নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগে পাবেন বিভিন্ন আর্টিকল, রিভিউ, টিপস ও টিউটোরিয়াল ।

বি এম খালিদ হোসেন

আমি বিএম খালিদ হাসান, ইংরেজিতে অনার্স, প্রফেশনাল সিনেমাটোগ্রাফার-ডিরেক্টর, ইভেন্ট ম্যানেজার, স্টেজ ও রেডিও শো প্রেজেন্টার ।

বি এম খালিদ হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

জিরো বাজেট ফিল্মে এল.ই.ডি বাল্বের লাইটিং (বেগিনারদের জন্য)

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৮:২৩


একটা ফিল্মে লাইটের গুরুত্ব অনেক । ইন্ডাস্ট্রিতে ক্যামেরা মুভমেন্ট গিয়ারের চেয়ে লাইটকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয় । আপনার ক্যামেরা যত ভালো হোক যখন কিছু শুট করবেন ডার্ক অংশ টা নয়েজপূর্ণ থাকবে । এটা আপাত চোখে অতটা দেখা যায় না ।

কিন্তু এক ই ফ্রেমে ব্রাইট ও ডার্ক জিনিস থাকলে দুরকম কোয়ালিটির ছবি হবে । ছবির ভাবটা নষ্ট হবে । এডিটের পর ফাইল আরো কমপ্রেসড হয়ে যায় । তখন অনেক বড় পিক্সেল ব্লক আকারে নয়েজ দেখা যায় ।শুধু টেকনিক্যাল কারণেই নয় । লাইট একটা সীনের আবহ, চরিত্রের মানসিক অবস্থা, মুভির জনরা ইত্যাদি তথ্য ও দেয় ।

ডিসি কমিকসের মুভিগুলো দেখবেন ডিপ ও ক্রাইম স্টোরি থাকার জন্য খুব ডার্ক লাইটের হয় ।আপনার মুভি ডার্ক কালারের, এরপর যখন অন্ধকারে শুট করবেন পর্দায় ঝিরঝির ছাড়া আর কিছু দেখা যাবেনা । আজকের পোস্ট টি তাদের জন্য যারা বাসায় বসে শর্টফিল্ম করছেন কিন্তু লাইট সেট আপ নেই ।

খুব সহজ করে বললে - একটা সিন ক্রিয়েট করতে তিন প্রকার ব্যাসিক লাইট প্রয়োজন হয় ।

১. কী লাইটঃ কী লাইট হলো মেইন লাইট যা এক্টরের ফেসে পড়বে এবং তার এক্সপ্রেশন সহ আশেপাশের জিনিস ফুটে উঠবে । কী লাইট দু প্রকার হয় ।

(ক) হাই কী লাইট । খুব কাল্পনিক বা ড্রিমি পরিবেশ দেখাতে এধরণের লাইটিং দেখে থাকবেন । এতে ব্যাকগ্রাউন্ড ফ্ল্যাশিভাবে জ্বলে যায় ।

(খ) লো কী লাইট । মনোক্রমিক ও ডাল এনভাইরনমেন্ট দেখাতে এই লাইট ইউজ হয় ।এতে ডার্ক ভাবটা ফুটে আসে ।শ্যাডো দেখা যায় যা গল্প বা ক্যারেক্টারের নেগেটিভ সাইড বোঝায় ।

কী লাইট যেভাবে সেট করবেনঃ

আমাদের কাছে সবচেয়ে সহজলভ্য যে জিনিসটা থাকবে তা হলো এলইডি লাইট । সবার বাসাতেই আজকাল এলইডি বাল্ব ইউজ করা হয় । আপনি দুটো বেশি ওয়াটের এলইডি বাল্ব পাশাপাশি রাখতে পারেন অথবা একটা বোর্ড বানিয়ে নিতে পারেন ।এতে খুব কম খরচ হবে ।

সকল ক্যামেরাতে ক্যামেরার উপরে ফ্ল্যাশ বসানোর সিস্টেম থাকে । কিন্তু মনে রাখবেন, পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফি আর সিনেমাটিক ফটোগ্রাফি এক নয় । সিনেমাতে মুখের এক সাইডে লাইট ফেলা হয় । অনেক সময় দেখবেন এক্টরের মুখের আরেক সাইডে একটা ত্রিভুজ ব্ল্যাক স্পট দেখা যাচ্ছে ।এটা স্ট্যান্ডার্ড লাইটিং ।

তাই লাইট টা এক্টরের সোজাসুজি না রেখে তার সামনের দিকে এক কোণাতে রাখবেন যেন তার মুখের ৭৫% জুড়ে পরিষ্কার আলো থাকে । তবে শুধু এলইডি ফেললে লাইটের ফোটন দেখা যাবে ও এক্টরের মুখের কিছু প্লেস হাইলাইটেড ও কিছু রুক্ষ দাগসহ আসবে। তাই আপনার লাগবে ডিফিউজার ।

মোটা সাদা পলি ব্যাগ বা টিসু পেপার দিয়ে লাইট ঢেকে ডিফিউজার হিসেবে ইউজ করতে পারেন । ডিফিউজ করলে আলোর লুমিন্যান্স কিছু কমে যাবে. আলো সমান ভাবে ছড়িয়ে মুখে পড়বে । এভাবে কী লাইট ফেলতে হবে ।

২. ফিল লাইটঃ আপনি যখন কী লাইট ফেলবেন এক্টরের মুখের এক সাইড অনেক আলো পাবে । আরেক সাইডে তার শ্যাডো পড়বে । এই সাইডে নয়েজ দেখা যাবে । তাই অনাকাংখিত নয়েজ ও শ্যাডো এড়াতে একটা ফিল লাইট ফেলতে হবে ।

ফিল লাইট যেভাবে সেট করবেনঃ

যেসাইডে কী লাইট থাকবে তার অন্য সাইডে ফিল লাইট সেট করবেন । এখানে একটা এলইডি বাল্ব ইউজ করবেন, ডিফিউজ বেশি করবেন । এই লাইট টা হতে হবে কী লাইটের চেয়ে হালকা । নয়ত ফ্রেম টাকে টিভি শো এর মত লাগবে ।

মূল উদ্দেশ্য থাকবে পিকচার ক্লিয়ারিটি ও ফ্রেম এর দুসাইডের ব্যালেন্স নিয়ে আসা। খেয়াল রাখবেন কী লাইটের সমান হয়ে না যায় । সমান হলে দর্শকের মনে থ্রি ডিমেনশনাল এনভাইরনমেন্ট টা তৈরি হবে না ।দর্শক যেন বুঝে রুমের লাইট সোর্স যেকোনো এক দিক থেকে আসছে ।

৩. ব্যাক লাইটঃ যখন আমরা কী লাইট ও ফিল লাইট ইউজ করছি তখন ক্যামেরার কাছের সাবজেক্ট ও এলিমেন্ট ব্রাইট পাব । তাদের পিছনে যা থাকবে অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকবে । ফলাফল নয়েজ আসবে এবং চোখের জন্য কমফোর্ট হবে না ।
এতে আমাদের সাবজেক্টের ফেসের কর্নার ব্যাকগ্রাউন্ডে মিশে যাবে । এই ব্যাপারটা ওয়েবক্যামে আপনারা ম্যাসিভলি দেখতে পাবেন ।পিছনের জিনিসের সাথে দূরত্ব ও বোঝা যায় না ।

ব্যাক লাইটের কাজ এই ব্যাক গ্রাউন্ড কে আলোকিত করা এবং সাবজেক্টের সাথে ব্যাকগ্রাউন্ডের সেপারেশন করা ।

ব্যাক লাইট যেভাবে সেট করবেনঃ

এক্টরের সামনে দুই কর্ণার থেকে কী লাইট ও ফিল লাইট সেট করবেন । আর তার কিছুটা পিছনে গিয়ে দিকে মাথার উপর সিলিং থেকে তার পিঠের দিকে দিকে থাকবে ব্যাকলাইট অর্থাৎ কী লাইটের অপোজিট সাইডে থাকবে ব্যাক লাইট ।

এটাও একটা এলইডি ও ডিফিউজার দিয়ে করতে পারবেন ডিফিউজ একটু কম হবে।ব্যাক লাইট যেন ডিরেক্ট ক্যামেরাতে না পড়ে খেয়াল রাখবেন ।এটা থাকবে ফিল লাইটের দিকে ।

সর্বমোট চারটা এলইডি বাল্ব এর সাথে টিসু বা পলিব্যাগ দিয়ে আপনি তিন প্রকার লাইট সেট আপ করতে পাচ্ছেন । কিছু সতর্কতা রাখবেনঃ-

• সহকারীদের নিয়ে ডিফিউজ এর মাত্রা কমিয়ে বাড়িয়ে দেখবেন কোন অবস্থায় ফ্রেম দেখতে সুন্দর লাগছে ।
• লাইট হাতে ধরে রাখা যাবে না । স্ট্যান্ড বা চেয়ারে সেট করবেন যেন স্ট্যাটিক থাকে ও ছায়া না নড়তে পারে ।
• ঘরে ভালো জানালা বা পর্দা থাকলে দিনের বেলা জানালা খুলে রাখবেন । দর্শক লাইট ও ব্যাকগ্রাউন্ড দেখে বুঝবে কোন সময়টা সিকোয়েন্স হচ্ছে ।
• ছোটখাট কারণে যখন লাইট আগে পিছে নেবেন লাইট সোর্স যেন সেম এংগেলে থাকে । নয়ত দর্শকের কাছে অস্বাভাবিক লাগবে । তারা প্রথম ওয়াইড শটেই আইডিয়া নিবে এক্টর কোন পজিশনে আছে ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.