![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা সময় ছিল আমার জীবনে যখন ঈদ মানে ছিল “এলো খুশির ঈদ”
অন্য সবার মত আমিও ঈদ পালন করতাম মহা সমারোহে। নতুন জামা, জুতা এমনকি মাঝে মাঝে নতুন কলম। আগের দিন রাতে ঘরের সবার সাথে ঘর ঝাট দিতাম, গোছাতাম, দোকানে গিয়ে এটাসেটা কিনতাম আমার মায়ের লিস্ট মোতাবেক। সকালে উঠে বাথরুমে লাইন ধরতাম (আমাদের বাথরুম ছিল একটা), যখন দু’বাথরুমের ঘরে আসলাম তখনো লাইন ধরতে হত আমাকে, ছোট ছিলামতো সবার (এখনো তাই-ই আছি)। পাশের মসজিদের মাইকে শোনা যেত ঈদ মুবারাক, ঈদ মুবারাক, ঈদ মুবারাক। চারদিকে কেমন একটা পবিত্র আভা। আশেপাশের অমুসলিম প্রতিবেশীরাও অপেক্ষায় থাকতো কখন আমাদের নামাজ শেষ হবে, নামাজ শেষ হলে তাঁরা আমাদের বাসায় আসবেন, আমাদেরকে নিয়ে যাবেন তাঁদের বাসায় ঈদের সেমাই খাওয়াতে। আগের বছরের পাঞ্জাবিটা পরে নামাজ পড়তে যেতাম, আর নামাজ পড়ে এসে নতুনটা পরতাম। প্রতিবার ঈদের নামাজ পড়ার সময় ভুল করতাম, আশেপাশে কোনা মেরে দেখতাম কখন নিয়ত বাঁধছে, কখন হাত ছাড়ছে, কখন রুকুতে যাচ্ছে। হা হা হা! এসে মা-কে সালাম আর উনার বানানো খাবার খেতাম। আমরা ভাইরা কোন ঈদে কোলাকুলি করতামনা, কখনো করিনি। হাসিঠাট্টা করতাম নিয়মিত কিন্তু কোন ঈদে কোলাকুলি করা হয়নি। কোথায় যেন একটা অস্বস্তি লাগতো। এরপর বাকি সবার ঈদ যেমন কাটতো আমাদেরও তেমনি। মেহমান সামলাও, এদিক সেদিক যাও। আমার বাবা বেঁচে থাকা অবস্থায় ঈদ অবশ্য অন্যরকম ছিলো, সে গল্প নাহয় অন্যদিন করবো। যখন থেকে প্রেমে পড়লাম তখন থেকে ঈদের ধরন পুরাই পালটে গেলো। বাসার সবার অগোচরে আর একটা মানুষকে নিয়ে ঈদের দিন সুখানুভূতি, তার জন্য বখশিস এর টাকা জমানো, আমার মায়ের জন্য জামা কেনার সময় তার টাকা দিয়ে কেনা, ঈদের দিন তাকে দেখতে না পারার চাপা কষ্ট, আবার হুট করে দেখা হয়ে গেলে আনন্দ, খুনসুটি, ঝগড়া এসব। সামনের কোন এক ঈদে একসাথে তাকে নিয়ে কাটানোর স্বপ্ন চোখে ঝিলিক খেলতো প্রতি ঈদেই। শুধু ভাবতাম বাসার মানুষগুলোর সাথে আরো একজন থাকবে আমার সাথে ঈদে! কেমন হবে তখন ঈদগুলো ঐ মানুষটা সহ!!! শুধু ভাবতাম আর ভাবতাম। এবং এখনো ভেবেই যাচ্ছি। কারণ- সে এখন আর আমার জীবনে নেই। তাকে ভালবাসার পর থেকে কখনো নিজের টাকা দিয়ে পাঞ্জাবি কিনিনি ঈদে বা বৈশাখে বা যে কোন উৎসবে। পাঞ্জাবি পাওয়ার পর আমি খুশি হতাম খুব আবার তার টাকা খরচ হল বলে তাকে বকাও দিতাম, ভালবাসার বকা। সে আমাকে বলতো আমি কিছুইতো দিতে পারছিনা, অন্যরা কতকিছু দেয় নিজের ভালোবাসার মানুষকে। আর বলতো যখন একসাথে ঘর করবো তখন আরো বেশী বেশী দিবো! ঘর- হায়রে ঘর! আমি তাকে ছাড়া কোন ঈদ বা কোরবান বা যেকোন উৎসব ভাবতে পারতামনা, পারিনি, পারছিনা, পারবোনা। গত বছর ঈদের দিনের কোন স্মৃতি নেই আমার। আবোল তাবোল বকে আর কান্না করে কাটিয়েছিলাম সারাদিন এটুক মনে আছে। আর একটা স্মৃতি আছে ওটা আমার একান্ত দুঃখের তাই বলছিনা। না ঈদে এখন আর কিছু কেনা হয়না, কারো জন্যই না। এখন সকাল হলেই শুনিনা ঈদ মুবারাক, ঈদ মুবারাক। ঈদ নিয়ে কোন আগ্রহ আমার নেই। এই ৩০-৩১ বছরের জীবনটা বড্ড বোঝা হয়ে গেছে। বিচ্ছেদের পর সবচে’ দ্রুত ঘুরে দাঁড়ায় নাকি ছেলেরা। আমিতো পারছিনা। এতো এতো সময় কেটে গেলো, তাও পারছিনা। আমার সময় কাটানোর মতো কিছু নেই, তার স্মৃতি ছাড়া। ইচ্ছা করেই পরিবার থেকে দূরে আছি, বাংলাদেশের একটা জেলায় পড়ে আছি আমার প্রাণের শহর ছেড়ে, আমার মা-ভাই ছেড়ে। তাদের সাথে ঈদ করার ইচ্ছাও জাগেনা। একা একা শুয়ে আছি, কাল ঈদের দিন এভাবেই থাকবো হয়তো বা একটু হেঁটে আসবো। ভালোবাসা এমন এক শক্তি, হয় জয় ঘটায় নয়তো ক্ষয়। আমার ক্ষেত্রে ক্ষয়টাই ঘটলো। জীবনটা ক্ষয়ে যাচ্ছে দিন দিন, সবার অলক্ষ্যে, অগোচরে, আমার পরিবারের অজান্তে। জানিনা কি হবে, এই বয়সে এসেও নিজেকে সামলাতে, গোছাতে পারছিনা সে চলে যাওয়ার এতোদিন পরও। এ জীবনটা আর টানতে পারছিনা। ক্ষয়ে যাচ্ছি। একটাই শুধু আনন্দ যে তার জন্য নিজেকে ক্ষয় করতে পারছি। প্রতি মুহূর্তে তার স্মৃতি, কণ্ঠস্বর, কথা আমার হৃদয়, হাড়-মাংস, মগজ চিবিয়ে খাচ্ছে। খুব অগোছালো লিখছি, অনেকদিন পর লিখতে বসলাম তাই। সবার ঈদের দিনে নিজের কতগুলো ফালতু কথা বলে সবার সময় নষ্ট করার জন্য খারাপও লাগছে। কিন্তু কি করবো? পান-সিগারেট-মদ কিছুই খাইনা, কিছু একটাতো করতে হবে। তাই লিখতে বসলাম। সবাইকে ঈদ এর শুভেচ্ছা। বিরক্ত হলেও কেউ আমাকে গালি দিয়েননা প্লিস, গালি নেয়ার মত অবস্থা নাই। আর লিখতেও পারছিনা, চোখ ঘোলা হয়ে গেছে।
পুনশ্চঃ – আমার জীবনের সব উৎসব নিয়ে তুমি চলে গেছো তারপরও তোমাকে অনেক অনেক অনেক ভালবাসি। কীভাবে যে ভালোবাসি, কীভাবে!!!!!!!!!!!!!!!!!
২| ১৮ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৪২
সুমন কর বলেছেন: জীবনটা ক্ষয়ে যাচ্ছে দিন দিন, সবার অলক্ষ্যে, অগোচরে, আমার পরিবারের অজান্তে। জানিনা কি হবে, এই বয়সে এসেও নিজেকে সামলাতে, গোছাতে পারছিনা সে চলে যাওয়ার এতোদিন পরও। এ জীবনটা আর টানতে পারছিনা। ক্ষয়ে যাচ্ছি। -- আপনার কেন এরূপ মনে হচ্ছে !!
সমবেদনা রইলো। ঈদের দিনে মন ভারী করা লেখা। লেখায় ১ম প্লাস।
ঈদ মোবারক !
৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:০১
শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: যদি বলতে বলেন নিজে ভালোবাসার মধ্যে থাইকাও নির্ভেজাল ভালোবাসা বইলা কিছু আছে নাকি বইলা মানি নাকি, তাইলে বলবো, না, মানিনা। অভিজ্ঞতার সাথে সাথে শিখছি।
সেই বছর ৬-৭ আগের কথা, সবচেয়ে কাছের বন্ধু বলছিলো, আমারে ছাড়া তার চলবেনা। কাউরে ভাবতেও পারেনা। আমিতো বাসতামনা। তাই বললাম, সম্ভব না। ধোকাবাজি কইরা কি লাভ? এরপর কিছু মাস গেলো, ভাবলাম, যে ভতোমারে ভালোবাসে, তারেই ভালোবাসো এই থিওরী মাইনা ওর দিকেই যাও। যাওয়ার মনস্থির করলাম, বলি বলি করবো, ওইসময় সে বললো, তার আরেকজনরে পছন্দ হইছে। বুঝলাম, সময় কারো জয় থাইমা থাকেনা। অনুভুতিও ফিক্সড না।
আবার এরপর, ৩ বছরের উথালপাথাল প্রেম। এরপর টানাপোড়েন। উনার ছেলেবন্ধুদের এড়াইতে বলতাম, অতি ফেসবুকিং, আউটগোয়িং টেন্ডেসি পছন্দ হয়নাই। বলতে চাইলে কানে নেয়নাই। এরপর ভাবলাম হার্ট করি। দিলাম ডুব। দেখলাম আউলাইয়া গেছে। সে বললো কেন এমন করি। সমস্যা কি। হয়ত চেঞ্জও হইতো। আমি আবলাম বদলাইয়া ভালোবাসা সম্ভব না। এরপর আরো কিছু মনমরা মাস, আলুথালু সময়। আমি আরো খারাপ হইলাম, কিন্তু সে ভালো থাকা শিখে গেলো। হুট কইরা বিয়াও কইরা ফেললো এমন একজনরে যার থাইকা দূরে থাকতে বলতাম। বুঝলাম, আমার ধারনা সঠিক ছিলো। সে আমার জন্য ছিলোনা।
এরপ্র আসলো ভালোবাসার সাহসী গল্প, সত্যি সাহসী। সেইটা আর না বলি। কিন্তু বেশ কয়বছর পর বুঝি, কোন না কোন সার্থ থাকেই, আছেই। এইটাও ভালোবাসা না। কিন্তু এতো এতো মায়া জইমা যায়রে ভাই, হারাইতে চাইলেওহারানো যায়না। এইটাই সমস্যা। এখন কারো মায়া নিয়া বাইচা আছি। যতদিন বাইচা আছি এইটাই যথেষ্ঠ। আগামীর খবর জানিনা।
এই হইলো কিছু কাহিনী। মন খারাপ কইরেননা। পৃথিবী হইয়া যান।
ঈদ মুবারাক!
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই জুলাই, ২০১৫ ভোর ৫:২৯
রিফাত হোসেন বলেছেন: ভাই, আপনার অনুভূতি বুঝি। মানে ভালই বুঝি। তবে প্রেম নামের ফালতু জিনিস পৃথিবীতে আর নাই, বন্ধু বান্ধবীর মধ্য যেটা তৈরী হয় সেটা। কারন এর পরিনতি হয় আবার হয় ও না। তাকেই ভুয়া মনে হয়। ভাই একজন কে বিয়ে করেন। যে রক্ষনশীল, যে শ্রদ্ধা করতে জানে।যে বুঝে মমতা কি! ভাই মা বাবা থেকে আপন কেউ নাই মনে রাখুন। যদি ধার্মিক হোন তাহলে ভাল আল্লাহ কে মনে করুন। এই জীবন ক্ষনস্থায়ী। যদি নাস্তিক হয়ে গেছেন তাহলে বলব জীবন কে উপভোগ করার চেষ্টা করুন। কত মেয়ে আসবে যাবে। আমার তো আরো ১ ধাপ উপরে ছিল এতটুকু হিন্টস দিতে পারি
আমার স্ত্রী লক্ষে একটা মিলবে কিনা সন্দেহ, হয়তো সে ধার্মিক বলে আমাকে বুঝেছে, নিজের মত করে নিতে পেরেছে, হয়ত সে বুঝদার, এটা ঠিক, তিনি মানে আমার স্ত্রী যথেষ্ট বুদ্ধিমতী যে ট্যাকেল দিতে পেরেছে।
তাই বলছি নতুন কাউকে গ্রহন করুন, ধীরে ধীরে সব ভুলে যাবেন।