নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

সোহানী

আমি অতি বিরক্ত হয়ে আমার অনেক লিখাই ড্রাফটে নিয়েছি কারন সামুতে আমার কিছু ভাবনা শেয়ার করছি, আর এ ভাবনা গুলো আমার অনুমতি ব্যাতিরেকে কপি না করার অনুরোধ করেছিলাম কিন্তু যত্রতত্র আমার লিখার কপি পেস্ট দেখেই যাচ্ছি দিনের পর দিন।

সোহানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালো থাকুক সব নিধুয়ারা

১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:২২



মনটা ক'দিন ধরেই ভীষন বিষন্ন। নিধুয়ার এ স্বেচ্ছামৃত্যু কোনভাবেই নিতে পারছি না আমি। মেয়েটা আমার কেউই না, আট দশজন সাধারন কানাডিয়ান বাঙ্গালীর মাঝে সেও একজন। তারপরও মাত্র ১৯ বছরের এমন প্রতিভার স্বেচ্ছামৃত্যু ভীষনভাবে সকিং।

কানাডার লন্ডন ওন্টারিং কলেজের ২য় বর্ষের নার্সিং কলেজের ছাত্রী নিধুয়া মুক্তাদির কেন এভাবে স্বেচ্ছামৃত্যু বেঁছে নিয়েছে তার উত্তটা সে তাঁর সাথেই নিয়ে গেছে। কিন্তু এক নিধুয়াই নয়, কানাডিয়ান সোসাইটিতে এরকম ঘটনা বেশ ক'টাই ঘটেছে। কেন এমন কিছু ঘটছে কিছুদিন পর পর তার উত্তরটা ভবিষ্যতের জন্য জানা খুব জরুরী। এ উত্তরটা জানতে পারলে হয়তো অনেক নিধুয়াকে আর হারাতে হবে না।

আমি যেহেতু বরাবরেই সামাজিক বিষয় নিয়ে লিখতে পছন্দ করি তাই একান্ত নিজস্ব ভাবনা থেকে এ উত্তর খোঁজার চেস্টা করলাম।

১৯ বছরের নিধুয়ার সাথে বাংলাদেশে বাস করা ১৯ বছরের অন্য কোন নিধুয়ার মাঝে এক আকাশ পার্থক্য। কারন, কানাডার নিধুয়ারা সেকেন্ড জেনারেশান প্রবাসী। আত্বীয় পরিজন ছাড়া সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশে বাবা মায়ের বেচেঁ থাকার লড়াইয়ে সাথে লড়াই শুরু করে নিধুয়ারা। নতুন ভাষা, নতুন প্রতিবেশী, নতুন কালচার, নতুন স্কুল, নতুন টিচার, নতুন বন্ধু-বান্ধব........... এক কথায় সে লড়াইয়ের গল্প একমাত্র কানাডা প্রবাসী নিধুয়ারাই বোঝে।

এ লড়াইয়ের মাঝে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে না নিতেই দুই মেরুর কালচারের নতুন স্ট্রাগল তৈরী হয় এ দ্বিতীয় জেনারেশান নিধুয়ার। একদিকে বাবা-মায়ের শিকড় বাংলাদেশি রক্ষনশীল কালচার অন্যদিকে কানাডিয়ান ওপেন কালচার। আর সেটা পোষাক থেকে শুরু করে খাওয়া, বন্ধুত্ব, ধর্ম, কথা বলার স্টাইল, উৎসব.......... সব কিছুতেই চলে টানাহ্যাচড়া। মাঝখান থেকে বাচ্চাগুলো থাকে দিশেহারা।

এরকম টানাহ্যাচড়ার মাঝে বাবা-মায়ের উপদ্রপ শুরু হয় দেশীয় কায়দায় তাদের বড় করা। পড়াশোনায় খবরদারী, ছেলে বা মেয়ে বন্ধুদের সাথে স্বাধীনভাবে চলায় নজরধারী, কার সাথে মিশবে বা কার সাথে চলবে তার ডিরেকশান দেয়া ............ এরকম হাজারো চাপের মাঝে থাকে এ বাচ্চাগুলো। ঘরের বাইরে কানাডিয়ান কালচার আর ঘরের মাঝে বাংলাদেশী কালচারের চাপে দিশেহারা থাকে এরা। এতো এতো চাপে এরা না পারে কানাডিয়ান বাচ্চা হতে, না পারে বাংলাদেশী বাচ্চা হতে।

বাবা-মায়ের উপদ্রপের সাথে চলে বাঙ্গালি প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব বা আত্বীয়-স্বজনের অদৃশ্য চাপ। নাসিমা ভাবীর মেয়েতো এতো ভালো রেজাল্ট করেছে আর তোর এত খারাপ রেজাল্ট কেন বা শিহাব ভাইয়ের ছেলেতো বিশাল জব পেয়েছে আর তুইতো ঘরে বসে ডিম পাড়ছিস অথবা সীমা ভাবীর মেয়েতো এক কালো ছেলের সাথে লিভটুগেদার করছে, দেখিস তুই আবার এরকম কিছু করে বসিস না যেন ................।

এরকম হাজারো চাপের মাঝে এ বাচ্চাগুলো যখন দেখে সারাদিনের ক্লান্তি শেষে বাসায় ফিরে বাবা-মা ঝগড়া করছে প্রতিটি বিষয় নিয়ে। দেশেই ভালো ছিলাম কেন এখানে আসলাম, ঘরের কাজে কি আমার একার যে হাত লাগানো যাবে না, কাপড় কেন এলোমেলো, জুতা কেন বাইরে, বই কেন গোছানো নেই......................।

নিজেদের কঠিন লড়াইয়ের মাঝে বাবা-মায়ের স্ট্রাগলের চাপটাও এসে পড়ে বাচ্চাদের উপর। এতো চাপে হয়তো বাচ্চাগুলো নিজেদের উপর কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলে মাঝে মাঝে।

এতক্ষন যা বল্লাম তা খাতা কলমে খুব সহজ কিন্তু সেটা যে বাস্তবে কতটা কঠিন তা বলে বোঝানো যাবে না। এখানে নতুন আসা প্রায় প্রতিটা প্রবাসীই এরকম স্ট্রাগলের মাঝে যায়। আমি কোনভাবেই বাবা-মাকে দোষারোপ করছি না কারন যে কঠিন জীবনের মাঝে এসে হাল ধরতে হয় তা একমাত্র ভুক্তভোগীই তা জানে। কিন্তু বাবা-মায়ের সে স্ট্রাগল অনেক সময় বাচ্চারা ঠিকভাবে বুঝতে ব্যার্থ হয় আর গ্যাপটা সেখানেই তৈরী হয়। আর হয়তো সে গ্যাপ থেকেই অভিমান জন্ম নেয় কখনো কখনো।

ভালো থাকুক সব নিধুয়ারা।

শুধু যেন রাখো নিধুয়া, এ পৃথিবীটা অনেক অনেক বড় ও খুব সুন্দর। একটু ঘর থেকে বের হয়ে অবাক করা সুন্দর পৃথিবীটা দেখো, ভালোবেসে কারো হাতটি ধরো, প্রচন্ড শীতের রাতে সেল্টারগুলোতো ঘরহীন মানুষগুলোকে দেখো, শীতেরমাঝ রাতে রাস্তায় বরফ পরিস্কার করা ছেলেটির কষ্ট দেখো, লনের ঘাস পরিস্কার করতে আসা ১৯ বছরের কিশোরটিকে দেখো, মায়ের কোলে বসে ডিজনী মুভি দেখো, বাবার সাথে লুকিয়ে আইসক্রিম খেতে খেতে গল্প করো, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে হঠাৎ কোন ট্রেনে চড়ে দূরে কোথাও হারিয়ে যেয়ে দেখো..... বেচেঁ থাকাটা ভীষন রকমের আনন্দের।


সোহানী
জানুয়ারী ২০২৫

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৩০

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: নিধূয়ার এভাবে চলে যাওয়া উচিত হয় নি। ধর্মীয় অনুশাসন তার মনে না ধরলে সে তার মত জীবন যাপন করতে পারতো। মানুষের জীবনে কিছু জিনিস এড়িয়ে চললেই নিজের জন্য শান্তি। যেমন কিছু কটু কথা শুনে এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে নিজের পছন্দনীয় কাজে ব্যস্ত হলেই পারতো

২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: অত্যন্ত দুঃখজনক।

৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৩৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: কী দুঃখজনক!

৪| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৪৬

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: বেঁচে থাকার ভার সে বইতে পারেনি।

৫| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:১৩

নতুন বলেছেন: কতোটা অসহায় বোধ হলে এই বয়সে কেউ পৃথিবি থেকে চলে যাওর কথা ভাবে।

সন্তানের চলে যাওয়ার মতন কস্ট যেন কোন মা বাবাকে সইতে না হয়। আমি আমার সত্রু্র এমন কস্ট কামনা করবো না কখনো।

আমাদের ডানার বয়স এখন ৯ বছর। এখনো আমার বুকে মাথা রেখে সোফায় দুজন কাটুন দেখি।

সামনের সময়ে ডানার জীবনে পরিবর্তন আসবে, সেটা কেমন হবে জানিনা। তবে আশা করি বড় হলে ওর জীবনের একটা ভরশার স্থান মানুষ হিসেবে বাবা মা কে মনে রাখবে এবং ভালো সুখী জীবন জাপন করবে।

৬| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


আপনোর পোস্টে মেয়েটার সম্পর্কে তেমন কিছু জানা গেল না।
সে আসলেই কি কারণে আত্নহননের পথে গেল।

৭| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:১৩

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: মর্মান্তিক!

৮| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:১৩

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: মর্মান্তিক!

৯| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:৫২

এ পথের পথিক বলেছেন: জীবনকে এত জটিল করার কি প্রয়োজন, যে জটিলতার ফলাফল আত্মহত্যা । ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চললে জীবন সুন্দর ও সহজ হত ।
আত্মহত্যা কোন সমাধান নয় ।

১০| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:৩৩

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


এইরকম স্ট্রাগলে সুইসাইড রেট কত?

১১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:৩১

বাকপ্রবাস বলেছেন: আত্মহনন খারাপ বিষয়, এড়িয়ে চলতে পারলে ভাল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.