![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিবেক নামক ইন্দ্রিয়ের চোখ (বিবেকিন্দ্রিয়লোচন) দিয়ে চারিদিক দেখার চেষ্টা করছি
নিতান্তই একদশক আগের কথাঃ Sting-এর মরুর বুকে Desert Rose…..হ্যাঁ এইতো সেদিন……মরক্কোর অলিগলি ধূলায় ধূসরিত হত সাইমুমে। এখনও হয়। বিচ্ছুরিত সূর্যালোকের চিকচিকে বালিতে ছুটে যেত মরুভূমির জাহাজ। এখনও যায়। পানির তীব্র হাহাকারে চাতকের মত উর্দ্ধাকাশের পানে তাকিয়ে থেকে যখন ক্লান্ত হত সীমিত দৃষ্টিসম্পন্ন মনুষ্যকূল, বিধাতার অমোঘ অমৃত বারিধারা হয়তো তখনো সিক্ত করতো না তাদের বহুদিনের বেঁচে থাকার সংগ্রামকে। না। সেই সময় আজ সুদূর হতে চল্ল বুঝি!
North American Space Administration (NASA) এবং U.S. Geological Survey (USGS)। ১৯৮৭ সাল থেকে গত ২৯ বছরে ধরে NASA এবং USGS সৌদি আরবের শাম-মরুর বুকে উপগ্রহ থেকে ছবি তুলে আসছে। এই লিংকে গেলে দেখা যায় কিভাবে উষর মরু শ্যামল সবুজে পরিনত হচ্ছে (Click This Link)। Michael Petraglia অক্সর্ফোড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নত্বাত্তিক বিভাগের একজন প্রাগঐতিহাসিক গবেষক। তিনি দেখিয়েছেন জাজিরাতুল আরব এক সময় সবুজের প্রাণকেন্দ্র ছিল। শত শত মরা নদী আজও মরুর বুক চিরে সেই সাক্ষ্য বহন করে যাচ্ছে। মানব সভ্যতার শুরুর দিকে আফ্রিকা মহাদেশ থেকে এই আরবেই মনুষ্য প্রজাতির বিস্তারও তার গবেষনায় উঠে এসেছে (Click This Link)। ঘন বনভূমির আধার ছিল এই আরব। প্রায় ১৩০,০০০ বছর আগের সবুজ আরবের কথা বলছে BBC (Click This Link)।
আনন্দ আর ভয়ের ব্যাপার হল NASA, USGS, Mr. Michael Petraglia এবং BBC ছাড়াও আরো একজন জাজিরাতুল আরব যে কোন এক সময়ে সবুজ ছিল তা বহু আগেই বলে গিয়েছেন। তিনি বিংশ শতাব্দির কোন প্রত্নত্বত্তিক ছিলেন না। মোটা মোটা বই পড়ে, মোটা ফ্রেমের চশমার উপর দিকে তাকিয়ে তিনি কথাগুলো বলেননি। মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ্ মুসলিম-এ, আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহ্র রাসুল (সঃ) বলেছেনঃ
“সেই সময় (কিয়ামত) ততক্ষণ পর্যন্ত আসবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত না জাজিরাতুল আরব তার আগের অবস্থায় ফিরে যায় যখন তাতে ছিল উদ্যান/চারণভূমি এবং অসংখ্য নদী”।
এই হাদীসে লক্ষ্যণীয় বিষয় হল ‘ফিরে যায়’ আর ‘উদ্যান/চারণভূমি এবং অসংখ্য নদী’ -এই দুটি অংশ। ১,৪০০ বছর আগে, উত্তপ্ত বালির উপর দাঁড়িয়ে, পানির জন্য তীব্র অভাবেও তিনি বললেন এই আরবই সবুজ ছিল এক সময়। কিভাবে বললেন? অসংখ্য নদী যে ছিল তাও বললেন! আবার এই সূয়ের খরতাপে দাঁড়িয়ে বলে দিলেন ভবিষ্যতে এই মরুর বালুই চারণভূমিতে/উদ্যানে পরিনত হবে। কিভাবে বললেন? তিনিতো অক্ষরজ্ঞানহীন ছিলেন! ভয়ের ব্যাপার হল হাদিসটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে আরবের এই সবুজ-সমারহ কিয়ামতের এক নিদর্শন। মানে হয়তো অতি নিকটেই সেই ক্ষণ। আল্লাহ ভাল জানেন।
‘সবুজ’ রঙটি কোরআনে আল্লাহ সুবানাহু ওয়া তায়া’লা বিশেষণ আকারে জান্নাতবাসীদের জন্য ব্যবহার করেছেন। যখন তিনি বলেনঃ
“তারা সবুজ আসনে হেলান দিয়ে একে অপরের মুখোমুখি হয়ে বসবে। তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবে?”
সবুজ সজীবতার প্রতীক। সবুজ সমৃদ্ধ স্নিগ্ধতার প্রতীক। কিন্তু আরবের এই সবুজ কি তা-ই? এই সবুজ কি আমারদের মলিনতা নয়? আমরা আজ মলিন নিজের কাছে। সমাজের কাছে। জাতির কাছে। বিশ্ব-বিবেকের কাছে। একাকী বেঁচে থাকার নিরন্তর প্রচেষ্টা করছে মলিন আমাদের আত্মিক চেতনাকে। নিজেকে কৃত্তিম রঙে রাঙিয়ে, ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে মলিন হচ্ছে আমাদের চিন্তার প্রশস্ততা। আত্মকেন্দ্রিকতার নিবিড় পরিচর্চায় মলিন হচ্ছে আমাদের উদারতা। আর কতবার নিষ্পাপ ছোট্ট দেহে রক্তের স্রোত দেখলে আমাদের ঘুম ভাঙবে? আর কত বুলেটের শব্দে রাত ভোর হলে আমাদের মননে স্থান পাবে শীতের রাতে কাঁপতে থাকা বৃদ্ধার আকুতি? আর কত বোনের কান্নার রোলে বাতাস ভারী হলে আমরা নিজের গন্ডির সীমানা পেরোতে শিখবো? আর কিভাবে ঘটনার প্ররিক্রমা আমাদের বুঝাতে পারবে যে আমরা দাঁড়িয়ে আছি একেবারে শেষ প্রান্তে?
আরব আবার সবুজ হয়ে যাচ্ছে। আমরা হচ্ছি মলিন। ধূলোয় ধূসরিত আরবের উটগুলো থেকেও হয়তো বেশী মলিন।
২| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২৫
বিবেকিন্দ্রীয়লোচন বলেছেন: কথা সত্য। ধন্যবাদ ভাই।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সবুজের ভয়, সত্যের আনন্দ আর মহাপ্রলয়
হুমমম
ভাবনার বিষয়
আমাদের কর্মফলেই আমরা ভোগকরি! তাই কর্ম বদলে দিতে পারলে ফলও বদলে যাবে।
কর্ম বদলাতে হলে বদলাতে হবে জীবন বোধ!
জীবন বোধ বদলাতে চাই প্রকৃত জ্ঞান!
চলুক সাধন
++++