নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা শুনি- যা দেখি - যা ভাবি - তা লিখতে ইচ্ছে করে ।

কিবরিয়া জাহিদ মামুন

শহুরে ফোকলোর

কিবরিয়া জাহিদ মামুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সামান্থা - দ্বিতীয় পর্ব

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৬:০৪

এখানকার নারীদের স্বাধীনতা অনেক উচ্চ মার্গের । সামারে বেশ কটা পার্কে দেখতাম উদোম বুকে নারীরা বসে আছে । কিংবা পাবলিক প্লেসে বাচ্চা কে ওপেন ব্রেষ্ট ফিডিং করাচ্ছে । কোন রাকঢাক নেই । এখানে নারীরা তার শরীরের কতটুকু ঢাকবে এটা একান্ত ব্যাক্তিগত বিষয় । তার শরীরের কোন অংশ দেখে পুরুষের কোন মাথা গরম হবে তাতে ওই নারীর কিচ্ছু যায় আসেনা । শরীর যার সিদ্ধান্ত স্বাধীনতা তার । এখানে মেয়েরা কাগজে কলমে বিয়েকে বলে ওল্ড স্কুল । একবার বিয়ে করলে ছেলে মেয়ের জন্য ডিভোর্স দেয়া অনেক ঝামেলার । সম্পত্তি দুজনের মাঝে ভাগ হয় । যার বেশি সম্পত্তি থাকে । তাই মেয়েরা, ছেলেরা বিয়ের আগে এক সাথে চার পাচ বছর থাকে । দুজন দুজন কে বোঝে জানে তারপর মন চাইলে বিয়ের পিড়িতে বসে । না হলে এমন করেই দুজনের জীবন পেরিয়ে যায় । সন্তানাদী হয় সংসার হয়, বৃদ্ধ হয়, একদিন মারা যায় ।

আবার এমন এক সাথে থাকতে থাকতে কাগজে কলমে চার্চে গিয়ে বিয়েও করে । অনেক নারী পুরুষ চায়না তাদের বাচ্চা কাচ্চা হোক । দুজনি চাকুরী করে বাচ্চা কে সামলাবে কে ? তাই বাচ্চার কাচ্চার বদলে কুকুর বিড়াল পোষে । কুকুর বেড়ালের মম ড্যাডি হয়ে একজীবন পার করে দেয় ।

কুকুর বিড়াল পুষবার আর একটা কারন হল নিরাপত্তা । এখানকার নারী পুরুষরা শরীর সচেতন । এরা সকালে সন্ধায় রাতে হাটা চলার সময় কুকুর বিড়াল রাখে । কেউ অনাহত আক্রমন করতে পারবেনা । আর নারীরা ইনডিপেন্ডেট হবার কারনে একা বাসায় থাকে । সেই একা বাসায় যাতে অনাহুত তাকে কেউ আক্রমন করতে না পারে ।

তাই সব মিললে তবে এরা প্রেমে পড়ে । লিভ টুগেদার করে । বিয়ে করে । আবার টিএনএজ বয়সের কিছু প্রেম আছে । বারে যাও পার্টিতে যাও মৌজ কর ছেড়ে দাও । ভাল লাগলে কন্টিনিউ কর । উড়ন্ত দুরন্ত কিছু সম্পর্ক আছে বারে পার্টিতে পরিচয় হল বাসায় এনে রাত কাটাল । সকাল বেলা মেয়ে চলে গেল বা ছেলে চলে গেল । বাসা মালিক প্রতিবেশী এগুলো নিয়ে ভাবার কিছু নাই ।


এদের জীবন ধারার কিছু অংশ এখানে আসবার পর বুঝলাম । দেশের যেমন বেশকিছু মানুষের মুখে মুখে শুনতাম ফৃ সেক্চ এর দেশ এটা আসলে ডাহা মিথ্যা । বারের বেশ্যাকে কেনা যায় । সেটাও বোঝা পড়ার মাধ্যমে । কিন্তু অচেনা আজানা নারীকে সামান্য উল্টা পাল্টা কিছু বল্লে সাথে সাথে জেলে যেতে হবে । এখানে পুলিশ ঘটনা স্থলে আসতে সময় লাগে ৫ মিনিট । আবার যেমন দেশে শুনতাম কারেন্ট গেলে এখানে রেপ হয় । সেদিন ৭ ঘন্টা কারেন্ট গেল । পরের দিনের সব লোকাল নিউজ পেপার ইন্টারনেটে ঘাটলাম কিন্তু রেপের কোন নিউজ পেলাম না ।

এমন অভিগ্যতা হবার পর সামান্থাকে তাই ভাল লাগলেও প্রকাশটা গোপন রাখতে হয় । এরি মাঝে সামান্থা বল্ল ওর বয়ফ্রেন্ড আছে । বয়ফ্রেন্ডের সাথে থাকেনা । আগামী তিন চার মাসের মধ্যে ওর সাথে উঠবে । এর মধ্যে ভার্জিনিয়া যাবে ওর দাদার বাড়ী বেড়াতে সাথে বয়ফ্রেন্ড ও যাবে । আমরা পাশাপাশি চেয়ারে বসে কাজ করি । একথা বলবার পর সামান্থা আমার দিকে আড় চোখে তাকাচ্ছিল আমি মুখ হাসি খুশি করে রাখলাম । আমি বুঝতে পারছিলাম ও তাকিয়ে আছে । মনে মনে ভাবছিলাম পনেরদিন সামান্থার সাথে দেখা হবেনা । আবার ভাবছিলাম ওর তো বয়ফ্রেন্ড আছে । আমি আর ভেবে কি করবো ।

লান্চরুমে বসে লান্চ করছিলাম । সামান্থা এসে বল্ল হাই শাও । ভাল থেক ।
বল্লাম কবে যাবে ভার্জিনিয়া?
বল্ল কালকে রওনা দেব ।
আমি খাওয়া ছেড়ে হ্যান্ড শেক করার জন্য উঠে দাড়ালাম । সামান্থা বল্ল গিভ মি এ হাগ । আমি এগিয়ে গেলাম আমার চেয়ে সামান্থাই আমাকে জোড়ে চাপ দিয়ে জড়িয়ে ধরল । আমি অনুভতি দিয়ে সামান্থার প্রাইভেট পার্টস বোঝার চেষ্টা করলাম । যদিও হাগ করা এখানে খুব কমন একটা বিষয় । দুজন আলাদা হবার পর আমি সামান্থার চোখের দিকে তাকিয়ে আছি সেও তাকিয়ে আছে । আমি দুচোখের ভ্রু উপরে উঠিয়ে বল্লাম বাই ।
সামান্থা বল্ল মাথা নিচু কর ।
ঘাড় নীচু করলাম ।
সে আমার মাথার টিকির এক গাছি দাড়িয়ে থাকা চুল নামিয়ে দিল ।

এমন পছন্দ থেকে আমি বিয়ে করেছিলাম। চুটিয়ে প্রেমের দিনগুলি ভিষন মজার ছিল । যে বুকে মাথা রেখে মনে হয়েছিল সারাটা জীবন পার করতে পারব সেই বুক দেখে পরে মনে হত, এটা সাধারন আর দশটা নারীর মতই বুক । স্পেশাল কিছু নাই । বিয়ের পর টাকার টানাটানিতে চুটিয়ে প্রেমের স্মৃতি বিস্বাদ হয়ে উঠল । এরমাঝে কষ্টকাটিং এর নামে ইনডিয়ান কোম্পানী বেশকিছু সিনিয়র ইমপ্লয়ী কে ছাটাই করল । যাদের বেতন চল্লিশ ছুই করছিল । চল্লিশ হাজারে চারজন ইমপ্লয়ী রাখা যেতে পারে । ইন্ডিয়ান এই চিন্তার কাছে কষ্টকাটিং নামে ছাটাই হলাম । সাথের একমাত্র নারী কলিগ টিকে রইল । যার বাসায় জামাই দেশের বাইরে গেলে দু একজন ইন্ডিয়ান ম্যানেজার দাওয়াত পেত চারটা ডাল ভাত খাবার ।

আটটার অফিস সকাল সাড়ে ছয়টা, সোয়া সাতটায় মধ্যে ঢুকতাম । গুলশান একের মোড়ে বাস থেকে নেমে ফুটপাত দিয়ে হেটে আসবার সময় দেখতাম দোকানদাররা কেবল দোকানের ঝাপি খুলছে । সুর্যের হালকা সোনালী আলোর আভা ছড়াচ্ছে ইতি উতি । পংগু ফকির বিড়িতে শেষ টান মেরে মাথায় টুপি দিয়ে কাধের গামছা বিছিয়ে ফুটপাতে বসার পরিকল্পনা করছে । আর অফিস থেকে বের হতাম রাতের দশটায় । কোনদিন এগারোটায় কোনদিন বারটায় । বার বার মনে হত সুর্য দেখে ঢুকলাম এখন চাদ । দোকারদাররা ঝাপি বন্ধ করে চলে গেছে । সেই ফকির ও নেই । শুধু আমরাই রয়ে গেছি ।

অনেকটা রাজমিস্ত্রীর জীবন । বড় বড় আকাশ ছোয়া অট্টালিকা বানায় কিন্তু থাকতে পারেনা সেখানে । বানানোর পর ফার্নিস হবার পর ঢুকবার অনুমতি নেই । সারাদিন গুলশানে কাজ করি থাকবার সামর্থ নেই । রাজমিস্ত্রির মত । রাজমিস্ত্রীর সাথের জোগালীর মত । এই রাজমিস্ত্রীরা বেশির ভাগ চাপাইনবাবগন্জের হত । গরমে বাড়ী থেকে আম আনত । সেই আমের আটি ফেলে দিত অট্টালিকার সামনে সেটা কখনো সখনো গাছ হয়ে যেত । তাই এই শহরের অনেক বিল্ডিং এর সামনে চোখে পড়ে আমগাছ । শহুরে মুচি, ফ্লাক্চের চা ওয়ালা, মুড়ি চানাচুর ওয়ালা সেই গাছের নীচে দাড়িয়ে মাঝে মধ্যে পসরা সাজিয়ে বসত । মালিক ভাল হলে বসতে দিত না হলে দিতনা । সিকিউরিটি গার্ড এসে তাড়িয়ে দিত । ওয়ারেন বাফেটের আনেক উক্তির মাঝে একটি ছিল গাছ নিয়ে । সামওয়ান ছিটিং ইন দ্যা শেড টুডে বিকজ সামওয়ান প্লানটেড এ টৃ লং টাইম এগো । গুলশানের চাকুরী ছিল ভ্রাম্যমান পসরা সাজিয়ে বসবার মত । শেষ যেদিন বেরিয়ে এলাম সেদিন তেমনটাই মনে হল । জীবনের সাতাশ বছর বয়সে নুরজাহান রোডের শেওলা ধরা প্রাচীরে পোষ্টার দেখে বুঝে ছিলাম বউ পেটানোর নাম পারিবারিক নির্যাতন । পাশে চায়ের দোকানে বসে থাকা বন্ধু বলতে ছিল ওই শাওন্যা তুই হালায় পোস্টারে কি বিসিএসের প্রশ্ন পড় নি ।

চলবে .....









মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: লেখা ভালো হচ্ছে।
চলুক-----

২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৫৭

নীল আকাশ বলেছেন: আপনি বানান নিয়ে কাজ করুন। বেশ কিছু খুব কমন নামের বানান ভুল হচ্ছে। বেশী বানান ভুল ভালো একটা লেখাকেও পাঠকের দৃষ্টিতে নস্ট করে দেয়.........
রাকু হাসান এর এই পোস্ট পড়ে আসুন: শুদ্ধ বাংলা বানানের নিয়ম ;বাংলা বানান শেখার ২০টি বইয়ের লিস্ট এবং ৪৯ টি গুরুত্বপূর্ণ লিংক !! (একের ভিতর সব) Click This Link
১। প্রতিটা কথোপকথনের আগে - হাইফেন ব্যবহার করুন। দেখতে ভালো লাগবে..........
২। সময়/কাল/স্থান পরিবর্তন হলে আলাদা করে প্যারা দিন। এক দুই তিন হেডিং দিন উপরে। পাঠক এতে বুঝবে আপনি অন্য টপিক নিয়ে কথা লিখছেন এখন.......আপনার এক জায়গায় এটা হয়েছে। আটটার অফিস........ এটার সাথে উপরের লেখার মিল নেই। আলাদা করে দিলে খুব ভালো হতো!

ধন্যবাদ। আপনার লেখার সাথেই আছি।

৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:১৭

কিবরিয়া জাহিদ মামুন বলেছেন: ধন্যবাদ পড়বার জন্য শুধরে দেবার জন্য । অনেক বানান কি বোর্ডের কারনে লিখতে পারিনা ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.