![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মনে হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যেমন রেশনিং হয়েছিল তেমন রেশনিং তবে ভদ্রভাষার নোটিশ আকারে । ওয়ালমার্ট, কস্টকো, জেয়ারস, ছোবিচ, ফার্মবয় সহ সব গ্রোসারী শপ ঝুলিয়ে দিয়েছে এমন নোটিশ । এক প্যাকেট ডিম কিনুন । এক প্যাকেট চিকেন ব্রেষ্ট কিনুন ।
মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন মানুষ ঝোপে জংগলে, কিংবা বাংকারে লুকিয়ে থাকত । এখন মনে হচ্ছে বাসায় লুকিয়ে আছি । আমার বড় বোন বলত আম্মার সাথে কি করে বাংকারে পাকিস্তানী আর্মীর ভয়ে লুকিয়ে থাকত । দিনাজপুর থেকে আম্মাকে বড় বোন কে নানা নিয়ে আসে নানীর বাড়ীতে । আব্বার নামে পাকিস্তানী মিলিটারী হুলিয়া জারী করে । আব্বা ইনডিয়াতে পালিয়ে গিয়ে কোন এক ক্যাম্পের ফাস্ট এইড সহকারী হিসেবে নিযুক্ত হন । আব্বাকে যে লোক পালিয়ে যেতে দেখে তাকেও পাকিস্তানী মিলিটারী গুলি করে মেরে ফেলে । প্রায় নয় মাস আম্মা সহ বাকী আম্তীয় স্বজন ধরে নেয় আব্বাকে পাকিস্তানী আর্মী মেরে ফেলেছে । যুদ্ধের দশ মাস পর আব্বা ফেরে । ছোটবেলাতে আম্মা বলত আমাদের দিনাজপুরের বাড়ী লুট হয়েছিল । তখন থেকে আমি ভাবতাম লুট বাংলা শব্দ । এরপর আরও বড় হলে আমার বড় ভাই বেশ চেস্টা করে আব্বার মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট যোগার করবার । যদি সরকারী চাকুরী হবার সুবিধা নিতে পারে । মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডারদের দাবী মেটাতে না পেরে সার্টিফিকেটের আশাকে মোটামুটি ছাই চাপা দিয়ে বড় ভাই ইউ টার্ন নেয় । এখন তো দেখা যায় সহকারী মুক্তিযোদ্ধাও আছে । আবার কারও কারও দেখা যায় নামের আগে পিছে বীর মুক্তিযোদ্ধা । আবার কিছুদিন আগে দেখা গেল মুক্তিযোদ্ধার নাম রাজাকারের লিস্টে । সে কারনেই নাম না জানা কবি লিখেছিলেন যা নাই দুনিয়াতে তা আছে বাংলাদেশে ।
তো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই রেশনিং এত বছর পরে আবার দেখতে হবে কে জানত । যুদ্ধ নেই তবু যুদ্ধের মত জীবন । একটু বেলা করে গ্রসারী শপে গেলে চোখে পড়ছে সেলফ সব ফাকা । এখানকার ফেডারেল সরকার প্রভিন্সিয়াল সরকার ইমার্জেন্সি দিয়েছে । বর্ডার বন্ধ করেছে । ঘরে থাকবার জন্য । অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আমরা ওয়ার জোনে । বাইরে বেরুলেই গুলি খাবার সম্ভাবনা । ইউনিভার্সিটি লোকাল স্টুডেন্টদের বলছে তোমরা বাড়ী চলে যাও । সব ক্লাশ পরীখ্খা এসাইনমেন্ট হবে অনলাইনে । স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সব বন্ধ । কোন কোন প্রভিন্স অনিদিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করেছে । অনিদিষ্টকাল শুনলেই বাংলাদেশের কথা মনে হয় । হরতালে, দুই বেগমের যুদ্ধ, এরশাদ হঠাও আন্দোলনে সব অনিদিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হয়ে যেত । পাচ বছরের পড়াশুনা করতে সময় লাগত ৭ বছর ১০ বছর ১২ বছর ।
কতখন বাসায় থাকা যায় । গেলাম বিশ মিনিটের দুরত্ব নায়াগ্রা ফলসে । সব যেন থেমে গেছে । ফাকা পার্কিং লট । পানির অঝোড় ধারা দেখবার কেউ নেই । দুটো একটা সিগাল উড়ছে । নায়াগ্রা নদীর ক্যানাডার প্রমোদ জাহাজ হর্ন ব্লোয়ার আমেরিকার মেইড অফ দ্যা মিস্ট অলস বসে আছে । পুরো শহরের কফি শপ, বার সব বন্ধ । কফি শপ গুলো ড্রাইভ থ্রু চালু রেখেছে । ভিতরে ঢোকা যাবেনা । জানালা দিয়ে গাড়ী থেকে অর্ডার দিয়ে টাকা পে করে ফুড নিয়ে ভাগ । ভেতরে বসে খাওয়া বন্ধ ।
গতবছর এ সময় নায়াগ্রা ফলসে প্রতিদিন দু লাখ টুরিষ্ট থাকত। রাস্তা জুড়ে থাকত মানুষের কোলাহল । সারা পৃথিবীর মানুষ । বেশির ভাগ চায়নার, ইনডিয়ার, আমেরিকার, ইজরেল, বৃটেন, ইউরোপের । চায়না সব মিলিওয়নিয়ার বিলিয়নিয়ার । এখানে ছোটমোট জব চায়নিজরা করেনা । হালের বিএমডাবলু, ওডি, মার্সিডিজ চালায় । ক্যানাডা গুজের এক হাজার ডলারের জ্যাকেট পড়ে ।
তিনমাস আগে ট্রেনিংয়ের প্রথম দিন মেয়েটাকে দেখেছিলাম । চায়নিজ চেহারা । প্যানটৃ রুমে খাবার পর চোখ বুঝে মন্ত্র পড়ার মত বিড় বিড় করে। কথা বলার সুযোগ হয়নি । সেদিন কথা হল । বল্লাম তুমি কি চায়নিজ । বল্ল হ্যা । এখানে ইউনিভার্সিটিতে পড়ে । বাংলাদেশী বেশ কজন বন্ধু আছে । কথার এক পর্যায়ে বল্ল বাড়ী উহানে ।
বল্লাম তোমার পরিবারের কি অবস্থা ...
বল্ল সবাই ভাল আছে । তারা এখন আমাকে ডাকছে । পরিস্থিতি আমাদের এখানে যেহেতু খারাপ । তবে পরিস্থিতি কতটা খারাপ কেউ সঠিকটা জানেনা । চায়নার পাশে হংকং, তা্ইওয়ান, সিংগাপুর, থ্যাইল্যান্ড এতটা ইফেক্ট করেনি । সতর্কতা ছিল বড় কারন সাথে গরম আবহাওয়া ।
মানচিত্রে উহান যে অখ্খরেখা বরাবর সেটার কিছু কম বা বেশিতে ইরানের কোম শহর, ইটালীর লমবারডি যে গুলো করোনার এপি সেন্টার । অনটারিও তেমন কিছুটা কম বেশিতে । তাই বিপদ আচ করা যাচ্ছেনা । আর সাথে এখনো ঠান্ডা ০, ৭, বা ১৪ ডিগ্রী । আবার ঢাকা উহানের অখ্খরেখার নীচে । আবহাওয়া গরম থাকাতে বিপদের সম্ভাবনা কম আশা করা যাচ্ছে । কিন্তু নিশ্চিত করে বলা যায়না ।
এমন অনিশ্চয়তার মাঝে কাটছে যেন এক মহাকালের এক একটা দিন ।
২| ১৮ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৫৪
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভাইরে ভাইরাস ভাইরাস আর ভালো লাগে না।
৩| ১৮ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:০০
পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনার লেখা বরাবরই মজা করে পড়ি।
গরম আবহাওয়ায় বিপদ কম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের অব্যবস্থাপনায় সে আশা দূরাশায় পরিণত হতে বেশিক্ষণ লাগবে না বলে আশংকা হচ্ছে। আর উহানের মেয়ের পরিবার দেখেছে চায়না কিভাবে বিপদটা সামলেছে, এখন কানাডা বা অন্য রাষ্ট্র সেভাবে সামলাতে পারবে কি না সন্দেহেই হয়তো তাকে ফেরত যেতে বলেছে।
একটা ব্যাপার, আগেও একবার বলেছিলাম- আপনার লেখাগুলো সব একই শিরোনামের কেনো? এবং কয়েকটি লেখা রিপোস্ট হয়েছে কেনো?
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: ছেলেটি থানকুনি পাতা চিবুতে চিবুতে আতশবাজি ফোটানো দেখল।