নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
'সংস্কার' কথাটির অর্থ কী?
এড়িয়ে চলা, মেরামত করা, বিশ্বস্ত হওয়া, পুনঃস্থাপন করা। ব্যাকরণ গত ভাবে সংস্কার বিশেষ্য পদ। এর অর্থ শোধন, শুদ্ধি, পরিষ্করণ, মন্ত্রাদি দ্বারা শোধন ইত্যাদি। হিন্দুশাস্ত্রানুযায়ী অনুষ্ঠান; উৎকর্ষসাধন, উন্নতিসাধন, মেরামত; ধর্মবিহিত অনুষ্ঠান; ধারণা, বিশ্বাস
আবার যে কোন জাতি, গোষ্ঠি বা গোত্রের পরম্পরায়- দীর্ঘদিনের চলমান বিশ্বাস, বোধ, রীতিনীতিকেও সংস্কার অর্থে প্রকাশ করা হয়। আবার এর না বোধক প্রকাশে তা কুসংস্কার হিসেবে গণ্য হয়।
সাধরণভাবে সংস্কার বলতে ভুল, দুর্নীতিগ্রস্ত, অসন্তোষজনক ইত্যাদির উন্নতি, পরিবর্তন বা সংশোধনকে বোঝায়।
শব্দের আধুনিক ব্যবহার ১৮ শতকের শেষের দিকে আবির্ভূত হয় এবং বিশ্বাস করা হয় যে এটি ক্রিস্টোফার উইভিলের অ্যাসোসিয়েশন আন্দোলন থেকে উদ্ভূত হয়েছে, যা চিহ্নিত করেছে " সংসদীয় সংস্কার" এর প্রাথমিক লক্ষ্য হিসাবে।
আমাদের দেশে প্রচলিত হলেও বিষয়টি ব্যাপক ভাবে সামনে আসে ২০২৪-এর কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে।
বাংলাদেশে সব ধরনের সরকারি চাকরিতে প্রচলিত কোটাভিত্তিক নিয়োগ ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে সংগঠিত একটি আন্দোলন। ২০২৪ সালের ৫ জুন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের জারি করা পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণার পর কোটা পদ্ধতির সংস্কার আন্দোলন আবার নতুনভাবে আলোচনায় আসে।
যেই কোটা সংষ্কার আন্দোলন থেকে ক্রমশ এক দফা দাবীতে আন্দোলন এবং ৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ১৭ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান হয়। শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারত চলে যান।
এরপর গঠিত হয় অন্তবর্তীকালীন সরকার। এবং তারপর থেকে সংষ্কার আরও বেশি গণমানুষের জীবনে চর্চিত বিষয় হয়ে ওঠে। নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সর্বস্তরে সংস্কারের দাবীতে সোচ্চার হয়ে ওঠে মানুষ। মিডিয়া, সামরিক বাহিনী, পুলিশ বাহিনী, বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন সর্বত্র সংস্কারের দাবী উঠতে থাকে। এবং প্রথমে সরকার ৬টি সংস্কার কমিশন গঠন করে কাজ শুরু করেছেন। যা চলমান।
ওয়েবাসাইটের মাধ্যমে গণমানুষের মতামত আহবান করা হচ্ছে। সুশীলজনদের মতামত এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞজনদের সাথে মিটিং, সিটিং চলছে।
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র সংস্কার ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো মুখর রয়েছে। কোনো কোনো দল প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন দাবি করলেও কিছু রাজনৈতিক দল সংস্কারের জন্য বেশি সময় না নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশে নির্বাচন আয়োজনের জন্য মতামত জানিয়ে রেখেছে।
লক্ষণীয় বিষয়, বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র সংস্কার ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে দাবি তুললেও নিজেদের দলের সংস্কার নিয়ে তেমন কোনো আগ্রহ প্রকাশ করছে না।
অথচ রাষ্ট্র সংস্কারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কারও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এদিকে রাজনৈতিক দলসমূহ সংস্কারের পক্ষে মত দিলেও বারবার ইনিয়ে বিনিয়ে নির্বাচনের জন্য প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ চাপাচাপি করছে। বলছে- সংষ্কার আমাদেরও স্বপ্ন। একমাত্র রাজনৈতিক নির্বাচিত সরকারই পারে সংস্কার করতে। ইত্যাদি।
আমাদের প্রসংগ এখানেই। সব কিছুরই সংস্কারে দাবী উঠেছে। রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার হবে কবে? রাজনৈতিক দলগুলোর সংষ্কার করবে কে? বা রাজীনীতির সংষ্কারইবা করবে কে?
এ বিষয়ে খুবই স্পষ্ট ভাবে নির্বাচিত সরকারের অধীনে রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি তোলায় রাজনৈতিক দলগুলোর অতীতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেছেন, আজকে তারা বলছে, সংস্কার তারাই সবচেয়ে ভালো করতে পারবে, এটাই তো গণতান্ত্রিক দেশের কথা। তাইলে তারা ৫৩ বছর কেন করেন নাই?
শুক্রবার ১৩ ডিসেম্বর গুলশান সোসাইটি জামে মসজিদের সামনে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক এক কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। রিজওয়ানা বলেন, কেন আজকে আমাদের দায়িত্ব নেওয়া লাগল, উড ইউ প্লিজ অ্যানসার? তাদেরকে (রাজনৈতিক দল) ছাড়া সমস্যার সমাধান হবে না- এটা সঠিক কথা, এটাই তো হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সমস্যার সমাধান করবে। তাইলে আজকে বায়ুদূষণ নিয়ে আমাকে কেন প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে। শব্দ দূষণ নিয়ে গুলশান সোসাইটিকে কেন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হচ্ছে।
তারা যে সমস্যার সমাধান করে ফেলবে- তারা কি কোনো রূপকল্প আমাদেরকে দিয়েছে? তারা বলছে, রোডম্যাপ দিতে হবে, এই করতে হবে…। তারা কি একটি রোডম্যাপ দিয়েছে যে তারা কীভাবে এ সমস্যার সমাধান করবে?
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের প্রশ্ন আজ জাতির গণ মানুষের।
রাজনৈতিক সংস্কারের রুপ-রেখা কই?
রাজনৈতিক দলগুলো, তারা কিভাবে নিজেদের বদলাবে। প্রচলিত রাজীতির পদ্ধতি বা ধ্যান-ধারনা অকার্যকর হয়েছে বিধায়ই তো জুলাই বিপ্লব। তাহলে আবার যে কোন ভাবে শুধু সরকারের আরেকটা দল বদল তো বিপ্লবের লক্ষ্য নয়।
আগে আওয়ামীলীগ খেয়েছে এখন বিএনপি খাবে? বিষয়টা এমন হলে কেউই তা মেনে নেবা না। বা এমন হলে তা জুলাই বিপ্লবের শহীদদের আত্মত্যাগকে অবমূল্যায়িত করা হবে।
যদিও মাঠে ময়দানে সেই বিষবাষ্প পদে পদে ছড়িয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বাসস্ট্যান্ড দখল থেকে শুরু করে বাজার সিন্ডিকেট, ফুটপাত থেকে জুট ব্যবসা সর্বত্রই শুধু চেহারা বদল হয়েছে। পদ্ধতি আগেরটাই আছে। এমনটা কারও কাম্য নয়।
আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তারে সেই পুরাতন স্টাইলে হানাহানি মৃত্যুর খবরও পত্রিকায় পাতা ঘাটলেই ভুরি ভুরি মিলবে। অমুক ভাইয়ে লোক, তমুক ভাইয়ের লোকের সংষ্কৃতির পরিবর্তন ঘটেনি। যদিও রাজনৈতিক দলগুলোর চাপের কারণে দখলের বিস্ফোরণ ঘটেনি, কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে শুধু অফিসিয়াল ক্ষমতায় আসার অপেক্ষায় ঠোট কামড়ে পড়ে আছে।
এমন যাতে না হয় সে জন্যে সকল সংস্কারের পাশে রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের সংষ্কার এখন সময়ের প্রয়োজন।
আমরা চাই রাজনৈতিক দলগুলো এ বিষয়ে সততার সাথে সৎ সাহসের সাথে এগিয়ে আসবে নিজেদের সংশোধনে। নিজেদের নীতি-পদ্ধতিকে আরও স্বচ্ছ করে নিজেদের সংস্কার করুক।
আমরা আমেরিকার কথা বলি। সেখানে দেখি একজন কৃষ্ণাঙ্গ ওবামা অবলীলায় প্রেসিডেন্ট হয়ে যান। আমাদের রাজনৈতিক দলে এমন যোগ্য কিন্তু প্রান্তিক কোন নেতৃত্বের বিকাশ বিগত ৫০ বছরে কেউ দেখেছে কি? না সে সুযোগ আছে?
তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায়, বহু বছর ধরে দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। সচেতন নাগরিক সমাজ ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠী এ নিয়ে সরব রয়েছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে নির্বাচন কমিশনও রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার নিয়ে অনেক আগে উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু কার্যত সে উদ্যোগ ততটা সফল হয়নি।
রাজনৈতিক দলের সংস্কারের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগের একটি ছিল, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইনের অধীনে নিবন্ধিত দলগুলোর জন্য দলের গঠনতন্ত্র কমিশনে জমা দেওয়ার একটি সময়সীমা নির্ধারণ করা। দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের পর্যাপ্ত আইন ও বিধি বিদ্যমান থাকলেও দলের সংস্কার বিষয়ে আর তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। কেন হয়নি-এ প্রশ্নের উত্তরও পাওয়া যায়নি।
তবে অনেকেই বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার নিয়ে দলের নেতৃত্বের মধ্যেই এক ধরনের অনীহা বা অনিচ্ছা কাজ করায় নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সংস্কার নিয়ে আর বেশিদূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত যেসব রাজনৈতিক দল রয়েছে, সেসব দলের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, বেশির ভাগ দল গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুযায়ী পরিচালিত হয় না।
রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃত্ব নির্বাচন করতে হলে দরকার গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুসরণ।
অনেক ক্ষেত্রে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্বাচন প্রক্রিয়া দলীয় জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে উপস্থিত রাজনৈতিক প্রতিনিধি ও কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে সম্পন্ন হলেও তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃত্ব নির্বাচন করতে গণতান্ত্রিক রীতি অনুসৃত হয় না।
এমন অনেক দল রয়েছে, যেসব দলের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে যেভাবে নির্দেশনা আসে, সেভাবেই দলের পরবর্তী নেতৃত্ব নির্বাচন থেকে দলের অন্যান্য সাংগঠনিক নেতৃত্ব নির্বাচিত ও দলীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে।
এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশের খবরও প্রায়ই সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়ে থাকে। কখনো কখনো রাজনৈতিক দলের সম্মেলনে, তা জাতীয় পর্যায়ে হোক কিংবা আঞ্চলিক বা জেলা পর্যায়ে হোক, নেতৃত্ব নির্বাচনে অগণতান্ত্রিক ধারা অনুসরণ, দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং মতবিরোধের কারণে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে থাকে।
এসব ঘটনা অনেকক্ষেত্রে সহিংসতার রূপ নেয়। এর প্রধান কারণ, দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুসরণ না করা। দেশে সরকারের গণতান্ত্রিক আচার-আচরণের হিসাব-নিকাশ নেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো সবসময় সোচ্চার থাকে। অথচ নিজেদের দলে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও চিন্তা-চেতনার প্রয়োগের তেমন কোনো নমুনা দেখা যায় না।
প্রচলিত পরিবারতন্ত্রের ঢামাঢোলে বিগত ৫০ বছর আমরা গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের বিকাশ দেখতে পাইনি। দেখেছি দলীয় লেজুরবৃত্তি, গ্রুপিং, লবিং। ফলে যা হয়েছে অন্ধ নেতৃত্বের বিকাশ ঘটেছে। ব্যক্তি প্রীতি এবং আনুগত্যে যোগ্য মেধাবীরা পিছিয়ে পড়েছে। কারণ তার আত্মসম্মানবোধ, তার শিক্ষা তাকে সে পথে চলতে দেয়নি। ফলে অযোগ্য এবং দলান্ধ জ্বি হুজুরেরা ক্রমশ মহিরুহ হয়ে উঠেছে। যা দেশের বতর্মার ও ভবিষ্যত রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত বৈ নয়।
দেশ ও জনগণের স্বার্থেই এ ধরনের অবস্থান থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে বেরিয়ে আসতে হবে।
রাজনৈতিক দল কীভাবে গঠিত হবে, কীভাবে পরিচালিত হবে এবং দলগুলোর আয়ের উৎস কী, আয়-ব্যয় কীভাবে হবে, এসব বিষয় নিয়ে স্বচ্ছতার স্বার্থেই অনুপুঙ্খ জানার অধিকার দেশের সাধারণ মানুষের রয়েছে।
অথচ রাজনৈতিক দলগুলোকে দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জনসমক্ষে প্রকাশ করতে দেখা যায় না। একটি রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, দলের হিসাব প্রতি বছর অডিট করা হবে এবং অর্থবছর সমাপ্তের ছয় মাসের মধ্যে অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে।
এ নিয়ম দলের গঠনতন্ত্রে লিখিত থাকলেও বাস্তবে দলের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের অডিট করা বা কোনো অডিট রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করার কোনো খবর প্রকাশিত হতে দেখা যায়নি। এসব বিষয়েও সংস্কার জরুরি।
গণতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য রাষ্ট্রে প্রচলিত আইন-বিধির আওতায় উপযুক্ত যে কোনো নাগরিক রাজনৈতিক দল গঠনের অধিকারী হলেও জনগণের সংখ্যানুপাতে অনিয়ন্ত্রিতভাবে দল গঠন কতটুকু সমীচীন, তা ভেবে দেখার সময় এসেছে। কারণ অনিয়ন্ত্রিতভাবে রাজনৈতিক দল গঠনের কারণে অপরাজনীতির সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের সংস্কারের মাধ্যমে এখন দরকার অপরাজনীতি নিয়ন্ত্রণ। রাজনীতি নয়, অপরাজনীতি নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্ত ও সহযোগিতা দরকার।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত তথ্যমতে, দেশে ৪৮টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে। নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে ২০০৮ সালের ৩ নভেম্বর মাত্র ১১টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত হয়। একই বছর অক্টোবর মাসে দুটি দল নিবন্ধন লাভ করে। পরবর্তীকালে আরও ৪০টি দল নিবন্ধিত হলেও নিবন্ধনের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে যতগুলো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের উল্লেখ রয়েছে, বাস্তবে দেশে রাজনৈতিক দলের সংখ্যা আরও বেশি। সাধারণ মানুষের কত অংশ নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের নাম জানেন, তা এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
রাজনৈতিক দলের সংখ্যা যাই থাকুক না কেন, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখা। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতান্ত্রিক নিয়মনীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এভাবে দেশে গণতান্ত্রিক ভিত্তি মজবুত করা সম্ভব নয়।
রাজনীতির সংষ্কার তাই সবার আগে গুরুত্ব দেয়া উচিত। প্রচলিত ধোঁয়াশা স্বপ্ন বা প্রতিশ্রুতির রাজনীতি থেকে বেরিয়ে প্রকৃত উন্নয়ন ও কর্ম পদ্ধতি , বাস্তবায়নের সমস্যা-সম্ভাবনা, তাতে গণমানুষের অংশগ্রহনের সুযোগ, উপকারীতা, দেশের কল্যানে তা কিভাবে ভুমিকা রাখবে তার স্পস্টিকরণ প্রয়োজন।
রাজনীতিবিদ হওয়ার নূন্যতম যোগ্যতা, শিক্ষার বাধ্যবাধকতা, নির্বাচন পদ্ধতি, প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার নির্বিঘ্নে প্রয়োগের অধিকারের চর্চা
যার যার নিজ দলে সবার আগে শুরু হওয়া উচিত। এবং রাষ্ট্র সংস্কারের এই শুভ ক্ষণে সব রাজনৈতিক দলের উচিত নিজের ঘর থেকে গণতন্ত্রের চর্চার বাস্তব উদাহরণ তৈরী করা। নির্বাচনের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব বাছাই যেমন দলকে এগিয়ে নেবে, তেমনি এগিয়ে নেবে দেশকেও।
ছবি কৃতজ্ঞতা: https://www.geeksforgeeks.org/
২| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৮
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
গ্রীক মিথলজির মত বেঙ্গল মিথলজি থাকলে, এখানে এসব সম্ভব।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:১৩
জুল ভার্ন বলেছেন: সবার আগে সংস্কাবাদীদের মন-মানসিকতার সংস্কার জরুরী। এতো জীবনের বিনিময়ে অর্জিত বিপ্লবের বিপ্লবীরাও ক্ষমতার জন্য নতুন দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে, সেই সংগে ফ্যাসিবাদের দোসর কাউন্সিলরদের দলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সহ-সভাপতি পদে লোক খুঁজতেছে।