নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা শুনি- যা দেখি - যা ভাবি - তা লিখতে ইচ্ছে করে ।

কিবরিয়া জাহিদ মামুন

শহুরে ফোকলোর

কিবরিয়া জাহিদ মামুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

শহুরে ফোকলোর

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:১৮

লিটন দেওয়ান মুখ দেখে নাকি ভবিষ্যত বলে দেন । বসুন্ধরা সিটিতে আগুন লাগল, নিজের চেম্বার পুড়ে গেল নিজের এই ভবিষ্যতটা টের পাননি দেওয়ান সাহেব । সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই যে ভবিষ্যত তার টের পাবার কথা ছিল । ওদিকে আতিয়া মহলের এমন ভবিষ্যত উস্তার আলী সাহেব ও টের পাননি । দেওয়ান সাহেবের সাথে দেখা করে বাতচিত করলে সুরাহা হত কি না ? কে জানে ?

কেউ জানুক বা না জানুক শেফালী বেগমের চার ছেলের একজন জজ, একজন পুলিশ, আর একজন ডাকতার । কিন্তু চার নম্বর ছেলেটা পানের দোকানদার । এটা মোটামুটি এলাকার সবাই জানে । শেফালী বেগম কে কেউ জজের মা, কেউ এসপির মা, কেউ ডাকতার সাহেবের মা ডাকে কিন্তু পানের দোকানদার হিরুর মা কেউ ডাকেনা । শেফালী বেগম কোন বিয়ের বাড়ী, জিয়াফত, চল্লিশা, সুন্নত খতনা এমন অনুষ্ঠানে গেলে কেউ তাকে না চিনলে তিনি নিজেকে কখনো জজের মা বলেন, কখনো ডাকতার সাহেবের মা কখনো নিজেকে এসপি সাহেবের মা বলে পরিচয় দেন । পানের দোকানদার হিরুর মা বলেন না ।

হিরু বেশিদুর পড়াশুনা করতে পারেনি । মাথাতে পড়াশুনা বাদে সব ঢুকত । ক্লাশে গনিত পড়ানো সতিশ স্যার বলত তোর মাথা ভর্তি কাউ ডাং । সেখানে পাটি গনিত, বীজ গনিত ঢুকবার জায়গা নাই । হিরু দাতে বাবুল গুল লাগাত । বাবা জর্দা দিয়ে পান খেয়ে কোমরের প্যাচে বিড়ির প্যাকেট নিয়ে সাথী সিনেমা হলে ডিসির টিকিট কেটে সিনেমা দেখত ।

আবার ক্লাশ ফাকি দিয়ে মজমা দেখত । হকারের মজমায় হিরু গালে হাত দিয়ে সামনের সারিতে বসে থাকত । দু একদিন সোলায়মান ভাই এর জন্য হিরুর মজমা দেখা মিস হত । এই ছল তোর নুনু বাচ্চা বড় হইচে ? তুই জোকের তেলের কি বুঝিস তুই মজমা দেখপার আছসিস ? বলেই হিরুর ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে মজমা থেকে বের করে দিত । সোলায়মান হিরুর চেয়ে বছর আটেকের বড় ছিল । সোলায়মান কে সবাই ফাকশা সোলায়মান বলত । সোলায়মানের গল্প শুনলে মানুষ বলত ফাকশা গপ্প ফির শুরু করছিস সোলায়মান । এই বলতে বলতে সোলায়মানের নাম হল ফাকশা সোলায়মান । হিরু গলা ধা্কা খাবার পর বল্ল সালা ফাকশা সোালায়মান বলেই দৌড় ।

হিরু ফাকশা সোলায়মান কে সাইজ করার জন্য তক্কে তক্কে থাকল । ফাকশা সোলায়মান ভরদুপুরে কোমরে রসময় গুপ্তের চটি নিয়ে বাশবাগানে ঢুকত । হিরু বিষয়টা লখ্খ্য করেছে ফাকশা সোলায়মান কোমরে কিছু একটা নিয়ে বাশবাগানে ঢোকে তারপর উপুর হয়ে পড়ত । হিরু বাটুল নিয়ে সাথে মার্বেল নিয়ে একটা চিপা মত জায়গায় দাড়িয়ে সোলায়মান কে টার্গেট করে মারা শুরু প্রথম টা মিস হলে সোালায়মান ঘুরে ইতি উতি তাকিয়ে পড়ায় মনোনিবেশ করতেই পরেরটা সোলায়মানের পিঠে সোলায়মান ও বাবারে বলতেই তিননম্বরটা আবার সোলায়মানের হাতে লাগা মাত্র ও বাবারে ওবাবারে চিতকার করতে করতে সোলাইমান দৌড় ।

স্কুলে আইনুল স্যার একদিন ধর্ম ক্লাশে হিরুকে টেবিলের নীচে মাথা ঢুকিয়ে পশ্চাদদেশে বেত্রাঘাত করেছিল । হিরু কাউকে বলতে পারেনি । ক্লাশে খুব লজ্বা পেয়েছিল । কাউকে বলবে কেমনে ? পশ্চাদদেশ উচু করে তো আর দেখানো যায়না । হিরু তক্কে তক্কে ছিল ধর্ম স্যার কে সাইজ করার জন্য । স্যার বাজার করে সন্ধ্যায় ফিরছিলেন বাড়ীর পথে । পথের মাঝে বুড়া আমলীর উপরে উঠে সাদা কোলবালিশ দড়িতে বেধে হিরু বসেছিল । চারিদিকের সোনালী আলোটা শেষ হয়ে সবে সন্ধ্যা হয়েছে । আইনুল স্যার আমলীর তলে আসা মাত্র কোলবালিশ ছেড়ে দিল স্যারের সামনে । স্যার কাাপতে কাপতে লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন দোয়া পড়তে লাগলেন । এমন একটা প্লাষ্টিকের পাত্রে আগেই একটু নিজের মুত্র রেখেছিল হিরু তারপর সেটাকে গাছের উপর থেকে ঢেলে দিল স্যারের মাথায় ব্যাস স্যার দোয়া পড়তে পড়তে কাইত হয়ে মাটিতে পড়ে গেলেন । গাছ থেকে নেমে অচেতন স্যার কে নিজেই একটা ভ্যানে উঠিয়ে দিয়ে সে যাত্রার দফা রফা করেছিল হিরু ।

মাঝে মাঝে পান গোল করে বাধবার সময় হিরুর এই কাহিনী মনে হলে একাই হাসত । হিরুর এমন হাসি নুরু দাদা পান নিতে গিয়ে দেখেছিল । নুরু দাদা জিগে্গস করল ক্যারে হিরু হাসিস ক্যা একলা্য় একলায় ?
নয় দাদা এম্নি ।
মোরও এংকা কতা মনে হলে একেলাই হাসো । তুই তো মোরি ন্যাকান ।
দাদা তোমার কি খালি হাসির গপ্পই মনে হয় আর কোন গপ্প নাই । আছে তো ।
কও শুনি
মুই একবার নালমনি একপ্রেসত চড়িয়া যাচ্চিনু চিলমারি । ২ টেকার পাউরুটি মোর কাছে ট্রেনের মদে নিলি ১০ টেকা । মুই কনু ২ টেকার পাউরুটি ১০ টেকা চাচ্ছেন । পাউরুটি আলা মোক কয় নিলে - চ্যাটের পোষায় নেও না নিলে আটা কিনিয়া খাও । খিদা নাগছে কি করো নিনু । এইবার গেনু ফির চিলমারি । নদী, নালাত এক ফোটা পানি নাই । ওঠাকার মানুষ কয় উওরবংগ বোলে মরুভুমি হইবে মুই কও ভাল হইছে । ২ টাকার পাউরুটি ১০ টাকায় বেচবেন মরুভুমি হবানোন তে কি হবা । তিস্তার পানির আশা ছাড়ি দেও । হিরু হাসল । বেলা পড়ে আসছে পান বিক্রীর গ্রাহক কম । পেপারটা পড়া হয় নাই দেখি ।

পেপারের শিরোনাম এবারো তিস্তা চুক্তি হচ্ছেনা ।

ইকবাল রোড
মোহাম্মদপুর



মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:০২

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ভাল লিখেছে। তিস্তা চুক্তি হলেও লাভ কি হবে কোন।

২| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৪৯

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: প্রমত্তা তিস্তা! একটি নদীর অপমৃত্যু!! অতপর একটি জাতির করুণ আর্তনাদ!! চমৎকার লেগেছে আপনার লেখাটি।






ভালো থাকুন নিরন্তর। ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.