নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

" আত্মসম্মান-নীতি-নৈতিকতা " - যদিও মানুষের জীবনের চলার পথের অন্যতম অনুষংগ তবে কেন তারা হারিয়ে যাচছে সমাজ থেকে ? (মানব জীবন - ১৯ )।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০৬


ছবি - istockphoto.com

আত্মসম্মান-নীতি-নৈতিকতার সংজ্ঞা ও বিস্তৃতি-পরিধি শাশ্বত এবং চিরন্তন - বহুকাল আগে যা ছিল, এখনও তা-ই আছে তবে বদলে গেছে আমাদের জীবনে এদের প্রভাব । মানুষের আত্মসম্মান হলো নিজের বিবেচনাবোধ বা প্রশংসা যা তার নিজের। এদিকে সমাজে সবার জন্য প্রচলিত, গ্রহণযোগ্য এবং অবশ্যই পালনীয় বিষয়গুলো বা নির্দেশনাগুলোই হলো নীতি। আর নৈতিকতা মানুষের আচরণ বা চরিত্রকে নির্ধারণ করে। মানুষের চারিত্রিক আদর্শ বা নৈতিক গুণাবলির সমষ্ঠি হলো নৈতিকতা। নীতি হলো আপনি-আমি নিজের জন্য যা অর্জন করছি তা সঠিক ও ভাল এবং এর সাথে জড়িত সমস্ত লোকের পক্ষে তা উপকৃত হয় । আবার নৈতিকতা যা আমাকে-আপনাকে শেখানো হয়েছে এবং তা (নৈতিকতা) এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে চলে আসছে। একই সমাজে একজনের নৈতিকতা অন্যের থেকে পৃথক হতে পারে তবে নীতি সবার ক্ষেত্রে একই থাকে । মানুষের জীবনের আত্মসম্মান-নীতি-নৈতিকতা - নৈতিক মূল্যবোধ ও সুশৃঙ্খল জীবন গড়ার ক্ষেত্রে পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ দু জায়গায়ই মানুষের মানুষ হয়ে ওঠার ভিত্তি রচিত হয়। যা পরবর্তীতে একজন মানুষকে আত্মসম্মানের সাথে নীতি-নৈতিকতা অনুসরন করে ভাল মানুষ হিসাবে জীবন-যাপন করতে সাহায্য করে।


ছবি - nojoto.com

আত্মসম্মান কি -

আত্মসম্মান হলো নিজের বিবেচনাবোধ বা প্রশংসা যা তার নিজের। বিশদভাবে বলতে গেলে, একজন মানুষের নিজের প্রতি নিজের মর্যাদাবোধ থাকা, নিজেকে ভালবাসা, নিজের যতটুকু ক্ষমতা তার প্রতি আস্থা রাখা এবং একই সাথে নিজের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে ধারনা থাকা ও নিজের সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়ে নিজেকে সম্মান করার অর্থ হল আত্মসম্মান। আত্মসম্মানযুক্ত ব্যক্তি হওয়া সহজ নয়, কারণ মানুষের জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি দ্বারা পরিপূর্ণ যা কিছুটা হলেও আমাদের আত্মবিশ্বাসকে হ্রাস করে দেয়। আত্ম-সম্মান কোনও সহজাত ক্ষমতা নয়,এ এমন একটি জিনিস যা শৈশব থেকেই নানা অক্ষমতার মাঝ থেকেই ধৈর্য্যের সাধনার মাধ্যমে অর্জন করতে হয়

আত্মসম্মান ও বিবেক একটি অপরটির পরিপূরক। আত্মসম্মান বলতে সাধারণ অর্থে আমরা বুঝি নিজের মর্যাদা বা সম্মান বিষয়ে সচেতনতা। একজন আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন ব্যক্তির পক্ষে কখনো এমন কোনো কাজ করা সম্ভব নয় যেটি তার সম্মান বা মর্যাদার জন্য হানিকর। আত্মসম্মানবোধ ব্যক্তিরাই বিবেকবান হয়ে থাকেন এবং তার পক্ষে কখনো অন্যায় ও অসত্যের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ সম্ভব হয়না। তিনি বিবেকে তাড়িত হয়ে সর্বদা ন্যায় ও সত্যের পক্ষে থাকেন।

আপনার-আমার নিজের আত্মসম্মানবোধ আছে কি না তা আপনি উপলব্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার-আমার কাছে এটি না থাকে তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেক এর সাহায্য নেওয়া উচিত। কারন,কম আত্ম-সম্মান হল হতাশা যা জীবনে যে কোন গুরুতর পরিণতি ঘটতে পারে। নিজেকে একটি পরিপূর্ণ সফল জীবন হিসাবে বাঁচতে সক্ষম হওয়ার জন্য ভাল আত্ম-সম্মান বোধ থাকা জরুরী। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমার নিজের জীবনের সর্বাধিক মূল্যবান ব্যক্তি আমি এবং আমি-আপনি যতটা কল্পনা করতে পারি তার চেয়ে বেশি মূল্যবান। আমাদের জীবনে আমরা কতটা মূল্যবান তা অনুধাবন করতে সংকোচ বোধ করা উচিত নয় এবং আমাদের জীবনকে আমাদের পজেটিভলি গ্রহণ করা উচিত। আমি-আপনি কীভাবে বা আমার-আপনার কী কী গুণাবলীর বিষয়টি বিবেচনা করব, নিজের সফলতার জন্য এগুলিই আমাকে-আপনাকে এই সমাজে-দেশে-বিশ্বে অনন্য করে তুলবে।


ছবি - nayadiganta.com

নীতি - নৈতিকতা কি -

সমাজে সবার জন্য প্রচলিত, সবার নিকট গ্রহণযোগ্য এবং অবশ্যই পালনীয় বিষয়গুলো বা নির্দেশনাগুলোই হলো নীতি।
আর নৈতিকতা ? নৈতিকতা মানুষের আচরণ বা চরিত্রকে নির্ধারণ করে। মানুষের চারিত্রিক আদর্শ বা নৈতিক গুণাবলিই হলো নৈতিকতা। অথবা আমরা বলতে পারি জীবনে কিছু নীতি রয়েছে যা পালন করার মাধ্যমে তার নৈতিকতা বা চরিত্র বিকশিত হয়। এক কথায়, মানুষের সুন্দর ও সুষ্ঠু প্রকাশ বা বিকাশটাকেই তার নৈতিকতার বিকাশ বলা যেতে পারে। আমরা প্রায়ই শুনে থাকি মানুষ তাদের নৈতিকতা হারিয়ে ফেলছে। আত্মসম্মানকে নিচে নামিয়ে বা আত্মমর্যাদার কথা বিবেচনা না করে এবং অন্যকে ছোট বা অসম্মান করে ভুল বা যে কোন অসামাজিক কাজকেই অনৈতিক বলা যায়। সততার সঙ্গে যেকোনো কর্ম সম্পাদনই নৈতিক কাজ। আর নীতি হলো যে কাজগুলো গ্রহণযোগ্য, সাবলীল এবং প্রবিধানযোগ্য।


আমাদের সমাজের প্রতিটি মানুষের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। অর্থাৎ একের প্রতি অন্যের সম্মান প্রদর্শনের দায়বদ্ধতা, সহানুভূতির, সহযোগিতা, সহমর্মিতা এসব কিছুই নৈতিক আচরণের বা নৈতিকতার। একজন মানুষের চুরি বা অসামাজিক কাজ করাটা যেমন অনৈতিক তেমনি কাউকে অসম্মান করাটাও অনৈতিক কাজ। যাকে আমরা মূল্যবোধ বলে থাকি। বর্তমানে পৃথিবীজুড়ে আজ যে অস্থিরতা, অশান্তি, সংঘর্ষ, অরাজকতা সবকিছুই নৈতিক এবং আত্মিক প্রশিক্ষণহীনতার কারণেই ঘটছে। তাই সবার আগে প্রয়োজন নিজের মানষিক বিকাশ। যাকে আমরা বলতে পারি "আত্মশুদ্ধি" বা মূল্যবোধ। আর এই নীতি, নৈতিকতা বা মূল্যবোধ এসব কিছুই একটি সমাজ বা রাষ্ট্রের মূল চালিকা শক্তি। এসব কিছুর অভাব রাষ্ট্রের সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক মানদণ্ডকে দূর্বল করে দেয়।


সমাজে চলার পথে তিনিই আদর্শিকভাবে নীতিবান হয়ে থাকেন যার আত্মসম্মানবোধ প্রবল । নীতির বিপরীত শব্দ দুর্নীতি। দুর্নীতি শব্দটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয় এবং নীতি ও নৈতিকতা বিরোধী যেকোনো কাজই দুর্নীতি। সাধারণ্যে একটি ধারণা প্রচলিত আছে যে, অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জন দুর্নীতি এবং এ ধারণাটি যারা পোষণ করেন তাদের অভিমত- নগদ অর্থ ব্যতীত কোনো দ্রব্যসামগ্রীর মাধ্যমে যদি কোনো কার্যসিদ্ধির উদ্দেশ্যে কোনো ব্যক্তিকে কিছু প্রদান করা হয় সেটি দুর্নীতি নয়। কিন্তু এটি একেবারেই ভ্রান্ত ধারণা। একজন ব্যক্তির পক্ষে বৈধ আয়বহির্ভূত নগদ বা দ্রব্যসামগ্রীর মাধ্যমে যেকোনো ধরনের সম্পদের আহরণ দুর্নীতির অন্তর্ভুক্ত এবং এরূপ দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি দেশের প্রচলিত আইনের বিধিবিধান অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধের দায়ে বিচারের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত হয়ে থাকেন।

দুর্নীতি শব্দটি ঘুষের সমরূপ। ঘুষের মাধ্যমে যে নগদ অর্থ বা দ্রব্যসামগ্রীর আদান-প্রদান ঘটে তাতে ঘুষ গ্রহীতা ও দাতা উভয়ে লাভবান হয়। ঘুষ গ্রহীতার ক্ষেত্রে এটি অন্যায় বা অবৈধ প্রাপ্তি অপর দিকে ঘুষদাতা অবৈধ পন্থায় স্বীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য কার্য সম্পাদনকারী ব্যক্তিকে নগদ অর্থ বা সামগ্রী দ্বারা অপরের বঞ্চনায় বশীভূত করে থাকে। এখানে অপর বলতে একজন ব্যক্তি বা ব্যক্তি সমষ্টি বা দেশের সামগ্রিক জনগোষ্ঠীকে বোঝায়।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় - একজন ব্যক্তি নির্ধারিত হারের চেয়ে কম শুল্ক দিয়ে কোনো দ্রব্য ছাড় করালে তাতে রাষ্ট্র বৈধ রাজস্বপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়। আর এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের যে ক্ষতি হয় তা দেশের সামগ্রিক জনগোষ্ঠীর ক্ষতি হিসেবে বিবেচিত। যে কোন চাকরির ক্ষেত্রে লিখিত ও মৌখিক উভয় পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থীদের যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়, কিন্তু এ ধরনের চাকরিতে যদি অবৈধ অর্থের লেনদেনের মাধ্যমে চাকরি দেয়া হয় সে ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়াটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। অনুরূপ যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে যদি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয় সে ক্ষেত্রে মেধাবী ও যোগ্যদের জন্য উচ্চতর শিক্ষার দ্বার উন্মোচিত হয়। আর ভর্তি পরীক্ষায় যেকোনো ধরনের অসাধুতা মেধাবী ও যোগ্যদের জন্য গভীর মর্মবেদনা ও পীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

কেন আত্মসম্মান-নীতি-নৈতিকতা হারিয়ে যাচছে সমাজ থেকে ?

যেকোনো জাতির মেরুদণ্ড হলো শিক্ষা। একজন ব্যক্তি সুশিক্ষায় শিক্ষিত হলে তার পক্ষে আত্মসম্মান নষ্ঠ করে এমন কাজ কিংবা নীতিবিরোধী বা অনৈতিক কাজ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় তবে পৃথিবীর সব দেশ ও সমাজে কমবেশি এর ব্যতিক্রম রয়েছে। একজন ছাত্রছাত্রীকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশের আদর্শ নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে মূল দায়িত্বটি প্রাথমিক-মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যারা শিক্ষকতার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন তারা পালন করে থাকেন। বর্তমানে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় অবধি যে প্রক্রিয়ায় শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া হয় তাতে মেধা ও যোগ্যতার চেয়ে প্রার্থীর রাজনৈতিকসংশ্লিষ্টতা অধিক বিবেচ্য হওয়ায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রকৃত মেধাবী ও যোগ্যরা শিক্ষকতার চাকরি লাভে বঞ্চিত হচ্ছেন। আর এর অবশ্যম্ভাবী পরিণতিতে বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে যাদের প্রবেশ ঘটছে তারা কতটুকু আত্মসম্মান ও বিবেকবোধসম্পন্ন তা অতি সহজেই অনুমেয়।

অর্থের টানা পোড়ন তথা দারিদ্রতা আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরেই ছিল, তবুও সে সময়ও মানুষ আত্মসম্মান-নীতি-নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ হারায়নি। অভাবের মধ্যেও তাদের নীতি-নৈতিকতা অটুট ছিল। সময়ের বিবর্তনের সাথে সাথে আমরা এখন এমন এক সমাজে বসবাস করছি, যেখানে মান-সম্মান, মূল্যবোধ, নীতি-নৈতিকতাকে কেউ আর তোয়াক্কা করছে না। অনেকের মধ্যে এমন একটা প্রবণতা বিরাজমান, অর্থ-বিত্তের মালিক হতে পারলে মান-সম্মান কেনা যাবে। নিজে বাঁচলে বাপের নাম - এমন প্রবণতা এখন সবার মাঝে। মানবিক গুণাবলীর ধার ধারছে না এমন লোকের সংখ্যা বাড়ছে সমাজে- রাষ্ট্রে। অন্যদিকে, সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ ও চিহ্নিত দুষ্টু শ্রেণীর লোক সমাজের সব কিছুর নিয়ন্তা হয়ে বসে আছে। তাদের হাতে অর্থ আছে, আছে পেশীশক্তিও । তারা মনে করে, এই দুই শক্তি থাকলে মান-সম্মান এমনিতেই তাদের পায়ে লুটিয়ে পড়বে। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, এখন সাধারন মানুষ সম্মিলিতভাবেই এদের অবস্থানকে শক্ত করার সুযোগ করে দিচ্ছে। সমাজে যাদের মধ্যে এখনও একটু-আধটু ভালো গুণ রয়েছে, তারা কোনোভাবেই এক হতে পারছেনা। একেক জন যেন আলাদা হয়ে বিচ্ছিন্ন দ্বীপবাসী হয়ে বসবাস করছে। কে মরল, কে মারল, এ নিয়ে এখন আর কেউ টুঁ শব্দ করেনা। অন্যায়ের কিভাবে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করতে হয়, তা জেনেও কেউ আর উদ্যোগী হচছেনা। সমাজের সাধারন মানুষের দুর্বলতার এ সুযোগটাই নিচ্ছে সমাজের মাথা হয়ে থাকা দুষ্টচক্র।


ছবি - jugantor.com

সমাজে আত্মসম্মানবোধ-নীতি- নৈতিকতার অভাবের প্রভাব -

আমাদের আত্মসম্মানবোধ-নীতি- নৈতিকতার অবক্ষয়ের প্রভাব এখন সুদূরপ্রসারি হয়ে উঠেছে সমাজের প্রতিটা ক্ষেত্রে। এর প্রতিক্রিয়া পড়ছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর। এই যে শহর ও গ্রামে, পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠছে, এর মূল কারণই হচ্ছে, অভিভাবক শ্রেণীর উদাসীনতা ও সমাজে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়ার মানষিকতা। তা নাহলে, একটি বাড়ন্ত কিশোর যার পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা, তার মধ্যে কেন খুন, ধর্ষণ, চুরি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ প্রবণতা দেখা দেবে? এর জন্য ঐ কিশোর যতটা না দায়ী তার চেয়ে বেশি দায়ী আমাদের পরিবার ও সমাজের অভিভাবক শ্রেণী।

পরিবার ও সমাজে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় রাতারাতি ঘটে না,দশকের পর দশক ধরে এর পরিবর্তন হয়। মানুষের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে,আধুনিক সভ্যতার দিকে ধাবিত হওয়া। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকের মধ্যেই এখন ন্যায়-অন্যায় ভূলে ভাল থাকার,স্বাবলম্বী ও স্বনির্ভর হওয়ার প্রবল ইচ্ছা শক্তি জেগেছে। তাদের ইচ্ছা শক্তির গতি এতটাই বেড়েছে যে, পারিবারিক ও সামাজিক রীতি-নীতি, মূল্যবোধ এমনকি ধর্মীয় অনুশাসন তাদের এই গতির কাছে হার মানছে, পেছনে পড়ে যাচ্ছে। এসব দিকে কেউ তাকানোরও প্রয়োজন বোধ করছে না। এর ফলে আমাদের দেশে আবহমান কাল ধরে চলে আসা রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থা এবং সামাজিক যে বন্ধন, তা ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে পড়ছে। শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের এই উদাসীনতার সুযোগ নিচ্ছে সমাজের সবচেয়ে সংখ্যালঘু অথচ ভয়ংকর দুর্বৃত্ত শ্রেণী। তারা প্রাধান্য বিস্তার করছে সামজের সর্বত্র এবং একের পর এক অমানবিক ঘটনা ও দুর্নীতির মহোৎসবে জড়িয়ে পড়ছে অবলীলায়।


আমাদের দেশ ও সমাজ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার সমন্বয়ে গঠিত। আমাদের দেশ ও সমাজের নেতৃস্থানীয়দের মধ্যে মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে তাদের অনেকে অন্যায়ের দিকে ধাবিত হলেও এখন আত্মসম্মান ও বিবেক বাধা হিসেবে দাঁড়ায় না। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা অনুসৃত হয় এমন সব দেশে সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পথ হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। পাকিস্তানের শাসনাধীন থাকাবস্থায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরে বিঘ্ন ঘটার কারণেই আমরা-দেশের অপামর জনসাধারন আন্দোলনে নামে যার অনিবার্য পরিণতি আজকের বাংলাদেশ । যেকোনো দেশে রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে আত্মসম্মান ও বিবেকবোধ যত বেশি প্রবল হবে সে দেশে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশায় তত বেশি সৎ, যোগ্য ও ন্যায়নিষ্ঠ মানুষের প্রবেশ ঘটবে। একটি দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে আত্মসম্মান ও বিবেকবোধসম্পন্ন হতে হবে এবং দেশের জনগণের মধ্যেও সে উপলব্ধি জাগ্রত করতে হবে। এর সাথে সাথে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের ওপর রাষ্ট্রক্ষমতা পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে - এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে দেশের জনগণকেই। বর্তমানে আমরা আমাদের নিকট অতীতের দিকে তাকালে সমাজে-দেশে আত্মসম্মান ও বিবেকবোধের ক্রম হ্রাসের যে চিত্রটি দেখতে পাই তাতে সুদূর অতীতের আত্মসম্মান ও বিবেকবোধের পুনরার্বিভাব ঘটবে এমন আশাবাদী হওয়া এখন সুদূর পরাহত বিষয়।


ছবি - istockphoto.com

সর্বজনীনভাবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য কিছু নৈতিক আচরণ রয়েছে। সেটি হলো তার বিবেক-আচরণ-ভুল ও সঠিক নির্ধারণ করার মেধা। প্রকৃতপক্ষে যে যাই বলুক, আমরা যেন মানবিক মূল্যবোধ থেকে সরে না যাই। অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন নৈতিকতার একটি মূলনীতি। আমরা যদি একের প্রতি অপরের সম্মানটুকু রেখে চলি, তাহলে আমার ধারণা এতে নীতি ও নৈতিকতা দুটিই পারস্পরিকভাবে পাশাপাশি বজায় রেখে চলা সম্ভব। জীবনকে সুশৃঙ্খল ও সঠিকপথে পরিচালিত করার লক্ষ্যেই মানুষ মানবিক গুণাবলী ধারণ করেছে। তা নাহলে, মানুষ সেই আদিম যুগেই পড়ে থাকত। আজকের সভ্যযুগে বসবাস করত না।এখনও মানুষের মধ্যে মানবিকতা রয়েছে, প্রয়োজন শুধু তা জাগিয়ে তোলা। পরিবারের অভিভাবক শ্রেণীকে সন্তানদের নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধ সৃষ্টিতে কাজ করতে হবে। সন্তানরা কিভাবে সময় কাটাচ্ছে, কি করছে, সেদিকে গভীর নজর রাখতে হবে। আর রাষ্ট্রের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশায় বেশী বেশি সৎ, যোগ্য ও ন্যায়নিষ্ঠ মানুষের প্রবেশ ঘটাতে হবে এবং তাদের উৎসাহিত করতে হবে , যার দায়িত্ব সরকারের ও দায়িত্বশীলদের। সবশেষে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে কোনোভাবেই বিপথে যেতে দেয়া যাবে না এবং তাদের রক্ষায় আমাদের সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে চেষ্টা করতে হবে। আর না হলে এতে শুধু ব্যক্তি-পরিবারই ধ্বংস হবে না, সমাজ ও রাষ্ট্রও ক্ষতিগ্রস্ত হবে দীর্ঘমেয়াদে।

=========================================================
পূর্ববর্তী পোস্ট -

মানব জীবন - ১৮ - " ধর্মহীনতা " Click This Link
মানব জীবন - ১৭ - " ধৈর্য " Click This Link
মানব জীবন - ১৬ -" সততা " Click This Link
মানব জীবন - ১৫ - " লজ্জা " Click This Link
মানব জীবন - ১৪ - "পর্দা " Click This Link
মানব জীবন - ১৩ - "ধর্ম " Click This Link
মানব জীবন - ১২ " সহ শিক্ষা " Click This Link
মানব জীবন - ১১ " শিক্ষা " - Click This Link
মানব জীবন - ১০ "পরিবার " - Click This Link
মানব জীবন - ৯ "বিবাহের পরে" - Click This Link
মানব জীবন - ৮ " মানব জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য " - Click This Link
মানব জীবন - ৭ " তালাক " - Click This Link
মানব জীবন - ৬ "দেনমোহর - স্ত্রীর হক" - Click This Link
মানব জীবন - ৫ "বিবাহ" - Click This Link
মানব জীবন - ৪ " মাতৃত্ব " - Click This Link
মানব জীবন - ৩ Click This Link
"নারী স্বাধীনতা বনাম নারী(জরায়ু)'র পবিত্রতা "
মানব জীবন - ২ " মাতৃগর্ভ (জরায়ু)"- Click This Link
মানব জীবন - ১ "মানুষের জন্ম প্রক্রিয়ার ইতিকথা"- Click This Link

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৩৪

জুল ভার্ন বলেছেন: গুড পোস্ট!!!

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৪৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ জুল ভার্ন ভাই, আপনার পোস্ট পড়া এবং মন্তব্যের জন্য ।

২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৩৪

শোভন শামস বলেছেন: সুন্দর পোস্ট, শুভেচ্ছা

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৪১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ শোভন শামস ভাই, আপনার পোস্ট পড়া এবং মন্তব্যের জন্য সাথে সাথে আপনাকেও শুভেচছা।

৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পুরো পোষ্টের সার্মম দুই লাইনে বলুন তো।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৫৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই, আপনার পোস্ট পড়া এবং মন্তব্যের জন্য ।

সারমর্ম - যদি এভাবে বলেন , তাহলে কেমন হয় বা আপনার কি মত ?

আমাদের সকলকে পারস্পরিক সম্মান-মূল্যবোধ রক্ষার পাশাপাশি অভিভাবক শ্রেণীকে তাদের সন্তানদেরকে নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধ সৃষ্টিতে কাজ করতে হবে , রাষ্ট্রের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশায় বেশী বেশি সৎ, যোগ্য ও ন্যায়নিষ্ঠ মানুষের প্রবেশ ঘটাতে হবে এবং তাদের উৎসাহিত করতে হবে ।

৪| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৩৭

নতুন বলেছেন: আমাদের সমাজের মানুষ এমন হয়ে যাচ্ছে কারনটা সম্ববত আপনি মানতে চাইবেনা না।

আমাদের সমাজের মানুষের নৈতিকরার শিক্ষা পাচ্ছে ধর্ম থেকে। আর বর্তমানে ধর্মের উপরে মানুষের বিশ্বাস কমে যাচ্ছে। তাই মানুষ ধর্মের নিষেধ কম মান্য করছে।

কারন খারাপ কাজ করলে গুনাহ হবে, দোজখে যাবে এটাতে মানুষের বিশ্বাস কমে যাচ্ছে।

যদি মানুষের নৈতিকতা মানবিক বোধের উপরে ভিক্তি করে হতো তবে এমনটা হতো না। মানুষের ক্ষতি হয় সেটা তারা করতো না।

বিশ্বের অনেক দেশেই মানুষ ধর্মের উপরে বিশ্বাস কম কিন্তু মানবিকতার উপরে বিশ্বাসের কারনে তারা অন্যায় কম করে।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৫৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নতুন ভাই, আপনার পোস্ট পড়া এবং বিশ্লেষণাত্মক মন্তব্যের জন্য ।

আপনি যা বলেছেন তা এক দিক থেকে ঠিক বলেছেন মনে হয় ভাইজান। কারন, বর্তমানে মানুষের জীবনে ধর্মের প্রভাব অনেকটাই কমে গেছে বলে প্রতীয়মান হয়।

তবে , একটা কথা ভাই - মানুষের জীবনে ভাল মানুষ হিসাবে গড়ে উঠার জন্য অনেকগুলো সূচক কাজ করে। আর সেই সব সূচকগুলোর মাঝে ধর্ম একটা সূচক ।

এখন , দেখেন ধর্মের সাথে মোটামুটি মানুষের পরিচয় হয় বা পালন করে প্রায় ১০-১২ বছরের পর থেকে বা তারও কিছুটা আগে । এখন , একটা মানব শিশু জন্মের পর বা বুঝ হওয়ার পর সে একটা পরিবার এবং সমাজে বাস করে যারা ভোগবাদী এবং ধর্মের ব্যাপারে উদাসীন। সেই শিশুটা সেসব দেখে দেখে যখন বড় হয় এবং তখন তার জীবনে ধর্ম যখন কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করবে স্বাভাবিক ভাবেই সে এগুলো মানতে চাইবেনা। কারন, সে তার পরিবার এবং সমাজে ভোগবাদী জীবনই দেখে এসেছ এবং ধর্মকে তখন তার নিকট তার জীবনের বাঁধা হিসাবেই বিবেচনা করবে।

এখন, সে যদি শৈশবেই এমন একটা পরিবেশে-সমাজে বড় হত যেখানে নীতি-নৈতিকতা-ধর্ম-মানবিকতা-ত্যাগ-সমঝোতার চর্চা করা হয় তাহলে সেই শিশুটাও তাতেই অব্যস্ত হয়ে গড়ে উঠত একজন ভাল মানুষ হিসাবে।

আর যে পরিবারে বা সমাজে অর্থনৈতিক সচচলতা বেশী সেই সব সমাজ বা পরিবারে ধর্মের বন্ধন অনেকটাই শিথিল হয়ে পড়ে, এটাও ঠিক।

৫| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:




আপনি বই টই দেখে এমন সব বিষয়ের উক্সপর লেখেন, যেগুলো সম্পর্কে আপনার সঠিক ধারণা নেই; আপনার ভাবনাগুলো অতীতকালের ও ভুল ধারণার উপর প্রতিষ্টিত।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য ।

আপনি হয়ত সঠিক আপনার দৃষ্টিভংগিতে তবে আমি এ ব্যাপারে আপনার সাথে একমত নই ।

যে মানুষ তার অতীত ভূলে যায় সে মানুষই মানুষ নয় ,আর অতীতই মানুষকে ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা দেয়।

৬| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৮

নতুন বলেছেন: একটা কথা ভাই - মানুষের জীবনে ভাল মানুষ হিসাবে গড়ে উঠার জন্য অনেকগুলো সূচক কাজ করে। আর সেই সব সূচকগুলোর মাঝে ধর্ম একটা সূচক ।এখন , দেখেন ধর্মের সাথে মোটামুটি মানুষের পরিচয় হয় বা পালন করে প্রায় ১০-১২ বছরের পর থেকে বা তারও কিছুটা আগে । এখন , একটা মানব শিশু জন্মের পর বা বুঝ হওয়ার পর সে একটা পরিবার এবং সমাজে বাস করে যারা ভোগবাদী এবং ধর্মের ব্যাপারে উদাসীন। সেই শিশুটা সেসব দেখে দেখে যখন বড় হয় এবং তখন তার জীবনে ধর্ম যখন কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করবে স্বাভাবিক ভাবেই সে এগুলো মানতে চাইবেনা। কারন, সে তার পরিবার এবং সমাজে ভোগবাদী জীবনই দেখে এসেছ এবং ধর্মকে তখন তার নিকট তার জীবনের বাঁধা হিসাবেই বিবেচনা করবে।এখন, সে যদি শৈশবেই এমন একটা পরিবেশে-সমাজে বড় হত যেখানে নীতি-নৈতিকতা-ধর্ম-মানবিকতা-ত্যাগ-সমঝোতার চর্চা করা হয় তাহলে সেই শিশুটাও তাতেই অব্যস্ত হয়ে গড়ে উঠত একজন ভাল মানুষ হিসাবে।আর যে পরিবারে বা সমাজে অর্থনৈতিক সচচলতা বেশী সেই সব সমাজ বা পরিবারে ধর্মের বন্ধন অনেকটাই শিথিল হয়ে পড়ে, এটাও ঠিক।

মানুষ এখন কাল্পনিক কাহিনিতে বিশ্বাস কম করে। বাস্তবের অভিঙ্গতার সাথে মিলিয়ে তারা ধর্মের কাহিনির ঘাপলা দেখে ধর্মের উপরে বিশ্বাস কমে যাচ্ছে। তাই এমনটা হচ্ছে।

উন্নত অনেক দেশে ধর্মের থেকে নৈতিকতা না নিয়ে মানবিকতার উপরে তাদের নৈতিকতা গড়ে তুলেছে। তাই তারা মানুষের জন্য কস্টকর, ক্ষতিকর জিনিস করেনা। দূনিতি করেনা, ভ্যাজাল দেয় না।

সেই পযন্ত যেতে আমাদের সমাজের ১০০ বছর লেগে যাবে। :(

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নতুন ভাই, আপনার প্রতি-মন্তব্যের জন্য ।

এ পৃথিবীতে এমন অনেক বিষয় আছে যা বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতার মাঝেও প্রমাণিত হয়নি বা প্রমাণ করা যায়নি।

আর ধর্ম প্রমাণের বিষয় নয় , ধর্ম হলো বিশ্বাসের বিষয়। ধর্মের অনেক কিছুই বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে কোনভাবেই প্রমাণ করা সম্ভব নয় । যেমন - সৃষ্টিকর্তার উপস্থিতি বা আসমানী কিতাবের ।

এসব শুধু বিশ্বাসের বিষয় প্রমাণ খুজতে গেলে হবেনা।

আমরা, আধুনিকতার দাবীদাররা আমাদেরকে মানবিক দাবী করি তবে ধর্মকে বাদ দিয়ে । এখানে একটা কথা মানতে চাইনা বা ভূলে যাই যে , ধর্মের মূল সূরও মানবিকতা।ধর্ম মানুষকে মানবিক হতেই বলে, পশু নয়।

৭| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:১১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মানুষ লোভী হয়ে অমানবিক হচ্ছে যার কারণে হিতাহিত জ্ঞান হারাচ্ছে।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:৪৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নেওয়াজ আলি ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য ।

বর্তমানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকের মধ্যেই ন্যায়-অন্যায় ভূলে ভাল থাকার,স্বাবলম্বী ও স্বনির্ভর হওয়ার প্রবল ইচ্ছা শক্তি জেগেছে। তাদের এই ইচ্ছা শক্তির গতি এতটাই বেড়েছে যে, পারিবারিক ও সামাজিক রীতি-নীতি, মূল্যবোধ এমনকি ধর্মীয় অনুশাসন তাদের এই গতির কাছে হার মানছে, পেছনে পড়ে যাচ্ছে।

যার যেভাবে ইচছা চলছে , আর এ চলার একমাত্র ইচছা নিজে ভাল থাকা। আর এই ভাল থাকতে গিয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে আমরা সবাই লোভী ও অমানবিক হয়ে যাচছি।

৮| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের সুন্দর উত্তর দিয়েছেন।
ধন্যবাদ। ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৩৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আপনাকেও আবারো ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই, আপনার প্রতি-মন্তব্যের জন্য ।

আপনিও ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন পরীদের ও তাদের মাকে নিয়ে - সুখী পরিবার হিসাবে।

৯| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪৯

নতুন বলেছেন: এ পৃথিবীতে এমন অনেক বিষয় আছে যা বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতার মাঝেও প্রমাণিত হয়নি বা প্রমাণ করা যায়নি।
আর ধর্ম প্রমাণের বিষয় নয় , ধর্ম হলো বিশ্বাসের বিষয়। ধর্মের অনেক কিছুই বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে কোনভাবেই প্রমাণ করা সম্ভব নয় । যেমন - সৃষ্টিকর্তার উপস্থিতি বা আসমানী কিতাবের ।এসব শুধু বিশ্বাসের বিষয় প্রমাণ খুজতে গেলে হবেনা।


ভাই সময় পাল্টে গেছে। এখন মানুষ জানে সূর্য থেকে পৃথিবিতে আলো আসতে ৪৯৯ সেকেন্ড সময় লাগে।

১৪০০ বছর আগে এই সব কেউই কল্পনা করতো না।

কিন্তু আপনি এখন নিজের ঘরে বসেও আলোর গতির হিসাব করতে পারেন। প্রমান পেতে পারেন।

https://www.smithsonianmag.com/smart-news/theres-easy-and-tasty-way-measure-speed-light-home-180952245/

সময় পাল্টে গেছে এখন মানুষ অনেক জিনিসের প্রমান করতে শিখেছে তাই শুধুই বিশ্বাসের উপরে ভিক্তি করে মানুষ এখন বসে থাকেনা। আগামী দিনে জ্ঞানের অগ্রগতির সাথে বিশ্বাসের উপরে আরো প্রশ্ন ছুড়ে দেবে মানুষ।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:২৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ নতুন ভাই, আপনার প্রতি-মন্তব্যের জন্য ।

ভাই , আপনি যা বলেছেন তা ঠিক আছে। আগের থেকে সময় পাল্টেছে এবং এখন মানুষ অনেক কিছু জানে যা আগে মানুষ জানতনা । বিজ্ঞানের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ফলে মানুষ অনেক কিছুই প্রমাণও করতে পারছে এবং কোন কিছু গ্রহনের আগে মানুষ যাচাই-বাছাই-প্রমাণ চাচছে।

তবে যত যাই হোক না কেন বা বিজ্ঞানের যতই উন্নয়ন ও অগ্রগতি হোক না কেন , আমি বলতে চাচছি যে, দুইটা জিনিষ কখনো মানুষ প্রমাণ করতে পারবে না এবং তা না দেখে (প্রমাণিত না করেও) বিশ্বাস করতে হবে এবং মানতে হবে।এই দুটি বিষয় হলো ১। সৃষ্টিকর্তার উপস্থিতি
২। ধর্ম গ্রন্থ ।

১০| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:২১

সাসুম বলেছেন: আপনার নৈতিকতার সংজ্ঞায় ভুল আছে। নৈতিকতা ধর্মের কোন বিষয় না, ধর্মের নিজের ই নৈতিকতা নাই ( এই লাইন কে আবার বাই ডিফল্ট ধরে বসবেন না, ধর্মের নৈতিকতা নাই এমন হাজার লাখো উদাহরণ আছে, আবার অনেক ণৈতিকতা আছে এমন উদাহরণ ও ভুড়ি ভুড়ি )

নৈতিকতা একটা সিস্টেম, হেরেডিটি, পরিবেশ এবং পারিপাশ্বকতার উপর নির্ভর করে, সেখানে ধর্মের প্রভাব এতই নগন্য যেটা বলার বাহিরে। সব কিছুতে ধর্ম টেনে আনা আমাদের একটা বড্ড বাজে অভ্যাস।

নৈতিকতা কখনো ধর্ম দিয়ে বজায় রাখা বা এস্টাব্লিশ করা সম্ভব হই নাই, হবেও না, হতে পারেও না। নৈতিকতার যে ভিত্তি তার বেসিক এর সাথেই ধর্মের বড্ড গণ্ডগোল। যেমন- আপনি নৈতিক দিক থেকে দেখলে নারী পুরুষ কে এক ভাবে দেখতে হবে। আপনি নৈতিক দিক থেকে দেখলে কোন মানুষের জীবন নেয়া মেনে নিতে পারবেন না। আপনি নৈতিক দিক থেকে দেখলে কোন শিশুকে দেখে আপনার মনে কাম ভাব জেগে উঠলে সেটা পেডোফাইল গিরী হবে। আপনি নৈতিক দিক থেকে ভাবলে সৌদির মত সহীহ ধার্মিক ও নৈতিক দেশ ইয়েমেনে ১ দশক ধরে সিস্টেমেটিক জেনোসাইড চালাচ্ছে তাও ভূল। নৈতিক দিক থেকে দেখলে, এই যে ১ জন পুরুষ মানুষ অগনিত বউ আর দাস দাসী লাগানো- এসব ভুল বা অপরাধ। বাট ধর্মের দিক থেকে লুপহোল এবং সিস্টেমেটিক উপায়ে এইসব নৈতিক কাজ।

পোস্টের মুল ভাব ঠিক আছে, আমাদের সেলফ রেস্পেক্ট, পলিসি অ্যান্ড নীতি নৈতিকতার গোড়ায় পচন ধরেছে তবে আপনার ধর্মের দেখানো পথে সে নৈতিকতাতর বিজয় আসার কোন উপায় নাই। নৈতিকতা আলাদা জিনিষ।

ধরেন, দুনিয়াতে ফ্রি উইল বলে একটা কথা আছে। এটার সাথে নৈতিকতার বিশাল রিলেশান। কারন ফ্রি উইল বলে আমি কাউকে খুন করে ফেলার চিন্তা করতে পারি, আবার আমার একটা সারাউন্ডিং পরিবেশ ও বিচার করার নৈতিক বোধ জাগরনের কারনে এটা করাকে অন্যায় বলে মনে করি। এখন ফ্রি উইল এর দোহায় দিয়ে যেমন নৈতিকতাকে বাদ দেয়া যায় না তেমনি ধর্মের দোয়াই দিয়ে নৈতিকতাকে ধর্মের আবরণে ফেলে রাখা যায় না।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:১৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাসুম ভাই, অনেক দিন পর ব্লগে আসার (আমি জানি আপনি আসেন তবে লগঅন করেন না ) এবং আপনার মন্তব্যের জন্য । আপনি মন্তব্য করলে বা লাইনে আসতে দেখলে ভাল লাগে কারন ,আপনি লিখিত বিষয়ের উপর সামগ্রিকভাবের একটা মন্তব্য করেন যেটা আমার কাছে জানার-বুঝার একটা চমতকার মাধ্যম হিসাবে বিবেচিত।

আপনি বলেছেন - আপনার নৈতিকতার সংজ্ঞায় ভুল আছে।

- আমি বলতে চেয়েছি -" নৈতিকতা মানুষের আচরণ বা চরিত্রকে নির্ধারণ করে। মানুষের চারিত্রিক আদর্শ বা নৈতিক গুণাবলির সমষ্ঠি হলো নৈতিকতা"। নৈতিকতা মানুষের আচরণ বা চরিত্রকে নির্ধারণ করে। মানুষের চারিত্রিক আদর্শ বা নৈতিক গুণাবলিই হলো নৈতিকতা। অথবা আমরা বলতে পারি জীবনে কিছু নীতি রয়েছে যা পালন করার মাধ্যমে তার নৈতিকতা বা চরিত্র বিকশিত হয়। এক কথায়, " মানুষের সুন্দর ও সুষ্ঠু প্রকাশ বা বিকাশটাকেই তার নৈতিকতার বিকাশ বলা যেতে পারে"। এর কোথাও ধর্মের উল্লেখ নেই বা করিনি। সবটাই সমাজ-মানব ধর্মের উপরই বলা হয়েছে (নির্দিষ্ট করে ধর্ম নয়)।

নৈতিকতা ধর্মের কোন বিষয় না, ধর্মের নিজের ই নৈতিকতা নাই ( এই লাইন কে আবার বাই ডিফল্ট ধরে বসবেন না, ধর্মের নৈতিকতা নাই এমন হাজার লাখো উদাহরণ আছে, আবার অনেক ণৈতিকতা আছে এমন উদাহরণ ও ভুড়ি ভুড়ি )

- মানবিকতা/মানব ধর্মের উপর কোন ধর্ম নেই । আবার ধর্ম মানুষকে মানবিক হতেই বলে , পাশবিক নয়। এখন ধর্মকে বাদ দিয়ে যে নৈতিকতা চর্চা করা যাবেনা তা নয় তবে তা হয়ত অনেকটা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।

নৈতিকতা একটা সিস্টেম, হেরেডিটি, পরিবেশ এবং পারিপাশ্বকতার উপর নির্ভর করে, সেখানে ধর্মের প্রভাব এতই নগন্য যেটা বলার বাহিরে। সব কিছুতে ধর্ম টেনে আনা আমাদের একটা বড্ড বাজে অভ্যাস।

- প্রতিটি মানুষেরই সমাজের প্রতি কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। অর্থাৎ একের প্রতি অন্যের সম্মান প্রদর্শনের দায়বদ্ধতা, সহানুভূতির, সহযোগিতা, সহমর্মিতা এসব কিছুই নৈতিক আচরণের বা নৈতিকতার। একজন মানুষের চুরি বা অসামাজিক কাজ করাটা যেমন অনৈতিক তেমনি কাউকে অসম্মান করাটাও অনৈতিক কাজ। এখানে ধর্মকে বাদ দিলেও সেগুলি অনৈতিকই ।

নৈতিকতা কখনো ধর্ম দিয়ে বজায় রাখা বা এস্টাব্লিশ করা সম্ভব হই নাই, হবেও না, হতে পারেও না। নৈতিকতার যে ভিত্তি তার বেসিক এর সাথেই ধর্মের বড্ড গণ্ডগোল।

- নৈতিকতা চর্চার জন্য মানুষের আত্মসম্মানবোধ জরুরী । আর আত্মসম্মানবোধের জন্য একজন ব্যক্তিকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া জরুরী ।এখন, মানুষ কোথা থেকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবে ? তা কি ধর্ম থেকে নাকি পরিবার/সমাজ থেকে? কার দায় বেশী ধর্মের না পরিবার/সমাজের?

পোস্টের মুল ভাব ঠিক আছে, আমাদের সেলফ রেস্পেক্ট, পলিসি অ্যান্ড নীতি নৈতিকতার গোড়ায় পচন ধরেছে তবে আপনার ধর্মের দেখানো পথে সে নৈতিকতাতর বিজয় আসার কোন উপায় নাই। নৈতিকতা আলাদা জিনিষ।

- ধন্যবাদ । আমি ও এটাই বলতে চাচছি যে , আমাদের সমাজের মানবিক মূল্যবোধ, নীতি -নৈতিকতার গোড়ায় যে পচন ধরেছে তা দূর করার জন্য আমাদের প্রত্যেককে তাদের সন্তানদের নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধ (ধর্ম এখানে মূখ্য বিষয় নয়) সৃষ্টিতে কাজ করতে হবে এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশায় বেশী বেশি সৎ, যোগ্য ও ন্যায়নিষ্ঠ মানুষের প্রবেশ ঘটাতে হবে এবং তাদের উৎসাহিত করতে হবে। এই দায়িত্ব যেমন সরকারের তেমনি আমার-আপনার সকলের।

১১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৩৬

নতুন বলেছেন: তবে যত যাই হোক না কেন বা বিজ্ঞানের যতই উন্নয়ন ও অগ্রগতি হোক না কেন , আমি বলতে চাচছি যে, দুইটা জিনিষ কখনো মানুষ প্রমাণ করতে পারবে না এবং তা না দেখে (প্রমাণিত না করেও) বিশ্বাস করতে হবে এবং মানতে হবে
এই দুটি বিষয় হলো
১। সৃষ্টিকর্তার উপস্থিতি
২। ধর্ম গ্রন্থ ।


বিশ্বাসের প্রভাব কিভাবে মানুষের উপরে কমে যাচ্ছে সেটা আপনি বুঝতে পারছেন। তাই আস্তে আস্তে ধর্মের প্রভাব মানুষের উপরে কমে যাবে সেটাই বাস্তবতা।

সৃস্টিকতার উপরে বিশ্বাস অনেক বড় একটা বিতর্ক সেটার সমাধার খুব দ্রুত হবে না। কিন্তু মানুষ এখন আগের মতন সৃস্টিকতাকে ভয় পায় না সেটা বুঝতে পারছেন নিশ্চয়।

আমাদের সমাজের মানুষের নৈতিকতার ভিক্তি যেহেতু ধর্ম ভিক্তিক তাই ধর্ম দূবল হবার সাথে সাথে তার শিক্ষার উপরে আস্থা কমে যাচ্ছে তাই আমাদের সমাজের মানুষের নৈতিক অধপতন হচ্ছে।

এখন মানবিক বোধ থেকে মানুষকে নৈতিকতার শিক্ষা দিতে হবে তবে যদি আমাদের সমাজের মানুষের নৈতিকতা পক্ত হয়।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:১৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ নতুন ভাই, আপনার প্রতি-মন্তব্যের জন্য ।

মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন তথা অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতার সাথে সাথে ধর্ম এবং সমাজের বাকী নীতি-নৈতিকতার সূচকগুলোর প্রভাবও কমতে থাকে। যে মানুষ যত বেশী শিক্ষিত ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাথে জড়িত হয় তার মাঝে ধর্মের প্রভাব কমে যায় এবং যারা আর্থিক ভাবে ভাল জায়গায় অবস্থান করে তাদের মাঝে ধর্ম-সমাজ-নীতি-নৈতিকতা-শিক্ষার কোনটারই তেমন প্রভাব পড়েনা (তবে এরকম টা বেশীরভাগ তৃতীয় বিশ্বের গরীব দেশগুলোতে ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনকারীদের মাঝে বেশী বেশী পরিলক্ষিত হয়,উন্নত দেশে এর বিপরীত চিত্র দেখা যায় )।

১২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:০৬

সাসুম বলেছেন: ইউজালি এক্টার বেশি মন্তব্য করতে চাইনাই সেইম টপিকে। তবে নতুনের ১১ নাম্বার মন্তব্যে একদম ক্লিয়ার করে বলা আছে, কেন ধর্ম ভিত্তিক নৈতিকতার দিন শেষ হতে চলেছে।

কোন এক সুপ্রিম গড আমাদের তৈরি করেছেন উপর থেকে, আকাশ থেকে- এই যে অলৌকিক বিলিভ এটা হুট করে যাবেনা। বাট জ্ঞান বিজ্ঞান প্রসারের সাথে সাথে এবং মানুষের ও সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথেই এটা ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাবে একটু একটু করে এবং এই একটু একটু করে মিলিয়ে যাওয়ার পথেই বার বার করে পথ হারাবে, বিবর্তিত হবে, ভিন্ন রুপ নিবে। সো, আজকের যে ধর্ম ধর্ম করে আমরা জান প্রাণ দিয়ে দিছি কয়েক হাজার বছর পর তার নাম গন্ধ ও পাওয়া যাওয়ার কথা না। এটা লজিকাল এবং টেস্টেবল একটা কথা। আমার এটা নিয়ে একটা লিখাও আছে, ধর্মের ফিউচার।

যাই হোক, নতুন একদম ক্লিয়ার করে বুঝিয়েছেন, এই যে ধর্মের ভয় ভিত্তিক নৈতিকতা এটা থেকে মানুষ আস্তে আস্তে সরে এসেছে কারন, ধর্ম নামক ভেইগ জিনিষ থেকে মানুষের ভয় এবং বিশ্বাস আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে ( এই কমে যাওয়া আবার শিক্ষিত ও সভ্য সমাজের জন্য, অশিক্ষিত পিছিয়ে পড়া অসভ্য ও গরীব সমাজে ধর্ম আবার বাড়বে ) যার কারনে, এই নৈতিকতার ক্ষয় আর অপরাধ অশিক্ষিত, অসভ্য ও গরীব দেশ গুলোতেই বেশি হবে।
কিন্তু সভ্য দেশ বা শিক্ষিত ও জ্ঞানী সমাজে যেহেতু নৈতিকতা ধর্ম দিয়ে নির্ধারন হয়না, সো সেখানে অন্য ফ্যাক্টর কাজ করবে বেশ ভাল করে। এখানে মানুষের মানবিক বোধ ভিত্তিক নৈতিকতা বড় হয়ে উঠবে। যেমন ধরুন, আজ থেকে শত হাজার বছর আগে ঘোড়া, হাতি , তিমি মাছ এসব খাওয়া যায়েজ ছিল। এখন খেতে পারবেন? মানুষ এসব খাওয়ায়ে এখন এক ধরনের অণৈতিক করে ফেলছে কাস্টম হিসেবে। বাট এখন আমরা প্রাণী খাই গরু বা মুরগি বা মাছ। কয়েক হাজার বছর পর প্রাণ হত্যা করে সেটা খাওয়া ও অনৈতিক হয়ে যাবে।

এখন এই সব কাস্টমস আপনি তো ধর্ম দিয়ে যাচাই করতে বা এস্টাব্লিশ করতে পারবেন না। এসব ইন্ডিভিজুয়াল কাস্টম মানব বোধ থেকেই আসবে। সো এখানেই ধর্ম ভিত্তিক নৈতিকতার আলাপ শেষ হবে, বরং আলাপ আসবে মানবতা ভিত্তিক নৈতিকতা।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:১৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ সাসুম ভাই, আপনার প্রতি-মন্তব্যের জন্য ।

ইউজালি এক্টার বেশি মন্তব্য করতে চাইনাই সেইম টপিকে। তবে নতুনের ১১ নাম্বার মন্তব্যে একদম ক্লিয়ার করে বলা আছে, কেন ধর্ম ভিত্তিক নৈতিকতার দিন শেষ হতে চলেছে।

- এটা আপনি ঠিক বলেছেন। মানুষের জীবনে ধর্ম ভিত্তিক নৈতিকতা এখন নেই বললেই চলে।প্রতিযোগীতামূলক ও বাজার অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন তথা অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতার সাথে সাথে ধর্ম এবং সমাজের বাকী নীতি-নৈতিকতার সূচকগুলোর প্রভাবও কমতে থাকে। যে মানুষ যত বেশী শিক্ষিত ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাথে জড়িত হয় তার মাঝে ধর্মের প্রভাব কমে যায় এবং যারা আর্থিক ভাবে ভাল জায়গায় অবস্থান করে তাদের মাঝে ধর্ম-সমাজ-নীতি-নৈতিকতা-শিক্ষার কোনটারই তেমন প্রভাব পড়েনা (তবে এরকম টা বেশীরভাগ তৃতীয় বিশ্বের গরীব দেশগুলোতে ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনকারীদের মাঝে বেশী বেশী পরিলক্ষিত হয়,উন্নত দেশে এর বিপরীত চিত্র দেখা যায় )।

( এই কমে যাওয়া আবার শিক্ষিত ও সভ্য সমাজের জন্য, অশিক্ষিত পিছিয়ে পড়া অসভ্য ও গরীব সমাজে ধর্ম আবার বাড়বে )

- একদম ঠিক কথা। গরীব মানুষ বা দুর্বল অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় মানুষ বেশী ধার্মিক হয় যা সভ্য ও উন্নত সমাজে দেখা যায়না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.