নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছবি - meteorologiaenred.com
" ভয়ংকর সুন্দর - ১"(আগ্নেয়গিরি) - লিংক - Click This Link
টর্নেডো হলো এক ধরনের বজ্র সহ ঝড়। যাকে একটি ঘূর্ণায়মান, ফানেল-আকৃতির মেঘ হিসাবে দেখা যায় । যা ঘন্টায় ৩০০ মাইল পর্যন্ত পৌঁছতে পারে এবং বায়ুস্তম্ভের আকারে সৃষ্ট প্রচণ্ড বেগে ঘূর্ণায়মান ঝড়, যা মেঘ (সাধারণত কিউমুলোনিম্বাস, ক্ষেত্রবিশেষে কিউমুলাস) এবং পৃথিবীপৃষ্ঠের সাথে সংযুক্ত থাকে। আবহাওয়া বিজ্ঞানের শব্দকোষ বা Glossary of Meteorology অনুযায়ী, টর্নেডো হল প্রচণ্ডবেগে ঘূর্ণনরত একটি বায়ুস্তম্ভ, যা ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে একটি কিউমুলিফর্ম মেঘ থেকে ঝুলন্ত বা এর নীচে থাকে এবং প্রায়শই (কিন্তু সবসময় নয়) একটি ফানেলাকৃতির মেঘ হিসেবে দৃশ্যমান থাকে। টর্নেডো হল প্রকৃতির সবচেয়ে ধংসাত্মক ঝড়। শক্তিশালী বজ্রঝড় থেকে উৎপন্ন, টর্নেডো কয়েক সেকেন্ডের মাঝেই ধ্বংস করে দিতে পারে তাদের সামনের-আশেপাশের ঘর-বাড়ী,দালান-কোঠা,গাছ-পালা সহ সব কিছু। লিংক - Click This Link
টর্নেডো কিভাবে গঠিত হয়
টর্নেডো বজ্রঝড় থেকে তৈরী হয় এবং প্রায়ই এর সাথে শিলাবৃষ্টি থাকে। টর্নেডো তৈরি হয় অনেকটা কালবৈশাখীর মতই। সমুদ্র থেকে গরম জলীয় বাষ্প ভরা বাতাস সমতলে ঢুকে ক্রমশ উপরের দিকে উঠতে থাকে। এক সময়ে তা ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে চলে আসে। আর তার থেকেই তৈরি হয় উল্লম্ব মেঘ। উল্লম্ব মেঘ উচ্চতায় বাড়তে থাকে এবং এক সময় সেই মেঘ ভেঙে গিয়ে তৈরি হয় কালবৈশাখী।টর্নেডো তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়াটাও প্রায় একই রকম। এ ক্ষেত্রে বায়ুপ্রবাহের জটিলতায় দীর্ঘকায় উল্লম্ব মেঘের ভিতরে ঘূর্ণি তৈরি হয়। সেই ঘূর্ণি একটি সরু ফানেলের আকারে (মনে হয় যেন হাতির শুঁড়) নেমে আসে মাটির কাছাকাছি। আর মাটি ছুঁয়েই সেই দৈত্যাকৃতি ঘূর্ণায়মান ফানেল তার কেন্দ্রের দিকে সব কিছু টেনে নেয়। তার ফলে ওই ঘূর্ণায়মান ফানেল যে এলাকা দিয়ে যায় সেখানেই ধ্বংসলীলার স্বাক্ষর রেখে যায় (কোন মেঘপুঞ্জ শেষ পর্যন্ত টর্নেডোতে রূপান্তরিত হবে, এখনও তা অজানা আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের ) ।লিংক - https://www.meteorologiaenred.com/bn/
শীতের শেষ থেকে বর্ষার শুরু এই সময়টাতেই টর্নেডো হানা দেয় বেশি এবং একেকটি টর্নেডো কয়েক সেকেন্ড থেকে শুরু করে এক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়। তবে অধিকাংশই স্থায়ী হয় মিনিট দশেক। টর্নেডো সাধারণত ঘূর্ণিঝড়ের ন্যায় একই দিকে ঘুরে অর্থাৎ উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে।
ছবি - The royal geography
টর্নেডোর আকৃতি - কি রকম হয় ?
অধিকাংশ টর্নেডো দেখতে একটি সরু ফানেলের মত হয়, ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বর্জ্যের ক্ষুদ্র মেঘ দ্বারা কয়েকশ গজ (কয়েকশ মিটার) বিস্তৃত থাকে। তবে, টর্নেডো বিভিন্ন আকার এবং আকৃতির হতে পারে। ক্ষুদ্র, তুলনামূলকভাবে দুর্বল ভূমিস্তম্ভগুলিকে শুধুমাত্র একটি ছোট ধুলার ঘূর্নি হিসেবে ভূপৃষ্ঠে দেখা যায়। বৃহৎ এক-ঘূর্ণি টর্নেডোগুলি দেখতে অনেকটা ভূপৃষ্ঠে পোঁতা কীলকের (Wedge)মত দেখায়। এজন্য এগুলোকে Wedge বা কীলক টর্নেডো বলে। এই কীলকাকৃতির টর্নেডোগুলো এতই বিস্তৃত হয় যে শুধু ঘন কালো মেঘের স্তুপই দেখা যায়, বিস্তারে ভূপৃষ্ঠ থেকে মেঘের দূরত্বের চাইতেও বেশী বিস্তৃত হয়।
টর্নেডোর প্রকারভেদ -
টর্নেডো নানা প্রকারের হয়ে থাকে -
১। বহু ঘূর্ণি টর্নেডো - বহু ঘূর্ণি টর্নেডো হল এক প্রকার টর্নেডো যাতে দুই বা ততোধিক ঘূর্ণন বায়ুস্তম্ভ একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রের চারপাশে ঘুরতে থাকে। এরকম বহু ঘূর্ণি যে কোন প্রবাহেই সম্ভব হতে পারে, কিন্তু তীব্রতাসম্পন্ন টর্নেডোগুলোতেই সাধারণত বেশি দেখা যায়।
২। উপটর্নেডো - উপটর্নেডো বা স্যাটেলাইট টর্নেডো হল দুর্বল টর্নেডো যা একটি বড় ও শক্তিশালী টর্নেডোর নিকটবর্তী এলাকায় একই মেসোসাইক্লোনে সৃষ্টি হয়। বড় টর্নেডোটিকে ঘিরে এটি আবর্তিত হতে পারে (তাই এই নামকরণ) এবং দুটো মিলে একটি বৃহৎ বহু ঘূর্ণি টর্নেডো হিসেবে দেখা যায়, যদিও উপ-টর্নেডো এবং মূল টর্নেডোর ফানেলদ্বয় ভিন্ন ভিন্ন এবং উপটর্নেডোর ফানেলটি মূল টর্নেডোর ফানেলের চেয়ে অনেক ছোট হয়।
টর্নেডোতে ক্ষয়ক্ষতি এত বেশি হয় কেন?
উল্লম্ব মেঘের ঘূর্ণি ফানেলের আকৃতিতে একেবারে মাটির কাছাকাছি চলে আসে। ওই ফানেলের মধ্যে যা কিছু পড়ে, সব উড়িয়ে নিয়ে যায় ঝড়। সেই ঝড় একটা ট্রেনের কামরাকেও লাইন থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে আছড়ে ফেলতে পারে। একটা বহুতল বাড়িকে ভেঙেচুরে স্রেফ লোহার কাঠামোয় পরিণত করে দিতে পারে অতি শক্তিশালী টর্নেডো। টর্নেডোর পুরো বিপদ তার কাণ্ডে রয়েছে। এর নিজস্ব আকারের উপর নির্ভর করে, এটি নিজের মধ্যে আঁকতে এবং যে কোনও বস্তুকে একটি দুর্দান্ত উচ্চতায় তুলতে সক্ষম। তাদের মধ্যে মানুষও রয়েছে। এটি বায়ুমণ্ডলে দ্রবীভূত হয়ে হ্রাস পায় এবং মাটির উপরে সমস্ত কিছু নীচে পড়ে যায়। ঘূর্ণিপাক যদি বস্তুটিকে নিজের মধ্যে টেনে নিতে না পারে, তবে এটি এটিকে ছিঁড়ে ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, তার পথে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাড়ি সম্ভবত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে এবং এর টুকরোগুলো কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে।
পৃথিবীর কোথায় কোথায় টর্নেডো বেশি হয়?
এন্টার্কটিকা মহাদেশ ছাড়া পৃথিবীর প্রায় সর্বত্রই টর্নেডো দেখা গেলেও সবচেয়ে বেশি টর্নেডো সংঘটিত হয় যুক্তরাষ্ট্রে।এছাড়া দক্ষিণ কানাডা, দক্ষিণ এশিয়া (বিশেষ করে বাংলাদেশ এবং পূর্ব ভারত), দক্ষিণ আমেরিকার পূর্বমধ্যাংশ, আফ্রিকার দক্ষিণাংশ, উত্তরপশ্চিম এবং দক্ষিণপূর্ব ইউরোপ, ইটালি, পশ্চিম এবং দক্ষিণপূর্ব অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে টর্নেডো হতে দেখা যায়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ এবং আমেরিকায় মেক্সিকান খাঁড়ি সংলগ্ন এলাকা ও ওকলাহামায় টর্নেডো বেশি হয়।পৃথিবীর ইতিহাসে সব থেকে শক্তিশালী টর্নেডো হয়েছিল ১৯৮৯ সালের ২৬ এপ্রিল। বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ জেলায়,সেখানে মারা গিয়েছিলেন ১৩০০ মানুষ।
4K Tornado
ছবি - wall.alphacoders.com
টর্নেডোর শক্তির পরিমাপ হয় কী ভাবে?
কোন টর্নেডো কতটা ক্ষতি করল, সেই নিরিখেই তার শক্তি পরিমাপ করা হয়। ফুজিতা স্কেল এবং বর্ধিত ফুজিতা স্কেলের সাহায্যে টর্নেডোর ধ্বংস ক্ষমতা পরিমাপ করা হয়। ১৯৭১ সালে জাপানী-আমেরিকান বিজ্ঞানী টেড ফুজিতা টর্নেডোর ধ্বংস-ক্ষমতা পরিমাপের জন্য ফুজিতা স্কেল উদ্ভাবন করেন। টেক্সাস টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের উইন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ সেন্টার এর উন্নততর সংস্করণ বর্ধিত ফুজিতা স্কেলের প্রস্তাব করে যা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা কর্তৃক ২রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ সালে গৃহীত হয় এবং ১লা ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ সাল থেকে কার্যকর রয়েছে।কোনও টর্নেডোর ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা এফ স্কেলে এক থেকে পাঁচের মধ্যে ধরা হয়। এফ-ফাইভ হল সব থেকে শক্তিশালী টর্নেডো।
পৃথিবীর ইতিহাসে সংঘটিত উল্লেখযোগ্য শক্তিশালী কিছু টর্নেডোর কারনে প্রানহানি -
১। মানিকগঞ্জ ( বাংলাদেশ) - ২৬শে আগস্ট ১৯৮৯ যাতে ১৩০০ জন নিহত হয়েছিল এবং আহত হয়েছিল ১২০০০ জন।
২। মিসৌরি, ইলিনয়, ইন্ডিয়ানা ( মার্কিন যুক্তরাস্ট্র - ১৮ই মার্চ ১৯২৫ যাতে নিহত হয়েছিল ৬৯৫ জন এবং আহত ২০২৭ জন।
৩। মানিকগঞ্জ এবং নবাবগঞ্জ (বাংলাদেশ) - ১৭ই মার্চ ১৯৭৩, যাতে নিহত হয়েছিল ৬৮১ জন মানুষ।
৪। মাগুরা এবং নড়াইল (বাংলাদেশ) - ১১ই মার্চ ১৯৬৪, যাতে নিহত হয়েছিল ৫০০ থেকে ১৪০০ জন মানুষ।
৫।ইভানভো এবং ইয়োরোস্লাভ (রাশিয়া) - ৯ই জুলাই ১৯৮৪, যাতে নিহত হয়েছিল ৪০০ জন
৬। পশ্চিম বঙ্গ (ভারত) - ৯ই মার্চ ১৯৬৩ যাতে নিহত হয়েছিল ৩০০ জন
৭। বরিশাল (বাংলাদেশ) - ২৯শে এপ্রিল, ১৯৭২ যাতে নিহত হয়েছিল ৩০০ জন
মানব জীবনে টর্নেডোর প্রভাব
মানব জীবনে তথা দেশে ও সমাজে টর্নেডোর ফলে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুই ধরনেরই প্রভাব পড়ে তবে তার নেতিবাচক প্রভাবই বেশী দেখা যায় ।
১। টর্নেডোর ইতিবাচক প্রভাব -
** বীজ বিচ্ছুরণ - বীজ ছড়ানো টর্নেডোর একটি ইতিবাচক প্রভাব।সাধারনতঃ টর্নেডো পরিবেশের উপর কোন ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হয় না কিন্তু গবেষণায় দেখা যায় যে তারা বীজ বিচ্ছুরণের জন্য একটি ভালো মাধ্যম কারণ তারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অনেক দূরত্বে বীজ ছড়িয়ে দিতে পারে, যার ফলে একটি এলাকায় উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের জন্য জায়গা তৈরি হয়।
** উদ্ভিদের পুনর্নবীকরণ - প্রায়শই টর্নেডোর ধ্বংসাত্মক প্রভাবকে নেতিবাচক হিসাবে দেখা হয় তবে গাছপালা পুনর্নবীকরণের একটি হাতিয়ার হওয়ার ক্ষমতা তার ইতিবাচক প্রভাবগুলির মধ্যে একটি, ধ্বংসের বাইরে প্রকৃতির নতুনত্ব এবং সতেজতা বৃদ্ধি পাবে।
২। টর্নেডোর নেতিবাচক প্রভাব
১। প্রাণহানি ও খাদ্যের অভাব - টর্নেডোর একটি প্রধান নেতিবাচক প্রভাব হল ব্যাপক প্রাণহানি । টর্নেডো অনেক মৃত্যুর কারণ হতে পারে কারণ এটি একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা যখন মানুষ নিজেকে ও পরিবারকে রক্ষার জন্য কিছুই করতে পারেনা। টর্নেডোর নেতিবাচক প্রভাবগুলির মধ্যে অন্যতম ফসলের খামারের তথা ফসলের ধ্বংস।এর ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয় যার ফলে খাদ্য উৎপাদন এবং বিতরণে ঘাটতি দেখা দেয়। টর্নেডো খাদ্য সংরক্ষনের গুদামগুলিকে ধ্বংস করতে পারে যেখানে খামারের ফসল সংরক্ষণ করা হয় এবং সরবরাহ ব্যবস্থা ও খুচরা দোকানগুলি টর্নেডো দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে যার ফলে খাদ্য সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়।
২। শরণার্থী শিবিরে গৃহহীন ভিকটিমদের স্থানান্তর ও মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব - টর্নেডোর ফলে শত শত লোকের বাড়ি ঘর ধ্বংস হতে পারে যার ফলে তাদের উদ্বাস্তু শিবিরে স্থানান্তরিত করা হয় বা হতে হয়। যারা টর্নেডোর ধ্বংসাত্মক প্রভাবের শিকার হওয়ার পর বেঁচে যায় তারা এ ঘটনার আঘাতমূলক ফ্ল্যাশব্যাক অনুভব করতে পারে এবং অনেকেই তাদের মূল্যবান সম্পদের ক্ষতির কারণে অনুশোচনা এবং হতাশায় ভোগে যা তাদের জীবনের উপর ব্যাপক মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব ফেলে।
৩। বেকারত্ব বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য সুবিধার উপর চাপ - টর্নেডোর কারনে ব্যবসা- প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হওয়ার কারনে এসব বন্ধ হয়ে যায় এবং বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।স্বাস্থ্য সুবিধার উপরও টর্নেডোর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। টর্নেডো তার চলার পথে ধ্বংসের ছোয়া রেখে যায় । যার ফলে তাদের ঘটনা দ্বারা জীবন এবং সম্পত্তি উভয়ই হুমকির সম্মুখীন হয়। টর্নেডোর ফলে ক্ষতিগ্রস্থদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উপর চাপ পড়ে। চিকিৎসা সরবরাহে ঘাটতি হল টর্নেডোর পরবর্তী প্রভাবগুলির মধ্যে একটি, প্রায়শই বাইরের স্বাস্থ্য সংস্থা যেমন WHO, রেড ক্রস এবং এনজিও গুলি হাসপাতালের উপর চাপ কমাতে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় সহায়তা প্রদান করে থাকে।
৪। অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধ ও মূল্যস্ফীতি - টর্নেডো অফিস, দোকান এবং ব্যবসার স্থান ধ্বংস করার সাথে সাথে যে অঞ্চলে ঘটবে সেখানে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করতে পারে। এটি টর্নেডোর প্রভাবগুলির মধ্যে একটি যা উত্পাদন হ্রাসের দিকে নিয়ে যায় যার ফলে দীর্ঘমেয়াদে দেশের মোট দেশীয় পণ্যকে প্রভাবিত করে।টর্নেডোর কারনে পন্য সরবরাহ সীমিত হয়ে পড়ে এবং সীমিত পণ্যের কারনে চাহিদা বৃদ্ধি পায়। চাহিদা বৃদ্ধির সাথে এবং সরবরাহে ঘাটতির ফলে মুদ্রাস্ফীতি তৈরী হয়।
৫। অর্থনৈতিক, পাবলিক অবকাঠামোর ক্ষতি - টর্নেডোর ধ্বংসাত্মক প্রভাবগুলির মধ্যে একটি হল পাবলিক অবকাঠামো যেমন - বৈদ্যুতিক স্টেশন, বিদ্যুতের লাইন, পানি সরবরাহের পাইপ, রাস্তার বাতি, রাস্তা, ব্যবসায়িক অফিস, গুদাম, প্রভিশন স্টোর, কৃষি খামার ইত্যাদির ক্ষতি সাধনের ফলে বিলিয়ন ডলারের আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। ফলে সরকারের পক্ষে জনসেবা এবং জনকল্যাণমূলক কাজ বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
=====================================================================
ছবি - public.wmo.int
ঘূর্ণিঝড়
সমুদ্রের উষ্ণ পানির কারণে বায়ু উত্তপ্ত হয়ে হঠাৎ করে এসব ঝড়ের তৈরি হয়। তখন তুলনামূলক উষ্ণ বাতাস হালকা হয়ে যাওয়ার কারণে ওপরে উঠে যায়, আর ওপরের ঠাণ্ডা বাতাস নীচে নেমে আসে। এর ফলে নীচের বায়ুমণ্ডলের বায়ুর চাপ কমে যায়। তখন আশেপাশের এলাকার বাতাসে তারতম্য তৈরি হয়। সেখানকার বাতাসের চাপ সমান করতে আশেপাশের এলাকা থেকে প্রবল বেগে বাতাস ছুটে আসে। আর এ কারণেই তৈরি হয় ঘূর্ণিঝড়ের।
একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় হল একটি দ্রুত ঘূর্ণায়মান ঝড় সিস্টেম যা নিম্নচাপ কেন্দ্র, একটি বন্ধ নিম্ন-স্তরের বায়ুমণ্ডলীয় সঞ্চালন, শক্তিশালী বাতাস এবং বজ্রঝড়ের একটি সর্পিল বিন্যাস যা ভারী বৃষ্টি এবং ঝড়ের সৃষ্টি করে। ঘূর্ণিঝড় বা ঘূর্ণিবাত্যা হল ক্রান্তীয় অঞ্চলের সমুদ্রে সৃষ্ট বৃষ্টি, বজ্র ও প্রচন্ড ঘূর্ণি বাতাস সংবলিত আবহাওয়ার একটি নিম্ন-চাপ প্রক্রিয়া যা নিরক্ষীয় অঞ্চলে উৎপন্ন তাপকে মেরু অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত করে। এই ধরনের ঝড়ে বাতাস প্রবল বেগে ঘুরতে ঘুরতে ছুটে চলে বলে এর নামকরণ হয়েছে ঘূর্ণিঝড়।ঘূর্ণিঝড়কে সাইক্লোন ও বলা হয়ে থাকে।
ছবি - public.wmo.int
ঘূর্ণিঝড় হওয়ার কারণ কী?
ঘূর্ণিঝড় শব্দের উৎপত্তি হচ্ছে গ্রিক শব্দ Kyklos থেকে। যার অর্থ হল সর্পের বা সাপের কুণ্ডলী বা (Coil of snakes)। ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি হয় গভীর সমুদ্র। এ ঝড় সৃষ্টির উপাদান হল উষ্ণ সামুদ্রিক পানি, বায়ুপ্রবাহ ও সৌরশক্তি। সমুদ্রের উষ্ণ পানির কারণে উত্তপ্ত বাতাস হঠাৎ করে এসব ঝড়ের তৈরি করে। সমুদ্রপৃষ্ঠের কোন স্থানের বায়ু গরম হলে এর ঘনত্ব হ্রাস পায় তখন তুলনামূলক উষ্ণ বাতাস হালকা হয়ে যাওয়ার কারণে ওপরে উঠে যায়। যখন এ বায়ু সমুদ্র পৃষ্ঠের উপর দিয়ে অতিক্রম করে তখন সমুদ্রের বাষ্পীভূত পানি এর সাথে যুক্ত হয় এবং ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহ ঘটে।আর ওপরের ঠাণ্ডা বাতাস নীচে নেমে আসে ফলে নীচের বায়ুমণ্ডলের বায়ুর চাপ কমে যায়। তখন আশেপাশের এলাকার বাতাসে তারতম্য তৈরি হয়।সেখানকার বাতাসের চাপ সমান করতে আশেপাশের এলাকা থেকে প্রবল বেগে বাতাস ছুটে আসে। তৈরি হয় ঘূর্ণিঝড়ের এবং এর প্রভাবে তৈরি হয় প্রবল বাতাস ও স্রোতের । যখন এসব এই বাতাসে ভেসে ঝড়টি ভূমিতে চলে আসে, তখন বন্যা, ভূমিধ্বস বা জলোচ্ছ্বাসের তৈরি করে। নিম্নচাপ যে ঝড়কে জন্ম দেয় তাই হলো ঘূর্ণিঝড়। এক কথায় বলতে গেলে, সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রির বেশী হলেই সেই অঞ্চলে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে সমুদ্রের জল বাষ্পিভূত হয়ে উপরে উঠে যায় এবং সমুদ্র পৃষ্ঠের উপর একটি বায়ুশূন্য স্থানের সৃষ্টি হয়। সেই শূন্যস্থানকে পূরণ করতে পারিপার্শ্বিক শীতল ও ভারী বাতাস সেই অঞ্চলে ছুটে আসে। এই দ্রুত ছুটে আসা ঠান্ডা বাতাস ঘূর্ণিঝড়ের জন্ম দেয়।
ছবি - nationalgeographic.com
গতিবেগ অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়ের পাঁচটি ভাগ রয়েছে
১। ট্রপিক্যাল সাইক্লোন - ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার।
২। সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম - ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার।
৩। ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম - ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১৮ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার।
৪।এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম - ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬৬ থেকে ২২০ কিলোমিটার।
৫। সুপার সাইক্লোন - ঝড়ের গতিবেগ ২২০ কিলোমিটারের অধিক।
ছবি - tvmnews.mt
সাইক্লোন, হ্যারিকেন আর টাইফুনের মধ্যে পার্থক্য কী?
এই সবগুলোই ঝড়। তবে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এগুলোকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। যেমন আটলান্টিক, ক্যারিবিয়ান সাগর, মধ্য ও উত্তরপূর্ব মহাসাগরে এসব ঝড়ের নাম হ্যারিকেন।
উত্তর পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে সেই ঝড়ের নাম টাইফুন।
বঙ্গোপসাগর, আরব সাগরে এসব ঝড়কে ডাকা হয় সাইক্লোন নামে।
ছবি - mainichi.jp
যদি কোন নিম্নচাপ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার গতিবেগ অর্জন করে, তখন সেটি আঞ্চলিক ঝড় বলে মনে করা হয় এবং তখন সেটির নাম দেয়া হয়। কিন্তু সেটি যদি ঘণ্টায় ১১৯ কিলোমিটার (৭৪ মাইল) গতিবেগ অর্জন করে, তখন সেটিকে হ্যারিকেন, টাইফুন বা সাইক্লোন বলে ডাকা হয়।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কয়েকটি বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় -
পৃথিবীতে প্রতিবছর গড়ে ৮০টি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলেও বেশিরভাগই সমুদ্রে মিলিয়ে যায়, লোকালয়ে পৌঁছায় না সবগুলো। তবে যে ঝড়গুলো উপকূল বা স্থলভাগে আঘাত হানে সেগুলো ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ইতিহাস বলছে, সবচেয়ে বিধ্বংসী ঝড় আঘাত হেনেছিল বাংলাদেশে, আর নিয়মিত বিরতিতে প্রতিবার বাংলাদেশে একেকটি দুর্যোগ কেড়ে নিয়েছে/নিচছে অসংখ্য প্রাণ। একইভাবে সমুদ্রতীরবর্তী বহু দেশই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
ছবি - getbengal.com
১। ভোলা সাইক্লোন, বাংলাদেশ (১৯৭০) - পৃথিবীর সবচেয়ে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের নাম "ভোলা সাইক্লোন" যা ১৯৭০ সালের ১৩ই নভেম্বর পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশের) দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানে। সেই ঘূর্ণিঝড়ে ঝড়ে প্রাণ হারায় অন্তত ৫ লাখ মানুষ, যাদের মধ্যে ১ লাখই ছিল জেলে। বেশিরভাগই জলোচ্ছ্বাসে ডুবে মারা যায়। যা এককভাবে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রানঘাতী প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে পঞ্চম অবস্থানে আছে। এই ঝড়ের গতিবেগ ছিলো ১৮৫-২৪০ কিলোমিটার। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ছিলো তৎকালীন সাড়ে ৮ কোটি মার্কিন ডলারের উপরে। লিংক - Click This Link
ছবি - natgeotv.com
২। নার্গিস, মিয়ানমার (২০০৮) - সাম্প্রতিককালে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে একটি হলো নার্গিস। ২০০৮ সালের মে মাসে মিয়ানমারে আঘাত হানে নার্গিস। এর তাণ্ডবে প্রাণ হারায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ। সাড়ে ৪ লাখ ঘরবাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে যায়। লিংক - Click This Link
ছবি - gulfnews.com
৩। ম্যারিয়েন ঘূর্ণিঝড়, বাংলাদেশ (১৯৯১) - ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে এই ঘূর্ণিঝড়। এটির ফলে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়। প্রাণ হারায় প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ। বাস্তুহারা হয়ে পড়ে ১ কোটিরও বেশি মানুষ। লিংক - Click This Link
ছবি - alamy.com
ছবি - thisday.app
৪। দ্য গ্রেট বাকেরগঞ্জ সাইক্লোন, বাংলাদেশ (১৮৭৬) - বরিশালের বাকেরগঞ্জে ১৮৭৬ সালের অক্টোবরে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। সে সময় ব্রিটিশ শাসনামল চলছিল। ভয়াবহ সেই ঝড়ে প্রাণ হারিয়েছিল অন্তত ২ লাখ মানুষ। বাতাসের তীব্রতা ছিল ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার, আর সমুদ্রের পানি বয়ে যাচ্ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ২০ ফুট ওপর দিয়ে। জলোচ্ছ্বাসের কারণে নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে যায়। পরে অনাহার ও দুর্ভিক্ষে মারা যায় অসংখ্য মানুষ। লিংক - Click This Link
ছবি - thatsmags.com
ছবি - sciencephoto.com
৫। নিনা টাইফুন, চীন (১৯৭৫) - চীনে টাইফুন বা ঘূর্ণিঝড়ের ঘটনা প্রায়ই শোনা যায়। তবে তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও অবকাঠামোর কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তেমন হয় না, ফলে সেদেশে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এখন খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তবে ১৯৭৫ সালে দেশটির হেনান প্রদেশে আঘাত হেনেছিল টাইফুন নিনা, যেটির ভয়াবহতায় প্রাণ হারায় ২ লাখ ৩১ হাজার মানুষ। নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ। লিংক - Click This Link
ঘূর্ণিঝড়,সাইক্লোন, হ্যারিকেন ও টাইফুনের প্রভাব
১। ঘরবাড়ী এবং অবকাঠামোর ক্ষতি - প্রবল ঝড়ে ঘরবাড়ী ও নানা অবকাঠামোর ক্ষতি হয় । আবার ঝড়ের পরে ভারী বৃষ্টি, বন্যা ও সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের কারনেও পার্শ্ববর্তী এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
২। ব্যাপক প্রাণহানি ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি - প্রবল ঝড়ের ফলে বাড়ী-ঘর-গাছপালা ভেঙে ও পানির তোড়ে ভেসে গিয়ে প্রচুর প্রাণহানি ঘটে। তাছাড়া উপদ্রুত এলাকায় কলেরা ডায়রিয়ার মতো রোগ মাহমাড়ির আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
৩। বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব - ভূগর্ভস্থ জলাধার ও সরবরাহ লাইনের ক্ষতির কারনে পানি সরবরাহ বাধাগ্রস্থ হয় ফলে উপদ্রুত এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব দেখা দেয়।
৪। ফসলের ক্ষতি ও খাদ্যসরবরাহে সমস্যা - প্রবল ঝড়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয় ও অবকাঠামোগত ক্ষতির কারনে খাদ্যসরবরাহে সমস্যা তৈরী হয়।
৫। যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষতি - প্রবল ঝড়ে রাস্তা-ঘাট, বিদ্যুত ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার টাওয়ারের ক্ষতির ফলে সড়ক-রেল যোগাযোগ সহ উপগ্রহ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
ঘূর্ণিঝড়,সাইক্লোন, হ্যারিকেন ও টাইফুন মোকাবিলায় করনীয়
১। সর্বশেষ আবহাওয়া বিষয়ক সতর্কতা ও পরামর্শের জন্য রেডিও-টিভির তথ্য নিয়মিত জানতে হবে । এ বিষয়ে সরকারী নির্দেশনা অনুসরন করতে হবে এবং সামাজিক সতর্কতামূলক পদ্ধতি মেনে চলতে হবে।
২। ব্যাপক প্রাণহানী এড়াতে শিশু-মহিলা-বৃদ্ধ-অসুস্থ মানুষদের দ্রুত নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিতে হবে।
৩।জরুরী কালীন প্রয়োজনের জন্য কিছু সরঞ্জাম যেমন - রেডিও,ব্যাটারী,টর্চ,হারিকেন,শুকনো খাবার,খাবার পানি, প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রী তৈরী রাখতে হবে।
৪।জরুরী কালীন প্রয়োজনে যোগাযোগ জন্য ফোন নম্বর যেমন পুলিশ,হাসপাতাল,চিকিৎসক,ফায়ার সার্ভিসের নম্বর হাতের কাছে রাখতে হবে।
৫।ঘরের খাদ্য-শস্য নিরাপদ জায়গায় ও প্লাস্টিক ব্যাগে মজুত রাখতে হবে যাতে করে পানিতে ক্ষতি না হয় এবং হাতের কাছে প্লাস্টিক শিট,দড়ি,রাবার টিউব ইতাদি রাখতে হবে যাতে জরূরী প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়।
৬।কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পাবার সাথে সাথে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যেতে হবে। যাওয়ার আগে ঘর-বাড়ীর দরজা-জানালা ভাল করে বন্ধ করতে হবে। যাওয়ার পূর্বে রান্নার চুলা ও টিভি-ফিজের সুইচ সহ বাড়ীর বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করে যেতে হবে।
ঘূর্ণিঝড়,সাইক্লোন, হ্যারিকেন ও টাইফুনে যেসব কাজ করা যাবেনা
১। অকারনে আতকংগ্রস্থ বা কোন ধরনের গুজব ছড়ানো যাবেনা।
২। জলস্রোত বা নদীর কাছাকাছি যাওয়া যাবেনা।
৩। বড় গাছপালা,গাড়ি,বিদ্যুতের খুটির নীচে দাড়ানো যাবেনা।
৪।ঝড়ের পরে বৈদ্যুতিক শক থেকে বাঁচার জন্য পড়ে যাওয়া বিদ্যুতের খুটি-লাইন,ক্ষতিগ্রস্থ সেতু,বাড়ী,গাছপালার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
সবশেষে, যদিও এসব কিছুই প্রাকৃতিক শক্তি তথা দৈব দূর্বিপাক এবং বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতার পরেও এদের থেকে রক্ষার সুযোগ মানুষের খুবই সীমিত। তবে কিছু কিছু নিয়ম নীতি মেনে চললে কিছুটা হলেও ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানী এড়ানো যায়। আর তাই , প্রাণহানী ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে আমাদের সকলকেই এসব দৈব দূর্বিপাকের সময় সতর্কতা ও ধৈর্য্যের সাথে মোকাবেলা করা উচিত।
===================================================================
তথ্যসূত্র ও সহযোগীতায় -
১। টর্নেডো - https://bn.wikipedia.org/wiki/
২। টর্নেডো কিভাবে গঠিত হয় - https://www.meteorologiaenred.com/bn/
৩। Encyclopædia Britannica। "Tornado: Global occurrence"।
৪।টর্নেডো কি, কেন হয়, কোথায় বেশি হয়, বাঁচার উপায় কি? - http://brahmanbaria24.com/2012-02-11-05-43-
৪।Hurricanes - Click This Link
৫। ইতিহাসের সবচেয়ে বিধ্বংসী আটটি ঝড় - https://www.ittefaq.com.bd/
৬। 1970- The Great Bhola Cyclone - Click This Link
৭। টর্নেডোর ইতিবাচক এবং নেতিবাচক প্রভাব - লিংক - Click This Link
৮। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিকর প্রভাব ও বাঁচার উপায় - লিংক - https://agomonibarta.com/
২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:০৬
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সোনাগাজী ভাই, আপনার ছোট তবে সরস মন্তব্যের জন্য ।
টর্ণেডোর উপকারিতা: পুরাতন ঘর ভেংগে গেলে, মানুষ নতুন ঘর তৈরি করেন।
- হাচা কিন্তু মিছা নয়।
"ধ্বংসের মাঝেই সৃষ্টির বীজ" বোনা থাকে এটা যেমন সত্যি ঠিক তেমনি সত্যি "পুরাতনের পরিবর্তে নতুনের প্রতিস্থাপন" - সমস্যা শুধু একটাই , তার জন্য মূল্য চোকাতে হয়।
২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৪৭
জুল ভার্ন বলেছেন: ভয়ংকর সুন্দর যে কতটা ধ্বংশাত্মক তা ভূক্তভোগীরা ছাড়া কেউ বুঝবে না। তারপরও ভয়ংকর সুন্দর নিয়ে আমার মন্তব্যঃ-
Beauty is truth,
Truth is beauty.
To touch the bare truth and the real beauty is always dangerous!
২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:১৬
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ জুল ভার্ন ভাই, আপনার কঠিন তবে সত্য মন্তব্যের জন্য ।
ভয়ংকর সুন্দর যে কতটা ধ্বংশাত্মক তা ভূক্তভোগীরা ছাড়া কেউ বুঝবে না।
- আসলেই ভাই, এযে কতটা ভয়ংকর সুন্দর ও ধ্বংসাত্মক তা যারা এর কবলে পড়েছে তারাই বলতে পারবে।
তারপরও ভয়ংকর সুন্দর নিয়ে আমার মন্তব্যঃ-
Beauty is truth,
Truth is beauty.
To touch the bare truth and the real beauty is always dangerous!
- ঠিক তাই , সত্য সুন্দর তবে চরম সত্য বেশীরভাগ সময়ই বিপজ্জনক হয়।
৩| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪১
শায়মা বলেছেন: কি ভয়ংকর!
২৫ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৪১
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: শায়মা বনি, ধন্যবাদ , আপনার মন্তব্যের জন্য।
কি ভয়ংকর!
- আসলেই ভয়ংকর ।
কতটা ভয়ংকর সেই জানে যে দেখেছে তাদের সরাসরি।
৪| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। এই বিষয়ে জানার আমার আগ্রহ আছে।
ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
২৬ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৩০
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য ।
ভালো একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। এই বিষয়ে জানার আমার আগ্রহ আছে।
- আমি আসলে ভাই Earthstorm TV Series টা যখন দেখি তখন কিযে অনুভূতি হয়েছিল আর কোথা দিয়ে ৩ ঘন্টা কেটে গিয়েছিল টেরই পাইনি। আর সেই ছবিটা দেখতে দেখতেই মাথায় আসলো তাদের নিয়ে লেখার (আগ্নেয়গিরি, টর্নেডো,হারিকেন - ঘূর্ণিঝড়,বন্যা,জলোচছাস,ভূমিকম্প) ।
ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
- আপনিও ভালো থাকুন রাজিব ভাই । ভাল থাকুন পরিবার পরিজনদের সাথে নিয়ে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:০১
সোনাগাজী বলেছেন:
টর্ণেডোর উপকারিতা: পুরাতন ঘর ভেংগে গেলে, মানুষ নতুন ঘর তৈরি করেন।