![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
করি আঁধারের সাথে খুনসুটি/ থাকি অভাজন নীরব শমিত/ ডাকি অদৃশ্য নিরাকার সত্বা
রোজনামচার খাতা থেকে
================
আমাদের নেরু ভাই মানে Nesar Uddin Rumman ভাই খু-উ-ব চাপা স্বভাবের মানুষ; একদম ভিতরবুদে। কাউকে কিচ্ছুটি বুঝতে দেন না। বুকের ভেতর পুকুর খুঁড়ে দিব্যি ঘুরে বেড়ান অম্লানবদনে। সব দুখ, শোক চাপা দি’ রাখেন বুকের জমিনে। ‘দুঃখমোড়া মানুষ’ বললে হয়তো বাহুল্য হবে তবে ‘কষ্টেমোড়া মানুষ’ বটে। মাঝে-মধ্যে ভেঙ্গে পড়েন, ব্যথার ভারে ঝোঁকে পড়েন তবুও কাউকে বুঝতে দেন না। থাকেন স্বাভাবিক উচ্ছল, নিরোদ্বেগ। ভেতরটাতে ঝড় বয়ে যায়; কাল বৈশাখী ঝড় তবুও তিনি থাকেন অটল, মজবুত, নিটল। এ কষ্ট অর্থ কষ্ট নয়। তিনি পারিবারিকভাবে স্বচ্ছল বরং উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্য। অবশ্যি একটু জাত্তাভিমান বেশী। মান-অভিমান লক্ষণীয়। অল্পতেই অনেক বেশী হয়ে যায়। বলছি যখন একটু খোলাসা করেই বলি কেননা সাগরে সজ্জা পাতবো আবার শিশিরেও ভয় করবো তা কী করে হয়? কিছুদিন আগে একটা বিষয়কে কেন্দ্র করে মনটা বেশ ভারী হয়ে ওঠে। উনি মনোকষ্টে ঝোঁকে পড়েন খানিকটা। ওর পর থেকে সারাক্ষণ মন বেজার। চঞ্চল মানুষটা কেমন উবে গেলেন। তোতা পাখিটা কেমন চোপসে গেলেন। হয়ে গেলেন নির্বাক। কোন রকমে দিনটা পেরোল। দুপুর গড়িয়ে বিকেল আসল। একটি শুষ্ক বিকেল। তাঁর কষ্টা ভাগাভাগি করতে এগুলুম। সেধে জিগ্যেস করলুম___দিলপাড়ার খবর কী? উনি বলতে লাগলেন। তার কথাগুলো মনোযোগ দি’ শুনলুম।
***************************
হয়তো বা দু’চোখ গলে গলে, গণ্ড বেয়ে দু’ফোঁটা অশ্রু গড়ায় নি। যদিও বা পকেটের রুমাল নোনা জলে সিক্ত হয় নি; তবুও আমি-আমরা কেঁদেছি, কেঁদেছে সত্ত্বা, কেঁদেছে একটি বিকেল। একে অন্যের কষ্ট ভাগাভাগি করা যায়, করা যায় মনের লেনা-দেনা; জানতাম তাই বলে এতটা! তা জানা ছিল না। আমার বুক চিরে, চোখ ফেটে কান্না আসছিল। আসারও যথেষ্ট কারণ ছিল। সে যে বোবা কান্নায় ডুকরে ওঠছিল। কথাগুলো আমায় বলছিল কান্না জড়িত কণ্ঠে। তার সবটুকুন কষ্টই শুষে নিচ্ছিল আমার দু’চোখ। কথাগুলো আঁতে লাগা ছিল। তাঁর ব্যথায় আমিও যে ব্যথিত, ব্যথাতুর। আমার ভেতরটা সত্যিই কেঁদেছে। আর কাঁদবেই বা না কেন কারণ আমি যে তার একমাত্র মুগ্ধপাঠক। একটি বিকেল অবাক চোখে দেখেছে দু’টি হৃদয়ের আহুতি, শুনেছে বুকের হুহু কান্না, ব্যথিত পরাণের হাহাকার উতরোল ধ্বনি। আমি ভুলি নি; ভুলতে পারি না সে বিকেলের কথা। মনে পড়লেই কাঁদি, কেঁদে কেঁদে ভাসায়ে দেই দুঃখের কচুরিপানা যদি ধুয়ে যায় পাঁজরের এপাশে-ওপাশে লেগে থাকা কিছু কষ্ট।
************************
যার সাথে কথা হতো শুতে শুতে, ঘুম হতে উঠে কথা হতো যার সাথে। কথা চলতো দিনমান। সুযোগ পেলেই কথা। কত দিক নিয়ে কথা বলতাম আমরা; প্রধান থাকতো সাহিত্য। কথা হতো হাস্য-রসের। কৌতুক হতো মাঝে-মধ্যে। ভারাক্রান্ত দিল পুলকিত হতো। খুশির জোয়ার বইতো হৃদয়পানে। কিন্তু হায় পরিতাপ, হায় ভাগ্য আমার! সব খুয়া গেল। অজানা এক কাল বৈশাখী ঝড়ে সব ধূলিসাৎ হয়ে গেল। করে দিল তছনছ। মুখ থাকতেও আমি মূক বনে গেছি, হয়ে গেছি নির্বাক, নিশ্চল, নিথর পাথর। মনের মণি কোঠায় ভিড় করে অজস্র না বলা কথা। তড়পায় সবুজ প্রাণ। হাউমাউ করে বিক্ষত হিয়া। ব্যথিত আশয়ের আকুতি অহরাতি কানে বাজে। আমি নিরুপায়, অসহায়। নিয়মের বেড়াজালে আমি বন্দী। আবদ্ধ আমি কারাগারে। এ আমি কোন্ গোরে। জীবন্ত মানুষের এ আবার কোন্ কবর?
©somewhere in net ltd.