই আধা বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া ভারত এটি কিনলে আমেরিকা ক্ষেপে গিয়ে ভারতের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধসহ বহু ধরনের বাধা আরোপ করবে, তা আনুষ্ঠানিকভাবে আগেই জানানো হয়ে আছে। তাই ভারত চেষ্টা করছে কোনো ছাড় পাওয়া যায় কি না। কিন্তু উদাহরণ হলো, একই পথে তুরস্কের বেলায় সে ব্যর্থ হয়ে আছে।
তাই অনুমান করা যায় রাশিয়ার হবু ক্রেতা ও অন্য অনেক সমরাস্ত্রের এরই মধ্যে ভালো ক্রেতা, ভারতের ‘মন রক্ষা’ করতে রাশিয়া সেন্ট্রাল এশিয়ার চার রাষ্ট্র সাথে নিয়ে ভারতের সম্মেলনে যোগ দিয়েছে। তবে সেন্ট্রাল এশিয়ার চার রাষ্ট্র - এদের দিক থেকে দেখলে তাদের নিজস্ব বড় স্বার্থও এটি যে, তারা তালেবানদের ভরসা করে যেকোনো রেডিক্যাল ইসলাম থেকে সুরক্ষিত থাকতে চায়। এটি তাদের ভাইটাল স্বার্থ!
ভারতের ডাকা সভায় ইরান কেন?
ইরান ভারতের সম্মেলনে কেন - এটি এক বিরাট প্রশ্ন। তবে জবাবটা সহজেই এভাবে বলা যায় যে, সম্প্রতি আফগানিস্তানে শিয়া মসজিদে হামলা পরপর সম্ভবত তিনবার বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। আর প্রতিবারই দেড় শতাধিক লোক মারা গেছে। এটি শুধু শিয়া মসজিদে হামলা না; এরা ছিল মূলত আফগানি হাজারা শিয়া।ওরা শিয়া এই সেন্টিমেন্টের ওপর ভর করে এ হামলা হয়েছে। কিন্তু এরা মূলত আফগানিস্তানের তৃতীয় বৃহত্তম এথনিক জনগোষ্ঠী। আমাদের মতো দেশের ভূখণ্ডের সীমানা টেনেছে কলোনিয়াল শক্তিগুলো তাদের নিজের একান্ত স্বার্থে, আর এতে একই এথনিক জনগোষ্ঠী কাটা পড়ে সীমানা দুই দেশে বিভক্ত করার ভিত্তিতে। আমাদের বেলায় একই বাঙালি বা পাঞ্জাবি এথনিক জনগোষ্ঠী যেমন ভারতে থেকে গেছে, যাদের আরেক অংশ বাংলাদেশে বা পাকিস্তানে। তেমনি আফগান হাজারা জনগোষ্ঠী আরেক বড় অংশ আছে ইরানে। ফলে আফগানিস্তানের অংশ হামলায় বিপদগ্রস্ত হলে ইরানের দুটো সমস্যা। ইরানে সেন্টিমেন্ট তৈরি হয় আফগানদেরকে উদ্ধার ও রক্ষার। আবার আরেক বিপদ হলো, ইরান না চাইলেও তারা রিফুজি হিসেবে ইরানে ভিড় করে, করবেই - এটিই স্বাভাবিক। আর ইরান সেই দায় ঠেলে ফেলেও দিতে পারে না।
কাজেই তালেবানরা যদি হাজারারা শিয়া (ওরা কম মুসলমান বা সহি মুসলমান না ইত্যাদি ধরনের যেসব এথনিক ঘৃণা আফগান পশতুন ডমিনেটেড সমাজে প্রচলিত আছে) এই ধর্মীয়-সামাজিক মনোভাবের আলোকে উপেক্ষায় আইএসের হাতে হামলায় মারা যেতে দেয়, নাগরিক নিরাপত্তা না দিতে পারে তা হলে গত আগস্টে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইরান সরকারের যে ইতিবাচক মনোভাব বজায় আছে তা ইরান চাইলেও বজায় রাখতে পারবে না। যেমন আফগানিস্তানের প্রয়োজনীয় তেল সরবরাহ এখনো ইরান করছে; যেখানে এর অর্থ পরিশোধের কী ব্যবস্থা হবে, সেটি এখনো অনিশ্চিত।অতএব ইরানের ভারতের সম্মেলনে যোগ দেয়া বলতে গেলে তালেবানদের ওপর অপ্রকাশ্য অসন্তুষ্টির পরোক্ষ প্রকাশ , যে তুমি আইএস ধরনের রেডিক্যাল ইসলামিস্টদের যদি আফগানিস্তান থেকে দূরে রাখতে না পারো, তবে ইরানের তোমাদের বিপরীতে যাওয়া ছাড়া পথ নেই।
তার মানে কি যারা আইএস ধরনের রেডিক্যাল ইসলামীদের মুক্ত আফগানিস্তান দেখতে চায়,তাদের সম্মেলন ছিল ভারতেরটা? ভাবটা তাই কিন্তু সত্যিকারভাবে নয়। যেমন আইএস ধরনের রেডিক্যাল ইসলামী সশস্ত্র গ্রুপ - এই হলো অ্যালার্জি বা অগ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি যদি ধরি, তা হলে কি বলা যাবে এমন গ্রুপের বিরোধীদের সম্মেলন ছিল ভারতেরটা? এটি বলা যাবে না। কেন?
কারণ, বাইরে থেকে মনে হতে পারে, হিন্দুত্ববাদী ভারত নিশ্চয় এমন রেডিক্যাল ইসলামী সশস্ত্র গ্রুপদের বিরোধিতা পছন্দ করবে। কিন্তু না, করবে না। প্রমাণ কী? ইদানীং পাকিস্তানের ইমরান খান দুটো ইসলামী গ্রুপ নিয়ে পেরেশান - টিটিপি (তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান) আর টিএলপি (তেহরিক-ই-লাব্বায়েক পাকিস্তান)। এমনকি সুপ্রিম কোর্টও প্রধানমন্ত্রী ইমরানকে সমন জারি করে ডেকে অসন্তুষ্ট জানিয়েছেন। এদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী অবস্থান জানিয়েছিলেন। সেনাবাহিনী মনে করে এতে জীবন ও সম্পদ ক্ষয় হবে মাত্রাতিরিক্ত। তাই কৌশল হিসেবে এখনই সামরিক পদক্ষেপ বাতিল করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত ছাপা হয়েছে পাকিস্তানের ‘ডন’ পত্রিকা। ডন - এর খবরে লেখা হয়েছে, সশস্ত্র গ্রুপগুলো ভারতের সাথে সম্পর্কিত। ডন - এর রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে , " পাকিস্তানের মতে আফগানিস্তানভিত্তিক টিটিপির অন্যতম প্রধান সমর্থক ও অর্থদাতা হলো ভারত। পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা চালাতে নিষিদ্ধ গোষ্ঠীটিকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে আসছে দেশটি"। এ ধরনের পাকিস্তান সরকারের পুরো মনোভাব ও পরিকল্পনাই ওই রিপোর্টে আছে। কিন্তু এখানকার জন্য এটুকুই যথেষ্ট যে, মোদি-অমিতের কাশ্মির বাঁচাতে তারা পাকিস্তানের অভ্যন্তর অস্থিতিশীল করতে সশস্ত্র ইসলামী গ্রুপের ওপর নির্ভর করতেও রাজি,অর্থাৎ যে অভিযোগ আগে কেবল বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত অথবা একালে উইঘুর সশস্ত্র গোষ্ঠী (ETIM)-এর কথা উঠছে - এখন তা অনেক দূরে বিস্তৃত। এখানে উল্লেখ্য যে, হাজারাদের উপর আইএসের যে তিন হামলা, তার সর্ব শেষটাতে হামলাকারী হিসেবে ধৃত ব্যক্তি উইঘুর জনগোষ্ঠীর লোক। কেন? কারণ তালেবানরা এই ETIM গ্রুপকে আফগানে আশ্রয় দেবে না বলে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রতিশ্রুতি দেয়ার পর থেকে এই উইঘুর গ্রুপ আইএসে যোগ দিয়েছে, তাই এ ঘটনা।
ছবি - ডন
দৃশ্যপটে পাকিস্তান - পাকিস্তানের আয়োজিত সম্মেলন কী ও কাদের নিয়ে
পাকিস্তানের সম্মেলনের মূল বিষয় হল, আফগানিস্তান কিভাবে গ্লোবাল পলিটিক্যাল সিস্টেমের সাথে খাপ খাইয়ে স্বীকৃতি যোগাড় করে এক সাথে লেনদেন বিনিময় সম্পর্কে যুক্ত হতে পারে তা নিয়ে। এক কথায় জবাব, এ সম্মেলনের যদিও পাকিস্তান হলো হোস্ট কিন্তু এটি আসলে ‘ট্রয়কা প্লাস’-এর বৈঠক। কোন ‘ট্রয়কা প্লাস’? গত ১৫ আগস্ট তালেবানরা ক্ষমতা নেয়ার আগে রাশিয়ার উদ্যোগে রাশিয়া, আমেরিকা ও চীনকে নিয়ে তিন দেশীয় গঠন করা হয়েছিল তালেবান-আফগান ইস্যুতে তাদের কমন অবস্থান প্রকাশের জোট, সেটিই ট্রয়কা বা ত্রিদেশীয় জোট। আসলে নিরাপত্তা পরিষদের আফগান ইস্যুতে পাস হওয়া এক সর্বসম্মত প্রস্তাবকে তাদের গঠন ভিত্তি হিসেবে নিয়ে গঠিত হয়েছিল। পরে পাকিস্তানকে ওই ট্রয়কাতে কোঅপ্ট করে নেয়া হয়; কারণ আফগানিস্তানে কোনো কিছু বাস্তবায়ন করতে গেলে পাকিস্তানের মাধ্যমে তা করা অর্থপূর্ণ ও সহজ। অন্তত দুটো কারণে - এক. পাকিস্তান এই প্রথম ২০ বছরের আমেরিকার স্বার্থের যুদ্ধের দায় থেকে মুক্ত হয়েছে। তার পরও এখনো আফগানিস্তানে অস্থিতিশীলতা ঘটলে তাতে সবচেয়ে বেশি পুরনো দায় ফিরে আসবে, পাকিস্তান অস্থিতিশীলতায় আক্রান্ত হবে ও সামরিক-অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে পাকিস্তানের। তাই পাকিস্তান না চাইলেও স্থিতিশীল এক আফগান দেখার পক্ষে অবস্থান সে নিতে বাধ্য। দুই. আফগানিস্তান কিন্তু এক ল্যান্ডলকড ভূখণ্ড। ফলে পাকিস্তানের সাথে ন্যূনতম একটি তাল মিলিয়ে চলতে আফগানিস্তানও বাধ্য।
অতএব পাকিস্তানকে গ্রুপে নেয়ায় এর নাম হয়ে যায় ট্রয়কা প্লাস । আর ভারতের জন্য এটি ততোধিক বিব্রতকর হয়ে যায়,কারণ এতে ভারতের অভ্যন্তরীণ পাবলিকের কাছে হিন্দুত্ববাদীরা প্রপাগান্ডা চালাত যে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ লালনকারী, তা এখানে উল্টে যায়। পাকিস্তান হলো জাতিসঙ্ঘের প্রস্তাব বাস্তবায়নে সন্ত্রাসবিরোধী সবচেয়ে নির্ভরশীল মিত্র, বিশেষ করে এখনকার সময়ের সবচেয়ে শক্তিধর তিন দেশ ও তাদের জোটের নির্ভরশীল মিত্র। পাকিস্তানের আয়োজিত সম্মেলন যাতে অংশগ্রহণ করেছিল ইরান ও পাকিস্তান ছাড়া অপর চার প্রতিবেশী দেশ হচ্ছে চীন, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তান। দেশটিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করা প্রতিবেশী দেশগুলোর দায়িত্ব এবং সে দায়িত্ব পালনের উপায় নিয়ে আলোচনা করাই ঐ ভার্চুয়াল বৈঠকের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল।
ছবি- বিবিসি
আফগানিস্তান নিয়ে কেন সবার এত মাথাব্যাথা -
এখানে সবচেয়ে কঠিন সত্যটা যা তা হলো আফগানিস্তানে তালেবানরা ফেল করলে তাদের বিকল্প বা অন্য শক্তিটা হলো মূলত আইএস আর তার সাথে ওর সমমনা আরো ছোট ছোট নানা, মূলত ‘পড়শিদেশীয়’ গ্রুপ। সবচেয়ে বড় অস্বস্তিকর বাস্তবতা হলো, যেকোনো পশ্চিমা রাষ্ট্রশক্তি তো বটেই, এমনকি এশিয়া অমুসলিম কেউই বা অন্য ইসলামী ধারা কেউই আইএসের সাথে পাশাপাশি পরস্পরকে স্বীকার করে টিকতে পারবে, তা আইএস তো বটেই কেউই মনে করে না। ফলে তালেবানরা ফেল করার মানে সবার কাছেই পরিষ্কার।তাই তালেবানকেন্দ্রিক এখনকার বাস্তবতা হলো, সংশ্লিষ্ট অন্য দেশের এক কমন আকাঙ্ক্ষা যে, তালেবানরা ফেল করা নয় বা আইএস আসা নয়। তাই তালেবানদের ফেল করা যাবে না। কিন্তু জাতিসঙ্ঘকেন্দ্রিক যে গ্লোবাল রাজনৈতিক ব্যবস্থা আছে, তার ভিত্তিতে তালেবানরা আফগানিস্তান শাসক হিসেবে নিজেদের গড়ে নিক। আর সেই আফগানিস্তান যেন পড়শি যেকোনো দেশে সশস্ত্র হামলাকারী কোনো গোষ্ঠীকে আশ্রয়দানকারী ভূখণ্ড না হয়, এটি নিশ্চিত করতে হবে।
তাহলে তা বাস্তবায়নে তা হলে সমস্যাটা কোথায়?
অনেকে মনে করেন, তালেবানরা ভাবছে যেহেতু আফগানিস্তান যেন রেডিক্যাল ইসলাম বা আইএস টাইপের সশস্ত্র আন্দোলন বা আক্রমণকারীদের আশ্রয় ভূমি না হয় এটি নিশ্চিত করা প্রায় সারা দুনিয়ার নানান রাষ্ট্রস্বার্থে, কাজেই তালেবানরা রাজনৈতিকভাবে কেমন শক্তি (আরেকটি আইএস কি না বা রাজতন্ত্র যেমন এক সালতানাত বা আমিরের দেশ কি না) তা দেখাদেখি ট্রয়কাকে বিবেচনা বন্ধ করতে হবে বা ছাড় দিতে হবে।অথবা আফগানিস্তানেও দুর্ভিক্ষ লেগে যেতে পারে এই ভয়ে ট্রয়কাসহ সবাই তালেবানরা যেমন আছে এভাবেই মেনে নিতে বাধ্য হতে হবে।তাছাড়া ,তালেবানদের নিজের সম্পর্কে এই অতি-মূল্যায়ণ যে তারাই হলো দুনিয়াকে স্থিতিশীল রাখার একমাত্র শক্তি - এটিই তালেবানদের সব কিছুকে স্থবির করে রেখেছে।এখানে একটি বিষয়, ট্রয়কার উদ্যোগ ফেল করলে এর প্রথম শিকার হয়ে যাবে আফগানিস্তানের খাদ্যসঙ্কটে থাকা ৫৫ শতাংশ জনগণ।
দ্বিতীয় যেটা তা হলো, ট্রয়কার তালেবানের সাথে কোনো ছাড় দেয়া যদি ঘটেও সেই তালেবান শক্তির শাসনও ফেল করবেই। ফলাফল হবে আইএস ও সমমনাদের উত্থান।তখন এই আফগানিস্তান হয়ে যাবে হয়তো আফ্রিকার সোমালিয়ার চেয়েও ভয়ঙ্কর কোনো ভূখণ্ড। আর তাই আফগান হলো সারা দুনিয়ার জন্য এক মাথাব্যাথার এবং ক্ষমতা চর্চার জায়গা এবং এ জন্যই কোটি টাকার প্রশ্ন , "আফগানিস্তান তুমি কার " ?
তথ্যসূত্র ও সহযোগীতায় - বিবিসি,আল জাজিরা,এপি, এএফপি,এবং নয়া দিগন্ত (১৩/১১/২১)।
===============================================================
পূববতী পোস্ট -
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ৭ Click This Link
" আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতা দখলের ৩ মাস " - কাবুলে কি ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে তালেবানদের জন্য বা আফগান জাতির ভবিষ্যত গন্তব্য কোথায় ?
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ৬ Click This Link
" বৈদেশিক সাহায্য বন্ধ ও বৈদেশিক রির্জাভ আটক এবং আফিম চাষ বন্ধ " কিভাবে বের হবে তালেবানরা এ অর্থনৈতিক সংকট থেকে ? বিকল্প কোন জিনিষ টেকসই হতে পারে আফগান অর্থনীতির জন্য ?
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ৫ Click This Link
"ঝড়ের গতিতে আফগানিস্তান দখল করা তালেবানদের এক মাসেই ঘরে-বাইরে'র নানা সমস্যায় বেহাল অবস্থা । টিকে থাকতে পারবে কি তালেবানরা বা তাদের টিকে থাকার সম্ভাবনা কতটুকু" ?
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ৪ Click This Link
" আমেরিকার আফগানিস্তান থেকে বিদায় " - এর ফলে বিশ্ব ব্যবস্থা ও পরিস্থিতিতে পরিবর্তনের কোন সম্ভাবনা আছে কি বা বিশ্বে পশ্চিমা আধিপত্যের প্রভাবের পরিবর্তনের সম্ভাবনা কতটুকু?
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ৩ Click This Link
"তালেবানদের আফগান শাসনের রোডম্যাপ (ইশতেহার) প্রকাশ । কোন পথে এবং কতদূর নিয়ে যেতে চাচ্ছে তালেবানরা আফগানিস্তানকে"?
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ২ Click This Link
" তালেবানদের আফগানিস্তান দখল " - কেন এবং কি কারণে আফগান সেনাদের এত দ্রুত পরাজয়?
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ১ Click This Link
" আফগানিস্তানে আমেরিকার ২০ বছর " - আমেরিকা কি নিয়ে এবং আফগানিস্তানকে কোথায় রেখে যাচছে ? এ ব্যাপারে বিশ্ব নেতৃবৃন্দদের প্রতিক্রিয়া কি ?
১৬ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:২৪
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ জুল ভার্ন ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
এক কথায় আপনি আফগানের আসল এবং সঠিক অবস্থা তুলে ধরেছেন।
২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৫৭
বিটপি বলেছেন: আফগানিস্তানকে তাদের মত থাকতে দিলে তারা খুব শান্তিপ্রিয় জাতি হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু কেউই যেন আফগানিস্তানের শান্তিকে ঠিক সহ্য করতে পারেনা। আমেরিকার নিয়ন্ত্রিত সরকারের আমলে আফগানরা খুব শান্তিতে ছিল বলে মনে করা হয়। কিন্তু অশান্তিতে ছিল আমেরিকা - অন্যের শান্তি নিশ্চিন্ত করার দায় কেন তাদের হবে, এই নিয়ে। তাই যা হবার তাই হল। আফগান জনগন যাতে কোন শান্তির নাগাল না পায়, তাই সৈন্য প্রত্যাহার করে এক অর্ধ বর্বর গোষ্ঠীর হাতে নির্বিঘ্নে তুলে দেওয়া হল।
এখন যে কোন ভাবে তালেবানরা যদি সেখানে আবার শান্তি প্রতিষ্ঠিত করতে পারে, তখন আবার শান্তি বিক্রেতাদের মাথাব্যাথা শুরু হয়ে যাবে।
১৬ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:২৯
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ বিটপি, আপনার মন্তব্যের জন্য।
আসলেই ঠিক তাই। তাদেরকে তাদের মত করে থাকতে দিলে হয়ত এখন যে অরাজক অবস্থা তা থেকে কিছুটা হলেও ভাল হত তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই তবে দখলদার এবং অন্যদের স্বার্থের বলি হয়ে তাদের দফারফা হলেও বাকীদের তাতে কিছু যায়-আসে বা হেলদোল নেই।
এখনো যে অবস্থা তাতে করে যদিও কিছুটা আশার আলো দেখা যাচছে তবে কতদিন এ অবস্থা থাকবে বা কিভাবে এ অবস্থার
উত্তরণ হবে তা বলা মুশকিল।
৩| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:০৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: অল্প কথায় আপনি আফগানিস্তানের সব সমস্যা সমুহ সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। আফগানিস্তান আসলে কারও না। ওরা সদা স্বাধীন থাকতে চায়।
১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:২৯
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর ভাই, আপনার সুন্দর ও সরল মন্তব্যের জন্য।
আফগানিস্তানের হওয়া উচিত আফগানদের, অথচ অতিউৎসাহী তথা বাহারওয়ালীদের আগ্রহ ও হস্তক্ষেপের যন্ত্রণায় তারা নিজেরা সে সুযোগ পাচছেনা । পারছেনা নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে। সমস্যার গতিপ্রকৃতিতে একথা বুঝা যায় এ সমস্যা কখনো শেষ হবার নয়।
৪| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:১৪
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: পৃথীবির সবাই শান্তি প্রিয়।কিন্তু ধর্ম তাদেরকে শাম্তিতে থাকতে দেয় না।
১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৩৪
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নুরুলইসলাম০৬০৪ ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
সভ্যতার বিবর্তনের সাথে সাথে পৃথিবীর অশান্তির পরিধিও নানা কারনে বেড়ে যাচছে। এসবের পিছনের অনেক কারনের সাথে ধর্ম ও একটা কারন , এটা ঠিক । তবে ধর্ম থেকেও বড় ও বেশী যে কারন তা হলো মানুষের লোভ বা সীমাহীন চাহিদা।
৫| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:২৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: মোহামমদ কামরুজজামান,
তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট। প্রিয়তে রাখছি।
১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৩৬
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ আহমেদ জী এস ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
- এবং কৃতজ্ঞ পড়া এবং প্রিয়তে রাখার জন্য।
৬| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: আন্তর্জাতিক বিষয়ে আপনার বেশ ভালো জ্ঞান আছে।
১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৫৩
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
কিছু জানার চেষ্টা করা এবং তা আপনাদের সাথে শেয়ার করার প্রচেষ্টা - এতটুকুই ভাই।
তবে এখানে একটা বিষয় অবশ্য ঠিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার পড়ার বিষয়টা এসবের সাথে আগে থেকেই সম্পর্কিত হওয়ায় কিছুটা সহায়তা পাওয়া যায় আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং জটিল বিশ্ব ভূ-রাজনীতি বিষয়ে কিছু লেখার ক্ষেত্রে।
৭| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:৫৭
শেরজা তপন বলেছেন: স্যরি ভ্রাতা- সময়ের অভাবে পুরোটা পড়তে পারলাম না।
তবে যেটুকু পড়েছি- ভাল লেগেছে। প্রশ্নটা আপনার মত আমারও
সময় পেলে আসব ফের।
১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৩৪
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ শেরজা তপন ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনি সময়-সুযোগে যে হাজিরা দেন এবং কিছুটা হলেও পড়ার চেষ্টা করেন ,তাতেই আমি খুশি ।
আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগলো এবং আবারো আসার অঙ্গীকারের জন্য কৃতজ্ঞতা।
৮| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:০১
রানার ব্লগ বলেছেন: বিটপি@ তালেবানিয় শান্তি কয়জন মানবে এটা একটা বিরাট প্রশ্ন।
আফগানিস্থান সবার যার যখন যেমন ভাবে দরকার পরবে সে তখন তেমন ভাবে ব্যাবহার করবে। চিনের মার্কারি দরকার তাই এখন সকল প্রেম তালেবানদের সাথে।
১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:১৫
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রানার ব্লগ ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
আসলে ভাই - যারা একবার ব্যবহৃত হয় বা হয়ে যায় তাদের সবাই সবসময় ব্যবহার করতে চায় , সেক্ষেত্রে তাদের ইচছা-অনিচছার কোন মূল্যই থাকেনা ব্যবহারকারীর কাছে।
আফগানদের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে-হচছে-হতে থাকবে । এ অবস্থান থেকে বের হওয়া আফগানদের জন্য অনেকটা কঠিনই হবে যদিও তালেবানরা ভাল কিছু করে বা করতে পারে,তারপরেও।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৫৭
জুল ভার্ন বলেছেন: আফগানিস্তান হচ্ছে-গনিমতের মাল!