![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বিএম খালিদ হাসান, ইংরেজিতে অনার্স, প্রফেশনাল সিনেমাটোগ্রাফার-ডিরেক্টর, ইভেন্ট ম্যানেজার, স্টেজ ও রেডিও শো প্রেজেন্টার ।
ফিল্মের টোটাল কাজ ভিডিও নির্ভর হলেও কনসেপ্ট তুলে ধরতে বেশি ভূমিকা রাখে সাউন্ড । শুধু কন্ঠেও অভিনেতার এক্সপ্রেসন ও ঘটনার ইনটিমেসি দেখানো যায়, অাবার কন্ঠ ছাড়া ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক দিয়ে চুপচাপ বসে থাকা অভিনেতার এমোশন বোঝানো যায় ।
বর্তমান সময়ে ক্যারেক্টারদের কানেকশন তৈরি করে টুইস্ট এগিয়ে নিতে ভয়েস এর বিকল্প নেই ফিল্মকে বাস্তবিক হতে ভয়েস হতে হবে পরিষ্কার । আজকের পোস্টে ভয়েস নেওয়ার প্রসেস গুলোর বর্ণনা থাকছে । বেশিরভাগ সময়ে বেগিনারদের স্বাধীন চলচ্চিত্রে আমরা ভয়েসের সমস্যা টা দেখি । আমাদের জানতে হবে ভয়েস নেওয়ার প্রসেস কয়টা, কখন কোন পরিস্থিতিতে কোন পদ্ধতিতে ভয়েস নিতে হবে এবং পদ্ধতিগুলোর সুবিধা অসুবিধা ।
১। লাইভ ভয়েসঃ
পদ্ধতিঃ
প্রায় সময়ই অভিনয় করার সময় অ্যাক্টরের মুখের ভয়েস সরাসরি রেকর্ড করা হয় । এতে একদম হুবহু ভয়েসটা পাওয়া যায় । অভিনয়ের সময় একজন ক্রু মাথার উপর বা মুখের দিকে বুম মাইক্রোফোন ধরে এই ভয়েস নেওয়া হয় ।
সুবিধাঃ
এতে এমোশনে কোনো ঘাটতি থাকে না । ভয়েস সম্পূর্ণ ন্যাচারাল হয় ও মুখের সাথে শতভাগ সিংকড থাকে । এডিটে এক্সট্রা প্রেসার থাকে না ।
অসুবিধাঃ
বুম মাইকে দূরের শব্দ রেকর্ড হয়, তাই এক্টরের আশেপাশের অনাকাংখিত শব্দ চলে অাসে । টিভি নাটক বা অনলাইনে খুব বোঝা না গেলেও থিয়েটারে বড় সাউন্ডে চালানোর সময় সব স্পষ্ট বোঝা যায় । অাশেপাশের বাজে শব্দ ও অন্যদের কথা অাসে । ফলে সীন থেকে দর্শকের ফোকাস চলে যায় । ভয়েসে ডেপথ থাকে না ।
২। রেকর্ডেড ভয়েসঃ (ডাবিং)
পদ্ধতিঃ
এতে যে অভিনেতার শট সে এডিটের পর স্টুডিও/বাসায় এসে ভয়েস দেয় । সাউন্ডপ্রুফ রুমে কনডেন্সার বা ডাইনামিক মাইক সেটাপে ভিডিও দেখে লিপস মিলিয়ে ভয়েস রেকর্ড করা হয় । প্রথমে অভিনেতাকে অডিওসহ অরিজিনাল ভিডিও শট দেখাতে হয় । সে এরপর লিপস মিলিয়ে ভয়েস দেয় ।
সুবিধাঃ
এতে একেবারে থিয়েটারের উপযোগী ক্লিন ও ডেপথফুল ভয়েস পাওয়া যায় । কোনো নয়েজ থাকে না । অনাকাংখিত শব্দ না থাকায় ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের সাথে কম্বিনেশন ভালো হয় । কোয়ালিটি সেরা হয় । সকল মেইনস্ট্রিম মুভি এভাবে তৈরি করে ।
অসুবিধাঃ
বেগিনার রা ভয়েস সিংক করতে পারে না । বিশেষ করে এডিটর স্কিলফুল ও স্মার্ট না হলে সমস্যা বেশি হয় । সে সুক্ষ্মভাবে অরিজিনাল ভয়েসের সাথে রেকর্ডেড ভয়েস মিলিয়ে দেখতে পারবে না, অভিনেতাকে কোথায় কতটুকু চেঞ্জ করতে হবে বলতে পারবে না । এতে ভয়েস আর্টিফিশিয়াল ও রোবোটিক মনে হবে ।
৩। ডাবড ভয়েস (রিপ্লেসড)
আগেরটা আর এটা সেম । পার্থক্য হলো এক অভিনেতার ভয়েস তার অনুপস্থিতিতে অন্য অভিনেতা দেয় ।
সুবিধাঃ
মেইন এক্টরের অনুপস্থিতিতে সময় বাঁচানো
অসুবিধাঃ
ভয়েস আর্টিস্ট অভিজ্ঞ না হলে মেইন আর্টিস্টের সাথে ভয়েস থ্রো মিলবে না, এমোশন মিলবে না ।
ভিডিওর ভয়েসে প্রফেশনাল কোয়ালিটি আনার উপায়ঃ
ক. লাইভ ভয়েস রাখতে এমন স্থানে শুট করুন যেখানে শব্দ নেই । প্রয়োজনে আলাদা অডিও রেকর্ডার ইউজ করুন যেন সব এক্টরের থেকে সমান দূরত্বে রেখে লাইভ ভয়েস নেওয়া যায় । একজনের ভলিউম কম আরেকজনের বেশি হলে দর্শক ইরিটেটেড হবে । এক ফ্রেমে সবার ভয়েস সেম রাখতে হবে ।
খ. লাইভ ভয়েসে কিছু বাদ গেলে অনেকসময় আলাদা অ্যাড করা হয় । অনেকসময় ন্যারেশন দেওয়া হয় । তখন দুরকম ডিভাইস ও পরিবেশে রেকর্ড করলে সাউন্ড কোয়ালিটি মিলবে না । পরে কিছু অ্যাড করলে সেম ভিডিও ক্যামেরাতেই ভয়েস নিবেন । বাসায় রেকর্ড করলে নতুন ক্লিপসের সাউন্ডে মেইন ক্লিপস থেকে ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ কেটে বসান, তাহলে সব মিলে যাবে এবং অকওয়ার্ড লাগবে না ।
গ. রেকর্ডেড ভয়েসে বারবার টেক নিন । বারবার প্লে ব্যাক করে দেখুন মিলছে কিনা । এডিটিং প্রোগ্রামে মেইন ভয়েস ক্লিপস অার রেকর্ডেড ভয়েস ক্লিপসের প্রতিটা ওয়েভ প্যাটার্ন সোজাসুজি ম্যাচ করে বসান । এরপর শুনুন ।
ঘ. বাসায় বা স্টুডিওতে শুধু ভয়েস রেকর্ড হবে । তাই মনে করে ব্যাকগ্রাউন্ডে বাতাস ও ঝিঝিপোকার নয়েজ ওয়ালা সাউন্ড ট্র্যাক অ্যাড করে দিবেন । এটা না করলে ফিল্ম একেবারেই বাস্তবিক লাগবে না, দর্শকের মনে হবে অানাড়ি মেকারদের কাজ ।
. সকল ভয়েস ও সাউন্ড একই রকম টোনে করুন । আমার রেকর্ডিংয়ের কিছু পার্ট খারাপ থাকলে খুব বেশি ভালো পার্ট ও একটু খারাপ করে ফেলি, কারণ দর্শকের কান শুরু থেকে শেষ একই রকম ফ্লো চাইবে । খুব ভাল আর খুব খারাপ কিছু একই সাথে মেশাবেন না । এটা অান ন্যাচারাল লাগবে । সীন যেরকম লোকেশনে সেরকম এফেক্ট দিবেন । যেমন ফাকা বিল্ডিংয়ে জোরে কথা বললে ইকো থাকবে ।
এই জিনিসগুলো মেইনটেইন করলে মেইনস্ট্রিম মুভির মত কোয়ালিটি অাসবে ।
©somewhere in net ltd.