![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমানে আমরা ঘটা করে দিনটি পালন করি৷ অান্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। প্রভাতফেরি,আলপনা আঁকা,শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া,দিনব্যাপী দিবসের তাৎপর্য আলোচনা এগুলো হলো শহিদ দিবসের সাধারণ সূচী।
আমার স্পষ্ট মনে আছে,আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। আমাদের বাড়িতে প্রচুর ফুল গাছ ছিলো। আমার মা গাছ থেকে ফুল নিয়ে আমার জন্য রেখে দিতেন। কারন,সকাল হলে গাছে আর ফুল পাওয়া যেতো না। যে যার মতো ছিঁড়ে নিয়ে যেতো। মা আমাকে ভোর হলেই ডেকে দিতেন। ফুলগুলো হাতে দিয়ে খালি পায়ে স্কুলে পাঠিয়ে দিতেন।
পথিমধ্যে, আমার বিশেষ কোনো ফুলের চাহিদা থাকলে যার বাড়িতে সেটা থাকতো সেখানে হানা দিতাম। তারপর,স্কুলে যেতাম। আমাদের স্কুলে কোনো শহিদ মিনার ছিলনা (এখনও নেই)।
স্কুলে পৌঁছে দেখতাম স্যাররা প্রতীকি শহিদ মিনার তৈরি করছেন। ইটের পরে ইট দিয়ে কাঠামো তৈরি করা হতো এবং সেটা কাপড়/কাগজ দিয়ে আবৃত করা হতো। আমরা যারা ভোরে যেতাম তারা স্যারদের সাহায্য করতাম। শহিদ মিনার তৈরি শেষ হলে আমরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যেতাম। একে একে হাতের ভিতর স্বযত্নে মোড়ক করে রাখা ফুলগুলো মিনারের পাদদেশে রাখতাম।
এরপর প্রভাতফেরিতে বের হতাম। গ্রামের মানুষরা অনেক আগ্রহ নিয়ে রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে প্রভাতফেরি দেখতেন। একুশের গান,কবিতা ও স্লোগান শুনতে-গাইতে পুরো গ্রাম চক্রর দিয়ে প্রভাতফেরি পুনরায় স্কুলে এসে ভিড়ত। স্যাররা,একুশের ইতিহাস ও তাৎপর্য বর্ননা করতেন। একুশের গল্প শোনাতেন। শুনতাম আর উজ্জীবিত হতাম।
এরপর একসময় হাইস্কুলে উঠলাম। এটা ছিল পাশের গ্রামেই। তবে,সেখানে অবশ্য অনেক বড় একটা শহিদ মিনার পেয়েছিলাম। একুশের দু-একদিন আগে থেকেই উৎযাপনের প্রস্তুতি শুরু হতো। শহিদ মিনারে আলপনা করা হতো,ডেকোরেশন করা হতো। সূচী অনুযায়ী প্রতিবছর অনেক উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে শহিদ দিবস পালন করতাম।
এখন কলেজে পড়ি। এই শহরে একুশের আয়োজনটা অনেক ঘটা করেই পালন করা হয়। রাত বারোটাই শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে যাই। সকালে আবার কলেজের আয়োজনে সামিল হই। তবুও,আমি আমার সেই ছোট্টবেলার প্রতীকি শহিদ মিনারে ফুল দেওয়া ও গ্রামের ভিতর দিয়ে প্রভাতফেরি'কে বড্ড বেশি মিস করি।
© Shakil Hosen
©somewhere in net ltd.