নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা শুনি- যা দেখি - যা ভাবি - তা লিখতে ইচ্ছে করে ।

কিবরিয়া জাহিদ মামুন

শহুরে ফোকলোর

কিবরিয়া জাহিদ মামুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

শহুরে ফোকলোর

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:২৭

২০৯৫ সালের এপ্রিল মাস । গত সাতদিন লাগাতার বরফ পড়া আজকে বন্ধ হয়েছে । সুর্য যেন তার পুরনো শক্তি ফিরে পেয়েছে । সকালের সুর্যের আলোতে বাইরের বরফ গলতে শুরু করেছে । চাংখারপুলের বাসার বারান্দায় বসে কফি খাচ্ছেন সওর বছরের বৃদ্ধ স্যার ড: জন উড রে । একটা সময় ছিল রমনা পার্কে যেতে গেল রাত ১০টায় রওনা দিয়ে সকাল সাতটায় ব্যায়াম করার সিরিয়াল পাওয়া যেত । কাথা বালিশ গাড়ীতে নিয়ে যেতে হত । গাড়ীতে ঘুমিয়ে সকালে ব্যায়াম করতে হত । অবশ্য তখন ঢাকায় মানুষ ছিল ৩৫ কোটি সরকারী হিসেবের । বেসরকারী হিসেবে প্রায় চল্লিশ কোটি । চাংখার পুল থেকে নিউমার্কেট যেতে ফজরের ওয়াক্তে রওনা দিলে মাগরীবের ওয়াক্তে নিউমার্কেট পৌছা যেত । এইসব ঝামেলার কারনে জন উড রে নিজের বাসাতেই জিমটা বানিয়েছিলেন । কিন্তু সেই ২০৫৫ সালের বড় ভুমিকম্পের পর একমিনিটে প্রায় চল্লিশ পয়তাল্লিশ কোটি লোক গায়েব হয়ে গেল । এখন চাংখার পুল থেকে বেরিয়ে ঢাকা ভার্সিটির দিকটায় গেলে কিছু ছেলে মেয়ে চোখে পড়ে কদাচিত ।

জন উড রে সওর বছর ব্যবহার করা নিজের কিডনি, হার্ট, ভালব, লিভার, অস্থি সব নুতন করে লাগিয়ে নিয়েছেন নিজের শরীরের পুরাতন গুলো ফেলে দিয়ে । বলা যায় এখন তিনি আরও সওর বছর সারভাইভ করবেন । ডাকাতার তেমনটাই বলেছে । বাধ সেধেছে ব্রেনটা । সওর বছরের পুরানো ব্রেনটা স্যার ড: জন উড রে আর রাখতে চাচ্ছেন না ।

কফি খাওয়া শেষ করে গায়ে ওভারকোট, মাফলার, কানটুপি, দস্তানা জড়িয়ে জন উড রে বেরিয়ে পড়লেন । ব্রেন কেনার খোজে । ধোলাইখালে একটা দোকানে ঢুকলেন । একে একে সব ব্রেন দেখছেন । সাথে দোকানের সেলসগার্ল মেয়েটা বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সাহায্য করছে । আম্রিকান ব্রেইন, জুইশ ব্রেন, চাইনিজ ব্রেইন, জাপানিজ ব্রেইন । শেষটায় পেলেন বাংলাদেশী ব্রেইন । কিন্তু মেজাজটা জন উড রের ভিষন খারাপ হল । যখন দেখলেন বাংলাদেশী ব্রেইন এর দাম সবচেয়ে বেশি । বাকী আম্রিকান, জুইশ, জাপানিজ, চাইনিজ ব্রেইনের চেয়ে ।

ঝাঝিয়ে উঠলেন সেলসগার্ল মেয়েটার উপরে । মেয়েটি বিনীত ভংগিতে বল্ল ইফ আই মে স্যার । জন উড রে আবার বাজখাই গলায় বল্ল দেখুন আমি ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র ছিলাম । আমাকে ইংরেজীতে শোনানোর দরকার নেই । আমি যখন ঢাকা ভার্সিটিতে পড়তাম তখন আমাদের ক্লাশের ফেবু পেজে ইংরেজিতে আপডেট দিতাম । আর সেই ইংরেজী পড়ে অনেকেই বুঝত না । "লিখতাম ক্লাশ হবে" অনেকেই বুঝত হবেনা । ক্লাশ মিস করত । এসাইনমেন্ট মিস করত । এতটা সাহিত্যিক, মারুফতী, নুরানী ইংরেজী লিখতাম আমি । সো বাংলায় বলুন । সেলস গার্ল মেয়েটি তখন বাংলায় বল্ল স্যার আসলে আম্রিকান ব্রেইন প্রচুর ব্যবহার হয়েছে বড় বড় গবেষনাতে, জুইশ ব্রেইনও তাই । জাপানিজরা অফিস কে দ্বিতীয় বউ ভাবত । ছুটি পেত একদিন কিন্তু চুরি করে নকল চাবি বানিয়ে অফিসে গিয়ে কাজ করত । চাইনিজ তো জানেনি স্যার । মেড ইন চায়না বেশিদিন যায়না । এইসব ব্রেইনে আর কিছু বাকী নাই সব ঝাঝরা । কিন্তু বাংগালী ব্রেইন ব্যবহার হয়নি বলা যায় । এক্কেবারে ইনটেক । এই যে যেমন স্যার এটা ভার্সিটির স্টুডেন্ট লিডার এর ব্রেইন । ওর উপরের লিডার যা বলেছে ও তাই করেছে । গাড়ী ভাংগা, ডিপামেন্ট ভাংগা, অবরোধ, হরতাল, ইভটিজিং, মিটিং, মারামারি, প্রশ্নফাশ, অপহরন, ইত্যাদি নিজের মেধার একদম ব্যবহার করেনি ।

জন উড রে জাপানীজ ব্রেইনটা নিতে চেয়েছিল কিন্তু মেয়েটা যা বল্ল তাতেতো কেনা যাবেনা । ক্লাশমেট রুক্কুর বউ ছিল জাপানী । ও আরও ভাল বলতে পারত । ওর কাছে কি জানা উচিত কিনা । নাহ, এখন এত সময় নাই ভাবার । স্যার জন উড রে (WF) বাংলাদেশী স্টুডেন্ট লিডারের ব্রেইন কিনে নিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে পড়ল । সুর্যের আলোটা এখনো বেশ চড়া । বরফ গলছেই । আগে এই রোদকে সবাই ঠাডা পড়া রোদ বলত । সেলসগার্ল মেয়েটার হাসি আর এই রোদের মাঝে জন উড রে কিছুটা মিল পেল । ঠোটে স্মিত হাসি দিয়ে স্যার জন উড রে মনে মনে বল্ল যৌবন ধরে রাখবার কৌশলটা মন্দ না ।

এই যৌবন ধরে রাখবার জন্য স্যার জন উড রে কত চেষ্টাই না করেছেন । পান্ডার মালিশ আল্লাহ ছাড়া কাউকে মানেনা, কুমিল্লার শ্রীপুরের ট্যাবলেট, হরিনের মৃগ নাভী, জোকের তেল কত কি খেয়েছেন । যাক শেষটায় যৌবন ধরা দিল । সেলসগার্ল মেয়েটার হাসি জন উড রে একদম ভুলতে পাচ্ছেনা । আফসোস হল জন উডের নামটা জানা দরকার ছিল । যদিও নেট থেকে বের করতে পারবে ।
স্যার জন উডের নেকসট মুভি ("উড়ে এসে বুকে লাথি" ফ্লায়িং কিক অন চেষ্ট") এ এই সিকোয়েন্স টা রাখতে হবে ।


৩০/০৩/২০১৬
ইকবাল রোড

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:১৮

বিজন রয় বলেছেন: ২০৯৫ সাল!!!!!!!

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:২৩

কিবরিয়া জাহিদ মামুন বলেছেন: হ্যা ভাই ২০৯৫ সাল । আর মাত্র উনআশি বছর পরে ।

২| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:২৩

নিশির আলো বলেছেন: """"জাপানিজরা অফিস কে দ্বিতীয় বউ ভাবত ।
ছুটি পেত একদিন কিন্তু চুরি করে নকল চাবি
বানিয়ে অফিসে গিয়ে কাজ করত ।"""""
..
মজা পাইলাম।।

৩| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:২৭

কিবরিয়া জাহিদ মামুন বলেছেন: হ্যা জাপানিজরা অফিস কে তাদের দিত্বীয় বউ ভাবে । অনেক অফিসের নিজস্ব কবরস্থানও আছে । এমপ্লয়ী মারা গেলে সেখানে সমাহিত করা হয় । মৃতু দিবসে ফুল পাঠানো হয় ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.