নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন মানুষ যদি জানতো তার মৃত্যুর পর কত দ্রুত সবাই তাকে ভুলে যাবে, কারো সন্তুষ্টি অর্জন, দৃষ্টি আকর্ষন কিংবা নৈকট্য অর্জনে সে এভাবে উঠে পড়ে লাগতো না।

দিলারা জাহান ব্লগ

দিলারা জাহান ব্লগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জোর করে চুল-গোঁফ কর্তন কি চলতেই থাকবে ?

১১ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৩:২৪



দেশে জোরপূর্বক অন্যের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা নতুন নয়। এই কাজ বাংলাদেশে অনেকদিন ধরেই চলে আসছে। উদাহরণ আছে অনেক। গুগল সার্চে এমন অনেক ঘটনার চিত্র ওঠে আসবে। সম্পত্তির ভাগ চাওয়ায় স্কুলশিক্ষিকার চুল কাটা, পুত্রবধূর চুল শ্বশুর-শাশুড়ি কর্তৃক কেটে দেওয়া, স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর চুল কাটা, শিক্ষক ছাত্রের, মারধরের পর শিশুর, বাউলদের চুল-গোঁফ কাটার এমন অনেক সংবাদ প্রায়ই দেখা যায়। এই সব নিয়ে খুব বেশি আলোচনা হয় না হলে প্রতিকারহীন সব।

খবরের শিরোনাম দেখে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ফেসবুক পোষ্টে এক শ্রেণির মানুষ সমর্থন করে, একটা শ্রেণি এর একটা প্রতিবাদ করতে চেষ্টা করে। তবে প্রতিবাদকারী সংখ্যার হিসাবে অল্প। অল্প সংখ্যার প্রতিবাদকারী আবার এই প্রতিবাদ যতটা না করে প্রকাশ্যভাবে, তারচেয়ে বেশি অন্তর্গত। তাই তার প্রকাশ লোকচক্ষুর অন্তরালে পড়ে থাকে। আর সমর্থক শ্রেণির সমর্থন প্রকাশ্য হওয়ায় মনে হয় এইধরনের কর্মকাণ্ডগুলোর সমর্থক সারাদেশে, সকল শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে; ব্যাপকভাবে।



আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলি, চিন্তার স্বাধীনতার কথা বলি; বলাই সঙ্গত। কারণ এগুলো মৌলিক এবং মানবাধিকারের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু বেঁচে থাকার বিশেষত নিজের মত করে বেঁচে থাকার যে স্বাধীনতার কথা বিশ্বস্বীকৃত সেটা মেনে নিতে রাজি নয়। এই চুল কাটা কিংবা চুল কাটতে বাধ্য করার মধ্য দিয়ে মানুষের স্বাধীনতাকে হরণ করার যে অপচেষ্টা সে বিষয়টি স্রেফ এড়িয়ে যাচ্ছি, উড়িয়ে দিচ্ছি। অথচ এনিয়ে উচ্চকণ্ঠ হওয়া জরুরি ছিল আমাদের। কারণ দৃশ্যমান এই ছোট্ট ছোট্ট ঘটনার মাধ্যমে বিস্তৃত পরিসরে আমরা অন্যের স্বাধীনতা হরণের পথে ক্রমশ অগ্রসর হচ্ছি।

সাম্প্রতিক যে চুল কাটার আলোচনা বিভিন্ন মাধ্যমে ঝড় তুলেছে সেটা সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী প্রক্টর ও প্রক্টরিয়াল বোর্ডের সদস্য ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন ১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল কেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।গণমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, অভিযুক্ত শিক্ষক তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন। তিনি এখানে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত বিষয়টি অভিযোগ পর্যায়ে থাকার কারণে এখনই চূড়ান্ত মন্তব্য করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে জোর করে ৬ মাদ্রাসা ছাত্রের চুল কেটে দিয়েছেন এক শিক্ষক। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার হামছাদী কাজির দিঘীর পাড় আলিম মাদ্রাসায়। চুল কাটার এই ভিডিও দেশ জুড়ে ভাইরাল হয়েছে। অভিযুক্ত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।

দূঃখজনক হলে সত্যি পুলিশের কিছু সদস্য, নারী-শিশুর ওপর নির্যাতনকারী, বাউলবিদ্বেষী, এবং অদ্যকার শিক্ষার্থীদের চুল কর্তনকারীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির এই লোকজনেরা অন্যের স্বাধীনতা হরণ করতে চুল-গোঁফ কাটার যে কাজগুলো করে থাকে তা সমাজের এক শ্রেণির মানুষের কাছে ব্যাপক সমর্থন পায়। এটা জনপ্রিয়ধারার বলে অন্যেরা এখান থেকে অযাচিত পুলক অনুভব করে, নিজেরাও উদ্বুদ্ধ হয়। এজন্যে চুল কাটার মত ঘৃণ্য এই ঘটনাগুলোকে নজিরবিহীন বলা যায় না, চলমান। এ থেকে উত্তরণ দরকার আমাদের।

আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক,মাদ্রাসা শিক্ষক কিংবা বাউলবিদ্বেষী লোকজন; সবার চোখ এক জিনিসে, ওই চুলে। ভবিষ্যতে এরা ভুলেও যাতে এই দিকে হাত না বাড়ায় তার দায়িত্ব নিতে হবে রাষ্ট্রকে। তা না হলে সামাজিক শৃঙ্খলা বিনষ্ট হবে। আশা করি রাষ্ট্র নিশ্চয়ই তার দায়িত্ব পালনে আরো উদ্যোগী হবে।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:১৩

বুলুরায় বলেছেন: গায়ে মানে না আপনি মোড়ল টাইপের লোকেরা এ ধরনের কাজ করে থাকে তাদের ক্ষমতা দেখানোর জন্য এদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনা উচিত

২| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:১৬

হান্নানগাজী বলেছেন: অযোগ্য লোক যখন ক্ষমতা পায় তখন যা ইচ্ছা তাই করতে চায়

৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৮:৪৭

হালিমপাট বলেছেন: চুলকাটার অধিকার আপনাকে দিয়েছে? তাদের পরিবারের অভিভাবক নেই আপনি তাদের বলতেন

৪| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৮:৫৫

পালমিটু বলেছেন: আধুনিক সমাজে আপনার নিজের কতটুকু দায়িত্ব সেটা আগে বোঝার চেষ্টা করুন। নাক বাড়িয়ে সিদুর নেওয়ার চেষ্টা করা ঠিক না

৫| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৯:০৩

রতনসেন বলেছেন: সমাজ পরিবর্তন হয়েছে সাথে সাথে আইনের পরিবর্তন হয়েছে আপনি শিক্ষক বলে যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে না

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.