নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন মানুষ যদি জানতো তার মৃত্যুর পর কত দ্রুত সবাই তাকে ভুলে যাবে, কারো সন্তুষ্টি অর্জন, দৃষ্টি আকর্ষন কিংবা নৈকট্য অর্জনে সে এভাবে উঠে পড়ে লাগতো না।

দিলারা জাহান ব্লগ

দিলারা জাহান ব্লগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি: এত মৃত্যুর বিনিময়ে কী শিক্ষা পেলাম!

২৬ শে জুন, ২০২২ সকাল ৯:২৯


সুসংবাদ বাংলাদেশের মানুষের কপালে বড় একটা জোটে না। দুঃসংবাদই আমাদের দেশে খবর। বলা যায়, একমাত্র খবর। দেশের সংবাদপত্রগুলির পাতা উল্টালেই চোখে পড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত মানুষের সংখ্যা, চোখে পড়ে রেল বা ল দুর্ঘটনার খবর, নদীপথে ফেরী আটকে থাকায় হাজার হাজার যাত্রী মাঝপথে গভীর অনিশ্চয়তায় নিক্ষিপ্ত হওয়ার খবর, নারী ধর্ষণের খবর, মাদ্রাসার ছাত্রদের তাদেরই শিক্ষক কর্তৃক বলাৎকারের খবর, মৌলবাদীদের হুমকির খবর এবং ১০টি মাস ধরে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর বা আক্রান্ত হওয়ার খবর, কল-কারখানা বন্ধ করে দেওয়া এবং হাজার হাজার শ্রমিকের বেকারত্ব প্রাপ্তির খবর, পণ্যমূল্য বৃদ্ধির খবর, সীমাহীন দুর্নীতির খবর। একই চিত্র আমাদের টিভি চ্যানেলগুলিও প্রচার করে পত্রিকায় প্রকাশের আগের দিন।এত কিছু দুঃসংবাদে থাকতে থাকতে মনও আর এখন তেমন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে না। সবই যেন গা-সহা হয়ে গেছে।


তারপর ও সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার বাস্তবতায় বিষয়ে আলোচনা করার প্রয়োজনবোধ করছি। তা হলো, এ দেশের ফায়ার সার্ভিসের জন্য উন্নত ও আধুনিক সরঞ্জাম নিশ্চিত করা জরুরি।সীতাকুণ্ডের ঘটনায় বেসামরিক মানুষ ছাড়াও ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকজন কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।
আমাদের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অনেক সাহসী ও উদ্যমী। কিন্তু তাদের বহরে এখনো উন্নত ও আধুনিক সরঞ্জাম নেই। তাদের বহরে হেলিকপ্টার, উচ্চতাসম্পন্ন ইমার্জেন্সি মই, আধুনিক যন্ত্রপাতি যুক্ত করতে হবে। সীতাকুণ্ডের ঘটনায় এ বাস্তবতা ফুটে উঠেছে।

বাংলাদেশ এমনিতেই প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ। প্রায়ই এ দেশকে বিভিন্ন দুর্যোগের মুখোমুখি হতে হয়। ফায়ার সার্ভিসই তখন প্রাণভোমরা হয়ে দাঁড়ায় মানুষের মাঝে। খিচুড়ি রান্না, পুকুর খনন শেখা, রেললাইন দেখা ইত্যাদি অমূলক কাজে সরকারের অনেক অর্থই তো অপচয় হয়। এবার না হয় ফায়ার সার্ভিস বাহিনীর আধুনিকায়নে এবং তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির কাজে কিছু অর্থ ব্যয় হোক। এটি দেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে।
লোকালয়ের পাশে অনুমতিবিহীন হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের মতো ভয়ংকর দাহ্য পদার্থ রেখে এত মানুষের করুণ মৃত্যুর দায়ভার কি স্মার্ট গ্রুপ নেবে! হবে কি শাস্তি? দেখা যায়, যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তাদের সঙ্গে এ দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকপক্ষের থাকে দহরমমহরম। দিনশেষে এসব রুই-কাতলার কিছুই হয় না। তারা টাকা ও ক্ষমতা দিয়ে সব ‘ম্যানেজ’ করে নেন।

সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডিতে অসংখ্য মায়ের বুক খালি হয়ে গেল; কারও বাবা, কারও বন্ধু, কারও ভাই, কারও স্বামী এবং কারও পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিও অকালে এ করুণ মৃত্যুর শিকার হলো। মালিকের অসাবধানতা বা অতি মুনাফালোভী মানসিকতার জন্য আজ এতজন মানুষকে বিভীষিকাময় অকাল মৃত্যুর শিকার হতে হলো। শেষমেশ এসব রুই-কাতলার হয়তো কিছুই হবে না। কিন্তু যাদের প্রিয়জন চলে গেছেন, তারাই বুঝছে চলে যাওয়ার বেদনা কেমন!

ইতোমধ্যে সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে তা শেষমেশ আলোর মুখ দেখবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েই যায়। দেখা যায়, তদন্ত কমিটি হয়, প্রতিবেদন পেশ হয়, কিন্তু হয় না বিচার। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। এতজন মানুষের করুণ মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী, তাদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত হোক। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার মতো এমন বিভীষিকাময় ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর হবে না-দিন শেষে এটাই প্রত্যাশা।


মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুন, ২০২২ সকাল ১১:৪৫

হালিমপাট বলেছেন: সারা বছরই শুনে আসলাম তদন্ত কমিটির কথা। কিন্তু তদন্ত করার পরে কি হলো? এটাই আর জানতে পারলাম না? ই দেশে কোন বিচার নাই

২| ২৭ শে জুন, ২০২২ সকাল ১১:৫১

রতনসেন বলেছেন: ডিপো মালিকের নামে মামলা করা দরকার। কারণ কেমিক্যাল Handling procedure করতে যে Compliance maintain করতে হয়। সেটি মানা হয় নি। Restricted zone, no smoking, unauthorized restriction maintain, security checking, chemical zone totally separate zone, chemical zone or room 10 hrs. fire separation must be insured. Storage, handling, fire measures, PPE ( personal protective equipment) ensure, first aid measures, Transportation Safety, labeling, secondary containment there are lot of compliance ---must be ensure. কিন্তু সেখানে কোন কমপ্লায়েন্স আমরা দেখতে পাই নি। সরকারে কাছে অত্যান্ত এই বিষয়টির সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবী করছি কারণ এখানে কোন ব্যাক্তি বা দল নয় রাষ্ট্রের জনগণে জান মালের ক্ষতি হয়েছে।

৩| ২৭ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১২:০৫

পালমিটু বলেছেন: ডিপোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রাখার কারণে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোরালো দাবি জানাচ্ছি, সেই আগামী বাজেটে ফায়ার সার্ভিস বাহিনীর আধুনিকায়নে এবং তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির কাজে বেশি অর্থ বরাদ্দ দিক যাতে উন্নত ও আধুনিক সরঞ্জাম ক্রয়ের করতে পারে। যেমন তাদের বহরে হেলিকপ্টার, উচ্চতাসম্পন্ন ইমার্জেন্সি মই, আধুনিক যন্ত্রপাতি যুক্ত করতে হবে। সীতাকুণ্ডের ঘটনায় এ আমাদের অগ্নি নিরাপত্তার বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে।

৪| ২৭ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১২:১৫

হান্নানগাজী বলেছেন: আমাদের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অনেক সাহসী ও উদ্যমী। কিন্তু তাদের বহরে এখনো উন্নত ও আধুনিক সরঞ্জাম নেই। তাদের বহরে হেলিকপ্টার, উচ্চতাসম্পন্ন ইমার্জেন্সি মই, আধুনিক যন্ত্রপাতি যুক্ত করতে হবে। সীতাকুণ্ডের ঘটনায় এ বাস্তবতা ফুটে উঠেছে। এই অগ্নিকান্ডে যত ফায়ার সার্ভিস জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা, আর সব ফায়ার সার্ভিসসহ যত মানুষ মারা গেছেন আল্লাহ পাক যেন তাদেরকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। আমিন


আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.