![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লং মার্চ নামক এই কর্মসূচী আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা অনেক বারই দিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে আসলেই কি ওনারা জানেন বা বোঝেন ঐ লং মার্চ কর্মসূচীটা কি?
চীনে একবার একজন কম্যুনিস্ট লিডার ‘মাও’ গোটা চীনে পায়ে হেটে সাধারণ মানুষকে তখনকার সময়ের শাসকদের বিপক্ষে অবস্থান নিতে উদ্বুদ্ধ করেন এবং তার ঐ কষ্টের কর্মসূচী সফল হয় ও পৃথিবীর ইতিহাসে চিরতরে স্থান করে নেয়। তাই প্রশ্ন ওঠে আমাদের দেশের লং মার্চ কি আসলেই লং মার্চ না কি শুধু তথা কথিত অনেক রাজনৈতিক কর্মসূচীর একটি।
তার কারন আমাদের দেশের লং মার্চ মানে গাড়ীর বহর নিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া। অনেক সময় মনে হয় পিকনিক করতে যাওয়া হচ্ছে; কারন এসি গাড়ীতে পর্যাপ্ত পরিমাণের খাবার দাবার সহ, যার সাথে অনেক সময়ই থাকে অনেক ধরনের নেশা জাতীয় দ্রব্য ও ইসলাম ধর্মে হারাম আখ্যায়িত পানীয়। তাই মনে একটা প্রশ্ন জাগে এটা কি আসলেই সেই ঐতিহাসিক লং মার্চ নাকি আমাদের সুবিধাভোগী রাজনীতিবিদের গাড়ীর বহর প্রদর্শনী? তাহলে তো এটাকে লং মার্চ না বলে ‘লং ড্রাইভ’ বললেই ভালো হয়। কারন যদি এই ‘লং ড্রাইভ’ কর্মসূচী সফল হয় তাহলে তো গোটা বিশ্বের রাজনৈতিক দলগুলো এই নব্য কর্মসূচীকে তাদের দেশেও কাজে লাগাতে পারবে বলে মনে করি।
০৬.০৪.২০১৩ আমাদের দেশে নব্য গঠিত হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের লং মার্চকে ঘিরে চলছে নানা মতবাদ; তাই প্রয়োজন একটু বিশ্লেষণের। দলের নাম থেকেই একটা বিষয় হয়ত সুস্পষ্ট যে তারা ইসলামকে হেফাজত করতেই প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু ইসলামকে হেফাজত করতে হলেত আমাদের প্রান প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এর তরিকা অবলম্বন করা উচিৎ নাকি নিজের বা কোন দলের তরিকা। যখন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ ব্লগারদের নাস্তিক বললেন তখন কিছু ব্লগার ওনাদের সাথে সংলাপে বসতে চাইলে ওনারা বললেন ‘না’। কিন্তু প্রশ্ন করি কেন? হেফাযতের লিডারা কুরান ও হাদিস সম্পর্কে হয়ত অনেক জানেন, তাই বলি কুরানের সুরা আবাচার ১ থেকে ১৫ নাম্বার আয়াত পড়লে বোঝা যায় যে আল্লাহ্তায়ালা নবী করিমকে বলেছেন যদি কেউ ইসলাম সম্পর্কে জানতে আসে তা হলে তাদেরকে পুরনাঙ্গ সহযোগিতা করা প্রয়োজন। তাহলে ঐ নাস্তিক (হেফাজতের ভাষায়) ব্লগারদেরকে ইসলামের সম্পর্কে পূর্ণ ধারনা দিতে সমস্যা কি?
তাহলে প্রশ্ন জাগে আসলে কোন ইসলামের হেফাজত করতে তারা মাঠে নেমেছেন। ‘কোন ইসলাম’ বলার কারন আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই মহা নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এর ইসলামকে মেনে চলার চেষ্টা করে; কিন্তু গুটি কয়েক আছে যারা ‘মউদুদির ইসলাম ও তার ইসলামিক বিশ্লেষণকে’ মনে-প্রানে ধারন করেন। সমস্যা হচ্ছে মউদুদির ইসলাম আমাদের প্রাণ প্রিয় নবীর ইসলাম শিক্ষার সাথে বেশ সাঙ্ঘরসিক। যদি সত্যি ইসলামকে হেফাজত করতে চান তবে নাস্তিকতা ছাড়াও দেশের অন্যান্য সমস্যা নিয়ে কথা বলতে হবে; কিন্তু অন্য বিষয়ে আপনারা নিশ্চুপ। মহা নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) কোরাইশদের সকল বিষয় নিয়েই প্রশ্ন তুলে ছিলেন এবং তাদেরকে তাদের জীবন যাপন ব্যাবস্থা পরিবর্তন করতে বার বার বলেছেন; উনি কোনও সহিংসতা, নৈরাজ্য বা অরাজগতা করন নাই। হয়ত অনেকেই বলবেন রাসুল তো যুদ্ধ করেছেন, তাহলে বলব ইসলামিক রাষ্ট্র কায়েম ও আল্লাহ্তায়ালার কাছ থেকে নির্দেশ পাবার পরই।
যদি হেফাজত ইসলামের কথাই মেনে নেই যে ব্লগাররা নাস্তিক তাহলে তো এই নাস্তিকতা গত ১০ বছর ধরে চলছে। তাই প্রশ্ন জাগে এতো দিন কথায় ছিলেন ঘুমিয়ে? নাকি যখন জামাত-শিবিরের ইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনা সহ অনেক প্রতিষ্ঠানকে বয়কট করতে বলা হচ্ছে তখনই আপানাদের টনক নড়েছে এবং ইসলামকে রক্ষা করার কথা মাথায় এসেছে।
তাই ভাবি আপনারা সত্যি কি ইসলামিক এজেন্দা না কি কোনও বিশেষ দলের বিশেষ ইসলামিক এজেন্দা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছেন। কারন, অনেকেই হয়ত একমত পোষণ করবেন যে, পৃথিবীর অনেক উচ্চ পর্যায়ের ইসলামিক বেক্তিত ইসলামের চির শত্রু ইহুদীদের পক্ষে কাজ করেছেন; যা বিভিন্ন সময় মুসলমানদের কাছে সুস্পষ্ট হয়েছে। তাই মনে এক মুখে আরেক না রেখে, দেশের মানুষ সহ আপনাদের ছাত্রদের আর বিভ্রান্তি না করে, সাহসের সাথে বুক ফুলিয়ে বলুন যে আপনারা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ না কি ‘হেফাজতে জামাত-ইসলাম বাংলাদেশ’? পরিশেষে বলি যদিও আপনাদের মুখে মুখে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কিন্তু কর্মকাণ্ডে কেন জানি শুধুই মনে হয় ‘হেফাজতে জামাত-ইসলাম বাংলাদেশ’।
©somewhere in net ltd.