নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ জাগবেই

আবিদ হোসেন

জাগতে চাই ও জাগাতে চাই ।.

আবিদ হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বালকের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:৩৮


অনেক অনেকদিন
আগের কথা ।
এক দেশে ছিল এক
মিথ্যাবাদী রাজকন্যা ।
একদিন সেই রাজকন্যার
অপরূপ চেহারা দেখে
এক বালক তার প্রেমে
পড়ে গেল ।
ধীরে ধীরে বালকের
প্রেম আরো গভীর
হতে লাগলো ।
এক সময় বালক স্বপ্ন
দেখতে লাগলো ।
রাজকন্যাও বালকের
প্রেমে পড়ে গেল ।
কিন্তু ঐ যে বললাম-
রাজকন্যা ছিল ঠকবাজ
ও মিথ্যাবাদী ।
রাজকন্যা মনে মনে
অন্য একজনকে
ভালোবাসতো ।
এদিকে বালক তা
তো জানতো না ।
বালকের হৃদয় মন
জুড়ে শুধু রাজকন্যা
ছিল ।
একদিন রাজকন্যা
বালকের বুকে একটা
তীর বিদ্ধ করে বালকের
কানে কানে বলল-
"তার একজন প্রেমিক
আছে যার অনেক টাকা
ও সুন্দর চেহারা আছে ।
আর তুই তো একটা
বিশ্রী চেহারার ছোটলোক ।"
বালকের কিছু করার
ছিলনা ।
বালক অনেক কষ্ট পেল ।
একা একা কাঁদলো ।
কিন্তু তবু কিছু হল ।
কি জানি কি হল
রাজকন্যার মনে নতুন
কি ফন্দি এলো ।
বালককে সে ডেকে
পাঠালো এবং বালকের
কাছে নিষ্পাপ
বালিকার মতো বলতে
লাগলো-
হে বালক,
তোমার মনের যেখানটাতে
আমার স্থান সেখানে আর
কাউকে রেখোনা ।
আমি একদিন আসবোই...।
বালক কিন্তু কিছু একটা
আঁচ করতে পারলো
বাক্যের শেষে জোর
দেওয়াতে ।
কিন্তু বালকের কাছে
রাজকন্যা ছিল বিশ্বাসের
প্রাচীর ।
বালক রাজকন্যাকে
আবার পেল ।
কিন্তু সেদিনই রাজকন্যা
বালককে তাড়িয়ে দিলো ।
বালক আবারো মনে
কষ্ট পেয়ে চলে গেল এবং
মনে মনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলো প্রতারক রাজকন্যার জন্য
সে আর কাঁদবেনা ।
সে স্বাভাবিক হতে
শুরু করলো ।
কিন্তু কিছুদিন পর
রাজকন্যা আবার
বালকের কাছে ফিরে আসলো ।
বালক তাহাকে পেয়ে সব
সংশয় বাতাসে উড়িয়ে
দিলো ।
রাজকন্যা বালককে
সারাজীবন কাছে রাখার
প্রত্যয় ব্যক্ত করলো ।
কিন্তু রাজকন্যার একটা
শর্ত ছিল,
তা হল-
রাজকন্যাকে পেতে হলে
বালককে যোগ্যতা অর্জন
করতে হবে ।
বালক রাজকন্যার
মনকে জয় করতে কঠোর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলো ।
কিন্তু বালক এবারো
মিথ্যাবাদী বেহায়া
রাজকন্যার তীব্র
প্রতারণার স্বীকার হলো ।
রাজকন্যার কথামতো
বালক যোগ্যতা অর্জন
করার জন্য যেদিন চেষ্টা
শুরু করলো
সেদিন বালকের কানে
আসলো রাজকন্যার
বিয়ের খবর ।
রাজকন্যা নিজে তাকে
এ খবর জানিয়েছে !
এ সংবাদ শোনার পর
বালকের তিঁলে তিঁলে
গড়া ভালবাসা কাঁচের
টুকরোর মতো
ভেঙ্গে পড়লো ।
চোখ মেয়ে বন্যার তীব্র
জলের স্রোতের মতো
পানি আসতে লাগলো ।
বালকের চিন্তাশক্তি
কিয়ত্ক্ষণের জন্য
হারিয়ে গেল ।
বাকরুদ্ধ হয়ে গেল
কয়েক মিনিটের জন্য ।
এদিকে বালকের এ
করুণ অবস্থা জানতে
পেরে রাজকন্যা বিরাট
খুশি হলো ।
সে এই উপলক্ষে এক
বিরাট পার্টির আয়োজন
করলো ।
বালক অশ্রুসিক্ত নয়নে
শহরের সবচেয়ে উঁচু
ভবনের ছাদে উঠলো ।
বালকের কাছে বৃহত্
আকাশটাকে অনেক
ছোট মনে হল ।
বালকের মনে হল,
আকাশ যেনো তাকে
চেপে ধরতে চাচ্ছিলো ।
বালক ছাদের রেলিংয়ের
কাছে গিয়ে দাঁড়ালো ।
পৃথিবী ও পৃথিবীতে জন্ম
নেওয়া সমস্ত প্রেমিকাজাতীর
প্রতি তার তীব্র ঘৃণা
হতে লাগলো ।
বালকের কেন যেনো
মনে হতে লাগলো এ
পৃথিবী তার জন্য নয় ।
জগতের সব অভিশপ্ত
মিথ্যাবাদীরা এ জগতটাকে বসবাসের তীব্র অযোগ্য
করে তুলেছে ।
বালক নির্লিপ্ত চোখে
রেলিংয়ের উপর দাঁড়ালো ।
বালকের আকাশের দিকে
তাকিয়ে চোখ বুঝলো ।
বালকের মনে হতে
লাগলো সে অনন্ত যাত্রার
পথে পা বাড়িয়েছে ।
বালকের এ যাত্রা রাজকন্যার
মনে একটুও রেখা সৃষ্টি
করেনি ।
বরং মিথ্যাবাদী রাজকন্যা
তখন বিছানায় উগ্র সুখে
শিহরীত ।
ঠিক তখন নিশ্চুপ
নিরবতায় বালক
অনন্তযাত্রার
পথে পা বাড়াবে বলে
স্থির করলো ।
হঠাত্ বালকের মনে
হলো কে যেনো তার সামনে
দাঁড়িয়ে আছে ।
অস্পষ্ট মুখচ্ছবি ।
চেনা চেনা লাগে ।
বালক দেখলো এ তাঁর মা !
ছোটবেলায় যাকে সে
হারিয়েছে ।
মা যেনো তাকে বলছে-
"কি রে তোর বাবার
স্বপ্নটাকে এভাবে জলাঞ্জলি
দিবি !
তোকে না বলেছিলাম
ডাক্তার হতে ।
সে পথে তো গেলিনা ।
তোর বাবা তোকে
নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখে ।
সে স্বপ্ন তোকে পূরণ
করতে হবে ।
যা বাড়িতে যা ।
তোর বাবা টেবিলে
খাবার নিয়ে বসে আছে ।
তোর রুমা আপা খাবার
নিয়ে বসে আছে তোকে
খাইয়ে দিবে বলে ।
যা এখুনি বাসায় যা ।"
বালকের মনে হল মা
যেনো তার মাথায়
হাত রেখে দোয়া করছে ।
বালকের হুঁশ ফিরলো ।
বালক চিন্তা করলো-
রাজকন্যা যদি মিথ্যাবাদী
হয়ে পৃথিবীতে সুখী হতে
পারে তাহলে সে কেনো
পারবেনা ।
তাকে পারতে হবে ।
জীবনটা তো খেলনা
পুতুলের মস্তক নয় যে
ছিঁড়ে ফেলা এতো সহজ ।
বালক বাসায় চলে
আসলো ।
এসে দেখে বাবা এখনো
না খেয়ে আছে তার
আপা ভাত মাখিয়ে
বসে আছে ।
বালকের কেনো যেনো
মনে হল এটাইতো জীবন ।
পৃথিবীর সব ভালোবাসা
তো এখানেই লুকায়িত ।
বালকের তবু যেনো
কেনো মনে হল মিথ্যাবাদী
হলেও রাজকন্যাকে সে
ভুলতে পারবেনা ।
যুগ-যুগান্তর তার
রাজকন্যার কথা
মনে পড়বে...।।
এটাই বুঝি
"নিঃস্বার্থ ভালোবাসা" ।।
-
একটি তীব্র সত্য
ঘটনা অবলম্বনে ।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.