নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আশিক। প্রচন্ড স্বপ্নবাজ একজন মানুষ। একাধারে অনেক কিছু হবার ইচ্ছে।খুব আত্মকেন্দ্রিক একজন । অনেক কথা কারো সাথে তাই বলা হয়ে ওঠেনা। তাই এখানে আসা। যা কিছু মনে আসে, তার মধ্য থেকেই সবার সাথে শেয়ার করা.. এইতো.. আর কিছু বলার নেই...

আশিক সরকার শুভ (আবীর)

আমি ছেলেটির সাথে আমার নামের কোন মিল নেই।এমনকি আমার লিখার সাথেও নেই।আমি আমার মত।আমার লিখারা তাদের মত..

আশিক সরকার শুভ (আবীর) › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডিপ্রেশন

২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৩৬

ডিপ্রেশনে ভোগা মানুষগুলো অনেক আত্মহত্যাপ্রবণ হয়। যারা কিছুটা ডিপ্রেশনে ভোগে, তারা হয়তো রাতে একবেলা না খেয়ে নির্ঘুম একটি রাত কাটায়। বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুকতে ফুকতে তার হতাশা গুলোকে ছাইয়ের সাথে উড়িয়ে দেয়। খুব বেশী হলে কোন নির্মানাধীন ভবনের কোন এক নির্জন জায়গা খুঁজে নিয়ে সেখানে নেশায় বুদ হয়ে থাকে। কিছুদিন পর এরা ঠিকই স্বাভাবিক হয়।

যারা খুব বেশীমাত্রায় ডিপ্রেশনে বা হতাশায় ভোগে এরা অনেক ভয়াবহ রকমের হয়, এদের বাইরে থেকে দেখে একদম বোঝার উপায় নেই, যে এদের ভেতরটা কিভাবে ভেঙ্গেচুরে যাচ্ছে। আর দশজনের মতই স্বাভাবিক চেহারার একটা মুখোশ পড়ে এরা আপনার সামনে আসবে। আগামীকাল সুইসাইডের প্লান মনে নিয়েও এরা আজ আপনার সাথে ফান করবে। এক সিগারেট নিয়ে পাঁচ বন্ধুর টানাটানিতে সেও অংশ নেবে। আপনার বন্ধুরা মিলে আগামীকাল সিনেপ্লেক্সে মুভি দেখার প্লান করলেও দেখবেন সেও বলবে "আমার জন্য একটা টিকিট রাখিস"।

কিন্তু পরেরদিন ফোন দিলে যে তাকে পাবেন না তা নয়। আপনার ফোন রিসিভ করে বলবে "মামার চায়ের দোকানে সামনে দাড়া। আমার আসতে আধা ঘন্টা লাগবে আরো। রাস্তায় জ্যাম"।

যদি সে সুইসাইড করার একটি পরিকল্পনা সে ভেতর ভেতর করেই থাকে, তবে পরেরদিন আপনার ফোন রিসিভ হল কেন? কারন সাহসের অভাবেই হোক, কিংবা জীবনের প্রতি মায়া থেকেই হোক, সে আত্মহত্যাটি হয়তো করতে পারেনি। সৃষ্টিকর্তা কেবল মাত্র একটিই জীবন দিয়েছেন। জীবনের স্বাদ নেবার সুযোগ একবারই। এখানে দ্বিতীয়বারের কোন স্থান নেই।

আর সেজন্যেই মামার ওই চায়ের দোকানের সামনে আধা ঘন্টা পর তাকে হাসিমুখে আসতে ঠিকই দেখবেন। এরপর বন্ধুবান্ধব মিলে একসাথে লোকাল বাসে ঝুলবেন। সেও আপনাদের সাথে ঝুলবে। কেউ ঘুনাক্ষরেও টের পাবেনা যে এই ছেলেটা গতকাল রাতেই সুইসাইড করতে চেয়েছিলো। কোন কারনে সে ডেট পিছিয়েছে। পরেরবার যে আবার সে চেষ্টা করবেনা , তার কোন নিশ্চয়তা নেই।

সবক্ষেত্রে যে এমন হয় ব্যাপারটি আসলে তা নয়। কেউ কেউ প্রথমবারেই সফল হয়ে যায়। আপনি একটা টিকিট তার জন্যে রেখে দিলেও পরেরদিন ফোন দিলে তাকে আর পাবেন না। ভার্সিটির ক্যাম্পস কিংবা কোন ফ্রেন্ডের বাসায় খুঁজলেও তার কোন হদিস পাবেন না। তাকে আপনি খুঁজে পাবেন তার বাসায় নিজের রুমে দরজা আটকানো অবস্থায়। দরজা ভেঙ্গে ঢুকে দেখবেন ফ্যানের সাথে গলা আটকে তার সারা শরীরটা ঝুলে আছে। একটি কাগজ ধরা থাকবে তার হাতে। ওখানে দু তিন লাইনে লিখা থাকবে জীবনে কার কার প্রতি সে কৃতজ্ঞ ছিল। সে লিস্টে আপনারও নাম থাকবে।

এই মানুষগুলি জীবিত থাকতে আমাদের সামনে এসে "মরে যেতে ইচ্ছে করছে" বা "আমি পৃথিবী ছাড়বো। ভাল লাগেনা আর" এ ধরনের বাক্যগুলো বলে না কেন? কেন বারবার নিজে নিজেই একবার ব্যার্থ হলে পরেরবার সুইসাইড করার নিরবে প্লান সে করে কোন একবার হয়তো সে সফল হবে এ আশায়? কেন দু এক লাইনের একটি সুইসাইড নোটও সে খুব যত্ন নিয়ে বানিয়ে ড্রয়ারে রেখে স্বাভাবিক মানুষের মুখোশটা পড়ে বন্ধুদের আড্ডায় যায়?

কারন আমরাই তাদের সে দরজাটা বন্ধ করে দিয়েছি। কেউ হয়তো একদিন সুইসাইডের এনাউন্স করল। পরেরদিন করতে না পেরে হয়তো ফিরে আসলো। আমরা তখন তাকে হাসির পাত্র বানিয়ে ফেলি। ঠাট্টা মশকারা করি। সুইসাইড করতে না পারার জন্যে তাকে নিয়ে ঠাট্টা করার মানেই হচ্ছে তাকে আরেকবার আত্মহত্যার জন্যে উস্কে দেয়া।

এসব ভয় থেকেই তারা বলে না কখনো যে তারা ভিতরে কতটা ঝড় তুফান নিয়ে ঘুরছে। এরা কখনোই বলবে না যে সে তার ড্রয়ারে রাখা সুইসাইড নোটে তার সব বন্ধুদের নাম আছে। এরা কখনোই বলবে না আর। আপনি যতই তার কাছের বন্ধু হন না কেন, সেটি কোন বিষয় আর থাকে না তার কাছে।আত্মসম্মানবোধটুকু তাদের কাছে অনেক বড় একটি বিষয়।

নিরবে নিজেকে লক্ষকোটিবার খুন করেছে এরকম মানুষ আমাদের আশেপাশে আসলে প্রচুর! এরাও সে না বলা মানুষদের দলে। যে বন্ধুদের সাথে আজ সারা বিকাল আপনি আড্ডা দিয়েছেন, তাদের মধ্যেই হয়তো কেউ একজন ফ্লাইওভারের উপড় দাঁড়িয়ে থেকে বেশ কয়েকবার নিজেকে শেষ করে দেয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু পারেনি হয়তো। নেক্সট টাইমের জন্যে অপেক্ষা করে আছে সে। যেদিন সফল হবে, সেদিন তাকে নিয়ে আর ঠাট্টা মশকারা হবে না। আফসোস হবে। একটি বন্ধু হারানোর আফসোস।

সেও সে না বলা মানুষদের দলে... শুধু সফল হবার অপেক্ষায়..

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪৭

সুমন কর বলেছেন: নিরবে নিজেকে লক্ষকোটিবার খুন করেছে এরকম মানুষ আমাদের আশেপাশে আসলে প্রচুর! -- আসলেই মারাত্মক একটি রোগ এই ডিপ্রেশন।
+।

৩০ শে জুন, ২০১৬ ভোর ৪:৫২

আশিক সরকার শুভ (আবীর) বলেছেন: হুম,,, খুবই ভয়াবহ।।

২| ২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৫১

বিপ্লব06 বলেছেন: লাইফের কোন নো কোন পর্যায়ে এইরাম চিন্তাভাবনা মুটামুটি সবার মাথায়ই আসে, কিন্তু মানুষ প্রাণী হিসাবে অনেক রিজিলিয়েন্ট। সব কিছুরে কাটাইয়া উঠতে পারে। লাইফটা অনেক সুন্দর। কখনো দেখছেন, টিনের চালের নিচে বসে ঝুম বৃষ্টি? অথবা ডিম ভাঁজা দিয়া গরম খিচুড়ি খাওয়ার স্বাদ!!

তাছাড়া ফেসবুকের ফানি ভিডিওগুলা দেখলে এমনেই সুইসাইডের চিন্তা মাথা থেইকা বাইর হইয়া যাবে। B-)) B-))

৩০ শে জুন, ২০১৬ ভোর ৪:৫৩

আশিক সরকার শুভ (আবীর) বলেছেন: আসলেই তাই.....

৩| ০১ লা জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৪৫

লিংকন১১৫ বলেছেন: আসলে ভাই তারা তাদের মনের ভিতর সব রেখে দেয় , কাউ কে কিছু বুঝতে দেয়না , তাদের আসলেই আত্মসম্মানবোধ অনেক বেশি থাকে ।
আর কিছু বলতে পারলাম না

৪| ০১ লা জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৪৮

লিংকন১১৫ বলেছেন: আর তাদের রাগ অভিমান টাও অনেক বেশি থাকে

০১ লা জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:৫০

আশিক সরকার শুভ (আবীর) বলেছেন: হুম ভাই... অনেক বেশী আত্মকেন্দ্রিকও হয় এরা...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.