![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সকল কিছু পুড়ে যাক। ভস্ম থেকে জন্ম নেক চেতনার অগ্নি-পক্ষি।
অগ্নিপক্ষি বলি কিংবা আগুন-পাখি, ইংরাজিতে একেই বলে ফিনিক্স। দুনিয়ার এমন কোনো সাহিত্য নেই, যে এরে নিয়ে দুই লাইন লেখা হয় নি, গদ্যে এবং পদ্যে এর উপস্থিতি সব সময়ই এক ধরনের দ্যোতনা তৈরী করে। পৌরাণিক এই পাখির বৈশিষ্ট্য হলো: পাখিটি আগুনে পুড়ে যায় এবং পুড়ে যাওয়া থেকে আবার জন্ম নেয়। এরপর সময় এলে আবারো আগুনে পুড়ে মারা যায়। অতঃপর ছাই থেকে পুনর্জন্ম।
গ্রিক পুরাণে বলা হয় এই পাখি সারা দুনিয়ায় একটাই থাকে। যখন সে বুড়ো হয়ে যায় তখন একটি বাসা বানিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং নিজে সেই আগুনে ঝাপ দেয়। পুড়ে যায় তার সর্বাঙ্গ। কিন্তু ঐ ভস্ম থেকেই সে আবার জন্ম নেয়। মিশরীয় পুরাণেও একই রকমভাবে এই আগুন-পাখির দেখা মেলে।
জাপানি পুরাণ অনুযায়ী ফিনিক্স জন্ম নেয় সূর্যে। এর ডানায় থাকে সকল রঙের মিশেল এবং কণ্ঠে থাকে মোহনীয় সুর। এর ঝুটি যেন সূর্য আর পৃষ্ঠ যেন চাঁদ। ল্যাজ হলো অপরূপ পুষ্পগুচ্ছ। যেখানেই সে যায়, সেখানেই জড়ো হয় ৩৬০ প্রজাতির পাখি, সম্মান জানানোর জন্য। জাপানি মিথে পুরুষ ফিনিক্সের নাম ইন এবং নারী ফিনিক্সের নাম ইয়াঙ। এরা শুভ সম্ভাবনা বহন করে। কিন্তু চলে গেলে দুর্ভাগ্য গ্রাস করে।
চীনা পুরাণে ফিনিক্স সৌন্দর্য আর সুরের প্রতীক। আর এই কারণেই চীনের বিয়ে অনুষ্ঠানে ফিনিক্সের রয়েছে বিশেষ এক স্থান।
বিশ্বের মোটামুটি সকল পুরাণে তো বটেই চিত্রকলাতেও এই পাখির বর্ণিল অবস্থান লক্ষ্য করা যায়।
ফিনিক্স সম্পর্কে আমার মনে প্রশ্ন জাগে- বিশ্বের প্রায় সব জায়গায় এর এতো সরব অবস্থান কেন? কেনই বা কবি, সাহিত্যিক কিংবা চিত্রশিল্পীর কাছে আগুন-পাখি এতো জনপ্রিয়? তাহলে কি আগুন-পাখি মূলত মানব-প্রেমের প্রতিভূ বা প্রতীক। মানুষের জীবনে যেমন প্রেম ফুরিয়ে যায় আবার সেই ফুরিয়ে যাওয়া থেকে ফের জন্ম নেয় নতুন প্রেম।
নাকি ফিনিক্স সেই প্রত্যাশার প্রতীক যা ফুরিয়ে যায় নিরাশার আগুনে আবারো জন্ম নেয় স্বপ্নের ঘরে। হতে পারে ফিনিক্স "সভ্যতার ইতিহাস"। যে ইতিহাসে আমরা দেখি বারবার কোনো না কোনো জাতি পরাজিত হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে প্রতিপক্ষের দ্বারা কিন্তু তারা আবার মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। যেমন দ্বাবিংশ শতাব্দীতে তাতারদের আক্রমনে পুড়ে ছাই হয় এশিয়ার বহু অঞ্চল। সেগুলোর মধ্যে চীনের একটি বড় অংশ ছিলো। কিন্তু তারা ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছিলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঝলসে দেয়া হয় জাপানকে পারমানবিক বোমার আঘাতে। সেই ধ্বংসস্তুপ থেকেই তারা আবার নিজেদের গড়ে তোলে। একইভাবে একাত্তুরে বাংলাদেশ।
হতে পারে ফিনিক্স মানব বৈশিষ্ট্যের সেই বিশেষ দিক, যেখানে মানুষ চুরমার হয়ে যাওয়া স্বপ্ন থেকে নতুন স্বপ্নের বীজ বোনে। তাই স্বপ্নরা কখনো মরে না। স্বপ্নরা হয়ে যায় অমর। আগুন-পাখির মতো।
যাহোক, লেখাটি কোনো প্রবন্ধ নয়, এলোমেলো চিন্তার ডানায় কিছুক্ষণ উড়ে বেড়ানো মাত্র। সূর্যের ঘরে গিয়ে আগুন দেবো বলে। মানে আত্মাহুতি। নতুন জন্মের জন্য। কারণ ধ্বংসের মাঝেই সৃষ্টির বীজ লুকানো থাকে। নিজেকে ভাঙার মধ্য দিয়েই নতুনভাবে গড়ে তোলা যায়। এমন ভাব-সংসার নিয়েই চলছি আমরা, নিজের মধ্যে আগুন-পাখিকে ধারণ করে।
২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ৯:৪০
মিলটনরহমান বলেছেন: মহাযানী না হীনযানী?
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ১০:৪০
বিধান রিবেরু* বলেছেন: বৌদ্ধ ধর্মের প্রাচীন (হীনযান) কিংবা দার্শনিক নাগার্জুন প্রদর্শিত অপেক্ষাকৃত নয়া বৌদ্ধমত (মহাযান)- কোনোটা ভেবে বা ভাবান্দোলিত হয়ে লিখি নি। শুদ্ধ মানব চরিত্র ও আগুন পাখিকে ভেবে লেখা। ব্যাস।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১১:৫৯
হেল-বয় বলেছেন: এই পক্ষিটা নরক থেইকাই দুনিয়ায় আসছিলো। পরে আমি হেরে আটকাইয়া রাখছি।
আপনের লেখা খুব ভালো হইছে। তাই ++++