নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেইল : [email protected]

বিপ্লব০০৭

...

বিপ্লব০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আল্লা আছে কি নাই!

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৩১



নাস্তিকতায়ও কি কোন ধরনের বিশ্বাসের ব্যাপার আছে? নাস্তিকতা কি একধরনের বিশ্বাস? নাস্তিকতায় বিশ্বাসের ব্যাপার আছে কিনা তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শ্রোতার কাছে তুলে ধরার পূর্বে জানা দরকার "বিশ্বাস" সম্পর্কে শ্রোতার ধারণা কি। প্রথমেই যেকোন বচনের সুস্পষ্টতার জন্য তার অন্তর্ভুক্ত সকল টার্মগুলো সম্বন্ধে শ্রোতা ও বক্তার নিজ নিজ ধারণার ব্যাপারে সহমত, সুস্পষ্টতা এবং বোধগম্যতা অপরিহার্য। সুতরাং ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস কিংবা অবিশ্বাস সংক্রান্ত আলোচনার আগে কিংবা যেকোন সংজ্ঞা ঠিক করার জন্য প্র্রথমেই 'ঈশ্বর' এবং 'বিশ্বাস' কার নিকট কি অর্থ বহন করে সেটি স্পষ্ট করা প্রয়োজন। সেটি না করে নাস্তিকতা সম্পর্কে আলোচনা করাটা নানান সমস্যার সৃষ্টি করবে...কিভাবে দেখা যাক।


ঈশ্বরের সংজ্ঞাকেন্দ্রিক জটিলতা :




একজন মুসলিম বলবেন, 'ঈশ্বর বলতে আমি বুঝছি যিনি এক ও অদ্বিতীয়, মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা...আমাদের পালনকর্তা, তিনি কাউকে জন্ম দেন নি, কারো কাছ থেকে জন্মগ্রহণও করেন নি', যা খ্রীস্টিয় ঈশ্বরের ধারণার বিশ্বাসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ আবার কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অনিশ্চয়তা তত্ত্ব নিয়ে অস্বস্তিতে-পড়া আইনস্টাইন যখন তত্ত্বটির বিপরীতে অবস্থান নিয়ে বলেন, 'ঈশ্বর জগত নিয়ে জুয়া খেলেন না।'-তখন ঈশ্বর সংক্রান্ত সংজ্ঞাকেন্দ্রিক অস্পষ্টতার ভ্রান্তিতে পড়ে যেকোন ব্যক্তিই ভাবতে পারেন আইনস্টাইন একজন ধর্মপরায়ণ 'আস্তিক' ছিলেন। একটি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে দেখলাম প্রাবন্ধিক আইনস্টাইনের এই বাক্যটি 'মেটাফিজিক্যাল' আখ্যায়িত করে আইনস্টাইনকে তুলোধোনা করেছেন...মূলত প্রবন্ধকারের ঈশ্বরের সংজ্ঞা আর আইনস্টাইনের ঈশ্বরের সংজ্ঞা এক নয় এবং প্রবন্ধকারও ব্যাপারটি ধরতে পারেন নি।


সুতরাং এইটা প্রমাণিত হল, ঈশ্বর বলতে কে কি বুঝছেন তা প্রথমেই নির্ধারণ করা প্রয়োজন, তা না হলে সংজ্ঞাকেন্দ্রিক বৈপরীত্য কিংবা অস্পষ্টতার প্রেক্ষিতে নানান ধরনের জটিলতা উদ্ভূত হবে।


বিশ্বাসের সংজ্ঞাকেন্দ্রিক জটিলতা :


'বিশ্বাস' শব্দটির সংজ্ঞা এবং ব্যবহারের স্থল নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তিতে পড়েন। আর এ বিভ্রান্তির সুযোগ আস্তিক-নাস্তিক-অ্যাগনস্টিক (Agnostic) ত্রিপক্ষই নিতে পারে এবং অন্যায়ভাবে নিজের মতামতের সপক্ষে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। আস্তিকদের প্রায়ই এ সুযোগটি নিতে দেখা যায়।


সহজ কথায় বলা যায়, যা প্রমাণিত নয় তাই বিশ্বাস... 'বিশ্বাস' বা 'জানা' সমার্থক নয়। আমি 'যা' 'বিশ্বাস' করি তা কিন্তু আমি 'জানি না'। মুসলিম হিসেবে আমরা অবশ্যই বলবো, আমরা আল্লাহর অস্তিত্বে 'বিশ্বাস করি' বা আমরা 'বিশ্বাস করি' আল্লাহ আছেন। আমরা যদি বলি, আমরা 'জানি' আল্লাহ আছেন, তবে কিন্তু তা আর 'বিশ্বাস' থাকলো না, আমাদের 'বিশ্বাস' বা ঈমাণ নষ্ট হয়ে গেল। কারণ আল্লাহ যদি এই মুহুর্তে আমাদের সামনে প্রতিষ্ঠিতই হয়ে যান তবে আর বিশ্বাস বা ঈমাণের প্রশ্নও আসে না।


...একজন খ্রীস্টান জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে বলে উঠেন, 'God Knows!' তেমনি একজন মুসলিম বলে উঠেন, 'আল্লায় জানে বা আল্লা মালুম!' কিন্তু যখন উত্তরটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জানেন, তখন কিন্তু আর ঈশ্বর বা আল্লাহর প্রয়োজন পড়ে না। ব্যাপারটি লক্ষনীয় এবং তাৎপর্যপূর্ণ। এ কারণে সকল ধর্মের ধার্মিক পন্ডিতগণ সর্বদা মানবজাতির অর্জিত জ্ঞানের যে সকল দিক অস্পষ্ট বা আজও অজ্ঞাত সেসকল দিক দিয়ে প্রায়ই আক্রমণ চালান। একসময় সূর্যগ্রহণের ঘটনায় আদিম মানুষ যখন আরেকজনকে জিজ্ঞেস করতো এর ব্যাখ্যা, তখন উত্তর আসতো, "'God Knows!', কিন্তু বর্তমানে আমাদের দুর্ভাগ্য বা সৌভাগ্য যে আর এই জ্ঞান শুধু ঈশ্বরের হাতেই সীমাবদ্ধ নেই, তাই আজ আর তা 'ঈশ্বর জানেন না', আজ মানুষই তা জানে। এবার ধর্মের পন্ডিতদের উপায় কি? উপায় একটাই- মানুষের লব্ধ জ্ঞান বা প্রাপ্ত উত্তরকে আবার প্রশ্নবিদ্ধ করা। সূর্যগ্রহণ কেন হয়- এটি নিয়ে ধর্মীয় পন্ডিতগণ আর আগের মতন প্রশ্ন রাখেন না যেহেতু ব্যাপারটি এখন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের নিকট ব্যাখ্যাযোগ্য! ফলে তারা পরবর্তীতে প্রশ্ন রাখেন, 'মহাকর্ষ বল কি?', সেই সাথে প্রচ্ছন্ন উত্তরটাও দিয়ে দেন, 'গড নোজ!' প্রচ্ছন্নভাবে তিনি এই কুযুক্তিটিই প্রতিষ্ঠিত করতে চান যে, মহাকর্ষ বল কি এর উত্তর দিতে না পারলে ঈশ্বর অস্তিত্বমান! কিংবা গডই হচ্ছেন মহাকর্ষ বলের 'cause', তা না হলে এটাকে বোধগম্য ভাষায় ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে না কেন সূর্যগ্রহণের মতন? (একই কুযুক্তি তারা ব্যবহার করে, পারমাণবিক স্তরে ইলেকট্রন-প্রোটনের মধ্যকার স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণ বলের ক্ষেত্রেও)।



আইনস্টাইন ১৯১৫ সালে দেখিয়ে দিয়েছেন, মহাকর্ষ বল মূলত স্থান-কালের বক্রতা...এবার ১৯১৫ সালের পরে যে ধর্মীয় পন্ডিত এই ব্যাপারটি জানেন তিনি প্রশ্ন করবেন, 'তাহলে স্থান-কালের বক্রতা কি?' আধ্যাত্নবাদী বা ধার্মিক পন্ডিতদের এই কৌশল খুবই কাজে দেয় আস্তিক ও নাস্তিকের আলোচনায়। (প্রাণ কি, মানুষ কি প্রাণকে ব্যাখ্যা করতে পেরেছে, ল্যাবে কি প্রাণ সৃষ্টি সম্ভব হয়েছে, বিগ ব্যাং -এর কজ কি, টাইমের যদি শুরু থাকে তবে তার আগে কি ছিলো...- এগুলো সবই এই স্তরের কুতর্ক। এসব প্রশ্নের উত্তর না পেলে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণিত হয় না।)

আপেক্ষিকতা নীতি স্থান ও সময় সম্বন্ধে প্রচুর অস্পষ্টতা সৃষ্টি করেছে, একসময়কার সাধারণ ভাবনায় আমরা সময়, স্থান কিংবা ভরের যে সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছি তা আইনস্টাইনের সময় থেকে পাল্টে গিয়েছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে তত্ত্বগুলিও জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে, তত্ত্ব যত গভীর স্তরের হবে সাধারণ মানুষের কাছে ততই কমবে তার গ্রহণযোগ্যতা। মজার ব্যাপার হল, কোনদিন যদি প্রমাণিত হয়, পরমাণুর কেন্দ্রে নেগেটিভ চার্জসম্পন্ন কোন কণিকার অস্তিত্ব অসম্ভব, তাহলে ইলেকট্রনের তত্ত্ব বাতিল হবে। এবার কিন্তু আর পূর্বোক্ত ধর্মীয় পন্ডিতগণ, পূর্বের ন্যায় তীক্ষ্ণ প্রশ্নবাণ রাখবেন না যে, 'বলুন তো দেখি, ইলেকট্রন আর প্রোটনের মধ্যকার স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণ বলটি কোথা থেকে আসে?' ! তারা বরং ভোল পাল্টে এবার এভাবে যুক্তি রাখতে পারেন যে, 'বিজ্ঞান আজ যে তত্ত্বের স্বীকৃতি দিচ্ছে কাল তা বাতিল করে দেবার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারে না, সুতরাং ধর্মীয় তত্ত্বের বিরুদ্ধে যে সকল বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব বিদ্যমান সেগুলো নির্ভরযোগ্য হতে পারে না।' মূলত দেখা যাচ্ছে এসব ধর্মীয় পন্ডিত সুবিধাবাদী নীতি অবলম্বন করছেন, আবার এও ঠিক প্রকৃত আধ্যাত্নবাদী এসবের ধারে-কাছেও ঘেঁষবে না। কোন তত্ত্ববিশারদ কি বলল তা নিয়ে তার মাথাব্যাথা নেই কারণ তার কাছে বিশ্বাসই প্রধান্য পায় সর্বদা।


বিশ্বাসেরও রকমফের আছে। কচ্ছপের উপর পৃথিবী অবস্থিত-এই কাল্পনিক তত্ত্বের সপক্ষে সমর্থনযোগ্য কোন তথ্য নেই, কেউ তত্ত্বটিতে বিশ্বাস স্থাপন করলে তা হবে 'ভিত্তিহীন বিশ্বাস'। পরবর্তীতে লব্ধ জ্ঞানের সাপেক্ষে যখন সমস্ত তথ্য তত্ত্বটির বিপক্ষে যাবে তখনও যদি কেউ তাতে বিশ্বাস রাখে তবে তা হবে 'অন্ধবিশ্বাস।' সাগরের দিকচক্রবালে তীরের দিকে আগমনকারী যেকোন জাহাজের পাল দেখা যায় সর্বপ্রথমে, ধীর ধীরে জাহাজটার অন্যান্য অংশ দৃশ্যমান হয়- এ থেকে গ্রীকরা পৃথিবী গোলাকার এই কল্পনে পৌঁছেছিল। তেমনি পৃথিবী ঘূর্ণনশীল- এটিও একধরনের কল্পন; বিভিন্ন পরীক্ষা, পর্যবেক্ষণ এবং সমর্থিত তথ্য হতে যার গ্রহণযোগ্যতা একটি নির্দিষ্ট মাত্রা পেয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কালের সাপেক্ষে নতুন নতুন পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা এবং তথ্য ও উপাত্ত এই বিশ্বাসের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে পারে, কমাতেও পারে কিংবা তত্ত্বটিকে সম্পূর্ণ ধ্বংসও করে দিতে পারে।


প্রতিষ্ঠিত তত্ত্ব (Theory) 'বিশ্বাস' থেকে 'জ্ঞানে' (Knowledge) উপনীত হয়। তখন তা হয় এক বা একাধিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাস বা একধরনের 'প্রতিষ্ঠিত কল্পনা'। অবশ্য জ্ঞান আর বিশ্বাস নিয়ে বিশদ আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে এক্ষেত্রে। 'ইলেকট্রন' সম্বন্ধে একজন কবির জ্ঞান আর একজন বিজ্ঞানীর জ্ঞান এক নয়।


যিনি পরমাণুবাদের উপর ব্যাপক পড়াশোনার প্রেক্ষিতে একটি গভীর উপলব্ধিতে পৌঁছাননি তার কাছে, 'ইলেকট্রন পরমানূর অভ্যন্তরে অবস্থিত বস্তুকণা যা প্রোটনকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে'। আবার পরমানুবাদের গভীরে যে বিজ্ঞানী প্রবেশ করেছেন তিনি 'উপলব্ধি' করেন যে, সাধারণ মানুষের বাস্তব পৃথিবীর সাপেক্ষে আক্ষরিক অর্থে যদি বিবেচনা করি তবে এটি জাস্ট একটি তত্ত্ব যা আমাদের বস্তুসমূতের ক্ষুদ্রতম স্তরের আচরণ ব্যাখ্যায় সাহায্য করে।


তবে কি ইলেকট্রন বলে সত্যিই কিছু নেই? না, অত হালকাভাবে দেখলে হবে না। ইলেকট্রনের অস্তিত্ব মিথ্যা নয়। এ ক্ষেত্রে ব্রাউন উত্তরটা দিয়েছেন দা ভিঞ্চি কোডে- ইমাজিনারি নাম্বার সম্পর্কে ল্যাংডনের স্মরণীয় উক্তিটি কোট করি,`No more false than that of a mathematical cryptographers who believes in imaginary numbers because it helps her break codes.’ গাণিতিক কাল্পনিক সংখ্যার অস্তিত্বের মতনই এক্ষেত্রে ইলেকট্রনের অস্তিত্বে আক্ষরিক অর্থে বিশ্বাস বা অবিশ্বাসের প্রশ্ন আসে না । কাল্পনিক সংখ্যা বাস্তবে সম্ভব না হলেও, বাস্তব সমীকরণের সমাধানে তার অস্তিত্ব মেনে নিতে হচ্ছে। অনিশ্চয়তা-তত্ত্বে-অবিশ্বাসী অতিমাত্রায় জাগতিক চিন্তা-ভাবনার অধিকারী আইনস্টাইনের বক্তব্যে তাই রাদারফোর্ড জবাব দেন, এ হয়তো একটি তত্ত্বই শুধুমাত্র, কিন্তু এমন এক তত্ত্ব যা আমাদের পদার্থের আচরণ ব্যাখ্যায় সাহায্য করে।


দেখা যাচ্ছে নানান ক্ষেত্র আলোচনায় আসলে বিশ্বাসের সংজ্ঞা গভীর এবং ব্যাপক। বাট্রান্ড রাসেল তাই যখন বলেন, "I may say that when I was a young man, and was debating these questions very seriously in my mind, I for a long time accepted the argument of the First Cause, until one day, at the age of eighteen, I read John Stuart Mill's Autobiography, and I there found this sentence: "My father taught me that the question, Who made me? cannot be answered, since it immediately suggests the further question, Who made God?" That very simple sentence showed me, as I still think, the fallacy in the argument of the First Cause.[Why I Am Not A Christian, The First Cause Arguement] ", তখন তা সত্যিই খুব খেলো যুক্তি মনে হয়। ইলেকট্রন তত্ত্বের মতই ঈশ্বরতত্ত্ব একটি গভীর উপলব্ধির বিষয় যেখানে সংশ্লিষ্ট শব্দগুলো আক্ষরিক অর্থে নিলে চলবে না। সুতরাং ঈশ্বরের ক্ষেত্রে আলোচনার সময় প্রতিটি টার্ম আমাদের সুনির্দিষ্ট, সুস্পষ্ট এবং বোধগম্য করতে হবে, না হলে সৃষ্টি হবে ভাষাভিত্তিক হেত্বাভাস (Fallacy) কিংবা দ্ব্যর্থকতা (Ambiguity) যার প্রেক্ষিতে ঈশ্বর যদি আমাদের সৃষ্টি করেন, তবে ঈশ্বরকে কে সৃষ্টি করেছেন- এ জাতীয় খেলো যুক্তি নিয়ে ঈশ্বরের অনস্তিত্বের দিকে অগ্রসর হবো আমরা।


জ্ঞানের সাথে বিশ্বাসের সম্পর্ক আছে। "...আগে বিশ্বাস, তারপর জানা…।’ পৃথিবীতে আসলে আমরা সব ‘বিশ্বাস’ করি। প্রত্যেকটি 'জানা'-ই 'বিশ্বাস' হতে উদ্ভূত যে বিশ্বাসের একটি নির্দিষ্ট মাত্রা আছে, কিন্তু কোন বিশ্বাসের মাত্রাই ১০০% নয়। ‘আমি জানি’- কথাটাই পৃথিবীতে ভুল। সত্যিই কি আমি জানি কাল সূর্য উঠবে? আমি আসলে বিশ্বাস করি। যে বিশ্বাসের মাত্রাটা খুব দৃড়, সেই বিশ্বাস থেকেই আমার জানা।"


তবে বিশ্বাসের মাত্রা দৃড় হলেই চলবে না, বিশ্বাসটির সপক্ষে সমর্থন এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রয়োজন।


"জ্ঞানের সহিত বিশ্বাসের ঘনিষ্ঠতম সম্পর্ক। বরং বলা হইয়া থাকে যে, জ্ঞানমাত্রেই বিশ্বাস। তবে যে কোন বিশ্বাস জ্ঞান নহে। প্রত্যক্ষ ও অনুমানের উপর যে বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত তাহাকেই জ্ঞান বলা হয়। প্রকৃত প্রস্তাবে ইহাই খাটি বিশ্বাস। পক্ষান্তরে, যে বিশ্বাস কল্পনা, অনুভূতি, ভাবানুষঙ্গ বা কামনার উপর প্রতিষ্ঠিত তাহা জ্ঞান নহে। তাহাকে অভিমত বলা হইয়া থাকে। চলতি কথায় ইহার নাম ‘অন্ধ বিশ্বাস’। সচরাচর লোকে এই অন্ধবিশ্বাসকেই ‘বিশ্বাস’ আখ্যা দিয়ে থাকে। কিন্তু যাহা খাটি বিশ্বাস তাহা সবসময়ই বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতা প্রসূত, প্রত্যক্ষ ও অনুমানের উপর প্রতিষ্ঠিত।" [আরজ আলী মাতুব্বার রচনাসমগ্র ১]


বিলিফ, ফেইথ এবং ট্রাস্টের বাংলা করা হয় বিশ্বাস। যেকোন টার্ম ব্যক্তির মনে তার অর্জিত জ্ঞান, উপলব্ধি ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই ভিন্ন ভিন্ন তাত্পর্য নিয়ে বিদ্যমান। ইংরেজিতে অভিমানের কোন সঠিক প্রতিশব্দ নেই। প্রেমিকের দেরি করে আসার পর প্রতীক্ষার প্রহর গুনে বসে-থাকা ইংরেজ প্রেমিকা কখনো 'অভিমান' করে না, হয় রেগে যায় না হয় হেসে ফেলে। কিন্তু বাঙ্গালী প্রেমিকা অভিমান করে বসে থাকে যা রাগান্বিত অবস্থাও নয়, আবার প্রসন্নতাও বলা যায় না; দুটি পদার্থের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় মধ্যবস্থায় সৃষ্টি হওয়া সক্রিয়নকৃত জটিল অবস্থা এটা অনেকটা! সঠিক প্রতিশব্দ না থাকার কারণে তাই ফেইথ, ট্রাস্ট আর বিলিফ শব্দত্রয়কে বাংলায় ঢালাওভাবে বিশ্বাস বলে অনুবাদ করা হয় যার ফলে বিশ্বাস, অন্ধবিশ্বাস আর যৌক্তিক বিশ্বাসের পার্থক্য করা যায় না । ধর্মের বিশ্বাসের সাথে বিলিফ বা ট্রাস্টের সম্পর্ক নাই, আছে ফেইথের। কারণ ধর্মের মূলভিত্তিই হল এমন এক ধরনের বিশ্বাস যা যে কোন ধরনের ঘটনা, পর্যবেক্ষন, তথ্য ও উপাত্তের বিপরীতে অটুট থাকবে। মজার ব্যাপার হল প্রধান বড় বড় ধর্মগুলো (যেমন : ইসলাম, খ্রীস্টান ধর্ম) আলোচনার পূর্বেই প্রথমেই বলে দেয় যে, এমনকি সংগ্রহীত তথ্য বা উপাত্ত কখনোই তার গ্রহণযোগ্যতা খর্ব করবে না এবং বিশ্বাস স্থাপনের পর বিশ্বাসীকে সে দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারেই সমস্ত তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করতে হবে! ফলে একজন নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন মানুষ যিনি ধর্ম নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেন তিনি একজন ধর্মপরায়ণ আস্তিক কিংবা কট্টর নাস্তিক অপেক্ষা অধিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হন না।


হ্যারি পটারের একটি জনপ্রিয় উক্তি (ডাম্বলডোরের), 'I trust Severus Snape.' শিক্ষক স্নেইপের (আপাত দৃষ্টিতে খলনায়ক) উপর হ্যারি পটারের কোন 'Belief' নেই, কিন্তু তারপরও বহুদিন ধরে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষালব্ধ উপাত্তের ভিত্তিতে প্রফেসর ডাম্বোলডোরের 'Trust' অর্জন করেছে স্নেইপ। স্নেইপের ওপর আমার নিজেরও Belief ছিল, কিন্তু Trust নয় কারণ ডাম্বোলডরের সংগৃহীত তথ্য বা উপাত্ত লেখিকা জে. কে. রোলিং আমাকে দেননি পাঠক হিসেবে! যা ডাম্বোলডরের সাপেক্ষে ট্রাস্ট তা আমার সাপেক্ষে বিলিফ। কিন্তু যখন সে ডাম্বোলডরকে হত্যা করে নিষ্ঠুরতার সাথে (Harry Potter & the Half-blood Prince) তখন আমার সেই বিশ্বাস(Belief) ভেঙ্গে যায়। তথাপি এরপরও স্নেইপের কোন অন্ধভক্ত যদি যদি ডাম্বোলডরের বিশ্বাসে (Trust) আস্থা না হারায় তবে তার বিশ্বাসটি হবে Faith (মজার ব্যাপার হল, এরপরও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভক্ত স্নেইপের উপর বিশ্বাস রেখেছিল, হ্যারি পটারের শেষ বইটি বেরুবার পূর্বেই আগের ছয়টি বইয়ের বিশদ বিশ্লেষণ করে বহু পন্ডিত প্রবন্ধ লিখেছিলেন স্নেইপের সপক্ষে। ডাম্বোলডরের উক্তিটি নিয়ে খোলা হয়েছিল নানান ফ্যানক্লাব, ওয়েবসাইট! শেষ পর্বে (Harry Potter & the Deathly Hallows) প্রমাণিত হয় আসলেই স্নেইপ বিশস্ত (Trustworthy) ছিল আর স্নেইপের বিশস্ত (Faithful) ভক্তরাও সঠিক প্রমাণিত হল!) ।


এই রকম আরো নানান সংজ্ঞাকেন্দ্রিক বিভ্রান্তি ও অস্পষ্টতা যে মুসলিমদের মাঝে ব্যাপক, ছোট্ট একটি উদাহরণ দিচ্ছি। রাসূল বলেছেন, 'জ্ঞানার্জনের জন্য প্রয়োজনে সুদূর চীনদেশে যাও।' (হাদিসটি বিতর্কিত, তারপরও ইসলামের জ্ঞানের গুরুত্ব প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য) একজন জ্যোর্তিবিদ যিনি এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত সকল গুরুত্বপূর্ণ তারার নাম মুখস্ত বলতে পারেন তিনি যদি মনে করেন রাসূলের কথার কিছুটা হলেও তিনি মান্য করেছেন তবে তিনি ভুল করবেন। কারণ তিনি একই সংজ্ঞাভিত্তিক ভুল পড়েছেন, তিনি বুঝতে পারেননি, সমস্ত গ্রহ-নক্ষত্রের নাম (যেমন : সিগনাস, আলতেয়ার, ক্যাপেলা কিংবা চাঁদের বিভিন্ন স্থানের নাম) মানুষের দেয়া, এর কোন প্রকৃত তাৎপর্য নেই আল্লাহর কাছে। ইসলাম অনুযায়ী জ্ঞানের (এলেম) সংজ্ঞা হল, 'যা সত্য' এবং 'সত্য একমাত্র আল্লাহ তায়ালা বা তাঁর নিকট হতে প্রেরিত বাণী।' আপনি যদি C++ , Java, Oracle কিংবা Php -তে PhD-ও করেন, তারপরও সেটি ইসলামের দৃষ্টিতে জ্ঞান বলে স্বীকৃতি পাবে না। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা এবং তার প্রেরিত কিতাব কিংবা শরীয়তের বিধান; এ সম্পর্কিত ব্যাখ্যা, হাদীস, নবী-রাসূলদের জীবনী- ইত্যাদি জ্ঞান অর্জন করতেই মূলত বলা হয়েছে এখানে।


সুতরাং দেখলাম যে, নাস্তিকতা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা আদান-প্রদানের পূর্বে আমাদের 'ঈশ্বর' এবং 'বিশ্বাস' সংক্রান্ত আলোচনা প্রয়োজন। তা না হলে সংজ্ঞাকেন্দ্রিক অস্পষ্টতার পাঁকে পড়ে প্রগতিশীলদের আলোচনায় আইনস্টাইন সমালোচিত হবেন 'আস্তিক' হিসেবে অপরদিকে কুরআনের আয়াত বিকৃতকারী রাশাদ খলিফাও মুমিন মুসলমানদের ১৯-তত্ত্বের রেফারেন্সে বিবেচিত হবেন কুরআনের অলৌকিকত্ত্ব প্রমাণকারী ধর্মপরায়ণ আস্তিক রূপে; চলতে থাকবে কূটতর্ক যার কোন সমাধান নেই। আল্লা আছে কি নাই তা নিয়ে তর্ক করার আগে আমাদের "বিশ্বাস" এবং "ঈশ্বর" এই সব ব্যাপার-স্যাপার ক্লিয়ার করা দরকার...।


আমাদের বন্ধুদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জিজ্ঞেস করেছে, আমি আল্লায় বিশ্বাস করি কি করি না...কিংবা "আল্লা আছে কি নাই"? আসলে প্রশ্নগুলোই ভুল এবং খেলো। আল্লা আছে/নাই- এভাবে ডিরেক্ট কিছু বলা যাবে না, কারণ আছে/নাই এর সাথে জড়িত অস্তিত্বের (Entity) প্রশ্ন। এখন অস্তিত্ব/আছে/থাকা বলতে আমরা কি বুঝি? কাল্পনিক সংখ্যা কি আছে? কি অর্থে? ইলেকট্রন কি অস্তিত্বমান? কি অর্থে? এসব ভিন্ন ভিন্ন চিন্তার বিষয়... ফলে অস্তিত্ব কি, বিশ্বাস কি এসবই তারা ক্লিয়ার করে নাই, না করেই অনেকে মুক্তমনা নাস্তিক হয়ে যাচ্ছে তথাকথিত আধুনিক বিজ্ঞান/প্রগতিশীলতার দোহাই দিয়ে যেখানে বিজ্ঞান নিজেই যত উচ্চস্তরে যায় ততই বিমূর্ত (Abstract) হতে থাকে।

ধর্মের মর্ম না বুঝে এত সহজেই ধর্মগ্রন্থগুলো বাতিল বলে ছুড়ে ফেলে দিবো তথাকথিত আধুনিক প্রগতিশীল মুক্তমনা হয়ে? আমাদের সমাজ বদ্ধ সমাজ বলে আমরা হয়তো আমরা হয়তো ধর্মের বিধি-বিধান না পারি, কিন্তু ধর্মকে ছুড়ে ফেলা সম্ভব? ধর্মকে যারা ভক্তিভরে দেখেন, তাদের সাথে যুক্তিবাদী নাস্তিকের বৃথা তর্কে সময় নষ্ট করাটা অর্থহীন। কিন্তু আমি নিজের ধর্মে অবিশ্বাসীদের এও বলতে চাই : "ধর্ম মানবসৃষ্ট" বা "কোরান মোহাম্মদের রচনা"- এই কথাটা মুক্তমনা হয়ে বলতে/শুনতে যতটা সহজ মনে হচ্ছে ততটা সহজ নয়। আমরা একটা বদ্ধ সমাজে বসবাস করি যেখানে প্রথাবিরোধী চিন্তাকে কঠোর হাতে দমন করা হয়। আমাদের সমস্যা হল, এই বদ্ধ সমাজে ধর্মের নানান অনাচার, ভুল প্রয়োগ, কু-প্রথা, কুসংস্কার দেখে আমরা ধর্মবিরোধী হয়ে যাচ্ছি, ধর্মের ঈশ্বরের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলছি...। আবার ধর্মের পন্ডিতরাও যারা আমাদের উদ্ধার করতে পারতেন তারা বর্তমানে কূপমুন্ডুক। যুগের আলোকে ধর্মের নতুন ব্যাখ্যা হাজির করতে তারা পারছেন না। ফলে বিভিন্ন মিডিয়া যেমন পত্রিকা-ব্লগসাইট-ম্যাগজিনে ধর্ম-সংক্রান্ত আলোচনায় নাস্তিকরাই বেশি গ্ল্যামারাস। আমি নাস্তিক বলতে বোঝাচ্ছি প্রচলিত ধর্মে অবিশ্বাসীদের প্রধানত...নাস্তিকতার মিনিং বহুমুখী। তো বর্তমানে আবার এসব নাস্তিকদের কল্লা কাটার জন্য কূপমুন্ডুক তৌহিদী জনতা এক পাঁয়ে খাড়া। এর নীট ফল হল, ধর্ম কি, সেটা কেন আসছে, ধর্ম মানে আসলেই কি খালি কুসংস্কার-কুপ্রথা; মোহাম্মদ-জেসাস-মোজেসের মতন কতিপয় প্রফেটের সমাজকে কন্ট্রোল করার জন্য বানানো বিধি-বিধান নাকি আরো কিছু-- এসব না জেনেই ধর্মকে ছুড়ে ভাববাদী নাস্তিকদের ক্রমবর্ধমান উৎপাদন আর যুক্তিবাদী আস্তিকদের কোরানে বিজ্ঞান আবিষ্কার।

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:১৬

সনেট কবি বলেছেন: একবার নজর বুলিয়ে গেলাম। পরে সময় করে পড়ব।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:১৯

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: আপনি এইটা না পড়লেও তেমন কিছু হবে না। :)

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৩

রিফাত হোসেন বলেছেন:
ধৈর্য নিয়ে পড়তে হয়েছে। :) belief, faith, trust ৩টা শব্দ অন্তত আমার কাছে ৩টা তিনভাবে ব্যবহার হতে পারে। গড়পরতা বিশ্বাস দিলে সঠিক হবে না। ১ম টি ও ২য় টি বিশ্বাস যেখানে প্রমাণ কাজ করলেও করতে আর আবার নাও করতে পারে। আর শেষেরটির অনুবাদ বললে হবে আস্থা যেখানে যুক্তি প্রমাণ থাকতে হবে। আস্থা ভাজন হওয়া বিশ্বস্ত হওয়া এক ব্যাপার নয় যদিও।

কম্পিউটার প্রোগ্রাম যদি জ্ঞান হিসেবে না ধরা হয় তাহলে মানব সেবাকেও উপেক্ষা করা হয়। এগুলির মাধ্যমে জটিল প্রোগ্রাম তৈরী করার সম্ভব যা দিয়ে রোগ বিশ্লেষণ করা যায়। শুধু মেশিন থাকলেই তো হবে তাকে চালনার জন্য কেন্দ্র উপাত্ত দরকার। পৃথিবীর সারা জীবন একই রকম থাকবে না। বেচেঁ থাকার জন্য স্থান, জ্বালানী ইত্যাদি লাগবে। অন্য গ্রহ থেকে সংগ্রহ করে সংকট মোকাবেলা করতে হবে। এটা দীর্ঘ একটা গবেষনা মাধ্যম যা অর্জন করা সহজ কিছু নয়। আর তা মানব সেবায়যুক্ত হবে, মানুষের বেচেঁ থাকার জন্য।
অভিমানটার অর্থ আমি জার্মান এ শিখেছি এরগেয়ারলিখ। আমি আসলেই একসময় এর ইংরেজী জানতাম না। জার্মান শিখার সময় জানলাম এটার ইংরেজী অর্থ হাফ। আমি জেনেছিলাম, আপনাকেও জানালাম।

তবে ভাল লেখেছেন। আরেকটা পর্ব লেখার আশা করছি। দ্বিমত পোষন করছি না, আপনি ভাল লিখছেন। দুই দিকেই জানার সুযোগ রয়েছে।

দুনিয়াতে নিয়ন্ত্রণ ছাড়া কিছুই নাই। সব কিছুতেই একটা মূল কেন্দ্র থাকে। বাকি বুঝটা মানুষের উপর ছেড়ে দিলাম।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৩

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: লেখাটা অনেক আগের, ইন্টারে থাকা-কালীন; সে সময়ের চিন্তা-ভাবনায় অনেক গলদ ছিলো যেমনটা আপনার লেখায় উঠে আসছে। কম্পিউটার সায়েন্সকে ইসলামের দৃষ্টিতে জ্ঞান বলে একসময় মনে হতো না, তবে এখন চিন্তা পাল্টেছে। জ্ঞান যেকোন আকারেই নিজেকে প্রকাশ করতে পারে। সমস্যাটা মনে হয়, অতিমাত্রায় বিমূর্তকরণে...চাঁদের ম্যাপ হাতে নিয়ে আমার মনে হল, এই যে চাঁদের বিভিন্ন স্থানের নামকরণ করা হয়েছে (মূলত রাশান ও আমেরিকানদের দ্বারা) এইসব নামের সাথে সাধারণ মানুষের তেমন কোন পরিচিতি নাই। একজন দক্ষ জোর্তিবিদ যিনি এইসব নামগুলোও গড়গড়িয়ে বলতে পারেন তাকে আমার ঠিক জ্ঞানী মনে হয় না। আমার মনে হয়- তিনি টেকনিক্যাল কিছু টার্ম আয়ত্ত্ব করেছেন এই যা। টেকনোলজিক্যাল টার্ম আর ইসলামের এলেম- এই দু'য়ের মাঝে সম্পর্ক তাই আমার কাছে খুব দূরবর্তী মনে হয়...যদিও আপনি মানবসেবার যে পারস্পেকটিভ থেকে কম্পিউটার প্রোগ্রামকে দেখাচ্ছেন সেই দৃষ্টিকোন থেকে একে "এলেম" বলে স্বীকৃতি দিতে আমার আপত্তি নাই।

অভিমানের নাকি ইংলিশ প্রতিশব্দ নেই। কীটস একবার তাঁর কবিতায় rich anger শব্দদ্বয় ব্যবহার করেছিলেন যেইটাকে অভিমানের সবচেয়ে কাছাকাছি ইংলিশ শব্দ ধরা হয়! ইংরেজি অর্থ "হাফ" কিভাবে হয় ধরতে পারছি না। ভালো থাকেন, আর বেঁচে থাকলে আরেক পর্ব আসবে।

৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৪

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: আল্লাহ আছে কি নাই সেই চিন্তা কেনো করছেন ? আপনি আছেন তো, নাকি ? নিজেকে নিয়ে ভাবুন - আপনার মতো ব্লগার ফেসবুকার গণ তৈরি করছে নাস্তিক আর ধর্মবিদ্ধেস - দুঃখিত সত্য কথা বলতে হয়েছে ।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৩

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: অনেকে আমার কাছে এসে জানতে চাইতেছে, "আল্লাহ আছে কি নাই?" এককথায় উত্তর দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছি। সেই থেকেই এই লেখা। আপনার কমেন্ট পড়ে বুঝা যাচ্ছে, শিরোনাম দেখেই আপনি মন্তব্য করেছেন। আমার মতন ব্লগার, ফেসবুকাররা যদি নাস্তিক আর ধর্মবিদ্ধেষ তৈরি করে থাকে, তবে আপনাদের দায়িত্ব বা কর্তব্য হল সেটি কিভাবে করছে সেইটা বুঝে প্রতিরোধ করা। দায়সারা মন্তব্যের মাধ্যমে সেইটা কি সম্ভব হবে? ;)

৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:০০

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: আপনার শুধু শিরোনাম পড়েছি, পোষ্ট পড়ার প্রয়োজন আছে কি? আল্লা আর আল্লাহ শব্দের তফাৎ কি জানেন ? আপনি আল্লাহ তত্বে পিএইচডি করেছেন ভাই, - আপনার কাছে মানুষ জানতে চায় আল্লা আছে কি নাই ? আমি প্রতিরোধ করি না, তবে খোলা ব্লগে লিখেছেন তাই উত্তর দেওয়া, আপনি বিশ্ব ইস্তেমা মাঠে ইস্তেমা চলাকালীন সময়ে মাইকে জিগ্যেস করবেন আল্লা আছে কি নাই ? আশা করি আপনি সঠিক উত্তর পাবেন । ইংলিশ, আরবী, ফার্সী, বাংলা ব্যাখ্যা খোজার প্রয়োজন পরবে না। (আমি ইমোটিক ছবি ব্যাবহার করি না, এটা ছোট ছেলে মেয়েদের কাজ)

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:১০

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: আমি দু:খিত। প্রশ্নটা আমার কাছে ঠিক যে উচ্চারণে এসেছে সেভাবেই তুলে দিয়েছিলাম। বিশ্ব ইজতেমা মাঠে যাবার দরকার নাই, খোদ আপনার কমেন্ট-প্রতিকমেন্টেই ঘটনাটা স্পষ্ট আমার কাছে!

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:২৬

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: আল্লাহর অস্তিত্ব-অনস্তিত্ব নিয়ে আমি চিন্তিত নই, আমার ভাবনার বিষয় হল; তিনি যদি অস্তিত্বমান হয়েই থাকেন তবে আমার কাছে এ প্রশ্ন আসার কথাই ছিলো না!

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৩৫

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: মূল সমস্যা হল আপনি পোস্ট না পড়েই মন্তব্য করেছেন। তাই পরিশ্রম করে মন্তব্য লিখতে হচ্ছে। দেখেন, বিশ্ব ইজতেমা মাঠে যদি আমি মাইকে চিৎকার করে আল্লাহ তায়ালার আছে কি নাই- তা জানতে চাই তবে সঠিক উত্তর পাওয়ার নিশ্চয়তা আপনি কিভাবে দিচ্ছেন? ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী ধর্মপ্রাণ মানুষগুলোকে আপনি মহাবিশ্বে কোনটা "সঠিক" তার মাপকাঠি বা প্রমাণদন্ড হিসেবে ধরছেন?

৫| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:০৯

লায়নহার্ট বলেছেন: {এ ধরনের লেখা পাবলিক আর কত খাবে? দেখেন আপনার এখানে কেউ এসে আর ঝগড়া করছে না, দয়া করে ক্লিক করে ভিউ বাড়াচ্ছে}

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:১৯

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: আমার এখানে এসে ঝগড়া করতে হলে পুরো লেখাটা পড়তে হবে। অতবড় পোস্ট পড়ার সময় অনেকেরই হয় না। পাঠকদের কোন দোষ নাই।

৬| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:২৬

লায়নহার্ট বলেছেন: {ঠিক}

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৩৭

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: চটকদার শিরোনাম, অথচ পোস্ট পড়তে বড়ই বিরক্তিকর; ধৈর্য নিয়ে পড়া ছাড়া কোন উপায় নাই।

৭| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৩৯

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: আল্লা আছে কি নেই তার চে বড় কথা কোরান সত্য কিনা নির্ভুল কিনা। যার সবচে বড় প্রমান চাঁদ দ্বিখন্ডনের দাগ নাই। এছাড়াও সীমেনের অবস্খান মেরুদন্ডের নীচে না অন্ডকোষে বা রক্ত জাচবাধলে সে ভ্রুন আর নিষিক্ত হতে পারে কিনা এগুলো তো প্রতিষ্ঠিত সত্য। অনেকটা নিউটনের তিন সুত্র। আর ইলেকট্রনের ব্যাপাপে দেখলাম ভদ্রলোক জর্জ গ্যামোর দর্শন মেনে লিখেছেন। জর্জ গ্যামোকে কি বলা হয় জানেন? গোপাল ভাড়

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:০৫

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: ইলেকট্রন নিয়ে আমার ধারণাটা ব্যাখ্যা করি।

ইলেকট্রনের "প্রকৃত" অস্তিত্ব কথাটি এ অর্থে এনেছি যে, আমরা যে অর্থে কোন সত্তার (Entity) আছে-থাকা ইত্যাদি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করি সেগুলোর মধ্যে প্রচুর দ্ব্যর্থকতা আর অস্পষ্টতা থাকে। পৃথিবীতে আমি নিজেকে ব্যক্তি (Subject) -এর স্থানে বসিয়ে বিভিন্ন বস্তু (Object) -কে আমার চেতনায় এক ধরনের সংবেদন (Perception) নিয়ে উপলব্ধি করছি, জানছি, স্পর্শ করছি, বুঝছি, অনুভব করতে চেষ্টা করছি। ফলে ইলেকট্রনের Visibility নেহাৎ-ই খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয় আমার কাছে; আমার চিন্তা হল- ইলেকট্রন তার সত্তা (Entity) নিয়ে কত রকম ডাইমেনশনে আমার কাছে প্রতিভাত (Reflected) হচ্ছে। আমি আমার ভালোবাসার মানুষটিকে দেখি, স্পর্শ করতে পারি, অনুভব করতে পারি, তার ছোঁয়া পাই, তার সাথে আমার যোগাযোগ ঘটে, তার সাথে কথা বলি। তার অস্তিত্বের (Entity) সত্যতা ব্যাপক এবং বহুমুখী ডাইমেনশন নিয়ে বিদ্যমান। এখান থেকেই আসে আমার বিশ্বাস (Trust)। কিন্তু আমি ইলেকট্রনকে দেখি? না। আমি কি ওকে স্পর্শ করতে পারি? না। আমি কি ওকে অনুভব করি? না। ইলেকট্রনের অস্তিত্বের (Entity) -এর সত্যতা আমার কাছে আসে টেক্টট (Text) হয়ে; যেসব টেক্টট আবার এসেছে ইতিহাসের পথ-পরিক্রমায় বিজ্ঞানীদের Filtered যৌক্তিক চিন্তার উপর ভিত্তি করে। পরীক্ষালব্ধ ফলাফল সেইসব চিন্তাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু এই প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে এখনও যে কারণে ইলেকট্রনের অস্তিত্ব -ও আজকের দিন পর্যন্ত অতীতের সমস্ত পরীক্ষালব্ধ ফলাফলের উপর প্রতিষ্ঠিত; কিন্তু ইলেকট্রনের অস্তিত্বের উপর আমার ট্রাস্ট অবশ্যই একটু ভিন্ন রকমের হবে আমার কাছে।

এমন নয় কি যে আসলে- আমার সামনে শত-সহস্র ফলাফল (Results) [যেমন: ক্যাথোড-রে টিউব দ্বারা পরীক্ষার অবজার্ভেশনাল রেজাল্ট]; এগুলো দেখে আমি বুঝতে চাচ্ছি এই ফলাফলগুলো পিছনে কে (Who/What) আছে? তার পিছনে কে আছে? তার পিছনে কে আছে? ইলেকট্রন? হ্যাঁ, তাইতো! "ইলেকট্রন" নামক কনসেপশনটি এই ফলাফলগুলোকে ব্যাখ্যার একটা পর্যায়ে আছে। তার মানে এই নয় ইলেকট্রন খুব কনস্ট্যান্ট কিছু একটা। আমরা ফলাফল থেকে সিদ্বান্তে এসেছি ঘূর্ণনশীল কণিকার ধারণায়, কিন্তু ব্যাপারটা স্রেফ এমন যে- আমি কিছু এক্সপেরিমেন্টাল সিগনাল পাঠাচ্ছি আর ওগুলো রিফ্লেক্টেড হয়ে ফেরৎ আসছে আমার কাছে...সেসব রিফ্লেক্টেড সিগনালের বৈশিষ্ট্য থেকে আমি ইলেকট্রনের আকার, গতি, আচরণ, বৈশিষ্ট্য, চার্জ সম্বন্ধে কল্পনা করে নিচ্ছি। ইলেকট্রন তাই এক ধরনের কল্পনা (Imagination), কিন্তু বেশ ভালো এবং উঁচুমানের কল্পনা যেটা আমাদের মাইক্রোলেভেলে বস্তুর আচরণ ব্যাখ্যায় বেশ সহায়ক এবং এখনও পর্যন্ত তার ভিত অটুট। এই কল্পনা পরবর্তীকালে পরীক্ষার মাধ্যমে নিজের ভিত্তি সুদৃড় করে জ্ঞানের স্তরে আরোহণ করেছে... আমার দর্শন এইই!!!

৮| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:৩২

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: ভাই, আপনের বেসিকে গন্ডগোল লাগছে। আমি বুঝতেছি না আপনে ১ম বর্ষে না ২ য় বর্ষে কিন্তু আপনার প্রিইন্জিনিয়ারিং কোর্সের কোয়ান্টাম ফিজিক্সের সাথে অলিভার হ্যাভিসাইডের সার্কিট ও ইলেক্ট্রনিক্সের সেমিকন্ডাক্টর ফিজিক্স গুলায় ফেলছেন। ভাই, একটা সাধারন কুশ্চেন আপনে যে একটা ফুল বা মদের বোতল আপনার টেবিলের সামনে পড়ে রইছে, যেটা আপনে দেখতাছেন সত্যি কি এগুলো দেখতেছেন? এর সবচে সোজা এনালজী হইলো ম্যাটলবে একটা জেপিজি ছবির ইমেজরীড কমান্ড দেন। দেখেন কি পান? সংখ্যা গুলো আর গভীরে যান সবগুলোই তার কালারের পিক্সেল রেট এইটারে আরও ডিকনভার্স করলে পাইবেল মাক্স ডিমাক্সের কোড, যা সব ১ এবং ০।

আমাদের মাথায় ১, ০ দিয়া কাজ করে না কিন্তু তারা একটা সিগন্যালের বিভিন্ন লেভেল মানে এনালগ সিস্টেম নিয়া কাজ করে। আপনে যা দেখতেছেন তা মূলত আলোর রিফ্লেকশন। এমনকি এতো জীবানু থিকা শুরু কইরা যে জীন বা কোষ তা কিন্তু হাত দিয়া ছুইতে পাইতেছেন না।

সেভাবে আপনি যদি ইলেক্ট্রন দেখতে চান দুইটা কারনে দেখবার পারবেন না একটা হইলো আপনে রিলেটিভিস্টিক টাইমে আছেন তাই আলোর গতির কাছাকাছি তার অস্তিত্ব দেখবার পারবেন না আরেকটা কারন হইলো পাউলির অনিশ্চয়তার তত্ব। তারপরও আপনারে সুইডিশ বিজ্ঞানীদের এই জার্নাল লিংকটা দিলাম। মনোযোগ দিয়া পড়েন।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৫:১০

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: চতুর্থ বর্ষে। ফুল বা মদের বোতল আমার সামনে পড়ে থাকলে এগুলো কি সত্যি সত্যি দেখতেছি কি না তা নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাবো না। ফুল পড়ে থাকলে ওইটার গোড়ার দিক পানির বোতলে বা গ্লাসে রাখবো তাজা রাখার জন্য, আর মদের কোয়ালিটি ভালো হলে ওইটা গলাধকরণ করবো- এই হইলাম 'আমি'। ইলেকট্রন দেখার সমস্যার কথা রিলেটিভিস্টিক টাইমের দিক হতে জানা আছে, তবে পাউলির অনিশ্চয়তা নাকি অপবর্জন তত্ত্ব? আমারতো মনে হয় এইটা হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা হবে। ইন্টারে পাউলির এক্সকুশন প্রিন্সিপলটা তোঁতাপাখির মতন মুখস্ত করছিলাম, কিন্তু এর মানে বুঝি নাই। এখনো এই অপবর্জন তত্ত্ব আমার কাছে পরিষ্কার না (তবে ভরসা হল- আপনি আছেন! সমস্যা কি আর?)। আর আমার বেসিকটা আপনার কাছ থেকে আরেকটু ক্লিয়ার করে নেই (প্রাইভেট ইউনিতে পড়েছিতো, তেমন কিছুই শেখায় নাই...নিজে দৌড়ে যদ্দুর পারছি অতটুকুই আগাইছি)...

৯| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৫:২৯

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: পলির এক্সক্লুশন মানে অপবর্জন.. মাইরা ফেলছে। কি কঠিন বাংলা! এর চে তো এর থিওরী সোজা..

০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৫:৪২

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: B-) ঘুমাইতে গেলাম।

১০| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৮:১১

রিফাত হোসেন বলেছেন: ভাষা খুবই জটিল ব্যাপার। :) বাংলা অনেক শব্দ আছে। যেগুলো বিভিন্ন প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয় বা যায় কিন্তু আমরা তা করে থাকি না সচরাচর। তেমনি অন্যান্য ভাষায় ঠিক তেমনি ব্যাপার রয়েছে।

অভিমান [abhimāna] n pride, vanity; self-respect, self-esteem, dignity, amour propre; egotism; huff; tiff; state of one's feel ing being hurt; offended state of mind; sensitiveness. অভিমানী a. proud; vain; (excessively) self-respecting, self-con ceited; dignified, exalted, noble; ego tistic; one whose feelings are hurt, of fended; in a huff; sensitive; (loos.) maudlin; touchy, thin-skinned, easily stung. ☐ n. such a person. fem. অভিমানিনী ।

vain, dignity,pride শব্দগুলি নাটকে শুনা, পরিচিত বলতে পারেন। বাকিগুলো আজকেই জানলাম যে এগুলোও অভিমান এর অনুবাদ হিসেবে ধরা হয়। তবে হাফকেই আমার সঠিক মনে হয়। বান্ধবী রাগ করলে হাফ শব্দটা ব্যবহার হয়। আমার তেমন ইংরেজীতে ভাল দক্ষতা নাই। তবে এখানে দেখলাম ইগোটিস্টিক শব্দটাও ব্যবহার হচ্ছে। যা জার্মান এ এগোয়িস্টিশ এর মত, যার অর্থ স্বার্থপর। স্বার্থপর ও অভিমান এক ব্যাপার নয় নিশ্চয়ই। :)

rich anger ব্যাপারটি যা বলেছেন তা কি আপনার নিজের জানা নাকি প্রতিষ্ঠিত? যদি একান্ত নিজের হয়ে থাকে তাহলে কিছু বলার নাই। কিন্তু এটি যদি phrase হয়ে থাকলে সাদরে গ্রহন করতে চাই। কিন্তু এটার উতপত্তি কোথাও আমি পাচ্ছি না।

আমার ক্ষুদ্রজ্ঞানে আলোচনায় থাকলে খুশি হব, আমার জানতে খুব ভাল লাগে।

-সময় যায়, বয়স বাড়ে, জানার পিপাসা আরও বেড়ে চলে।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৩৯

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: আমি বাইনারি অপশনের জায়গা থেকে "অভিমান"-কে বুঝতে চেয়েছি। আছে অথবা নাই- হ্যাঁ বা না-এর জায়গা থেকে অভিমানী প্রেমিকার অবস্থানটা কি? আমার কাছে মনে হয়েছে, অভিমান করার প্রক্রিয়াটা ইউনিভার্সাল নয়! সকল জাতির মধ্যে এই বৈশিষ্ট্যটা নাও থাকতে পারে। ব্যাপারটা অনেকটা এইরকম, হয় তুমি আমার সাথে আছো; না হয় তুমি আমার সাথে নাই; আছো নাকি নাই? দেখেন, এই প্রশ্নের উত্তরে অভিমানী প্রেমিকার অবস্থানটা কোথায়? হাঁ-ও না, আবার ঠিক না্‌-ও না। অভিমানী প্রেমিকা তার আচরণে এবং মনে মনে ক্ষুব্ধ, প্রেমিকের কোন একটা ভুলের জন্য সে প্রেমিকের কাছ থেকে দূরে সরে গেছে, কিন্তু তাকে (প্রেমিককে) কি একবারে রিজেক্ট করে দিয়েছে? তাও-তো নয়! সে এখনও প্রেমিকের সাথেও আছে কোন একভাবে, ঠিক ডিনাইয়ালও জানায়নি এখনো। তাহলে প্রেমিকার এই অভিমানী অবস্থানকে কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায়? কেমিস্ট্রি পড়ার সময় আমার মনে হয়েছে, এইটা অনেকটা মধ্যবর্তী দৌদুল্যমান একটা অবস্থান। এই যে মানসিক এই অবস্থান (অভিমান)-- এইটার সঠিক ইংরেজি প্রতিশব্দ তাই খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কেন? তাহলে এইবার ইংরেজদের লাইফ-স্টাইলে যেসব অনুভূতির আদান-প্রদান দেখা যায় সেগুলোকে বুঝতে হবে। একটা জাতির মধ্যে কোন নির্দিষ্ট ধরনের অনুভবের অনুপস্থিতি থাকে, তবে ভাষায়ও সেই অনুভূতি-প্রকাশক শব্দ অনুপস্থিত থাকবে। অভিমান- একান্তই বাঙ্গালীর সম্পদ--- আমার এইই মনে হয়েছে। অনেক আগে একটা লেখায় পড়েছিলাম ইংরেজরাও "অভিমান"-এর কাছাকাছি অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে...যার প্রমাণ কীটসের কবিতা।

Or if thy mistress some rich anger shows

কীটসের ওডে অন মেলানকলি কবিতার এই লাইন দেখিয়ে একজন লেখক বলেছেন, এইখানে মিসট্রেস (প্রেমিকা)-এর এই অনুভূতিটা (rich anger) অনেকটাই বাঙ্গালীর "অভিমান"-এর কাছাকাছি। কার লেখা মনে নাই, তবে লেখক বলছেন- এইটাই একমাত্র "কাছাকাছি" একটা শব্দ যেটা দিয়ে অভিমানের কিছুটা প্রকাশ হয়, এটা ছাড়া ইংরেজিতে অভিমান-কে এক্সপ্রেস করা সম্ভব নয়।

vanity- হল একটা অতিরিক্ত আত্নতুষ্ট অবস্থান যেইটা নেগেটিভ সেন্সে ব্যবহার হয়, dignity -কোন মানসিক অবস্থান নয়, এইটা পজিটিভলি ব্যক্তির সম্মান বা যশ প্রকাশ করে, আর pride -হল ব্যক্তি যখন নিজের সম্মানজনক অবস্থানকে প্রকাশ করে তখনকার অবস্থা। এগুলোর কোনটার সাথেই অভিমান বা rich anger -এর সম্পর্ক নাই। ডিগনিটি আর প্রাইড এক হয়ে নেতিবাচকভাবে ভ্যানিটিরূপে ব্যক্তির চরিত্রে দেখা যেতে পারে যেটা কারোই কাম্য না। অভিমানী প্রেমিকার মধ্যে ভ্যানিটি থাকে না, সে প্রাইডফুলও হয় না, আবার নিজের ডিগনিটি সম্পর্কেও সচেতন থাকে না। অভিমানী প্রেমিকাকে তার অভিমানী আচরণ দিয়েই বুঝতে হবে...এছাড়া আর কোন উপায় নাই (অন্তত ইংলিশে নয়...রিচ অ্যাংগার - এক্ষেত্রে কিছুটা সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে--- এই যা!) এইটা একটা অফেন্ডেড স্টেট অভ মাইন্ড বা স্টেট অব ওয়ান'স ফিলিং বিয়িং হার্ট!!!

রিচ অ্যাংগার প্রতিষ্ঠিত নয়, এইটা কোন ফ্রেজ-ও না। এইটা স্রেফ একজন অনুবাদক যখন ইংলিশ থেকে বাংলায় একে অনুবাদ (কীটসের কবিতা) করতে গিয়েছেন, তখন এতক্ষণ ধরে যত কথা বললাম, তা খেয়াল করেছিলেন!!!

০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:০২

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: আমি "হাফ"-এর ব্যাপারে শিউর নই। অভিমানকে হাফ দিয়ে প্রকাশ করা হলে, এতদিনে কোথাও না কোথাও শব্দটা পেয়ে যেতাম। অপেক্ষা করেন, আমার আমেরিকান ফ্রেন্ডের সাথে যোগাযোগ করে ব্যাপারটা জেনে নেই... :)

০২ রা মে, ২০২০ রাত ১:০৮

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: নাহ্, হাফ মানে অভিমান নয়। বান্ধবী রাগ করলে হাফ ইউজ করা হয়- এইটা ডিসটার্বড অবস্থা বোঝায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.