![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এখন অনেক বাংলাদেশির মনে প্রশ্ন শাহাবাগের ‘গন জাগরনের’ মঞ্চের নেতারা নাস্তিক না আস্তিক। এই বিষয়টা নিয়ে সবার একটু পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।
আমারা অনেকেই আজকে মোসলমান কারন আমাদের বাবা মোসলমান, অনেকে হিন্দু কারন আমাদের বাবা হিন্দু; তাই এটা আমরা বলতে পারি যে আমরা মোসলমান অথবা হিন্দু অথবা অন্ন্য ধর্মের অনুসারী কারন আমাদের পূর্ব-পুরুশ ঐ ধর্মের অনুসারী ছিলেন। তাই জেনে না জেনে এমন সব ভাব করি অথবা এমন সব কথা বলি যেটা তে মনে হয় আমরা যেন ধর্মের বিষয় ভীষণ দক্ষ। আমরা অনেকেই জানি আমাদের কুরানে সুস্পষ্ট ভাবে বলা আছে ‘লা কুম দি নু কুম আলি আ দিন’ যার অর্থ ‘তোমার ধর্ম তোমার কাছে আমার ধর্ম আমার কাছে’। এখানে এটা কথা বলা বাহুল্য যে আল্লাহ্ (সুবহানা উ তায়াল্লা) হাশরের ময়দানে আমাদের নিজস্ব কর্মকাণ্ডের জন্য প্রশ্ন করবেন আরেকজনের কর্মকাণ্ডের জন্য নয়। তাই কে কি বলল তাতে ইসলামের কিছুই আসে যায় না।
আরেকটা গুরুত্বপুরন ব্যাপার হচ্ছে আমাদের প্রান-প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন কোন তথ্য পেলে একজন মোসলমানের উচিৎ সেটাকে ভালভাবে যাচাই করা তারপর সেটাকে আরেকজনের কাছে পেশ করা। তাই কোন মন্তব্য করার পূর্বে আমাদের উচিৎ ঐ ব্যাপারে ভালভাবে জেনে নেয়া।
এইখানে আরেকটা বিষয় লক্ষ করতে হবে যে আমরা শাহাবাগে কোন ধর্মীয়ও আন্দোলন করছি না। এইটা আমদের ভূখণ্ডের সারভমৌৎ নিশ্চিত করার আন্দোলন। যারা আজকে নাস্তিক বা আস্তিক প্রশ্নে জর্জরিত তাদের মনে রাখা উচিৎ আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের অবদান ছিল। আজকে যারা নিরবিগ্নে প্রশ্ন করছে তাদের মনে রাখা দরকার যদি আমাদের দেশটা স্বাধীন না হত তাহলে কি এতো সহজে এতো মতবাদ ও এতো মুক্ত চিন্তা করা যেতো।
আমাদের দেশে অনেকে আছেন যারা নিজেরদেরকে ইসলামের একমাত্র রক্ষাকারি বলে মনে করে। তারা আরও মনে করে যে বাংলাদেশে ইসলাম প্রচার ও রক্ষার দায়িত্ব তাদের। তাই এইটা পর্যালোচনা করা প্রয়োজন যে, যারা এইসব বিশ্বাস করে তাদের কার্যকরমে এগুলা প্রতিফলিত হয় কি না। বেশকিছু বছর ধরে পৃথিবীর বেশকিছু দেশে মোসলমান ভাই ও বোন্দের উপর পাশবিক নির্যাতন চলছে। আমাদের দেশের এই ইসলামের ‘ঠেকেদাররা’ কোন প্রতীবাদ যানায়নি, প্রশ্ন উঠে কেন? কারন কি তাই, যে তাদের পৃষ্টপোষকরা এইসবের সাথে জড়িত।
এর আগে ‘তসলিমা নাস্রিনের’ বিরুধে একটা দল আন্দোলন করে কারন তিনি তার বইতে ইসলামের অবমাননা করেছেন। ঐ দলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আপনাদের আন্দোলনের কারনে সাধারন মানুষ ‘তসলিমা নাস্রিনের’ বই বেশি কিনেছে এবং পড়েছে, তাই কাজের কাজ হয়েছে আপনারা তার বইয়ের বিক্রি ব্রিধি করতে সাহায্য করেছেন। আন্দোলনের (পুশ-পুতলিকা পোরানর) চেয়ে তার বইয়ের পৃষ্ঠা উলেখ করে একটা বই বের করা যেতো যেখানে কুরানের তরজমা দিয়ে, যুক্তিতর্ক দিয়ে বোঝান যেত যে ‘তসলিমা নাস্রিনের’ বইয়ের ভুল কোথায়। একটা বিষয় সকলের মনে রাখা দরকার যে এখনকার প্রজন্ম কাঁঠাল পাতা খায় না।
এখন নৈতিকতার প্রশ্নে আসি। যদি একজন বিধর্মী বলে ঘুষ নেয়া বা দেয়া খারাপ, তাহলে একজন মোসলমান হিসেবে তার মতবাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করা কি উচিৎ। না কি বলব যেহেতু একজন বিধর্মী এই কথা বলেছে তাই এটা মানা যাবে না। যদি আপনারা মনে করেন এই বিষয়ে একাত্মতা ঘোষণা করা উচিৎ তাহলে আমি বলব শাহাবাগের আন্দোলনে ‘সকল যুদ্ধ অপরাধীর সর্ববচ্চ সাঁজা নিশ্চিত করতে’ একাত্মতা ঘোষণা করা উচিৎ।
রাজীব সহ অন্যান্য ব্লজ্ঞারদের বিরুদ্ধে অনেকে নাস্তিকতার প্রশ্ন তুলছেন। আমার যানা মতে তারা অনেক দিন ধরে একটা বিশেষ দলের ‘মনগড়া ইসলামের’ বিরুদ্ধে ব্লগ লিখছেন। এখন প্রশ্ন এতদিন এই ইসলামের ‘ঠেকেদাররা’ কোথায় ছিলেন, যখন আপনাদের গদিতে আগুন দেবার প্রশ্ন উঠেছে তখন আপনাদের আশল চরিত্র বেরহয়ে এসেছে। এটা এখানে বলা বাহুল্য যে এই স্বস্তা পলিটিক্স, ইসলাম বিক্রি করার ব্যাবসা আপনারা আগেও করেছেন এবং এখনও করছেন; কারন আপনারা খুব ভাল করে জানেন যে আপনাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, আর তাই এই ধর্ম ভীরু জনগনের সাথে সেই একি রাজনীতি (১৯৭১ সালের) শুরু করেছেন। আরো জেনে রাখুন প্রতিদিন বিধর্মীরা হাজারও ব্লগ, বই ও অন্যান্য মাধ্যমে ইসলামের অবমাননা করে গোটা বিশ্বে; তখন কেন আপনারা এত নিশ্ছুপ।
যদি সত্যি বিশ্বাস করেন আল্লাহ্ (সুবহানা উ তায়াল্লা) সর্ব শক্তিমান তাহলে আল্লাহ্ (সুবহানা উ তায়াল্লা) কেন সকল বিধর্মীকে পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্বষ করেনা; কারন হল ‘লা কুম দি নু কুম আলি আ দিন’।
কিছু মানুষের আবজ্ঞার জন্য বলছি, হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) সবসময় নারী নেতৃত্বকে অনুসাহিত করেছেন, তাহলে কেন নারীর আঁচলের তলায় রাজনীতি করেন। এটার উত্তর আপনারা দিবেন যে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) ‘হুদায়বিয়ার’ সন্ধি করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যদিও হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) ‘হুদায়বিয়ার’ সন্ধি করেছেন তখন এমন কোন কর্মকাণ্ড কি হয়েছে যেটা ইসলামের নিয়ম নিতির সাথে সাঙ্ঘরসিক। এটার উত্তর হচ্ছে ‘না’ তাহলে দয়া করে এই অঝুহাত দিবেন না।
আমি যথা সম্ভম বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি। আমি জানি অনেকে প্রশ্ন তুলবেন। একটা কথা মনে রাখবেন যারা জেগে জেগে ঘুমায় তাদের ঘুম থেকে তোলা অসম্ভব; তাই ঐ দলের লোকরা দয়া করে অবান্তর প্রশ্ন তুলবেন না। কারন আমরা কাঁঠাল পাতা খাই না...।
©somewhere in net ltd.