![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন কেবলমাত্র নয় মাস সময়সীমার ভেতর আবদ্ধ ছিল না। ঔপনিবেশিক বৃটিশ শাসনের বিরুদ্ধে উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয় বলে অধুনা ইতিহাস সাক্ষ্য বহন করে। তবে তারপর বৃটিশরা বিদায় নিলেও সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তানের সামরিক ও স্বৈরতান্ত্রিক শাসন-শোষণ থেকে মুক্তির জন্য বাঙালিকে আরও দুই যুগ সংগ্রাম করতে হয়েছে, যার সফল পরিসমাপ্তি ঘটে স্বাধীন বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অনন্যসাধারণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে।
বৃটিশ ভারতে বাঙালিসহ ভারতকর্ষের সকল জাতিসত্ত্বার সংগ্রাম ছিল একসূত্রে গাঁথা- প্রধান লক্ষ্য ছিল ইংরেজ বিতাড়ন। বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালির স্বাধীনতার সংগ্রাম যা কখনও সশস্ত্র অভ্যুত্থানে রূপ নিয়েছিল- অনুপ্রাণিত করেছে ভারতবর্ষের অন্যান্য অঞ্চলের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের। তবে স্বাধীনতার বেদিমূলে বাঙালির মত এত রক্ত অন্য কোনও জাতিকে দিতে হয়নি।
বৃটিশ ভারতে ক্ষুদিরাম, বাঘা যতীন, প্রফুল্ল চাকী, সূর্য সেন, প্রীতিলতাদের অপরিসীম দেশপ্রেম, সাহস ও আত্মদান শুধু ভারতবর্ষ নয়, ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে মুক্তি সংগ্রামরত যে কোনও জাতির অনুপ্রেরণার উৎস।
ভারতবর্ষে ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসকদের বিরুদ্ধে যাঁরা সশস্ত্র সংগ্রাম করেছেন, এই সংগ্রামে যাঁদের আত্মদান ইংরেজ শাসকদের বুকে কাঁপন ধরিয়েছে, দুশ’ বছরের ঔপনিবেশিক শাসনের ভিত্তিমূলে আঘাত হেনে স্বাধীনতা অনিবার্য করে তুলেছে- তাঁদের অন্যতম বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (১৮৭৯-১৯১৫), যিনি ‘বাঘা যতীন’ নামে সমধিক পরিচিত। দেশমাতৃকার প্রতি গভীর ভালবাসা ও দায়বদ্ধতা, অপরিসীম সাহস ও শৌর্যবীর্য তাঁকে অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের প্রথম পংক্তিতে স্থান দিয়েছে। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে ১৯১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর উড়িষ্যার বালাশোরের কপ্তিপোদায় ইংরেজ বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়েছিলেন তিনি। অন্তিম নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগে এই মহাবীর বলেছিলেন- “আমরা মরব দেশ জাগবে”।
বাঘা যতীনের জন্ম আমাদেরই বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে। এ বছর এই মহান বিপ্লবীর মৃত্যুশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ও ভারতের মুক্তিযোদ্ধা, সচেতন নাগরিক সমাজ এবং মুক্তিযুদ্ধোত্তর প্রজন্ম বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশে এই আয়োজনের জন্য বরেণ্য বুদ্ধিজীবী ও স্বাধীনতা সংগ্রামী অধ্যাপক আনিসুজ্জামান পদ্মভূষণ-এর নতৃত্বে শত সদস্য বিশিষ্ট নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতে বিস্তৃত বিপ্লবী বাঘা যতীনের মৃত্যুশতবর্ষিকীর অনুষ্ঠানমালার সূচনা হবে আজ ২ সেপ্টেম্বর (২০১৫) সকাল ১০টায় এই অকুতোভয় বঙ্গসন্তানের জন্মস্থান কুষ্টিয়ার কয়া গ্রাম থেকে। সারা দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে বাঘা যতীনের পৌত্র উন্দুজ্যোতি মুখোপাধ্যায়সহ দুই দেশের সরকারের মাননীয় মন্ত্রীগণ, নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন।
বিপ্লবী বাঘা যতীনের মৃত্যুশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালার সফলতা কামনা করছি। এই বীর বিপ্লবীর প্রতি বিনম্র প্রণতি ও গভীর শদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করিছ।
বিপ্লবীরা মৃত্যুহীন!
[শহীদ বাঘা যতীনের মৃত্যুশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটি কর্তৃক প্রকাশিত ও প্রচারিত আমন্ত্রণ পত্রের অনুলিখন]
২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৩৩
মথিতস্বপ্ন বলেছেন: আপনেরে দাওয়াত দিছে?
৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:০১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বিপ্লবী বাঘা যতিন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন এখানে
৪| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৩
দরবেশমুসাফির বলেছেন: কলকাতা থেকে খবর এল, একের পর এক বিপ্লবীদের কেন্দ্রগুলিতে তল্লাস চালাচ্ছে পুলিশ। বালেশ্বরের সন্ধান পেতে দেরী নেই। দুর্গম ডুভিগর পর্বতশ্রেণী দিয়ে গা ঢাকা দেবার উপযোগিতা নিয়ে কেউ কেউ যখন জল্পনা-কল্পনা করছেন, যতীন দৃঢ়স্বরে জানালেন, "আর পালানো নয়। যুদ্ধ করে আমরা মরব। তাতেই দেশ জাগবে।" ৭ সেপ্টেম্বর গভীর রাত্রে যতীন নিজের সাময়িক আস্তানা মহলডিহাতে ফিরে এলেন। সঙ্গে চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী, জ্যোতিষচন্দ্র পাল, মনোরঞ্জন সেনগুপ্ত এবং নীরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত। ৮ সেপ্টেম্বর সারাদিন কেটে গেল গভীর জংগলে। সারারাত পায়ে হেঁটে ৯ সেপ্টেম্বর ভোরবেলা পৌঁছলেন বালেশ্বরের নদী বুড়ি বালামের উপকণ্ঠে। সাঁতার কেটে নদীর ওপারে গিয়ে যুদ্ধের পক্ষে মোটামুটি উপযুক্ত শুকনো এক ডোবার মধ্যে আশ্রয় নিলেন। বিপরীতপক্ষে চার্লস টেগার্ট, কমান্ডার রাদারফোর্ড, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কিলভি অসংখ্য সশস্ত্র পুলিস ও সামরিক বাহিনী নিয়ে হাজির হয়েছিল। পরীখার আড়ালে বাঘা যতীনের নেতৃত্বে মোট পাঁচজন, হাতে মাউজার পিস্তল। যুদ্ধ শুরু হলে পুলিসের গুলিতে ঘটনাস্থলে শহীদ হলেন চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী। এই যুদ্ধের এমন নজির ইতিপূর্বে দেখেননি বলে মেনে নিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ইংরেজ কুশীলবেরা। ৯ সেপ্টেম্বর ১৯১৫ সালে সূর্যাস্তের সংগে অবসান হল এই যুদ্ধের। পরদিন বালেশ্বর সরকারী হাসপাতালে যতীন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। তখনো রক্তবমি হচ্ছে। হেসে বললেন:
"এত রক্ত ছিল শরীরে? ভাগ্যক্রমে, প্রতিটি বিন্দু অর্পণ করে গেলাম দেশমাতার চরণে।"
৫| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৫
অগ্নি সারথি বলেছেন: শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে গেলাম।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০৩
কাবিল বলেছেন: বিপ্লবী বাঘা যতীন এর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।