নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বাংলাদেশী

বেলাল রিজভী

বেলাল রিজভী

বেলাল রিজভী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি দেখেছি অনেক বাবা মা তার সন্তানকে ভালো স্কুলে কিংবা কলেজে ভর্তি করাতে কত দৌড়ঝাপ করেন। মন্ত্রী-এমপি, নেতা-পাতিনেতাদের দারস্ত হন।সুজন কোন এমপি মন্ত্রীর সুপারিশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়নি। তিনি তার নিজ মেধা ও যোগ্যতায় ভর্তি হয়েছেন।বলছি সুজন মৃধার কথা। যে রাস্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার।বলছি গুলিতে নিহত এক মেধাবী ছাত্রর কথা।সুজন মৃধা মাদারীপুরের মিঠাপুর এলএন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছে জিপিএ ৫ নিয়ে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগের ভর্তি হয়েছিল। এই পথকুটু পারি দিতে সুজনের কিংবা তার পরিবারকে কতটুকু কাঠখর পোড়াতে হয়েছে তা হয়তো বুঝতে পারবেন ওইসব বাবা মায়েরা যারা তাদের সন্তানকে ভালো কোন স্কুলে ভর্তির জন্য দৌড়ঝাপ করেন তারা।সুজেনের বাবা সামান্য দিনমজুর। কখনও বাদাম বিক্রি করে,কখনও পরের জমিতে কামলা দিয়ে আবার কখনও অটোরিক্সা চালিয়ে সংসার চালাত। সেই আয় থেকেই ছেলের লেখাপড়া চালিয়েছে। সুজন এমন একটি গ্রাম থেকে উঠে এসেছে যেখানে এখন বিদ্যুতের আলো এখনও পৌছেনি।কাদামাটির পথমাড়িয়ে নদী সাতেরে যেতে হত স্কুলে।সুজন মৃধা এসব করেই দেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন।এমন একজন মেধাবী ছাত্র হয়ত সচারচর হয় না।প্রকৃতিই দান করে।তাকে কেন রাস্ট্রীয় সন্ত্রাসের বলি হতে হবে?বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়। সুজন পুলিশের গুলিতেই নিহত হয়েছে।ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত পুলিশের দাবি, তাকে প্রথমে নিষেধ করা হয়, কিন্তু কোনো কথা না শুনে সে ব্যালট নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এবং দু’পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ গুলি করতে বাধ্য হয়। তবে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সরোয়ার হোসেন যুগান্তরকে বলেছেন, ছেলেটি পুলিশের গুলিতে মারা যায়নি। সে কীভাবে মারা গেছে তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। পুলিশ ওই ভোট কেন্দ্রে কোনো গুলি ছোড়েনি। আমার কাছে পুলিশের ব্যবহারের সব গুলির হিসাব রয়েছে। সুজনের চাচা ফারুক মৃধা ও তার পরিবারের অভিযোগ, সুজন ব্যালট ছিনতাই বা ছিনতাইয়ের কোনো চেষ্টা করেনি। দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে ভোট গণনা নিয়ে বিবাদের একপর্যায়ে পুলিশ গুলি ছুড়লে সুজন নিহত হন। সুজনের মা শান্তনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘পুলিশ ওকে কেন গুলি করল। আজ যদি পিটিয়ে আমার ছেলের হাত-পা ভেঙেও দিত, তবুও তো সে আমাকে মা বলে ডাকতে পারত। আমার মানিককে তোমরা এনে দাও, বড় আশা ছিল ও লেখাপড়া করে চাকরি করে এ সংসারের হাল ধরবে।’ বাচ্চু মৃধা বলেন, ভোটের আগেরদিন সুজন গ্রামে আসে। আমার ছেলেটা কারও চোখের দিকে তাকিয়ে কোনোদিন কথা বলেনি। পুলিশ কেন আমার ছেলেকে গুলি করল। তাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল আমাদের। বাড়িতে এলে সুজন বলত, বাবা আর বেশিদিন তোমাদের কষ্ট করতে হবে না। আমি ভালো চাকরি পেয়ে যাব। পুলিশের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারের বক্তব্য সাংঘর্ষিক।পুলিশ সুপার বলছেন পুলিশ গুলি ছূড়েনি।পুলিশের গুলিতে মারা যায়নি। কিন্তু ওই সময় ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত এএসআই এনামুল হক মণ্ডল দ্য রিপোর্টকে বলেছেন, ‘ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়।’কার কথা সত্য মেনে নেব পুলিশ সুপার নাকি দায়িত্বরত এএসআই এনামুলের? এনামুলের কথাই যদি সত্য মেনে নিই।তাহলে পুলিশকে কি ব্যালট পেপার ছিনতাই করার ঘটনায় গুলি করে মানুষ হত্যার অনুমতি দেয়া হয়েছে? মানুষের জীবন এতো সস্তা কেন? পুলিশ সুপারের দেয়া বক্তব্যকে যদি সত্য ধরে নিই তাহলে সুজন কিভাবে মারা গেল।তার হত্যাকারীদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব কার?কেন পুলিশ এখনও হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে পারেনি।? বাংলাদেশ প্রতিদি এর অনলাইন ভার্সনে দেখলাম ‘মাদারীপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সুজন মৃধা নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশসহ ৮ জনকে আসামি করে মামলা করেছে নিহতের পিতা বাচ্চু মৃধা। মাদারীপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ সোমবার মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ডিবির এএসআই এনামুল হক মন্ডলকে। এছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন ডিবি সদস্য মাসুদ রানা, হারুন অর রশিদ, মো. আশিক এবং স্থানীয় ইয়াকুব আলি ফকির, আইয়ুব আলি ফকির, মনি মাতুব্বর, রাসেল মুন্সি। এই খবর থেকে আরো জানা যায়, এঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য আসামি এনামুল হক মন্ডলসহ অন্য আসামিরা বাঁচার জন্য এনামুল নিজে বাদী হয়ে মাদারীপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মাদারীপুর পুলিশ সুপার বলেন, \'একই ঘটনায় একটি মামলা-ই হয়। এ ঘটনায় আগেই একটি মামলা হয়েছে তাই মামলা স্থগিত করেছে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনিই যদি হন মামলার বাদী তাহলে বিচারের বানী যে নিভৃতেই কাঁদবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৫৪

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.