নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অধিকার চাই, সুযোগ নয়গ

বীেরন্দ্র

প্রগিতশীল, মুক্তমনা, সমঅধিকার এবং মানবতাবাদে বিশ্বাসী

বীেরন্দ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণশ্রাদ্ধের পোস্টমর্টেম : সাংঘাতিক কিছু ঘটে যেতে পারত

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৫

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোসহ পাকিস্তান এবং আফগানিস্থানের গোলযোগপূর্ণ ও জঙ্গি পরিস্থিতির সার্বিকভাবে তেমন কোন উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না । ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ এবং সে দেশের সাংবিধানে অক্ষরিকভাবে লেখা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলেও পার্শ্ববর্তী পাকিস্তানের সাথে চিরবৈরিতার কারণে জঙ্গিবাদ সেখানে শুধু মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টাই করে না, মাঝেমধ্যেই হিংস্রভাবে আবির্ভূত হয়। আর বাংলাদেশে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের আর্থ-সামাজিক, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক অবস্থান কতটা বিস্তৃত এবং শক্তিশালী তা অনেক লেখক ও গবেষকের লেখালেখি ও গবেষণাপত্রে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে । এই মৌলবাদী ও জঙ্গিবাদীরা সামান্যতম সুযোগ পেলেই তার যথাযথ ব্যবহারে কসুর করে না । ১৯৭৫ সালের পর থেকে দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দল ও সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহযোগিতা বা পৃষ্ঠপোষকতা বা পরিস্থিতিগত কারণে উদাসীনতা বা দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ফুলে-ফেপে দোর্দণ্ড প্রতাপে তারা সর্বত্র পদচারণা করছে। প্রজাতন্ত্রের সংবিধানে ধর্মীয় প্রলেপের ফলে তাদের মনোজতাত্বিক শক্তি ও সাহস বহুগুণ বৃদ্ধি পায় এবং তারা বেপরোয়া হতে শুরু করে । ফলে স্বাধীনতার পর পুনরায় পাকিস্তান আমলের ন্যায় বিগত নব্বই দশক থেকে এ দেশে সাম্প্রদায়িক মনোভাব বৃদ্ধিসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা শুরু হয় । ক্রমান্বয়ে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে এবং ২০০১ সালের নির্বাচনের পর তা চমর আকার ধারণ করে । সেই থেকে বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের ঝুঁকিমুক্ত নয় । নানা কলাকৌশলে এখানে মৌলবাদের বিষবাষ্প ছড়ানো হচ্ছে, জঙ্গিবাদীরা আজ এক নামেতো কাল অন্যনামে আর্বিভূত হবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত তাদের গোপন কার্যক্রম বিস্তৃত। প্রকাশ্যে জামায়াত-হেফাজতের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তারা অংশগ্রণ করছে । কারণ জামায়াত ও হেফাজত মূলত জঙ্গিদেরই প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন । তাই তাদের চলমান জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের সাথে তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় ঘোষণা শুরু হবার পর থেকে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে । ২৮ ফেব্রুয়ারি জঘন্য এক যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষিত হবার দিন অলীক কাহিনী ছড়ানো এবং সাম্প্রদায়িক হামলাসহ দেশজুড়ে তারা মধ্যযুগীয় বর্বর তাণ্ডবলীলা শুরু করে তা অবিরত চালাতে থাকে। ৬ এপ্রিল এবং ৫ মে ঢাকায় মহাসমাবেশের নামে তারা সর্বৈব অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতপূর্বক তালেবানি কায়দার সরকার প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র করে। শাহাবাগ গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠকদেরকে নাস্তিক আখ্যায়িত করে তাদের উপর চড়াও হয়, কয়েকজনকে তারা হত্যাও করে । মিথ্যা, বিকৃত ও বানোয়াট সব খবর প্রচার করে তাদেরকে উস্কানিদানের মাধ্যমে সহায়তা করে কয়েকটি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া। তারা উন্মুক্ত তথ্যপ্রযু্ক্তি-মহাসরণির সুযোগের অপব্যবহার করে বিশ্বময় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগসহ অন্যান্য মাধ্যমে এ ধরণের তথ্য ও তত্ত্ব প্রচার করে।



বাংলাদেশের মৌলবাদী ও জঙ্গিবাদীরা কেবলমাত্র দেশীয়ভাবে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বলে মনে করলে মারাত্মক ভুল করা হবে। মূলত এরা বিশ্ব মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদেরই অংশ। ধারণা করা যায়- শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করে এসব কর্মকাণ্ডের পিছনে তারা দেশ-বিদেশের অত্যন্ত ধূর্ত একটি থিংকট্যাঙ্ক নিয়োগ করেছে । এই থিংকট্যাঙ্ক একক কোন ব্যক্তি বিশেষ নয়, বিশ্বের প্রভাবশালী সকল ধর্ম থেকে বাছাইকৃত প্রয়োজনয় সব পেশা ও খাতের ঝানু ও ধূর্ত প্রকৃতির ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে বিশ্বব্যাপি একটি ইন্দ্রজাল। পরিকল্পিত ছকে তারা দাবার ঘুটি চালে । কোন ঘুটি কোথায় কবে চালতে হবে তা তারা অনেক আগে থেকেই নির্ধারণ করে রাখে। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতে তারা ছক পরিবর্তনও করে বলে ধারনা করা যায়।



কৌশলগত অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের প্রতি মৌলবাদী ও জঙ্গিবাদীদের শ্যেনদৃষ্টি নিবদ্ধ। তাই এ দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলে তারা এখন মরিয়া । তাদের প্রথম প্রয়াস হচ্ছে জনগণের সরল ধর্মীয় বিশ্বাসকে পুঁজি করে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া । এ কাজে তারা তাদের কাছাকাছি মতাবলম্বী গণতন্ত্রের লেবাসধারী রাজনৈতিক শক্তির উপর ভর করা এবং তাতে নিস্ফল হলে তাদের নৈরাজ্যের পথ বেছে নেয়া। এই নৈরাজ্য সৃষ্টিতেও তারা ধর্মীয়, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় এবং সম্প্রদায় ও জাতিগত বিষয়াদির অপব্যবহার করছে ।



গেল ৪ অক্টোবর তথাকথিত ‘গণশ্রাদ্ধ ৭১’ আয়োজনের উদ্যোগ ছিল মৌলবাদী ও জঙ্গিবাদীদের এমনই একটি সাংঘাতিক অপপ্রয়াস । এতে সুদূরপ্রসারী নীলনকশা এঁকে ষড়যন্ত্রকারীরা এক বছর আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে অগ্রসর হতে থাকে। এ কাজে একদিকে তারা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, অন্যদিকে ধর্ম- এই দুইয়ের এক মিশেল অনুভূতিকে পুঁজি করে। রাষ্ট্র, সরকার, সংসদ, সমাজ ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার কিছু সরল বিশ্বাসী, কিছু মুখোশধারী এবং কতিপয় সুবিধাবাদী লোকজনকে দলে ভিড়িয়ে নেয় । তবে ধর্মান্ধরাই ছিল এ কাজে সামনের কাতারের মূল চালিকা শক্তি । আপতদৃষ্টিতে কেবলমাত্র কতিপয় হিন্দুধর্মাবলম্বীই এই ‍উদ্যোগের পিছনে ছিল বলে মনে করা হলেও পিছনের কলকাঠি নাড়ছিল দেশ-বিদেশের মৌলবাদী ও জঙ্গিবাদীদের সেই থিংকট্যাঙ্ক বলে ধারণা করা যায় । তবে এ ক্ষেত্রে তারা রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং প্রক্রিয়া প্রয়োগের কৌশল অবলম্বন করে । বিষয়টি কিছুটা হলেও খোলসা করা যেতে পারে ।



প্রথমত, থিংকট্যাঙ্ক ‘গণশ্রাদ্ধ ৭১’ আয়োজনের তারিখ হিসেবে বেছে নেয় এমন একটি সময়কে যখন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ চলছে এবং খুব কাছাকাছি সময়ে দু’একজন যুদ্ধাপরাধীর সাজা কার্যকর হতে পারে বলে অনুমেয় । আবার ৪ অক্টোবরের এই তারিখটি দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরুর দোরগোড়ায়ও বটে । থিংকট্যাঙ্কের প্ল্যান-১ ছিল এরকম বলে ধারনা করা যায়: ধর্মীয় সংখ্যালঘুদেরকে দিয়ে ‘গণশ্রাদ্ধ ৭১’ আয়োজন সম্পন্ন করার মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মাহুতিদানকারীদেরকে ধর্মীয় মোড়কে বিভক্তির সূচনা করা এবং এতে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদেরকেও তাদের স্ব-স্ব ধর্মমতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে অনুরূপ অনুষ্ঠান আয়োজনে উস্কানি দেয়া । সর্বধর্মীয় প্রার্থনায় অংশগ্রহণের জন্য কালী মন্দিরে অন্যান্য ধর্মালম্বীদেরকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানোর মাধ্যমে তাদের মধ্যে ধর্মীয় উগ্রবাদীদেরকে ক্ষেপিয়ে তোলা । এই উস্কানি ও ক্ষেপিয়ে তোলার প্রতিক্রিয়ায় আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের অপেক্ষাকৃত প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নামে ঢাকার কেন্দ্রস্থলে কয়েক লক্ষ লোকের সমাগম ঘটিয়ে অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে জঙ্গিদেরকে দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করা । এভাবে বাংলাদেশকে একটি তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত করা । সম্প্রতি এক দুর্ধর্ষ যুদ্ধাপরাধীর বিচারের খসড়া রায় আগেই চুরি করে ইন্টারনেটে প্রচার করার ব্যাপরটিও এই প্ল্যান-১ এর অন্তর্ভূক্ত বলে ধারণা করা যায় । কারণ ১ অক্টোবর ঐ যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় ঘোষণা এবং গণশ্রাদ্ধ আয়োজন দু’টি সমসাময়িক ঘটনা । প্ল্যান-১ এর আংশিক, অর্থাৎ তথাকথিত গণশ্রাদ্ধ সম্পন্ন করা বটে, কিন্তু এ পর্যায়ে এর অন্যান্য অনুসঙ্গ বাস্তবায়নে সফল হতে না পারলে ধারণা করা যায় তাদের প্ল্যান-২ ছিল এ রকম যে, আগামী নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক অনুভূতি কাজে লাগিয়ে তাদের পছন্দসই রাজনৈতিক শক্তিকে বিজয়ী করা এবং পরবর্তী সরকার গঠনে তাদের পাধান্য বিস্তারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত করার পথ সুগম করা ।



মৌলবাদ ও জঙ্গিদের থিংকট্যাঙ্কচক্র গণশ্রাদ্ধের প্রচারণায়ও চাতুর্যপূর্ণ কৌশল অবলম্বন করে। এ কাজে তারা বাংলাদেশের এক প্রিন্ট মিডিয়া টাইকুনের সহায়তা পায় । উক্ত প্রিন্ট মিডিয়ায় ২৩ আগস্ট থেকে পরপর পাঁচ শুক্রবার ‘গণশ্রাদ্ধ ৭১’ অনুষ্ঠানের বেশ বড় আকারের বিজ্ঞাপন ছাপানো হয়। জানা গেছে সৌজন্যমূলকভাবে নাকি এ বিজ্ঞাপন ছাপানো হয়। শুধু তা-ই নয়, উক্ত মিডিয়া টাইকুন মুক্তিযুদ্ধের বছর-সংখ্যার নামে প্রতিষ্ঠিত টিভি চ্যানেলটিকেও গণশ্রাদ্ধের উপর সৌজন্যমূলক বিজ্ঞাপন প্রচারে উদ্বুদ্ধ করেন বলেও জানা যায়। ফলে উক্ত টিভি চ্যানেল আগস্ট মাসের শেষের দিকে সপ্তাহকালজুড়ে স্ক্রলের প্রথমেই ‘গণশ্রাদ্ধ ৭১’ অনুষ্ঠানের খবর টেক্সট আকারে বিরতিহীন প্রচার করে । চ্যানেলটি পরে অবশ্য সঠিক ঘটনা জানতে পেরে স্ক্রলে খবর প্রচার বন্ধ করে দেয় বটে, কিন্তু প্রিন্ট মিডিয়াটি বিজ্ঞাপন প্রচার অব্যাহত রাখে এবং গণশ্রাদ্ধ বন্ধ ঘোষণার খবর তীর্যক ও নেতিবাচকভাবে প্রচার করে ।



অন্যদিকে, উপরোল্লিখিত থিংকট্যাঙ্ক প্রাথমিক পর্যায়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নন বাংলাদেশের এমন বেশ কয়েকজন প্রগতিশীল, মুক্তমনা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারণকারী মানবাধিকার নেতাকে ‘গণশ্রাদ্ধ ৭১’ আয়োজন একটি মহৎ কাজ বলে উক্ত অনুষ্ঠান আয়োজনে তাদের সহায়তা এবং তাতে উপস্থিতির সম্মতি আদায়ে সক্ষম হয় । এই সম্মতির বিষয়টি গণশ্রাদ্ধ আয়োজনে সহায়ক হবে বলে তারা ইন্টারনেটে প্রচার করলে উক্ত নেৃতবৃন্দকে আসল তথ্য জানানো হলে তারা ভুল বুঝতে পেরে কেবলমাত্র তাদের সম্মতি প্রত্যাহারই করেননি, ‘গণশ্রাদ্ধ ৭১’ আয়োজনে এর উদ্যোক্তাদেরকে নিরুৎসাহিতও করেন।



তাছাড়া, থিংকট্যাঙ্কে অন্তর্ভূক্ত আমেরিকা প্রবাসী একজন হিন্দু প্রতিনিধি বাংলাদেশের বর্তমান সরকার দলীয় দু’একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী সংসদ সদস্য এবং মধ্যম সারির নেতাকে দলে ভিড়াতে সক্ষম হন বলে দৃশ্যমান । নিউ ইয়র্ক থেকে তিনি টেলিফোন এবং ই-মেইলে অনেককেই এই মর্মে ধারণা প্রদানের চেষ্টা করেন যে, ’গণশ্রাদ্ধ ৭১’ আয়োজনে বহু উচ্চ পর্যায়ের সম্মতি রয়েছে- যা সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে যথাসময়ে প্রকাশ করা হবে এবং তাদের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন । আর ঢাকায় গণশ্রাদ্ধের আয়োজকরা এ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে প্রকাশিতব্য স্মরণিকায় মুদ্রণের জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বাণী প্রদান করেছেন এবং এটি আয়োজনে ডিএমপি’র লিখিত অনুমতি পাওয়া গেছে বলে মিথ্যা খবর রটনা করেন ।



গণশ্রাদ্ধ আয়োজকদের এসব অসংলগ্ন কথাবার্তা, অসত্য তথ্য প্রচার এবং সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড সরকার ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের নজরে পড়ারই কথা । অন্যদিকে এ দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্বকারী মূল সংগঠনগুলো এ ধরণের আত্মঘাতী অনুষ্ঠান আয়োজনের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে । তাছাড়া, মুক্তিযুদ্ধে শ্রী শ্রী রমনা কালী মন্দির ও শ্রীমা আনন্দময়ী আশ্রম-এর শহীদ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারবর্গের পুনর্বাসন কমিটি ‘গণশ্রাদ্ধ ৭১’ বন্ধে সরকারের প্রতি দাবি জানায় এবং এ দাবির স্বপক্ষে উক্ত সংগঠনটি ২, ৩ ও ৪ অক্টোবর রমনা কালী মন্দির প্রাঙ্গনে গণঅনশন কর্মসূচি ঘোষণা করে । অন্যদিকে মুজিবুর রহমান চিশতি নামের এক লোক ঢাকা মহানগর মুখ্য হামিকের আদালতে বিতর্কিত আর্জি সম্বলিত একটি মামলা দায়ের করেন । সব মিলিয়ে সম্ভাব্য সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়াতে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী কর্মকাণ্ডকে নিরুৎসাহিত করতে সম্ভবত সরকার গণশ্রাদ্ধ আয়োজনের অনুমতি প্রদান করেনি । অনুমতি না পাওয়ার কারণে গণশ্রাদ্ধ আয়োজকরা ২ অক্টোবর রাতেই অনুষ্ঠান স্থগিত ঘোষণা করেন । এভাবেই বন্ধ হয়ে যায় মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী ও আত্মঘাতী এক উদ্ভট অনুষ্ঠান । আর তাতে আপতত দেশ সাংঘাতিক একটা কিছু ঘটে যাওয়া থেকে রক্ষা পায় ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.