![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ছেলেটির সাথে আমার নামের কোন মিল নেই।এমনকি আমার লিখার সাথেও নেই।আমি আমার মত।আমার লিখারা তাদের মত..
আপনি যদি ছেলে হয়ে জন্মে থাকেন, এটুকু নিশ্চিত থাকুন, টাকা ছাড়া একটা সময় পর আপনি নিজেকে আর পুরুষ দাবী করতে পারবেন না।সে সময়টা শুরু হয় যুবক থাকাকালীন সময় থেকে। যখন আপনি ভার্সিটি থেকে পাশ করে বেরিয়েছেন, ঠিক সে সময়টা থেকে।
জন্ম হবার সময় আমরা পুরুষরা এইটুকুন পিচ্চি থাকি। ছোট্ট একটা মাথা থাকে আমাদের ধরের উপড়। ওটার ভেতর ছোট্ট ছোট্ট করে চোখ কান নাক মুখ ঠোট সব কিছু ডিজাইন করা থাকে। একেক আত্মীয়রা আমাদের মুখ দেখে বোঝার চেষ্টা করেন যে চেহারায় কার সাথে মিল? বাবার সাথে? নাকি মা?
একটা সময়ে আমরা পিচ্চি বাবু থেকে বাচ্চা ছেলে হই। তার কিছুদিন পর হাই স্কুল পড়ুয়া ছেলে। তার কিছুদিন পর আমাদেরকে বলা হয় কিশোর। তারপর ধীরে ধীরে হই যুবক। যুবক পর্যন্ত হাত পা বড় হতে যা কিছু খরচা সব পিতামাতা বহন করেন। যখন হাত পা আর বড় হবার আর প্রয়োজন পড়েনা, তখন বাকী পথটুকু নিজের জোরে হাটতে হয়। শুধু হাটলেই হবে না। নিজে হেটে পরিবারের বাকী সদস্যদেরও কাধে নিতে হবে।
এই নিয়মে চলতে গিয়ে অনেকেই হোচট খায়। পরিবারের বাকী সদস্যদের কাধে তুলে হাটতে গিয়ে অনেকেরই শরীরের শক্তিতে কুলোয়না। অনেক কষ্টে হাটতে হাটতে একটা সময়ে পা দুটো ব্যাথায় অবশ হয়ে যায়। চোখেমুখে অন্ধকার দেখে। একটা সময়ে কুলোতে না পেরে মাটিতে ধুপ করে পড়ে যায়।শুধু পড়েই যায় না। একদম পা মচকে পড়ে যায়।
যারা মাটিতে পড়ে যায় তাদের মধ্য থেকে আবার কেউ একজন উঠে দাঁড়ায়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সেও থাকে একজন যুবক। সবগুলো মানুষকে এবার সে কাঁধে নেয়। এমনকি যে মানুষটি সবাইকে টেনে আনতে গিয়ে পা মচকে পড়ে গেছে তাকেও। পা যদি একবার মচকে যায়,তবে সেটা ভাল হবার সুযোগ থাকলে পরিবার তাকে নিয়ে আরো আশা করে যে যাক! পা ভাল হলে আরো অনেকদূর এগিয়ে নেবে সে পরে। কিন্তু পায়ের হাড় যদি ভেঙ্গে যায়, ভাল হবার আর কোন সুযোগ যদি না থাকে , তবে সে যুবক আর পুরুষ থাকেনা। হয়ে যায় কুলাঙ্গার বোঝা।
এই হিসেবটা পুরুষের ক্ষেত্রে সব জায়গায় ঠিক। একটা যুবকের কোন একটা মেয়েকে হয়তো ভাল লাগলো। প্রথমেই মেয়েটা যাচাই করে দেখবে যে এই যুবকটা আসলে পুরুষ কিনা। আমার ভরটুকু সইবার শক্তি তার গায়ে আছে তো? নাকি পরিবারের ভর কাধে নিয়ে পা মচকে বসে আছে। যে ছেলেদের পা মচকানো, তাদের প্রতি কোন মেয়ে আগ্রহ দেখায় না। যুবক হলে চলবে না, পুরুষ চাই।
একটা ফোনকল, একটা গোলাপ, একটা টেডি বিয়ার কিংবা রাস্তায় রিকশা নিয়ে রিকশার হুড ফেলে পছন্দের মানুষটিকে নিয়ে বৃষ্টি ভেজা রোমান্টিকতাটুকুও একজন যুবকের কিনতে হয় টাকার বিনিময়ে প্রকৃতির কাছ থেকে। কারন ফোন অপারেটরের মালিকদেরও কাঁধ আছে। যে ফুল বিক্রি করছে তারও কাঁধ আছে। যে শোরুম খুলে টেডি বিয়ার বিক্রি করছে তারও কাঁধ আছে। যে রিকশার প্যাডেল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দুজনকে বৃষ্টির মধ্য দিয়ে সারা শহর ঘোরাচ্ছে তারও কাধ আছে। প্রত্যেকের কাধেই যাত্রী হিসেবে আছে আবার তাদের পরিবারের মানুষগুলোই। আর সে হচ্ছে ওই যাত্রীদের বাহন। যার জ্বালানী হচ্ছে টাকা। যতদিন এই জ্বালানী আছে,ততদিন তারা পুরুষ।
টাকা নামক এই মূল্যবান কাগজই আমাদের পুরুষ বানায়। আমাদের পৌরুষত্ত্ব এই কাগজটার কাছেই জিম্মি....
০১ লা জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:৪৮
আশিক সরকার শুভ (আবীর) বলেছেন: কৃতজ্ঞতা ভাই...
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা জুলাই, ২০১৬ রাত ১:১২
রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: অসম্ভব সুন্দর বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ।