নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুগ্ধতার এই মহাপরিক্রমায় স্বল্পসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি হৃদয়ে দাগ কাঁটে। হুমায়ুন ফরিদী এমনই একজন। তাঁকে যতই দেখেছি ততই মুগ্ধ হয়েছি, এবং প্রতিনিয়ত হচ্ছি। বিস্ময়কর এক যাদুকরী শক্তি ছিলো মানুষটার। যেখানে নব্য শিল্পীরা একটা প্ল্যাটফর্ম থেকে নিজেদের তুলে আনে সেখানে একজন হুমায়ুন ফরিদী স্বয়ং প্ল্যাটফর্ম টাকেই নিয়ে গিয়েছিলেন জনপ্রিয়তার শিখরে। আশি-নব্বইয়ের দশকে মঞ্চ নাটক ও টিভি পর্দার অভিনয় যাদের হাত ধরে অন্য মাত্রায় পৌঁছেছিল তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম।
"সংশপ্তক" এর বিখ্যাত সেই "কানকাটা রমজান" থেকে কোথাও কেউ নেই, শ্যামল ছায়া, বহুব্রীহি, একাত্তরের যীশুর মতো অসংখ্য নাটক-চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দশকের পর দশক ধরে মুগ্ধ করেছেন দর্শকদের। মুগ্ধ করেছেন নিজের অভিনয় দিয়ে। অভিনয় অঙ্গনে রেখে গেছেন তাঁর অমর সাক্ষর, বিস্তীর্ণ পদচারণ।
দেশের প্রতি তার ভালোবাসা ও দেয়ার অংকটা শুধু অভিনয়ে সীমাবদ্ধ ছিলনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জৈব রসায়নে পড়ার সময়ই যোগদান করেন মুক্তিযুদ্ধে। দেশের প্রতি দরদ আর ভালোবাসায় তিনি কখনও কার্পণ্য করেননি। যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে লেখাপড়া শুরু করেন আর সেখান থেকেই তার অভিনয় যাত্রা শুরু।
অভিনয়,সংস্কৃতি নিয়ে তাঁর গভীর জ্ঞান, উচ্চশিক্ষা, অগাধ ভালোবাসার সবই ছিল। ছিল অগণিত সহস্র পুরস্কার-সম্মাননা। তিনি শুধু অভিনয় করেননি অনুভূতির রঙ মিশিয়ে অনুভব করেছেন অভিনয়টাকে, অনুভব করেছেন নিজেকে। জন্ম দিয়েছেন এক কিংবদন্তির।
তবে এতসব প্রাপ্তির ভিড়েও ছিল কিছু অপ্রাপ্তি, ছিল কিছু আক্ষেপ। সে আক্ষেপ থেকেই হয়তো বলেছিলেন, "কিছু কিছু পরিবর্তন মানুষ নিজেই করে, আর কিছু কিছু পরিবর্তন মানুষের জীবনে আসে যেটা সে কখনোই চায়না, কখনোই আশা করে নাই।.. সেটা আমার জীবনে বহুবার ঘটেছে, আমি যেটা করতে চেয়েছি সেটা করতে পারিনি,
আমি যাকে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছি সে আমাকে ফেলে চলে গেছে ; বা, যাকে আমি স্নেহ দিতে গেছি সে আমাকে ঘৃণা করেছে।"
আজ প্রিয় মানুষটার জন্মদিন। ❤️
© সাদাত সিয়াম
©somewhere in net ltd.