নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার পরিচয় আমার রোজনামচায়।

সি এস আহমেদ

আমি একজন দার্শনিক।১৯৭৯সালে ২৬শে জুলাই জন্ম নিয়েই এপর্যন্ত আছি। উল্লেখ করার মত পড়াশোনা হয়েছে হয়নি এমন। লিটল জুয়েলস এ হাতেখড়ি, নাসিরাবাদ স্কুলে নড়িচড়ি, ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে দৌড়াদৌড়ি, চট্টগ্রাম পাবলিক কলেজে হুড়াহুড়ি, মহসিন কলেজে ঘুরাঘুরি, শেষে আইসিএমএতে খোড়াখুড়ি। মেট্রিক ১৯৯৫, ইন্টার ১৯৯৭, গ্রাজুয়েট ২০০২, এরপর লটকে আছি। নো মানি নো এডুকেশান। একই কাহিনী চাকুরী জীবনেও। পড়িয়ে দেশ উদ্ধার করেছি সাইফুরস, এমসিএইচ, ইউসিসি, আরও কতকি। চাকুরীর সূচণা সিটিসেল, জিটিআর, এরপর এপেক্স ইনভেস্টমেন্ট, ও ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ম্যাংগোপিপল.কম এর কাজ করেছি। আপাতত--- প্রচুর গান লিখি, ক্লাসিক্যাল গাই, কি-বোর্ড বাজাই, কম্পোজ করি, সাউন্ড ডিজাইনার বলা যায়। রেডিও ফুর্তি, ফিল্ম ফেস্টিভেল আর একটা নাটকে গানের কাজ আছে। শিল্পী তাহসানের মুঠো গানটা আমার ছিল। অনেক কবিতা আছে বাংলা ইংলিশ। টুইটুম্বুর পত্রিকায় একটা লেখা ছাপিয়ে ছিল। আজকাল গল্প লিখার আস্পর্ধা করি। ব্লগ বুঝেছি এ বছর ২০১২তে। প্রচুর ছবি আঁকি- ভাল পারি পেস্টেলের কাজ আর পেন্সিল স্কেচ। পছন্দ করি এবেস্ট্রেক্ট আর্ট। তবুও আমি অপূর্ণ। আমি বাবা মার একমাত্র সন্তান। বাবা নেই ২০০৪ থেকে, মা আছেন, সাথে নানা নানু ও আমার ক্যান্সার আক্রান্ত আন্টি। সিংহ রাশীর জাতক আমি। জীবনে প্রেম করার চেয়ে ইনফ্যাচুয়েশনে পড়েছি বেশি। আরো কিছু মনে পড়লে লিখবো। এ পর্যন্ত অনেক জেনেছেন। এবার ধন্যবাদ। আপনি আসতে পারেন।

সি এস আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জানুয়ারী ৭, ২০১৩ সকাল ৯টা ৫৫

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৫০

শেষ কথা কি লিখেছিলাম মনে নেই, শেষ কথা টেনে এনে ডায়েরী লেখা যায় না; লেখা যায় গল্প-উপন্যাস। অনেক কথা বাকী থেকে যাবেই, কিছু করার নেই - উপরওয়ালা জানতেন বলেই মুনকার নকীরের চাকরী ফিক্স।



আমি ইএমবিএ তে লিখিত পরীক্ষায় টিকে গেলুম। খুব খুশী নই, কারণ টিকে গেলেও এরপর আছে ভর্তি ফি যেটা আমার পক্ষে কোনভাবেই দেয়া সম্ভব নয়। ছোটকাল থেকে চাইতে শিখিনি, আমার বাবা আমাকে শিখিয়েছিলেন, চাইলে আল্লাহ তারপর বাবার কাছে চাইবি, দুনিয়ার আর কারো কাছে চাইবি না; তোর আব্বু তোকে দিতে পারবে না এমন কিছু নাই - আমি সরলভাবে এটা বিশ্বাস করতাম, হায় আব্বু তুমি এখন কই? আমি কার কাছে চাইব? তাই নিজের চেষ্টা করতে গিয়ে আজ কোন রকম ডিগ্রী পাস করে আছি থার্ড ডিভিশন নিয়ে - তবুও আক্ষেপ নেই। কারণ এতটুকু রেজাল্টে আমার আব্বু আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে বলেছিল - বাবা তুই গ্রাজুয়েট হলি, মাশাল্লাহ, আল্লাহ তোকে অনেক রহমত করুক।



আমার এখনও মনে আছে, ডিগ্রী পাস করার মহা কোন গুরুত্ব আমি সেদিন পাইনি, এখন যেভাবে অস্তিত্ত্ব টিকানোর জন্য পাচ্ছি। সেদিন আমি ভাবতাম এসএসসি পাস করে তো ভালই কোচিং চালাচ্ছিলাম, এটা আর এমন কি। এখন বুঝি যে এটাই আমার স্টান্ডার্ড রিযিকের সার্টিফিকেট। মাস্টার্স এ ভর্তি হইনি তা নয়। ২০০৩ সালেই মাস্টার্সে এডমিশন নিয়েছিলাম চিটাগং কলেজে - ইংরেজীতে। আমার দুতিনটা ক্লাসের পর আর ক্লাস করা হয়নি। ২০০৪ এ এপ্রিলে আব্বু মারা গেলেন (যদিও আমি মারা গেলেন বলি না, কারণ ওনাকে হত্যা করা হয়েছে পানে বিষ মিশিয়ে)। এরপর সংসারের হাল ধরেছি - শুধু টিউশনি।



আমার মনে আছে আমি এত এত ভয় পাচ্ছিলাম যে পরিবারের মুরুব্বীদের বলেছিলাম, আমি থাকা নিয়ে ভয় পাচ্ছি কিভাবে বাসা ভাড়া দেব। যদি পারেন আমাকে থাকার জন্য দুচারটে মাস সহায়তা করতে পারেন। কিন্তু তারা বলেছিলেন আমাদের শুধু খাওয়া খরচ দিয়ে সাহায্য করবেন (যেন আমি আর আমার মা ভিখারী হয়ে গেছি), আমি না করে দিয়েছিলাম - কারণ খাওয়া খরচ হিসেব করলে একটা মানুষের মাসিক (আনুমানিক) ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা খরচ হয় আর এটা দেয়ার মত যথেষ্ট সামর্থ আমার ছিল। আমার মা আমাকে বলেছিল - আল্লাহ কে বল, তোর আর আমার ভাবনা আল্লাহকে দিয়ে দে। দিয়েছিলাম বলেই সে সময় এত্ত এত্ত টিউশনি পেলাম যে মাসে ২৫/৩০ হাজার আয় করে ফেলেছিলাম - আমার সো কলড মুরুব্বীদের বুঝিয়ে দিলাম আমি ভিখারী নই।



আমি আইসিএমএ তে ভর্তি হলেও ক্লাস করতে পারতাম না। মূল কারণ যে সময় টিউশনি করব সে সময়টাই আইসিএমএ ক্লাস। তাই ওটা মন থেকে না ছাড়লেও ছাড়াছাড়া হয়ে আছি। আমাকে অনেকে চাকরী ফিনান্সিয়ালী হেল্প করতে চাইলো যেটা দিয়ে আমি কিছু করে খেতে পারি - আমি বলেছিলাম - আমাকে একটা প্রোফেশনাল কি-বোর্ড কিনে দিতে - কারণ আমি ব্যান্ড করতাম - পার ক্ষেপ আমার ২০০০টাকা নিতে পারবো, এভাবে হিসেব করে দেখালাম যে আমি স্বচ্ছল হয়ে যাবো, আর টাকাটা ফেরৎ দিতেও পারবো। কিন্তু তাদের পছন্দ হল না, আমি নাকি গাঞ্জা খাওয়া শুরু করব, টাকা পানিতে যাবে। হায়! তাদের মনে আসলে কি সাহায্য মনোভাব ছিল কিনা জানি না - নাকি আমি স্বচ্ছল হব এটা তাদের পছন্দ ছিল না। এখন আমার একটা মিনি স্টুডিও আছে। প্রফেশনাল কিবোর্ড নেই - সেমি প্রোফেশনাল; এটা দিয়ে প্রোগ্রাম করা যাবে না তবে গান কম্পোজ করা যাবে, আমি তাই করি, তবে ওই যে টাকাপয়সার ঝামেলা, তাই এলবাম বের করা হয় নাই। গান বানাই আর রেডিও ফুর্তিতে দিয়ে দেই, তারা মনে চাইলে প্লে করে - এটাই প্রাপ্তি।



মাস্টার্সের কথায় আবার আসি, আমার স্পষ্ট মনে আছে - আমার বাবার ডেথ সার্টিফিকেটকে বিশ্বাস না করে আমাকে পরীক্ষা দিতে দেয়নি স্যার নামের বেজন্মা নাজিম। তার অনুমতি না পেয়ে আমি ডিপার্টমেন্ট হেড এর কাছে যাই- তিনি অনুমতি দিলেও পথে নাজিম বেজন্মা আমাকে আটকিয়ে গালিগালাজ করল, আমাকে ছাতি দিয়ে পিটাল, বলল, 'ডিপার্টমেন্ট হেড কি আমার চেয়ে বেশী, আমি যা বলব তাই হবে, তুমি পরীক্ষা দিবা না'। পরে শিবিরের নেজ নাড়া কুত্তাদেরকে ডেকে বলল এরে এখান থেকে বাইর কর। মুলত তার মুখের উপরে অন্য স্যারের পার্মিশন তার পছন্দ হয়নি বলে তিনি বিষয়টা পলিটিক্যাল কুত্তাদের কাছে ইস্যু কেন বানালেন জানি না। শুনেছিলাম তিনি নাকি জামাতের মহানগর কি আমের না বাল গোছের, তাই হয়ত বেজন্মাই। আমি দুঃখিত যদি শিবিরের ছেলেরা এটা পড়ে কষ্ট পায় - সত্যকে অস্বীকার করার অবকাশ নেই। আমি প্রায় ৮ বছর আর মাস্টার্সে ফিরতে পারলাম না - পরিবার - চাকুরী করতে করতে আর হল না। কিন্তু আজও স্টাবলিস হতে পারলাম না, জমানো টাকাও নেই। চলে যাচ্ছি আল্লাহর ওয়াস্তে।



আজ এত্ত বছর পর আমি জেদ ধরে পরীক্ষা দিলাম, আমার এবার সাহায্য চাই, নাহলে আমি দাঁড়াতে পারছি না। এমবিএ ছাড়া ভাল চাকরী নাই সমাজ আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে। আমি ভর্তি হতে চাই, আমি পড়াশোনা করতে চাই, এই অর্থ আমি ফেরৎ দিয়ে দেব, আমি জানি এই শেষ সার্টিফিকেটটা আমার হাতে আসলেই আমি আমার পরিবারকে দাঁড় করাতে পারবো, আমার ভাল চাকরী হবে, সমাজ আমাকে না জেনে কুলাঙ্গার বলে অপবাদ দেবেনা। আমি এবার নিরুপায় - এবার আমার সাহায্য চাই।



কিন্তু সে সাহায্য কি আসবে? আমি কিন্তু হতাশ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.